গলার কাঁটা বিদ্রোহীরা

নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচন আগামী ১১ নভেম্বর। নির্বাচেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা (স্বতন্ত্র প্রার্থী) মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। চার ইউপিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহীরা বেশ ভালো অবস্থানে আছেন বলে জানা গেছে।

তাই নির্বাচনে দল থেকে মনোনয়ন পেয়েও স্বস্তিতে নেই আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থীরা। মাঠে বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় দুশ্চিন্তা বেড়েছে তাঁদের। মনোনয়নবঞ্চিত প্রার্থীরা নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ৭ জন। এ ছাড়া স্বতন্ত্র হিসেবে সাত ইউপিতে ১৯ জন অংশ নিচ্ছেন। এর মধ্যে ১১ জন আওয়ামী লীগ নেতা।

আওয়ামী লীগ মনোনীত একাধিক প্রার্থীর অভিযোগ, বারহাট্টায় নৌকার বিজয় ঠেকাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে দলের বিদ্রোহী প্রার্থীরা। উপজেলা আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতারা জানান, বিদ্রোহী প্রার্থীরা এভাবে মাঠে থাকলে নৌকার প্রার্থীদের সঙ্গে লড়াই হবে স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে।

উপজেলার সাত ইউপির মধ্যে বাউসী ইউপিতে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শামছুল হক দলীয় প্রার্থী হয়েছেন। তার সঙ্গে বিদ্রোহী হিসেবে নির্বাচন করছেন আওয়ামী লীগ নেতা ও বর্তমান চেয়ারম্যান শেখ তারেক হাবিব হবি।

সাহতা ইউপিতে আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন নেত্রকোনা সরকারি কলেজের সাবেক এজিএস ও বর্তমান চেয়ারম্যান পল্টন চন্দ্র সরকার, তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগ সমর্থক মিজানুর রহমান চঞ্চল।

বারহাট্টা সদর ইউপিতে আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা যুবলীগের সদস্য ও বর্তমান চেয়ারম্যান কাজী সাখাওয়াত হোসেন। তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সাবেক ছাত্র নেতা মনোরঞ্জন সরকার ও আওয়ামী লীগ নেতা সোহেল রানা।

আসমা ইউপিতে আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শফিকুল ইসলাম খান ছন্দু। তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা আছেন আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কাসেম ছন্দু।

চিরাম ইউপিতে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা সাইদুর রহমান চৌধুরী। তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন-ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান মো. আমিরুল ইসলাম।

সিংধা ইউপিতে আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক ও বর্তমান চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহ্ মাহবুব মোর্শেদ কাঞ্চন। তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন-ইউনিয়ন মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সন্ধ্যা রানী রায় ও আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কাসেম।

রায়পুর ইউপিতে আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আলী আকবর তালুকদার। তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন যুবলীগ নেতা ও বর্তমান চেয়ারম্যান আতিকুল ইসলাম রাজু।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দীপক সাহা সেন্টু জানান, বিদ্রোহী প্রার্থীদের জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্য নোটিশ দেওয়া হয়েছে। সেই নোটিশের পর বাউসি ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা লিয়াকত আলী প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেন। এ ছাড়া এখন পর্যন্ত অন্য কোনো বিদ্রোহী প্রার্থী প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। এবার নির্বাচনে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে কেন্দ্র থেকে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।