Ajker Patrika

৩ দিনে ৫০ শিশু ভর্তি সামাল দিতে হিমশিম

হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২১, ১৬: ৪৫
৩ দিনে ৫০ শিশু ভর্তি সামাল দিতে হিমশিম

শীতের তীব্রতা এখনো তেমন বাড়েনি। তবু প্রতিদিন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত শিশুরা। এর মধ্যে ওরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া রোগে। গত তিন দিনে এই দুটি রোগে আক্রান্ত হয়ে নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছে ৫০ জন শিশু। ৫০ শয্যার হাসপাতালটি শিশুসহ অন্যান্য রোগে আক্রান্ত রোগীর চাপে হিমশিম খাচ্ছে।

হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত সিনিয়র নার্স রুপা বেগম জানান, গত তিন দিনে শুধু ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৫০ জন শিশু ভর্তি হয়েছে। অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হয়েও ভর্তি আছে অনেকে। গত সোমবার বিকেল পর্যন্ত ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৭৪ জন। অতিরিক্ত রোগীকে বাধ্য হয়ে হাসপাতালের মেঝেতে থাকতে হচ্ছে।

গতকাল সকালে হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় গিয়ে দেখা যায়, শিশু ও মহিলা ওয়ার্ড পরিপূর্ণ হয়ে অনেকে বারান্দায় অবস্থান করছে। মহিলা ওয়ার্ডের সামনে বারান্দায় দর্শনার্থীদের বসার জায়গায় ছোট শিশুকে নিয়ে বসে আছেন সুফিয়া বেগম (৩৫) নামের এক নারী। আলাপকালে পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সুফিয়া জানান, গত রোববার বিকেলে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত সন্তান আয়েশাকে (২) ভর্তি করিয়েছেন। শয্যা না থাকায় এই শীতে তাঁদের বারান্দায় থাকতে হয়েছে। শীতের মধ্যে বাতাস আটকানোর জন্য বাড়ি থেকে আনা কাপড় দিয়ে বেড়া তৈরি করে নিয়েছেন।

সুফিয়ার মতো অনেকেরই অবস্থান বারান্দায়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অতিরিক্ত চাপ কমাতে বারান্দায় কিছু শয্যা পেতে দিয়েছে। এমন এক শয্যায় তিন দিন ধরে অবস্থান করছেন কুলসুমা বেগম নামের (৩৮) এক নারী। হাতিয়ার জাহাজমারা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে নতুন সুখচর গ্রামের বাসিন্দা কুলসুমা জানান, দুই মাস বয়সের নবজাতককে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন গত বৃহস্পতিবার। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে প্রথমে গ্রাম্য ডাক্তারের চিকিৎসা নিয়েছিলেন। নবজাতকের অবস্থা ক্রমান্বয়ে দুর্বল হয়ে পড়ায় হাসপাতালে আসেন। এখনো তাঁর সন্তানের অবস্থা আগের মতো।

কুলসুমা অভিযোগ করে আরও জানান, প্রতিদিন দুই ধাপে তাঁর শিশু সন্তানকে নেবুলাইজার দিতে হচ্ছে। হাসপাতালে যন্ত্রটি না থাকায় বাইরে ফার্মেসি থেকে এনে দিতে হয়।

হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপসহকারী মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. বিমান চন্দ্র আচার্য বলেন, হাসপাতালে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হতে আসা অনেক শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম দেখা গেছে। তাই আক্রান্ত হওয়ার প্রথম ধাপেই তারা দুর্বল হয়ে যায়। তবে রাতে শীত, দিনে গরম এই ধরনের আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে অনেকে আক্রান্ত হচ্ছে।

এ ব্যাপারে হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নাজিম উদ্দিন বলেন, ৫০ শয্যার হাসপাতালে প্রতিদিনই ধারণ ক্ষমতার বাইরে রোগী ভর্তি থাকে। এর মধ্যে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত রোগী বেড়ে যাওয়ায় সীমিতসংখ্যক জনবল নিয়ে মোকাবিলা করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত