ড. রউফুল আলম

প্রতিবছর যখন পৃথিবীর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নিয়ে র্যাঙ্কিং হয়, তখন আমরা আশাহত হই। বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয় সেই তালিকায় স্থান করে নিতে পারে না। আমাদের দেশটার বয়স ৫০ হলেও, সে দেশে ১০০ বছর বয়সী একটা বিশ্ববিদ্যালয় আছে। সে বিশ্ববিদ্যালয়টি আজও কেন বিশ্বমানের হয়ে ওঠেনি, সেটা খুবই উদ্বেগের ও কষ্টের।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক পরে জন্ম নেওয়া ভারতের আইআইটিগুলো এখন বিশ্বমানের। বিশ্ব তালিকায় সেসব প্রতিষ্ঠান স্থান করে নেয়। প্রতিবেশী দেশ ভারত যদি রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক বহু সমস্যার মধ্য দিয়েও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে দাঁড় করাতে পারে, তাহলে আমরা পারছি না কেন? একটা দেশে যদি বিশ্বমানের শিক্ষা না থাকে, বিশ্বমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না থাকে, তাহলে সে সমাজে বিশ্বমানের তরুণ তৈরি হয় না। সমাজের তরুণেরা সেখানে থেকে নিজেদের মেধাকে বিকশিত করতে পারেন না। দেশ ছাড়তে তাঁরা বাধ্য হন।
গত দুই দশকে, বিশেষ করে ইন্টারনেট সহজলভ্য হওয়ার পর, দেশের অসংখ্য ছেলেমেয়ে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার জন্য দেশ ছেড়েছে। এটা অবশ্যই ভালো দিক। তবে এ-ও সত্য, যদি মেধাবীরা শুধু দেশ ছাড়ে, কিন্তু সে অনুপাতে দেশে না ফেরে, তাহলে সেটা আশঙ্কাজনক। যে হারে তরুণেরা দেশ ছাড়ছেন, সে হারে কিন্তু দেশে ফিরছেন না। মেধাবী তরুণদের কী করে দেশে ফেরানো যায়, সে বিষয়ে আমাদের বড় বড় অনেক প্রকল্প থাকা উচিত ছিল। উন্নত দেশ থেকে শিখে যদি দক্ষ গবেষকেরা দেশে না ফেরেন, তাহলে দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোকে জাগানো সহজ হবে না। আর দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিশ্বমানের করতে না পারলে, সেগুলো সমাজ গঠনে খুব বড় কোনো ভূমিকা রাখতে পারবে না।
ফি বছর গ্লোবাল ইনোভেশন ইনডেক্সে বাংলাদেশের অবস্থান থাকে অনেক পেছনে। এই ইনডেক্সে পেছনে থাকার অর্থ হলো, আমরা উদ্ভাবনে পিছিয়ে। জাতি হিসেবে আমাদের উদ্ভাবনী শক্তি কম। অথচ বাংলাদেশে অসংখ্য মেধাবী তরুণ আছেন। উদ্ভাবনে পিছিয়ে থাকার কথা নয়। আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো বরং তরুণদের আগ্রহ ও মেধাকে বহুগুণে জাগিয়ে তুলতে পারছে না। তরুণদের যুগের সঙ্গে উদ্ভাবনী ক্ষমতাসম্পন্ন করে গড়ে তুলতে পারছে না। তরুণেরা কী করে যুগোপযোগী শিক্ষা পাবেন, প্রশিক্ষণ পাবেন, কর্মমুখী দক্ষতা পাবেন–সেসব বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে তেমন উদ্যোগ চোখে পড়ে না। ২০২২ সালে এসেও প্রতিষ্ঠানগুলো কেন দিন দিন পিছিয়ে পড়ছে, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা নেই।
এশিয়ার সবচেয়ে ইনোভেটিভ দেশ সিঙ্গাপুর। দক্ষিণ কোরিয়া শুধু এশিয়াতেই নয়, পৃথিবীর অন্যতম উদ্ভাবনী জাতি হিসেবে নিজেদের তুলে ধরেছে। এই ক্ষুদ্র দেশগুলোও বুঝতে পেরেছে, আবিষ্কার-উদ্ভাবনে শক্তিশালী না হলে পৃথিবীতে টিকে থাকা কঠিন। এই দেশগুলোতে শিক্ষা ও গবেষণার মানে বিপ্লব আনা হয়েছে। গবেষণার জন্য সরকার বিপুল পরিমাণ অর্থ দিচ্ছে এবং সেই অর্থ সঠিক মানুষদের মাধ্যমে সবচেয়ে যোগ্য মানুষদের হাতে তুলে দিচ্ছে। দক্ষিণ কোরিয়ার গবেষকেরা এখন বিশ্বসেরা। তাঁদের অনেক বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বসেরা। তাঁদের শিক্ষার্থীরা নিজ দেশেই সেরা মানের শিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ পাচ্ছেন।
অথচ সিঙ্গাপুর দেশটা হলো বাংলাদেশের সবচেয়ে ছোট জেলা মেহেরপুরের সমান। এত ছোট একটা দেশ শিক্ষায় সেরা, প্রযুক্তিতে সেরা, উদ্ভাবনে সেরা। আর এই উদ্ভাবন আসে কোথা থেকে—তরুণদের মাথা থেকে। আর সেই তরুণ তৈরির কারখানা হলো বিশ্ববিদ্যালয়। সিঙ্গাপুরের সেরা বিশ্ববিদ্যালয় হলো ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাত্র ১৫ বছরের পুরোনো এটি। অথচ বিশ্ব তালিকায় প্রতিবছর স্থান করে নেয় প্রথম বিশ-ত্রিশে। সিঙ্গাপুরের জনসংখ্যা প্রায় ৬০ লাখ। আর বাংলাদেশে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষাই দেয় ২০-২৫ লাখ শিক্ষার্থী। এই মাথাগুলোকে যদি বারুদের মতো তৈরি করা যায়—একবার ভাবুন, কী অবস্থাটাই না হবে। সিঙ্গাপুরের প্রতি ১০ লাখ মানুষের মধ্যে ৬ হাজারের বেশি গবেষক। গবেষক উৎপাদনের এই সংখ্যায় তারা পৃথিবীতে তৃতীয়, ভাবা যায়!
বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে এখন অনেক শক্তিশালী। দেশের সরকার চাইলেই প্রতিবছর গবেষণার জন্য ২ হাজার কোটি টাকা খরচ করতে পারে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার জন্য খুবই সামান্য টাকা দেওয়া হয়। সেসব টাকাও পরিকল্পনামাফিক বণ্টন করা হয় না। বাজেটে যে বড় অঙ্কের টাকা দেখানো হয়, সেগুলো শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন, অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও সংস্কারেই ব্যয় হয় বেশি। গবেষণার জন্য আলাদা বাজেট থাকা প্রয়োজন। বিদেশে থেকে দক্ষ ও মেধাবীদের ফিরিয়ে আনার আলাদা প্রকল্প থাকা উচিত।
আর্থিক বিষয় ছাড়াও ব্যবস্থাপনাগত অনেক বিষয়ে সংস্কার প্রয়োজন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠানে আজও পিএইচডি ছাড়া শিক্ষক হওয়া যায়। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক! বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে থাকা কোনো প্রতিষ্ঠানে এটা সম্ভব নয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠানে আজও ছাত্ররাজনীতির নামে যে সহিংস অপকর্মের চর্চা হয়, সেগুলো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হতে পারে না। শিক্ষকেরা যেভাবে দলীয় রাজনীতির চর্চা করছেন, সেটা লজ্জাজনক! বিদেশি শিক্ষার্থীদের আমরা আকৃষ্ট করতে পারছি না। ছাত্রাবাসে শিক্ষার্থীদের জীবনযাত্রার মান খুবই নিম্ন। এসব বিষয়ে আমাদের পরিবর্তন আনতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রসঙ্গ এখানে আনার কারণ হলো, এটা দেশের সবচেয়ে প্রাচীন প্রতিষ্ঠান এবং দেশের উচ্চশিক্ষার সংস্কৃতিতে এই প্রতিষ্ঠান নেতৃস্থানীয়। সুতরাং এই প্রতিষ্ঠানের মধ্য দিয়েই পরিবর্তন শুরু করতে হবে।
ওদিকে দেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষাকে জোরদার করতে বেশ কিছু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠেছে। কিন্তু দুঃখজনক হলো, এই প্রতিষ্ঠানগুলোতে আধুনিক বিজ্ঞান গবেষণার তেমন কিছুই চোখে পড়ে না। বছর বছর নতুন বিশ্ববিদ্যালয় না খুলে, নির্দিষ্ট কিছু প্রতিষ্ঠানকে সঠিকভাবে গড়ে তোলার জন্য কাজ করা প্রয়োজন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বহু দিকে অবহেলিত। প্রায় ২৫ লাখ শিক্ষার্থী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। তাঁদের কী করে আরও যুগোপযোগী শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ দেওয়া যায়, সে বিষয়ে কাজ করা উচিত।
সার্বিকভাবে দেশের বিজ্ঞানশিক্ষার ভিতও দিন দিন দুর্বল হচ্ছে। গ্রামের স্কুলগুলোতে বিজ্ঞানশিক্ষার ভিত অনেক দুর্বল। সারা দেশের মাত্র ১৪ শতাংশ স্নাতক ডিগ্রি হলো বিজ্ঞানের। এদিকে প্রতিবছর যত শিক্ষার্থী বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য পাড়ি দেন, তাঁদের প্রায় ৭৫ শতাংশ শিক্ষার্থী হলেন বিজ্ঞানের। বিজ্ঞানের যেসব শিক্ষার্থী দেশে থাকেন, তাঁরা আবার বিসিএস দেন। অনেকে নিজের ক্ষেত্রের বাইরে ক্যারিয়ার বেছে নেন। ফলে মৌলিক গবেষণা করার মতো বিজ্ঞানের মেধাবী শিক্ষার্থী অপ্রতুল। এতে করে গবেষণার সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করা কঠিন হয়ে পড়ছে। আর তাই উদ্ভাবনের দিক দিয়েও আমরা পিছিয়ে পড়ছি।
দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে সত্যিকারের প্রোডাকশন হাউস বানাতে হবে। সেগুলো হবে বিশ্বমানের তরুণ উৎপাদনের জায়গা। আর এর জন্য আধুনিক গবেষণার কোনো বিকল্প নেই। একাডেমিক গবেষণার মধ্য দিয়ে দেশে একটা শক্ত সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে। তাহলে উদ্ভাবনে এগিয়ে যাবে সমাজ। গবেষণা শুধু উদ্ভাবনের জন্যই নয়, গবেষণার মধ্য দিয়ে নতুন জ্ঞান সৃষ্টি হয়। জ্ঞানের আধুনিকায়ন ঘটে। আর এই ধারাবাহিকতায় দেশেই তৈরি হবে বিশ্বমানের গবেষক, যাঁরা একদিন দেশে বসেই দুনিয়াজাগানো কাজ করবেন।
লেখক: সিনিয়র সায়েন্টিস্ট, পিটিসি থেরাপিউটিকস, নিউজার্সি, যুক্তরাষ্ট্র

প্রতিবছর যখন পৃথিবীর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নিয়ে র্যাঙ্কিং হয়, তখন আমরা আশাহত হই। বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয় সেই তালিকায় স্থান করে নিতে পারে না। আমাদের দেশটার বয়স ৫০ হলেও, সে দেশে ১০০ বছর বয়সী একটা বিশ্ববিদ্যালয় আছে। সে বিশ্ববিদ্যালয়টি আজও কেন বিশ্বমানের হয়ে ওঠেনি, সেটা খুবই উদ্বেগের ও কষ্টের।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক পরে জন্ম নেওয়া ভারতের আইআইটিগুলো এখন বিশ্বমানের। বিশ্ব তালিকায় সেসব প্রতিষ্ঠান স্থান করে নেয়। প্রতিবেশী দেশ ভারত যদি রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক বহু সমস্যার মধ্য দিয়েও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে দাঁড় করাতে পারে, তাহলে আমরা পারছি না কেন? একটা দেশে যদি বিশ্বমানের শিক্ষা না থাকে, বিশ্বমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না থাকে, তাহলে সে সমাজে বিশ্বমানের তরুণ তৈরি হয় না। সমাজের তরুণেরা সেখানে থেকে নিজেদের মেধাকে বিকশিত করতে পারেন না। দেশ ছাড়তে তাঁরা বাধ্য হন।
গত দুই দশকে, বিশেষ করে ইন্টারনেট সহজলভ্য হওয়ার পর, দেশের অসংখ্য ছেলেমেয়ে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার জন্য দেশ ছেড়েছে। এটা অবশ্যই ভালো দিক। তবে এ-ও সত্য, যদি মেধাবীরা শুধু দেশ ছাড়ে, কিন্তু সে অনুপাতে দেশে না ফেরে, তাহলে সেটা আশঙ্কাজনক। যে হারে তরুণেরা দেশ ছাড়ছেন, সে হারে কিন্তু দেশে ফিরছেন না। মেধাবী তরুণদের কী করে দেশে ফেরানো যায়, সে বিষয়ে আমাদের বড় বড় অনেক প্রকল্প থাকা উচিত ছিল। উন্নত দেশ থেকে শিখে যদি দক্ষ গবেষকেরা দেশে না ফেরেন, তাহলে দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোকে জাগানো সহজ হবে না। আর দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিশ্বমানের করতে না পারলে, সেগুলো সমাজ গঠনে খুব বড় কোনো ভূমিকা রাখতে পারবে না।
ফি বছর গ্লোবাল ইনোভেশন ইনডেক্সে বাংলাদেশের অবস্থান থাকে অনেক পেছনে। এই ইনডেক্সে পেছনে থাকার অর্থ হলো, আমরা উদ্ভাবনে পিছিয়ে। জাতি হিসেবে আমাদের উদ্ভাবনী শক্তি কম। অথচ বাংলাদেশে অসংখ্য মেধাবী তরুণ আছেন। উদ্ভাবনে পিছিয়ে থাকার কথা নয়। আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো বরং তরুণদের আগ্রহ ও মেধাকে বহুগুণে জাগিয়ে তুলতে পারছে না। তরুণদের যুগের সঙ্গে উদ্ভাবনী ক্ষমতাসম্পন্ন করে গড়ে তুলতে পারছে না। তরুণেরা কী করে যুগোপযোগী শিক্ষা পাবেন, প্রশিক্ষণ পাবেন, কর্মমুখী দক্ষতা পাবেন–সেসব বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে তেমন উদ্যোগ চোখে পড়ে না। ২০২২ সালে এসেও প্রতিষ্ঠানগুলো কেন দিন দিন পিছিয়ে পড়ছে, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা নেই।
এশিয়ার সবচেয়ে ইনোভেটিভ দেশ সিঙ্গাপুর। দক্ষিণ কোরিয়া শুধু এশিয়াতেই নয়, পৃথিবীর অন্যতম উদ্ভাবনী জাতি হিসেবে নিজেদের তুলে ধরেছে। এই ক্ষুদ্র দেশগুলোও বুঝতে পেরেছে, আবিষ্কার-উদ্ভাবনে শক্তিশালী না হলে পৃথিবীতে টিকে থাকা কঠিন। এই দেশগুলোতে শিক্ষা ও গবেষণার মানে বিপ্লব আনা হয়েছে। গবেষণার জন্য সরকার বিপুল পরিমাণ অর্থ দিচ্ছে এবং সেই অর্থ সঠিক মানুষদের মাধ্যমে সবচেয়ে যোগ্য মানুষদের হাতে তুলে দিচ্ছে। দক্ষিণ কোরিয়ার গবেষকেরা এখন বিশ্বসেরা। তাঁদের অনেক বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বসেরা। তাঁদের শিক্ষার্থীরা নিজ দেশেই সেরা মানের শিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ পাচ্ছেন।
অথচ সিঙ্গাপুর দেশটা হলো বাংলাদেশের সবচেয়ে ছোট জেলা মেহেরপুরের সমান। এত ছোট একটা দেশ শিক্ষায় সেরা, প্রযুক্তিতে সেরা, উদ্ভাবনে সেরা। আর এই উদ্ভাবন আসে কোথা থেকে—তরুণদের মাথা থেকে। আর সেই তরুণ তৈরির কারখানা হলো বিশ্ববিদ্যালয়। সিঙ্গাপুরের সেরা বিশ্ববিদ্যালয় হলো ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাত্র ১৫ বছরের পুরোনো এটি। অথচ বিশ্ব তালিকায় প্রতিবছর স্থান করে নেয় প্রথম বিশ-ত্রিশে। সিঙ্গাপুরের জনসংখ্যা প্রায় ৬০ লাখ। আর বাংলাদেশে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষাই দেয় ২০-২৫ লাখ শিক্ষার্থী। এই মাথাগুলোকে যদি বারুদের মতো তৈরি করা যায়—একবার ভাবুন, কী অবস্থাটাই না হবে। সিঙ্গাপুরের প্রতি ১০ লাখ মানুষের মধ্যে ৬ হাজারের বেশি গবেষক। গবেষক উৎপাদনের এই সংখ্যায় তারা পৃথিবীতে তৃতীয়, ভাবা যায়!
বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে এখন অনেক শক্তিশালী। দেশের সরকার চাইলেই প্রতিবছর গবেষণার জন্য ২ হাজার কোটি টাকা খরচ করতে পারে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার জন্য খুবই সামান্য টাকা দেওয়া হয়। সেসব টাকাও পরিকল্পনামাফিক বণ্টন করা হয় না। বাজেটে যে বড় অঙ্কের টাকা দেখানো হয়, সেগুলো শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন, অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও সংস্কারেই ব্যয় হয় বেশি। গবেষণার জন্য আলাদা বাজেট থাকা প্রয়োজন। বিদেশে থেকে দক্ষ ও মেধাবীদের ফিরিয়ে আনার আলাদা প্রকল্প থাকা উচিত।
আর্থিক বিষয় ছাড়াও ব্যবস্থাপনাগত অনেক বিষয়ে সংস্কার প্রয়োজন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠানে আজও পিএইচডি ছাড়া শিক্ষক হওয়া যায়। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক! বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে থাকা কোনো প্রতিষ্ঠানে এটা সম্ভব নয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠানে আজও ছাত্ররাজনীতির নামে যে সহিংস অপকর্মের চর্চা হয়, সেগুলো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হতে পারে না। শিক্ষকেরা যেভাবে দলীয় রাজনীতির চর্চা করছেন, সেটা লজ্জাজনক! বিদেশি শিক্ষার্থীদের আমরা আকৃষ্ট করতে পারছি না। ছাত্রাবাসে শিক্ষার্থীদের জীবনযাত্রার মান খুবই নিম্ন। এসব বিষয়ে আমাদের পরিবর্তন আনতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রসঙ্গ এখানে আনার কারণ হলো, এটা দেশের সবচেয়ে প্রাচীন প্রতিষ্ঠান এবং দেশের উচ্চশিক্ষার সংস্কৃতিতে এই প্রতিষ্ঠান নেতৃস্থানীয়। সুতরাং এই প্রতিষ্ঠানের মধ্য দিয়েই পরিবর্তন শুরু করতে হবে।
ওদিকে দেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষাকে জোরদার করতে বেশ কিছু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠেছে। কিন্তু দুঃখজনক হলো, এই প্রতিষ্ঠানগুলোতে আধুনিক বিজ্ঞান গবেষণার তেমন কিছুই চোখে পড়ে না। বছর বছর নতুন বিশ্ববিদ্যালয় না খুলে, নির্দিষ্ট কিছু প্রতিষ্ঠানকে সঠিকভাবে গড়ে তোলার জন্য কাজ করা প্রয়োজন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বহু দিকে অবহেলিত। প্রায় ২৫ লাখ শিক্ষার্থী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। তাঁদের কী করে আরও যুগোপযোগী শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ দেওয়া যায়, সে বিষয়ে কাজ করা উচিত।
সার্বিকভাবে দেশের বিজ্ঞানশিক্ষার ভিতও দিন দিন দুর্বল হচ্ছে। গ্রামের স্কুলগুলোতে বিজ্ঞানশিক্ষার ভিত অনেক দুর্বল। সারা দেশের মাত্র ১৪ শতাংশ স্নাতক ডিগ্রি হলো বিজ্ঞানের। এদিকে প্রতিবছর যত শিক্ষার্থী বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য পাড়ি দেন, তাঁদের প্রায় ৭৫ শতাংশ শিক্ষার্থী হলেন বিজ্ঞানের। বিজ্ঞানের যেসব শিক্ষার্থী দেশে থাকেন, তাঁরা আবার বিসিএস দেন। অনেকে নিজের ক্ষেত্রের বাইরে ক্যারিয়ার বেছে নেন। ফলে মৌলিক গবেষণা করার মতো বিজ্ঞানের মেধাবী শিক্ষার্থী অপ্রতুল। এতে করে গবেষণার সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করা কঠিন হয়ে পড়ছে। আর তাই উদ্ভাবনের দিক দিয়েও আমরা পিছিয়ে পড়ছি।
দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে সত্যিকারের প্রোডাকশন হাউস বানাতে হবে। সেগুলো হবে বিশ্বমানের তরুণ উৎপাদনের জায়গা। আর এর জন্য আধুনিক গবেষণার কোনো বিকল্প নেই। একাডেমিক গবেষণার মধ্য দিয়ে দেশে একটা শক্ত সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে। তাহলে উদ্ভাবনে এগিয়ে যাবে সমাজ। গবেষণা শুধু উদ্ভাবনের জন্যই নয়, গবেষণার মধ্য দিয়ে নতুন জ্ঞান সৃষ্টি হয়। জ্ঞানের আধুনিকায়ন ঘটে। আর এই ধারাবাহিকতায় দেশেই তৈরি হবে বিশ্বমানের গবেষক, যাঁরা একদিন দেশে বসেই দুনিয়াজাগানো কাজ করবেন।
লেখক: সিনিয়র সায়েন্টিস্ট, পিটিসি থেরাপিউটিকস, নিউজার্সি, যুক্তরাষ্ট্র
ড. রউফুল আলম

প্রতিবছর যখন পৃথিবীর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নিয়ে র্যাঙ্কিং হয়, তখন আমরা আশাহত হই। বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয় সেই তালিকায় স্থান করে নিতে পারে না। আমাদের দেশটার বয়স ৫০ হলেও, সে দেশে ১০০ বছর বয়সী একটা বিশ্ববিদ্যালয় আছে। সে বিশ্ববিদ্যালয়টি আজও কেন বিশ্বমানের হয়ে ওঠেনি, সেটা খুবই উদ্বেগের ও কষ্টের।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক পরে জন্ম নেওয়া ভারতের আইআইটিগুলো এখন বিশ্বমানের। বিশ্ব তালিকায় সেসব প্রতিষ্ঠান স্থান করে নেয়। প্রতিবেশী দেশ ভারত যদি রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক বহু সমস্যার মধ্য দিয়েও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে দাঁড় করাতে পারে, তাহলে আমরা পারছি না কেন? একটা দেশে যদি বিশ্বমানের শিক্ষা না থাকে, বিশ্বমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না থাকে, তাহলে সে সমাজে বিশ্বমানের তরুণ তৈরি হয় না। সমাজের তরুণেরা সেখানে থেকে নিজেদের মেধাকে বিকশিত করতে পারেন না। দেশ ছাড়তে তাঁরা বাধ্য হন।
গত দুই দশকে, বিশেষ করে ইন্টারনেট সহজলভ্য হওয়ার পর, দেশের অসংখ্য ছেলেমেয়ে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার জন্য দেশ ছেড়েছে। এটা অবশ্যই ভালো দিক। তবে এ-ও সত্য, যদি মেধাবীরা শুধু দেশ ছাড়ে, কিন্তু সে অনুপাতে দেশে না ফেরে, তাহলে সেটা আশঙ্কাজনক। যে হারে তরুণেরা দেশ ছাড়ছেন, সে হারে কিন্তু দেশে ফিরছেন না। মেধাবী তরুণদের কী করে দেশে ফেরানো যায়, সে বিষয়ে আমাদের বড় বড় অনেক প্রকল্প থাকা উচিত ছিল। উন্নত দেশ থেকে শিখে যদি দক্ষ গবেষকেরা দেশে না ফেরেন, তাহলে দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোকে জাগানো সহজ হবে না। আর দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিশ্বমানের করতে না পারলে, সেগুলো সমাজ গঠনে খুব বড় কোনো ভূমিকা রাখতে পারবে না।
ফি বছর গ্লোবাল ইনোভেশন ইনডেক্সে বাংলাদেশের অবস্থান থাকে অনেক পেছনে। এই ইনডেক্সে পেছনে থাকার অর্থ হলো, আমরা উদ্ভাবনে পিছিয়ে। জাতি হিসেবে আমাদের উদ্ভাবনী শক্তি কম। অথচ বাংলাদেশে অসংখ্য মেধাবী তরুণ আছেন। উদ্ভাবনে পিছিয়ে থাকার কথা নয়। আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো বরং তরুণদের আগ্রহ ও মেধাকে বহুগুণে জাগিয়ে তুলতে পারছে না। তরুণদের যুগের সঙ্গে উদ্ভাবনী ক্ষমতাসম্পন্ন করে গড়ে তুলতে পারছে না। তরুণেরা কী করে যুগোপযোগী শিক্ষা পাবেন, প্রশিক্ষণ পাবেন, কর্মমুখী দক্ষতা পাবেন–সেসব বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে তেমন উদ্যোগ চোখে পড়ে না। ২০২২ সালে এসেও প্রতিষ্ঠানগুলো কেন দিন দিন পিছিয়ে পড়ছে, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা নেই।
এশিয়ার সবচেয়ে ইনোভেটিভ দেশ সিঙ্গাপুর। দক্ষিণ কোরিয়া শুধু এশিয়াতেই নয়, পৃথিবীর অন্যতম উদ্ভাবনী জাতি হিসেবে নিজেদের তুলে ধরেছে। এই ক্ষুদ্র দেশগুলোও বুঝতে পেরেছে, আবিষ্কার-উদ্ভাবনে শক্তিশালী না হলে পৃথিবীতে টিকে থাকা কঠিন। এই দেশগুলোতে শিক্ষা ও গবেষণার মানে বিপ্লব আনা হয়েছে। গবেষণার জন্য সরকার বিপুল পরিমাণ অর্থ দিচ্ছে এবং সেই অর্থ সঠিক মানুষদের মাধ্যমে সবচেয়ে যোগ্য মানুষদের হাতে তুলে দিচ্ছে। দক্ষিণ কোরিয়ার গবেষকেরা এখন বিশ্বসেরা। তাঁদের অনেক বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বসেরা। তাঁদের শিক্ষার্থীরা নিজ দেশেই সেরা মানের শিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ পাচ্ছেন।
অথচ সিঙ্গাপুর দেশটা হলো বাংলাদেশের সবচেয়ে ছোট জেলা মেহেরপুরের সমান। এত ছোট একটা দেশ শিক্ষায় সেরা, প্রযুক্তিতে সেরা, উদ্ভাবনে সেরা। আর এই উদ্ভাবন আসে কোথা থেকে—তরুণদের মাথা থেকে। আর সেই তরুণ তৈরির কারখানা হলো বিশ্ববিদ্যালয়। সিঙ্গাপুরের সেরা বিশ্ববিদ্যালয় হলো ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাত্র ১৫ বছরের পুরোনো এটি। অথচ বিশ্ব তালিকায় প্রতিবছর স্থান করে নেয় প্রথম বিশ-ত্রিশে। সিঙ্গাপুরের জনসংখ্যা প্রায় ৬০ লাখ। আর বাংলাদেশে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষাই দেয় ২০-২৫ লাখ শিক্ষার্থী। এই মাথাগুলোকে যদি বারুদের মতো তৈরি করা যায়—একবার ভাবুন, কী অবস্থাটাই না হবে। সিঙ্গাপুরের প্রতি ১০ লাখ মানুষের মধ্যে ৬ হাজারের বেশি গবেষক। গবেষক উৎপাদনের এই সংখ্যায় তারা পৃথিবীতে তৃতীয়, ভাবা যায়!
বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে এখন অনেক শক্তিশালী। দেশের সরকার চাইলেই প্রতিবছর গবেষণার জন্য ২ হাজার কোটি টাকা খরচ করতে পারে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার জন্য খুবই সামান্য টাকা দেওয়া হয়। সেসব টাকাও পরিকল্পনামাফিক বণ্টন করা হয় না। বাজেটে যে বড় অঙ্কের টাকা দেখানো হয়, সেগুলো শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন, অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও সংস্কারেই ব্যয় হয় বেশি। গবেষণার জন্য আলাদা বাজেট থাকা প্রয়োজন। বিদেশে থেকে দক্ষ ও মেধাবীদের ফিরিয়ে আনার আলাদা প্রকল্প থাকা উচিত।
আর্থিক বিষয় ছাড়াও ব্যবস্থাপনাগত অনেক বিষয়ে সংস্কার প্রয়োজন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠানে আজও পিএইচডি ছাড়া শিক্ষক হওয়া যায়। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক! বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে থাকা কোনো প্রতিষ্ঠানে এটা সম্ভব নয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠানে আজও ছাত্ররাজনীতির নামে যে সহিংস অপকর্মের চর্চা হয়, সেগুলো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হতে পারে না। শিক্ষকেরা যেভাবে দলীয় রাজনীতির চর্চা করছেন, সেটা লজ্জাজনক! বিদেশি শিক্ষার্থীদের আমরা আকৃষ্ট করতে পারছি না। ছাত্রাবাসে শিক্ষার্থীদের জীবনযাত্রার মান খুবই নিম্ন। এসব বিষয়ে আমাদের পরিবর্তন আনতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রসঙ্গ এখানে আনার কারণ হলো, এটা দেশের সবচেয়ে প্রাচীন প্রতিষ্ঠান এবং দেশের উচ্চশিক্ষার সংস্কৃতিতে এই প্রতিষ্ঠান নেতৃস্থানীয়। সুতরাং এই প্রতিষ্ঠানের মধ্য দিয়েই পরিবর্তন শুরু করতে হবে।
ওদিকে দেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষাকে জোরদার করতে বেশ কিছু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠেছে। কিন্তু দুঃখজনক হলো, এই প্রতিষ্ঠানগুলোতে আধুনিক বিজ্ঞান গবেষণার তেমন কিছুই চোখে পড়ে না। বছর বছর নতুন বিশ্ববিদ্যালয় না খুলে, নির্দিষ্ট কিছু প্রতিষ্ঠানকে সঠিকভাবে গড়ে তোলার জন্য কাজ করা প্রয়োজন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বহু দিকে অবহেলিত। প্রায় ২৫ লাখ শিক্ষার্থী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। তাঁদের কী করে আরও যুগোপযোগী শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ দেওয়া যায়, সে বিষয়ে কাজ করা উচিত।
সার্বিকভাবে দেশের বিজ্ঞানশিক্ষার ভিতও দিন দিন দুর্বল হচ্ছে। গ্রামের স্কুলগুলোতে বিজ্ঞানশিক্ষার ভিত অনেক দুর্বল। সারা দেশের মাত্র ১৪ শতাংশ স্নাতক ডিগ্রি হলো বিজ্ঞানের। এদিকে প্রতিবছর যত শিক্ষার্থী বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য পাড়ি দেন, তাঁদের প্রায় ৭৫ শতাংশ শিক্ষার্থী হলেন বিজ্ঞানের। বিজ্ঞানের যেসব শিক্ষার্থী দেশে থাকেন, তাঁরা আবার বিসিএস দেন। অনেকে নিজের ক্ষেত্রের বাইরে ক্যারিয়ার বেছে নেন। ফলে মৌলিক গবেষণা করার মতো বিজ্ঞানের মেধাবী শিক্ষার্থী অপ্রতুল। এতে করে গবেষণার সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করা কঠিন হয়ে পড়ছে। আর তাই উদ্ভাবনের দিক দিয়েও আমরা পিছিয়ে পড়ছি।
দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে সত্যিকারের প্রোডাকশন হাউস বানাতে হবে। সেগুলো হবে বিশ্বমানের তরুণ উৎপাদনের জায়গা। আর এর জন্য আধুনিক গবেষণার কোনো বিকল্প নেই। একাডেমিক গবেষণার মধ্য দিয়ে দেশে একটা শক্ত সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে। তাহলে উদ্ভাবনে এগিয়ে যাবে সমাজ। গবেষণা শুধু উদ্ভাবনের জন্যই নয়, গবেষণার মধ্য দিয়ে নতুন জ্ঞান সৃষ্টি হয়। জ্ঞানের আধুনিকায়ন ঘটে। আর এই ধারাবাহিকতায় দেশেই তৈরি হবে বিশ্বমানের গবেষক, যাঁরা একদিন দেশে বসেই দুনিয়াজাগানো কাজ করবেন।
লেখক: সিনিয়র সায়েন্টিস্ট, পিটিসি থেরাপিউটিকস, নিউজার্সি, যুক্তরাষ্ট্র

প্রতিবছর যখন পৃথিবীর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নিয়ে র্যাঙ্কিং হয়, তখন আমরা আশাহত হই। বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয় সেই তালিকায় স্থান করে নিতে পারে না। আমাদের দেশটার বয়স ৫০ হলেও, সে দেশে ১০০ বছর বয়সী একটা বিশ্ববিদ্যালয় আছে। সে বিশ্ববিদ্যালয়টি আজও কেন বিশ্বমানের হয়ে ওঠেনি, সেটা খুবই উদ্বেগের ও কষ্টের।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক পরে জন্ম নেওয়া ভারতের আইআইটিগুলো এখন বিশ্বমানের। বিশ্ব তালিকায় সেসব প্রতিষ্ঠান স্থান করে নেয়। প্রতিবেশী দেশ ভারত যদি রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক বহু সমস্যার মধ্য দিয়েও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে দাঁড় করাতে পারে, তাহলে আমরা পারছি না কেন? একটা দেশে যদি বিশ্বমানের শিক্ষা না থাকে, বিশ্বমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না থাকে, তাহলে সে সমাজে বিশ্বমানের তরুণ তৈরি হয় না। সমাজের তরুণেরা সেখানে থেকে নিজেদের মেধাকে বিকশিত করতে পারেন না। দেশ ছাড়তে তাঁরা বাধ্য হন।
গত দুই দশকে, বিশেষ করে ইন্টারনেট সহজলভ্য হওয়ার পর, দেশের অসংখ্য ছেলেমেয়ে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার জন্য দেশ ছেড়েছে। এটা অবশ্যই ভালো দিক। তবে এ-ও সত্য, যদি মেধাবীরা শুধু দেশ ছাড়ে, কিন্তু সে অনুপাতে দেশে না ফেরে, তাহলে সেটা আশঙ্কাজনক। যে হারে তরুণেরা দেশ ছাড়ছেন, সে হারে কিন্তু দেশে ফিরছেন না। মেধাবী তরুণদের কী করে দেশে ফেরানো যায়, সে বিষয়ে আমাদের বড় বড় অনেক প্রকল্প থাকা উচিত ছিল। উন্নত দেশ থেকে শিখে যদি দক্ষ গবেষকেরা দেশে না ফেরেন, তাহলে দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোকে জাগানো সহজ হবে না। আর দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিশ্বমানের করতে না পারলে, সেগুলো সমাজ গঠনে খুব বড় কোনো ভূমিকা রাখতে পারবে না।
ফি বছর গ্লোবাল ইনোভেশন ইনডেক্সে বাংলাদেশের অবস্থান থাকে অনেক পেছনে। এই ইনডেক্সে পেছনে থাকার অর্থ হলো, আমরা উদ্ভাবনে পিছিয়ে। জাতি হিসেবে আমাদের উদ্ভাবনী শক্তি কম। অথচ বাংলাদেশে অসংখ্য মেধাবী তরুণ আছেন। উদ্ভাবনে পিছিয়ে থাকার কথা নয়। আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো বরং তরুণদের আগ্রহ ও মেধাকে বহুগুণে জাগিয়ে তুলতে পারছে না। তরুণদের যুগের সঙ্গে উদ্ভাবনী ক্ষমতাসম্পন্ন করে গড়ে তুলতে পারছে না। তরুণেরা কী করে যুগোপযোগী শিক্ষা পাবেন, প্রশিক্ষণ পাবেন, কর্মমুখী দক্ষতা পাবেন–সেসব বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে তেমন উদ্যোগ চোখে পড়ে না। ২০২২ সালে এসেও প্রতিষ্ঠানগুলো কেন দিন দিন পিছিয়ে পড়ছে, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা নেই।
এশিয়ার সবচেয়ে ইনোভেটিভ দেশ সিঙ্গাপুর। দক্ষিণ কোরিয়া শুধু এশিয়াতেই নয়, পৃথিবীর অন্যতম উদ্ভাবনী জাতি হিসেবে নিজেদের তুলে ধরেছে। এই ক্ষুদ্র দেশগুলোও বুঝতে পেরেছে, আবিষ্কার-উদ্ভাবনে শক্তিশালী না হলে পৃথিবীতে টিকে থাকা কঠিন। এই দেশগুলোতে শিক্ষা ও গবেষণার মানে বিপ্লব আনা হয়েছে। গবেষণার জন্য সরকার বিপুল পরিমাণ অর্থ দিচ্ছে এবং সেই অর্থ সঠিক মানুষদের মাধ্যমে সবচেয়ে যোগ্য মানুষদের হাতে তুলে দিচ্ছে। দক্ষিণ কোরিয়ার গবেষকেরা এখন বিশ্বসেরা। তাঁদের অনেক বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বসেরা। তাঁদের শিক্ষার্থীরা নিজ দেশেই সেরা মানের শিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ পাচ্ছেন।
অথচ সিঙ্গাপুর দেশটা হলো বাংলাদেশের সবচেয়ে ছোট জেলা মেহেরপুরের সমান। এত ছোট একটা দেশ শিক্ষায় সেরা, প্রযুক্তিতে সেরা, উদ্ভাবনে সেরা। আর এই উদ্ভাবন আসে কোথা থেকে—তরুণদের মাথা থেকে। আর সেই তরুণ তৈরির কারখানা হলো বিশ্ববিদ্যালয়। সিঙ্গাপুরের সেরা বিশ্ববিদ্যালয় হলো ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাত্র ১৫ বছরের পুরোনো এটি। অথচ বিশ্ব তালিকায় প্রতিবছর স্থান করে নেয় প্রথম বিশ-ত্রিশে। সিঙ্গাপুরের জনসংখ্যা প্রায় ৬০ লাখ। আর বাংলাদেশে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষাই দেয় ২০-২৫ লাখ শিক্ষার্থী। এই মাথাগুলোকে যদি বারুদের মতো তৈরি করা যায়—একবার ভাবুন, কী অবস্থাটাই না হবে। সিঙ্গাপুরের প্রতি ১০ লাখ মানুষের মধ্যে ৬ হাজারের বেশি গবেষক। গবেষক উৎপাদনের এই সংখ্যায় তারা পৃথিবীতে তৃতীয়, ভাবা যায়!
বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে এখন অনেক শক্তিশালী। দেশের সরকার চাইলেই প্রতিবছর গবেষণার জন্য ২ হাজার কোটি টাকা খরচ করতে পারে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার জন্য খুবই সামান্য টাকা দেওয়া হয়। সেসব টাকাও পরিকল্পনামাফিক বণ্টন করা হয় না। বাজেটে যে বড় অঙ্কের টাকা দেখানো হয়, সেগুলো শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন, অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও সংস্কারেই ব্যয় হয় বেশি। গবেষণার জন্য আলাদা বাজেট থাকা প্রয়োজন। বিদেশে থেকে দক্ষ ও মেধাবীদের ফিরিয়ে আনার আলাদা প্রকল্প থাকা উচিত।
আর্থিক বিষয় ছাড়াও ব্যবস্থাপনাগত অনেক বিষয়ে সংস্কার প্রয়োজন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠানে আজও পিএইচডি ছাড়া শিক্ষক হওয়া যায়। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক! বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে থাকা কোনো প্রতিষ্ঠানে এটা সম্ভব নয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠানে আজও ছাত্ররাজনীতির নামে যে সহিংস অপকর্মের চর্চা হয়, সেগুলো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হতে পারে না। শিক্ষকেরা যেভাবে দলীয় রাজনীতির চর্চা করছেন, সেটা লজ্জাজনক! বিদেশি শিক্ষার্থীদের আমরা আকৃষ্ট করতে পারছি না। ছাত্রাবাসে শিক্ষার্থীদের জীবনযাত্রার মান খুবই নিম্ন। এসব বিষয়ে আমাদের পরিবর্তন আনতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রসঙ্গ এখানে আনার কারণ হলো, এটা দেশের সবচেয়ে প্রাচীন প্রতিষ্ঠান এবং দেশের উচ্চশিক্ষার সংস্কৃতিতে এই প্রতিষ্ঠান নেতৃস্থানীয়। সুতরাং এই প্রতিষ্ঠানের মধ্য দিয়েই পরিবর্তন শুরু করতে হবে।
ওদিকে দেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষাকে জোরদার করতে বেশ কিছু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠেছে। কিন্তু দুঃখজনক হলো, এই প্রতিষ্ঠানগুলোতে আধুনিক বিজ্ঞান গবেষণার তেমন কিছুই চোখে পড়ে না। বছর বছর নতুন বিশ্ববিদ্যালয় না খুলে, নির্দিষ্ট কিছু প্রতিষ্ঠানকে সঠিকভাবে গড়ে তোলার জন্য কাজ করা প্রয়োজন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বহু দিকে অবহেলিত। প্রায় ২৫ লাখ শিক্ষার্থী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। তাঁদের কী করে আরও যুগোপযোগী শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ দেওয়া যায়, সে বিষয়ে কাজ করা উচিত।
সার্বিকভাবে দেশের বিজ্ঞানশিক্ষার ভিতও দিন দিন দুর্বল হচ্ছে। গ্রামের স্কুলগুলোতে বিজ্ঞানশিক্ষার ভিত অনেক দুর্বল। সারা দেশের মাত্র ১৪ শতাংশ স্নাতক ডিগ্রি হলো বিজ্ঞানের। এদিকে প্রতিবছর যত শিক্ষার্থী বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য পাড়ি দেন, তাঁদের প্রায় ৭৫ শতাংশ শিক্ষার্থী হলেন বিজ্ঞানের। বিজ্ঞানের যেসব শিক্ষার্থী দেশে থাকেন, তাঁরা আবার বিসিএস দেন। অনেকে নিজের ক্ষেত্রের বাইরে ক্যারিয়ার বেছে নেন। ফলে মৌলিক গবেষণা করার মতো বিজ্ঞানের মেধাবী শিক্ষার্থী অপ্রতুল। এতে করে গবেষণার সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করা কঠিন হয়ে পড়ছে। আর তাই উদ্ভাবনের দিক দিয়েও আমরা পিছিয়ে পড়ছি।
দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে সত্যিকারের প্রোডাকশন হাউস বানাতে হবে। সেগুলো হবে বিশ্বমানের তরুণ উৎপাদনের জায়গা। আর এর জন্য আধুনিক গবেষণার কোনো বিকল্প নেই। একাডেমিক গবেষণার মধ্য দিয়ে দেশে একটা শক্ত সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে। তাহলে উদ্ভাবনে এগিয়ে যাবে সমাজ। গবেষণা শুধু উদ্ভাবনের জন্যই নয়, গবেষণার মধ্য দিয়ে নতুন জ্ঞান সৃষ্টি হয়। জ্ঞানের আধুনিকায়ন ঘটে। আর এই ধারাবাহিকতায় দেশেই তৈরি হবে বিশ্বমানের গবেষক, যাঁরা একদিন দেশে বসেই দুনিয়াজাগানো কাজ করবেন।
লেখক: সিনিয়র সায়েন্টিস্ট, পিটিসি থেরাপিউটিকস, নিউজার্সি, যুক্তরাষ্ট্র

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

প্রতিবছর যখন পৃথিবীর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নিয়ে র্যাঙ্কিং হয়, তখন আমরা আশাহত হই। বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয় সেই তালিকায় স্থান করে নিতে পারে না। আমাদের দেশটার বয়স ৫০ হলেও, সে দেশে...
২৯ জুন ২০২২
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

প্রতিবছর যখন পৃথিবীর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নিয়ে র্যাঙ্কিং হয়, তখন আমরা আশাহত হই। বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয় সেই তালিকায় স্থান করে নিতে পারে না। আমাদের দেশটার বয়স ৫০ হলেও, সে দেশে...
২৯ জুন ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

প্রতিবছর যখন পৃথিবীর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নিয়ে র্যাঙ্কিং হয়, তখন আমরা আশাহত হই। বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয় সেই তালিকায় স্থান করে নিতে পারে না। আমাদের দেশটার বয়স ৫০ হলেও, সে দেশে...
২৯ জুন ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

প্রতিবছর যখন পৃথিবীর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নিয়ে র্যাঙ্কিং হয়, তখন আমরা আশাহত হই। বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয় সেই তালিকায় স্থান করে নিতে পারে না। আমাদের দেশটার বয়স ৫০ হলেও, সে দেশে...
২৯ জুন ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫