Ajker Patrika

যত্রতত্র ফেলা হয় বর্জ্য

শেখ ফরিদ, সোনারগাঁ
আপডেট : ২২ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৬: ২৭
Thumbnail image

রূপগঞ্জে পুকুরে, হাট-বাজার, স্কুল-কলেজ, সড়ক-মহাসড়কের পাশে ফেলা হচ্ছে ময়লা। এ ছাড়া ময়লা ফেলা হচ্ছে হাসপাতাল কিংবা ক্লিনিকের সামনেও। এ ময়লা পচে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। এ ছাড়া এতে সৃষ্টি হচ্ছে মশা-মাছির, সৃষ্টি হচ্ছে রোগবালাই।

ময়লা নিয়ে মহাবিপাকে আছেন রূপগঞ্জবাসী। উপজেলার মুড়াপাড়া বাজার, গাউছিয়া খাল (ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশের), সরকারপাড়া ও সাবাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনের পানি নিষ্কাশনের খালে এবং কৃষিজমিতে গড়ে তোলা হয়েছে ময়লার ভাগাড়।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বাজারের ময়লা-আবর্জনা ফেলার জন্য সরকারি নির্দিষ্ট কোনো জায়গা না থাকায় এমন পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের রূপগঞ্জ অংশে পথে পথে ময়লার ভাগাড়, যা জনজীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। মহাসড়কের অনন্ত ১১টি স্পটে এসব ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে।

এ ছাড়া উপজেলার বিশ্বরোড, রূপসী, বরপা, বরাব, ভুলতা, গাজী বাইপাস সড়কের পশ্চিম গাঁও, দক্ষিণপাড়া, গোলাকান্দাইলসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় রাস্তার পাশে ময়লা ফেলা হচ্ছে। মহাসড়ক দিয়ে চলাচলরত যানবাহনের যাত্রী কিংবা পথচারীদের দুর্গন্ধে নাকে রুমাল চেপে চলতে হয়।

গাউছিয়া মার্কেটের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মার্কেটটি থেকে প্রতি বছর প্রায় দেড় কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করে সরকার। কিন্তু ময়লা-আবর্জনা ফেলার নির্দিষ্ট জায়গার অভাবে বাজারের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা কৃষিজমি এবং খালে ময়লা ফেলেন। মুড়াপাড়া এবং গাউছিয়া বাজারে খালের ওপর ময়লার ভাগাড় গড়ে তোলায় ভরাট হয়ে গেছে পানি নিষ্কাশনের খাল।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্বরোড, রূপসী, বরপা, বরাব, ভুলতা, দক্ষিণপাড়া, পশ্চিমগাঁও, গোলাকান্দাইলসহ যে স্থানগুলোতে ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে, সেখানে রয়েছে বাস ও অটোরিকশা স্ট্যান্ড। এ স্ট্যান্ডগুলো থেকে প্রতিদিন হাজারো যাত্রী চলাফেরা করে। অনেক যাত্রীই দুর্গন্ধের কারণে নাক চেপে ধরে চলাফেরা করেন। তারাব পৌরসভা থেকে এ সব জায়গা থেকে ঠিকমতো ময়লা নেওয়া হয় না বলে অভিযোগ যাত্রী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের।

তবে তারাব পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা বিশ্বরোড রূপসী, বরপা, ও বরাব এলাকা থেকে কয়েক দিন পর পর ময়লা ট্রাকের মাধ্যমে অন্যত্র নিয়ে যান। তবে তত দিনে চারদিকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে। ময়লার দুর্গন্ধে দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে জনজীবন। এতে পথচারীদের যেন দুর্ভোগের শেষ নেই। ময়লা-আবর্জনাগুলো পচে গিয়ে দুর্গন্ধ বাতাসের সঙ্গে মিশে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। মহাসড়কের যে স্থানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা হয়, তার আশপাশে রোপণকৃত বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা মরে যাচ্ছে।

এদিকে মুড়াপাড়া বাজারের উত্তর পাশে রাস্তার পূর্ব পাশের জলাশয়ের ওপর ময়লা-আবর্জনার বিশাল ভাগাড় দেখা গেছে। দীর্ঘদিন থেকে বাজার পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা এই জলাশয়ে ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারণে জমির অনেকাংশ ভরাট হয়ে গেছে। লোকজন এর পাশ দিয়ে হাঁটতে গিয়ে দুর্গন্ধের শিকার হচ্ছেন।

গাউছিয়া বাজারের সামান্য দূরে মহাসড়কের পাশের খালেও গড়ে তোলা হয়েছে ভাগাড়। অথচ কয়েক বছর আগে সরকার এই খালটি খনন করেছে। এ ছাড়া মহাসড়কের পাশে অনেক জায়গায় ময়লা-আবর্জনা পড়ে থাকতে দেখা যায়।

উপজেলার হাজী নুরুদ্দিন ভূঁইয়া উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শামীমা জাহান জানায়, সে এ রাস্তা দিয়ে স্কুলে আসা-যাওয়া করে। এখানে ময়লার ভাগাড় থাকার কারণে দুর্গন্ধে নাকে টিস্যু চেপে চলাচল করতে হচ্ছে তাদের। দুর্গন্ধে এ স্থান দিয়ে স্কুলে যাতায়াত করতে গিয়ে তার তিন সহপাঠী অসুস্থ হয়ে পড়েছে।

গাউছিয়া মার্কেটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান দিপু ভুঁইয়া বলেন, বাজারের ময়লা-আবর্জনা ফেলার জন্য সরকারি কোনো নির্দিষ্ট জায়গা নেই। কোটি টাকার বেশি রাজস্ব প্রদানকারী এই বাজারে ময়লা ফেলার জন্য কোনো গাড়িও নেই। বাজারের ময়লা ব্যবস্থাপনার জন্য গাড়ি এবং আর্থিক সহযোগিতা চেয়েছি উপজেলা প্রশাসনের কাছে।

রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহ্ নূসরাত জাহান বলেন, ‘ময়লার ভাগাড় দূর করতে পুরো রূপগঞ্জের জন্য সুন্দর একটি পরিকল্পনা করা হচ্ছে। শিগগিরই এ সমস্যাটির সমাধান করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত