Ajker Patrika

বৈধ ডিলারের অবৈধ অস্ত্রের কারবার

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০২ নভেম্বর ২০২১, ১৭: ৪৭
বৈধ ডিলারের অবৈধ অস্ত্রের কারবার

বৈধ অস্ত্রের ডিলার হোসেন। চট্টগ্রামে তাঁর একটি অস্ত্রের দোকান আছে। দোকান থেকে লাইসেন্সধারী বিভিন্ন ব্যক্তি অস্ত্র কিনে নিয়ে যেতেন। আর এই বৈধ ব্যবসাকে কাজে লাগিয়ে অবৈধ অস্ত্র বেচাকেনার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন হোসেন। বিদেশ থেকে আনা অস্ত্র তিনি নানা সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর কাছে চড়া দামে বিক্রি করতেন।

অবৈধ এ ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে কৌশলের আশ্রয় নিতেন হোসেন। মৃত ব্যক্তিদের লাইসেন্স সংগ্রহ করে সেগুলো দিয়ে ফের অস্ত্র কিনতেন। সেই অস্ত্র সন্ত্রাসীদের কাছে বিক্রি করতেন এই ডিলার।

ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে গতকাল সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ইউনিটের (সিটিটিসি) অতিরিক্ত কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান। তিনি জানান, গত রোববার যাত্রাবাড়ীতে অবৈধ অস্ত্র কেনাবেচার সময় চট্টগ্রামের বৈধ অস্ত্র ব্যবসায়ী হোসেনসহ চার অস্ত্র কারবারিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট। অন্য গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন, লাল তন পাংখোয়া, মো. আলী আকবর ও মো. আদিলুর রহমান সুজন। অভিযানে ৫টি অস্ত্র এবং ৩০১ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।

আসাদুজ্জামান বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই বৈধ অস্ত্র ব্যবসাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে আসছিলেন হোসেন। এ জন্য গড়ে তুলেছেন একটি সিন্ডিকেটও। সিন্ডিকেটের সদস্যরা ভারতের মিজোরাম এবং মিয়ানমার সীমান্ত থেকে অস্ত্র সংগ্রহ করে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চল, কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করে আসছিল।

অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, আকবর ও আদিল হোসেনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। আর বিভিন্ন স্থানে একসঙ্গে যাতায়াত করতে গিয়ে লাল তন পাংখোয়ের সঙ্গে হোসেনের ভালো সম্পর্ক হয়। তাদের কাছে বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠী একে-৪৭-এর গুলি অর্ডার করেছিল। তারা একে-৪৭-এর গুলি বিক্রি করতে চেয়েছিল। অবৈধ অস্ত্র ব্যবসার নানা বিষয় জানার চেষ্টা চলছে।

আসাদ বলেন, ‘অস্ত্রগুলো হয়তো বড় ধরনের কোনো অপরাধ সংঘটিত করার জন্য ব্যবহার করা হতো। যেটা আমাদের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়াত। এরপর যেন এমন না হয়, সে জন্য সারা দেশের বৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবসা যাঁরা পরিচালনা করেন, তাঁদের নজরদারিতে আনার চেষ্টা চলছে।’

গোয়েন্দা পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যাত্রাবাড়ী থানায় অস্ত্র আইনে একটি মামলা করা হয়েছে। ঢাকার মহানগর হাকিম আতিকুল ইসলাম গতকাল সোমবার তাঁদের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। বিকেলে চার আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে ১০ দিন করে রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।

মামলাসূত্রে জানা গেছে, যাত্রাবাড়ীর ৩৩/১ জনপথ মোড়, সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ডের শ্যামলী ৬ নম্বর বাস কাউন্টারের সামনে কয়েকজন ব্যক্তি অস্ত্র-গুলি কেনাকাটার উদ্দেশ্যে অবস্থান করছিলেন। এমন সংবাদের ভিত্তিতে ওই স্থানে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

মামলাসূত্রে আরও জানা যায়, গ্রেপ্তার লাল তন পাংখোয়া রাঙামাটির বরকল সীমান্ত দিয়ে ভারতের মিজোরাম থেকে অস্ত্র-গুলি নিয়ে আসতেন। এরপর তিনি সেগুলো বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চলসহ ঢাকা ও কক্সবাজারে বিক্রি করতেন। অবৈধ অস্ত্র-গুলি কেনাবেচার উদ্দেশ্যে গ্রেপ্তার হোসেনের সঙ্গে দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত ছিল লাল তনের। আর আকবর ও আদিলুর রহমান সুজন হলেন হোসেনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে হোসেনের কাছ থেকে অবৈধ অস্ত্র-গুলি কিনে বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ও ব্যক্তির কাছে বিক্রি করতেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশ শুল্কমুক্ত আমদানির ঘোষণা দিতেই ভারতে হু হু করে বাড়ছে চালের দাম

‘আমরা মরে গেলাম ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে’, চিরকুটে লেখা

জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে উচ্চপদস্থ বোর্ড গঠন: আইএসপিআর

ফেসবুকে ছাত্রলীগ নেতার ‘হুমকি’, রাবিতে ১৫ আগস্টের কনসার্টে যাচ্ছে না আর্টসেল

পাবনায় প্রবাসীর স্ত্রীকে নিয়ে এএসআই উধাও, থানায় শ্বশুরের জিডি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত