গৃহস্থের বাড়িতে ব্যালট পুলিশ অবরুদ্ধ

বদরগঞ্জের দামোদরপুর ইউনিয়নের একটি বাড়ি থেকে গতকাল মঙ্গলবার ব্যালট পেপার উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে পুনরায় ভোট গণনার দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন নৌকার প্রার্থী আজিজুল হকের সমর্থকেরা।

বিক্ষোভকারীরা এ সময় পুলিশকে অবরুদ্ধ করেন। তাঁদের দাবি, অনিয়মে কেন্দ্রে দায়িত্বে থাকা পুলিশের ভূমিকা ছিল। খবর পেয়ে বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমান ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে তিনিও সমর্থকদের তোপের মুখে পড়েন।

তিন ঘণ্টা অবরোধের পর বেলা ৩টার দিকে ওসি হাবিবুর অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে ক্ষুব্ধ সমর্থকেরা পুলিশ সদস্যদের ছেড়ে দেন।

সূত্র জানায়, গত রোববারের নির্বাচনে দামোদরপুরে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান আজিজুল হক ৪৩ ভোটের ব্যবধানে স্বতন্ত্র প্রার্থী শেখ আবু বক্কর সিদ্দিকের কাছে পরাজিত হন। এরপর থেকে আজিজুলের সমর্থকেরা ভোট কারচুপির অভিযোগ তোলেন। তাঁরা গতকাল জানতে পারেন অনেক ব্যালট পেপার মোস্তফাপুর গ্রামে সফিয়ার রহমানের বাড়িতে আছে। তাঁদের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে সফিয়ারের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা চারটি ব্যালট পুলিশের হাতে দেন। কিন্তু নৌকা সমর্থকদের দাবি, নৌকার সিল থাকা অনেক ব্যালট পেপার আয়েশা পুড়িয়ে ফেলেছেন।

এরপর সমর্থকেরা পুলিশ, আয়েশা ও তাঁর ছেলে রিয়াজুল ইসলামকে (১৫) নৌকার প্রার্থী আজিজুলের বাড়িতে নিয়ে যান। মুহূর্তেই সেখানে জড়ো হন হাজারো সমর্থক। তাঁরা পুনরায় ভোট গণনার দাবি তুলে বিক্ষোভ করেন।

আশেয়ার দাবি, সোমবার সকালে তাঁর ছেলে রিয়াজুল চারটি ব্যালট পেপার বাড়ির পাশে মোস্তফাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পেছনে পেয়ে তাঁকে দেয়। ব্যালট পোড়ানোর অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘পুলিশ আসার আগেই আমার গলায় দড়ি লাগানোর হুমকি দেয় চেয়ারম্যানের লোকজন। ভয়ে ব্যালট পুড়িয়ে ফেলার কথা বলেছিলাম তাদের কাছে। কিন্তু আসলে আমি কোনো ব্যালট পেপার পুড়িয়ে ফেলিনি।’

নৌকার প্রার্থী আজিজুল বলেন, ‘আমাকে ষড়যন্ত্র করে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে। সমর্থকেরা তা মেনে নিতে পারছেন না। ব্যালট পেপার বাইরে পাওয়ার পর সমর্থকেরা পুলিশের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন।’

বদরগঞ্জ থানার ওসি হাবিবুর বলেন, ‘ভোট কারচুপিতে পুলিশের কোনো হাত থাকে না। কারণ পুলিশ থাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে। পুনরায় ভোট গণনা পুলিশ করতে পারে না। না বুঝে মানুষ পুলিশকে দোষারোপ করে।’

ইউনিয়নের রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সঞ্জয় ব্যানার্জি বলেন, ‘ভোট কারচুপির কোনো ঘটনা ঘটেনি। হয়তো কেউ কেউ ব্যালট পেপার বাক্সে না ফেলে বাইরে নিয়ে এসেছিলেন।’