Ajker Patrika

পশ্চিমাদের ‘অর্থনৈতিক যুদ্ধ’ থেকে যা শিখছে চীন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক
আপডেট : ০৯ মার্চ ২০২২, ১০: ১০
পশ্চিমাদের ‘অর্থনৈতিক যুদ্ধ’ থেকে যা শিখছে চীন

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা রাশিয়ার ওপর যেসব অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, তা নজিরবিহীন। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ জব্দ, আন্তর্জাতিক লেনদেনের বৃহত্তম প্রতিষ্ঠান ‘সুইফটের’ সদস্যপদ বাতিল, প্রায় সব ধরনের আমদানি-রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা, খেলাধুলা থেকে শুরু করে সংস্কৃতি—এমন কোনো অঙ্গন বাকি নেই, যেখানে রাশিয়াকে নিষেধাজ্ঞা দেয়নি পশ্চিমারা।

রাশিয়াকে সবদিক থেকে একঘরে করার পশ্চিমাদের ওই সব আয়োজন থেকে চীন সবচেয়ে বেশি শিখবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের এক বিশ্লেষণে।

মর্নিং পোস্টের বিশ্লেষক ঝাউ চিং লিখেন, বিভিন্ন ইস্যুতে চীনের সঙ্গে পশ্চিমাদের দ্বন্দ্ব বলতে গেলে রাশিয়ার চেয়ে ব্যাপক। ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে চীনের ওপর শুল্ক নিষেধাজ্ঞা শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। এরপর থেকে যুক্তরাষ্ট্র, ব্যাপক অর্থে পশ্চিমাদের সঙ্গে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সতর্ক হয়ে পড়ে চীন। কিন্তু পশ্চিমারা রাশিয়ার সঙ্গে যে ‘অর্থনৈতিক যুদ্ধ’ শুরু করেছে, তা চীনের চোখ খুলে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।

পশ্চিমাদের চলমান অর্থনৈতিক যুদ্ধ থেকে চীনের প্রথম শিক্ষাটা হলো, নিজেদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ডলার নির্ভরতা কমানো। অবশ্য এটা ইতিপূর্বেই শুরু হয়েছে। কিন্তু চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এটা দ্বিগুণ করতে পারে। এ জন্য ব্যাংকটির নীতিতে বড় পরিবর্তন আসতে পারে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিতে পরিবর্তন দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ। তাৎক্ষণিকভাবে চলমান অর্থনৈতিক যুদ্ধের প্রভাব কমাতেও দেশটি শিগগির কিছু পদক্ষেপ নিতে পারে। এসব পদক্ষেপের মধ্যে হয়তো এমন কিছু থাকবে না, যা রাশিয়াকে আর্থিকভাবে বড় ধরনের ক্ষতিগ্রস্ত করবে। তবে রাশিয়াকে উদ্ধার করার জন্য জাতীয় স্বার্থেরও জলাঞ্জলি দেবে না বেইজিং।

বিরাজমান পরিস্থিতি থেকে শিক্ষা নিয়ে নিজেদের দুর্বল জায়গাগুলো দ্রুত চিহ্নিত করবে চীন। প্রযুক্তি থেকে শুরু করে বৈদ্যুতিক সামগ্রী তৈরির আবশ্যকীয় উপাদান সেমিকন্ডাক্টার—প্রভৃতি খাতে স্বাবলম্বী হওয়ার গতি বাড়াবে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিটি।

ঝাউ চিং লিখেন, চলতি শতাব্দী চীন নিজের করে নিতে চায়। গত শতকের শেষের দিক থেকে অর্থনৈতিক নীতি সংস্কারের মধ্য দিয়ে যে যাত্রা শুরু করেছিল চীন, তা অল্প সময়ে বিস্ময়কর সফলতা দেখিয়েছে। গ্রামপ্রধান গরিব চীন, এখন বিশ্ব অর্থনীতির সূতিকাগার। এসব অর্জন সহজে হাত ছাড়া হতে দেবেন না চীনের নেতৃত্ব।

যুক্তরাষ্ট্র যেহেতু এক পড়ন্ত বিশ্বশক্তি, তাই চলমান সংকটে মাথা সবচেয়ে বেশি ঠান্ডা রাখার চেষ্টা করবে বেইজিং। এ জন্য পশ্চিমাদের বিপরীতে বিভিন্ন ধরনের আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান, যোগাযোগে বিকল্প মাধ্যম চালুর চেষ্টা করা হবে। যা পরবর্তী সময়ে পশ্চিমাদের সঙ্গে চীনের প্রত্যক্ষ বিরোধে দেশটিকে সুরক্ষা দেবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত