Ajker Patrika

‘লোকদেখানো ব্যর্থ অভিযান’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৬ জানুয়ারি ২০২২, ১০: ১৬
‘লোকদেখানো ব্যর্থ অভিযান’

নতুন বছরের শুরুতে ঢাকঢোল পিটিয়ে ব্যাটারিচালিত ও অবৈধ রিকশার বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। দুই দিনের অভিযানে জব্দ হয় মাত্র ২২টি অবৈধ রিকশা। সুষ্ঠু পরিকল্পনার অভাবে ‘ঢিলেঢালা অভিযানে’ রাস্তা থেকে অবৈধ রিকশা সরানো যাচ্ছে না বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এদিকে সামনে আবার কখন অভিযান হবে, সে বিষয়েও কিছু বলতে পারেনি ডিএসসিসি কর্তৃপক্ষ।

গত বছরের ডিসেম্বরে সারা দেশের অবৈধ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক অপসারণ করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। সেই অনুযায়ী বছরের শেষ দিনে ডিএসসিসি মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছিলেন, ‘নতুন বছর থেকে ঢাকা শহরে অনুমোদনহীন ও ব্যাটারিচালিত কোনো রিকশা চলবে না।’ তিনি জানিয়েছিলেন, এসব রিকশার বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চালানো হবে। এরপর ২ ও ৩ জানুয়ারি শহরের দুই জায়গায় অভিযান পরিচালনা করে সংস্থাটি। অভিযান পরিচালনা করেন ডিএসসিসির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুস সামাদ শিকদার। অভিযানের প্রথম দিনে সায়েন্স ল্যাব এলাকার ১৫টি প্যাডেলচালিত রিকশা এবং দ্বিতীয় দিনে সদরঘাট বাগানবাড়ি এলাকায় ৭টি ব্যাটারিচালিত রিকশা জব্দ করা হয়। এ সময় আব্দুস সামাদ শিকদার বলেছিলেন, অবৈধ ও ব্যাটারিচালিত রিকশা উচ্ছেদ না হওয়া পর্যন্ত এ অভিযান চলমান থাকবে। কিন্তু দুই দিনের অভিযানের পর আর কোনো অভিযান পরিচালনা করা হয়নি।

দক্ষিণ সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহম্মদের কাছে জানতে চাইলে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এসব নিয়ে প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা বিস্তারিত বলতে পারবেন।’ প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আরিফুল হক বলেন, অভিযান একেবারে বন্ধ হয়ে যায়নি। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জায়গায় এ অভিযান চালানো হবে। কিন্তু এ বিষয়ে নির্দিষ্ট করে বলতে পারেননি এই কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের সাধারণ সম্পাদক আদিল মোহাম্মদ খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, লোকদেখানো এসব অভিযানে শহরের রাস্তায় শৃঙ্খলা আসবে না। অবৈধ রিকশা উচ্ছেদ করতে হলে এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিকল্প কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে হবে। এ ছাড়া অপরিকল্পিত অভিযান না চালিয়ে নগরবিদ ও সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করে কর্মপরিকল্পনা ঠিক করতে হবে। পরে সেটার পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করতে হবে।

এদিকে রাস্তায় অবৈধ রিকশার দৌরাত্ম্যের কারণে বৈধ রিকশার মালিকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বলে দাবি করেছেন। কামরাঙ্গীরচর এলাকার রিকশামালিক শরিয়ত উল্লাহ বলেন, ‘আমার সিটি করপোরেশনের বৈধ লাইসেন্সসহ দুইটা রিকশা আছে। অবৈধ রিকশাগুলো ভাড়া কম রাখার কারণে রিকশাচালকেরা সেগুলোই ভাড়া নেন। আমার দুটি রিকশা বছরের অর্ধেক সময়ই গ্যারেজে পড়ে থাকে।’

ডিএসসিসির পরিবহন বিভাগ থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, দক্ষিণ সিটিতে বৈধ রিকশা রয়েছে মাত্র ৫৪ হাজার। এ ছাড়া বিভিন্ন সংস্থার তথ্যমতে, এখানে রিকশা রয়েছে প্রায় আট লাখ। হিসাবমতো এ সিটিতে অবৈধ রিকশা রয়েছে সাত লাখের বেশি। সরেজমিন দেখা যায়, রাজধানীর রাস্তায় অবাধেই চলছে অনুমোদনহীন ও ব্যাটারিচালিত অবৈধ রিকশা। প্রকাশ্যে ট্রাফিক পুলিশের সামনে দিয়ে চলাচল করলেও অভিযানের সময় এসব রিকশা খুঁজে পান না অভিযান পরিচালনাকারী ম্যাজিস্ট্রেটরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

বিবাহিতদের পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশ না করার প্রস্তাব

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত