Ajker Patrika

সুরক্ষাব্যবস্থা বাড়ানোর নির্দেশ

আজিজুল হক, বেনাপোল
আপডেট : ০৯ জানুয়ারি ২০২২, ১৪: ২৬
Thumbnail image

করোনার নতুন ধরন ওমিক্রণের সংক্রমণ রোধে বেনাপোল স্থল বন্দরে সুরক্ষাব্যবস্থা জোরদারের নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক (ডিসি)। এরপরও বন্দরে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ তুলেছেন এ বন্দর দিয়ে চলাচল করা যাত্রী ও পণ্য আনা নেওয়া করা পরিবহনের চালকেরা।

এদিকে ২০২০ সালে দেশে করোনা সংক্রমণ শুরু হলে চার মাস এ বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি, রপ্তানি বন্ধ থাকায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন ব্যবসায়ীরা। ফলে এবার ব্যবসায়ীরা আগাম সুরক্ষা জোরদারের দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

গতকাল শনিবার বন্দর ঘুরে দেখা গেছে, বন্দরে করোনা সংক্রমণ রোধে শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মানার কথা থাকলেও অনেকে তা মানছে না। ভারতীয় ট্রাকে জীবাণুনাশক স্প্রে করা হলেও মাস্ক ছাড়াই অনেক শ্রমিক ও ভারতীয় ট্রাকচালক বন্দর এলাকায় চলাফেরা করছেন। নিরাপত্তাকর্মীদের তদারকিও অনেকটা গা ছাড়া ভাব তাঁদের। এতে চালক ও শ্রমিকদের মাধ্যমে ওমিক্রন ছড়ানোর শঙ্কা বাড়ছে।

বেনাপোল বন্দরের আমদানি, রপ্তানি সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক বলেন, ভারতে হঠাৎ করে ওমিক্রণের সংক্রমণ বেড়েছে। সেখানে ইতিমধ্যে ভয়াবহতা রোধে স্কুল, কলেজ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু বেনাপোল বন্দরে পাসপোর্টধারী যাত্রীদের জরুরি যাতায়াত এবং পণ্য আমদানি, রপ্তানি চালু রয়েছে। তাই এখানে সুরক্ষা আরও জোরদার করতে হবে। ভারতীয় ট্রাকচালকেরা যেন অপ্রয়োজনে বন্দরের বাইরে না আসেন এবং দেশীয় ট্রাকচালকেরা ভারতে প্রবেশকালে যেন শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মানেন তা নিশ্চিত করতে হবে।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, ‘ভারতে করোনা সংক্রমণের অবস্থা আবারও ভয়াবহ অবস্থার দিকে যাচ্ছে। আমাদের বেনাপোল বন্দরের সুরক্ষাব্যবস্থা সন্তোষজনক না। সুরক্ষাব্যবস্থা আরও জোরদার করতে জেলা প্রশাসককে অনুরোধ করা হয়েছে। সংক্রমণ বাড়লে আবারও বাণিজ্য বন্ধের আশঙ্কা রয়েছে।’

বেনাপোল ইমিগ্রেশন স্বাস্থ্য বিভাগের মেডিকেল অফিসার আজিম উদ্দীন বলেন, ‘ওমিক্রন রোধে ভারত ফেরত সন্দেহভাজন ৬৫ যাত্রীর নমুনা নিয়ে র‍্যাপিড এন্টিজেন পরীক্ষা করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৩ জন করোনা পজিটিভ ছিলেন। তবে তাঁরা শরীরে ওমিক্রন বহন করছেন কি না তা পরীক্ষার পরে বোঝা যাবে। আক্রান্ত ব্যক্তিরা যশোর সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিটের রেড জোনে চিকিৎসাধীন।’

বেনাপোল বন্দরের উপপরিচালক আব্দুল জলিলের দাবি, মাঝে করোনা রোধে বন্দরে সুরক্ষাব্যবস্থা শিথিল থাকলেও এখন ওমিক্রন রোধে তা জোরদার করা হয়েছে। ভারতীয় ট্রাক বন্দর দিয়ে ঢোকার সময় সেগুলোতে জীবাণুনাশক স্প্রে করা হচ্ছে। সতর্কতা সৃষ্টিতে মাস্ক বিতরণ এবং প্রচার করা হচ্ছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রতিদিন ভারত থেকে সাড়ে ৩০০ ট্রাক নানা পণ্য নিয়ে আসছে।

বেনাপোল ইমিগ্রেশন ওসি মো. রাজু বলেন, ‘ওমিক্রনের কারণে ভারতের নেওয়া কড়া সুরক্ষাব্যবস্থার জন্য এ পথে কমেছে পাসপোর্টধারী যাত্রীদের যাতায়াত। টুরিস্ট ভিসা বন্ধ। মেডিকেল, বিজনেস ও শিক্ষা ভিসায় যাত্রী যাতায়াত করছেন। বর্তমানে বাংলাদেশি পাসপোর্ট দিয়ে দিনে ৫০০-৬০০ জনের মতো ভারতে ভ্রমণ করছেন। আর ১৫০-২০০ ভারতীয় আমাদের দেশে আসছেন। ভারত ভ্রমণে প্রয়োজন হচ্ছে আরটিপিসির থেকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে পরীক্ষা করানো করোনা নেগেটিভ সনদ ও ভারতে থেকে ফিরতে লাগছে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পরীক্ষা করানো করোনা নেগেটিভ সনদ।

যশোর জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান বলেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ওমিক্রনসহ করোনার অন্যান্য ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্তের হার বাড়ছে। এতে বন্দরের সুরক্ষা ব্যবস্থা আরও জোরদার করতে হবে। মাস্ক ছাড়া বন্দর ও ইমিগ্রেশন এলাকায় কোনোভাবে চলাচল করা যাবে না। বন্দর শ্রমিকেরা যাতে যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানেন সেদিকে নজর বাড়াতে হবে। যদি সংক্রমণ বেড়ে যায় তবে ভারত ফেরত যাত্রীদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে চালুর সব প্রস্তুতি রাখা দরকার। ইতিমধ্যে বন্দরে সুরক্ষা জোরদারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসক আরও বলেন, কেউ স্বাস্থ্যবিধি না মানলে প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত