গনেশ দাস, বগুড়া
বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা গোপেন্দ্রনাথ শীল। গত বৃহস্পতিবার ভোরে স্ত্রী ও এক কন্যাসন্তানকে ঘরে রেখে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দেন। এরপর মই দিয়ে বাড়ির উঠানের আমগাছে চড়েন। গায়ে থাকা চাদরের এক প্রান্ত গাছের ডালে আর এক প্রান্ত গলায় বেঁধে ঝুলে পড়েন। পরিকল্পনা করে ঠান্ডা মাথায় এভাবেই আত্মহত্যা করেন তিনি।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, দুই বছর আগে করোনার সময় চাকরি হারিয়ে বেকার হয়ে পড়েন গোপেন্দ্রনাথ। বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ করে গত বছর বড় মেয়েকে বিয়ে দেন। এরপর ঋণের কিস্তি পরিশোধ এবং সংসার চালাতে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে চড়া সুদে আবার ঋণ নেন। স্ত্রী কাজলীর দাবি, ঋণ ও সুদের টাকা পরিশোধ করতে না পেরে মানসিক চাপে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন তাঁর স্বামী।
বগুড়া জেলা পুলিশের তথ্য বলছে, গত দুই বছরে এই জেলায় আত্মহত্যা করেছেন ৭০৩ জন। উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, ২০২১ সালের চেয়ে বিদায়ী বছরে আত্মহত্যার সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ। ২০২১ সালে আত্মহত্যা করেন ২৫১ জন। আর ২০২২ সালে ৪৫২ জন। পুলিশ গ্রামে গ্রামে কাউন্সেলিং সভা করেও কমাতে পারছে না আত্মহননকারী মানুষের সংখ্যা।
বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ড. সোবহানা লীনা হাসিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুই বছরে ৭০৩ জনের আত্মহত্যার বিষয়টি রীতিমতো উদ্বেগজনক। সমাজে ন্যায় প্রতিষ্ঠা না হলে আত্মহত্যার প্রবণতা কমবে না। এ ছাড়া কাউন্সেলিং বাড়াতে হবে।’
প্রেমের বিষয় পরিবার জেনে যাওয়ায় গত ২৬ সেপ্টেম্বর সারিয়াকান্দির জোরগাছা গ্রামের স্কুলছাত্রী মোহনা গ্যাস ট্যাবলেট সেবনে আত্মহত্যা করে। সেই শোক সইতে না পেরে তার প্রেমিক আবিদও আত্মহত্যা করে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে। দুর্গাপূজায় নতুন পোশাক না পেয়ে গত বছরের ১২ অক্টোবর নন্দীগ্রামে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন কলেজছাত্র কনক চন্দ্র। ২৯ সেপ্টেম্বর নন্দীগ্রামেই শামিমা নামের এক নারী আত্মহত্যা করেন পালিত সন্তান নিয়ে পারিবারিক বিরোধের জেরে।
আত্মহত্যার এমন আরও অনেক কারণ আছে। পুলিশ নিজেদের মতো করে হিসাব রেখেছে। জেলা পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, গত দুই বছরে যেসব কারণে মানুষ আত্মহত্যা করেছে তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি পারিবারিক ও দাম্পত্য কলহে ৩৩৯ জন এবং ঋণগ্রস্ত হয়ে মানসিক চাপে ১১০ জন। এ ছাড়া জুয়া খেলে আর্থিক সংকটের কারণে ৫৯ জন, মাদকাসক্ত হয়ে ২৯ জন, প্রেমঘটিত কারণে ৩৭ জন, মনস্তাত্ত্বিক সমস্যায় ৩৯ জন, রাগ-ক্ষোভ, মান-অভিমানসহ আরও বিভিন্ন কারণে ৭৯ জন। এ ছাড়া সন্তান না হওয়ায় চারজন, পেশাগত বিড়ম্বনায় একজন, একাকিত্ব থেকে মুক্তি পেতে চারজন, শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়ে দুজন আত্মহত্যা করেছে।
ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে আত্মহত্যা মহাপাপ। ধর্মীয় বক্তা অধ্যাপক মাওলানা হাবিবুর রহমান আকন্দ বলেন, আত্মহত্যা ধর্মীয় এবং আইনগত, উভয় দিক থেকেই অপরাধ। হতাশাগ্রস্ত মানুষ যখন আত্মহত্যা করার চিন্তা করেন, সেই সময় তিনি যদি অজু করে দুই রাকাত নামাজ আদায় করেন, তাহলে আত্মহত্যার পথ থেকে ফিরে আসতে পারেন।
বগুড়া ইসকনের অধ্যক্ষ ক্ষরাজিত কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী বলেন, ধর্মীয় অনুশাসন মেনে জীবন যাপন করতে হবে। মনে অশান্তি থাকলে আত্মহত্যার প্রবণতা দেখা দেয়। অধিক টাকা, ধনসম্পদ, লোভ-হিংসা মানুষকে অশান্তির দিকে নিয়ে যায়। সেখান থেকে সরে আসতে হবে। তাহলেই আত্মহত্যার প্রবণতা কমবে।
আত্মহত্যা প্রতিরোধে জেলার ১২টি থানার পুলিশ ২০২১ সালে বিভিন্ন গ্রামপর্যায়ে বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে ৫৯৫টি সচেতনতামূলক সভা করেছে। তারপরও ওই বছর ২৫১ জন আত্মহত্যা করেছে। ২০২২ সালে এ ধরনের সভা করা হয় ৭৪২টি। সে বছর আত্মহত্যাকারী মানুষের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৫২ জন।
এ বিষয়ে বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘পুলিশের পক্ষ থেকে ১২টি থানার প্রতিটি ইউনিয়ন এবং ১২টি পৌরসভার ওয়ার্ড পর্যায়ে মানুষকে প্রতিনিয়ত সচেতন করে যাচ্ছি। সব সময় বলা হচ্ছে আইন ও ধর্মীয় দৃষ্টিতে আত্মহত্যা করা অপরাধ। আত্মহত্যার প্রবণতা কমাতে পুলিশ ছাড়াও জনপ্রতিনিধি ও সুশীল সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে।’
কলেজশিক্ষক সোবহানা লীনা হাসিনও বললেন, শুধু পুলিশের ওপর দায়িত্ব দিয়ে বসে থাকলে হবে না, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে কাউন্সেলর নিয়োগ করে কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যা থেকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব। এ ছাড়া সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে কাউন্সেলিং করতে মসজিদ কমিটি এবং ইউনিয়ন পরিষদ থেকে উদ্যোগ নিতে হবে।
বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা গোপেন্দ্রনাথ শীল। গত বৃহস্পতিবার ভোরে স্ত্রী ও এক কন্যাসন্তানকে ঘরে রেখে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দেন। এরপর মই দিয়ে বাড়ির উঠানের আমগাছে চড়েন। গায়ে থাকা চাদরের এক প্রান্ত গাছের ডালে আর এক প্রান্ত গলায় বেঁধে ঝুলে পড়েন। পরিকল্পনা করে ঠান্ডা মাথায় এভাবেই আত্মহত্যা করেন তিনি।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, দুই বছর আগে করোনার সময় চাকরি হারিয়ে বেকার হয়ে পড়েন গোপেন্দ্রনাথ। বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ করে গত বছর বড় মেয়েকে বিয়ে দেন। এরপর ঋণের কিস্তি পরিশোধ এবং সংসার চালাতে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে চড়া সুদে আবার ঋণ নেন। স্ত্রী কাজলীর দাবি, ঋণ ও সুদের টাকা পরিশোধ করতে না পেরে মানসিক চাপে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন তাঁর স্বামী।
বগুড়া জেলা পুলিশের তথ্য বলছে, গত দুই বছরে এই জেলায় আত্মহত্যা করেছেন ৭০৩ জন। উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, ২০২১ সালের চেয়ে বিদায়ী বছরে আত্মহত্যার সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ। ২০২১ সালে আত্মহত্যা করেন ২৫১ জন। আর ২০২২ সালে ৪৫২ জন। পুলিশ গ্রামে গ্রামে কাউন্সেলিং সভা করেও কমাতে পারছে না আত্মহননকারী মানুষের সংখ্যা।
বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ড. সোবহানা লীনা হাসিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুই বছরে ৭০৩ জনের আত্মহত্যার বিষয়টি রীতিমতো উদ্বেগজনক। সমাজে ন্যায় প্রতিষ্ঠা না হলে আত্মহত্যার প্রবণতা কমবে না। এ ছাড়া কাউন্সেলিং বাড়াতে হবে।’
প্রেমের বিষয় পরিবার জেনে যাওয়ায় গত ২৬ সেপ্টেম্বর সারিয়াকান্দির জোরগাছা গ্রামের স্কুলছাত্রী মোহনা গ্যাস ট্যাবলেট সেবনে আত্মহত্যা করে। সেই শোক সইতে না পেরে তার প্রেমিক আবিদও আত্মহত্যা করে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে। দুর্গাপূজায় নতুন পোশাক না পেয়ে গত বছরের ১২ অক্টোবর নন্দীগ্রামে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন কলেজছাত্র কনক চন্দ্র। ২৯ সেপ্টেম্বর নন্দীগ্রামেই শামিমা নামের এক নারী আত্মহত্যা করেন পালিত সন্তান নিয়ে পারিবারিক বিরোধের জেরে।
আত্মহত্যার এমন আরও অনেক কারণ আছে। পুলিশ নিজেদের মতো করে হিসাব রেখেছে। জেলা পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, গত দুই বছরে যেসব কারণে মানুষ আত্মহত্যা করেছে তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি পারিবারিক ও দাম্পত্য কলহে ৩৩৯ জন এবং ঋণগ্রস্ত হয়ে মানসিক চাপে ১১০ জন। এ ছাড়া জুয়া খেলে আর্থিক সংকটের কারণে ৫৯ জন, মাদকাসক্ত হয়ে ২৯ জন, প্রেমঘটিত কারণে ৩৭ জন, মনস্তাত্ত্বিক সমস্যায় ৩৯ জন, রাগ-ক্ষোভ, মান-অভিমানসহ আরও বিভিন্ন কারণে ৭৯ জন। এ ছাড়া সন্তান না হওয়ায় চারজন, পেশাগত বিড়ম্বনায় একজন, একাকিত্ব থেকে মুক্তি পেতে চারজন, শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়ে দুজন আত্মহত্যা করেছে।
ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে আত্মহত্যা মহাপাপ। ধর্মীয় বক্তা অধ্যাপক মাওলানা হাবিবুর রহমান আকন্দ বলেন, আত্মহত্যা ধর্মীয় এবং আইনগত, উভয় দিক থেকেই অপরাধ। হতাশাগ্রস্ত মানুষ যখন আত্মহত্যা করার চিন্তা করেন, সেই সময় তিনি যদি অজু করে দুই রাকাত নামাজ আদায় করেন, তাহলে আত্মহত্যার পথ থেকে ফিরে আসতে পারেন।
বগুড়া ইসকনের অধ্যক্ষ ক্ষরাজিত কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী বলেন, ধর্মীয় অনুশাসন মেনে জীবন যাপন করতে হবে। মনে অশান্তি থাকলে আত্মহত্যার প্রবণতা দেখা দেয়। অধিক টাকা, ধনসম্পদ, লোভ-হিংসা মানুষকে অশান্তির দিকে নিয়ে যায়। সেখান থেকে সরে আসতে হবে। তাহলেই আত্মহত্যার প্রবণতা কমবে।
আত্মহত্যা প্রতিরোধে জেলার ১২টি থানার পুলিশ ২০২১ সালে বিভিন্ন গ্রামপর্যায়ে বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে ৫৯৫টি সচেতনতামূলক সভা করেছে। তারপরও ওই বছর ২৫১ জন আত্মহত্যা করেছে। ২০২২ সালে এ ধরনের সভা করা হয় ৭৪২টি। সে বছর আত্মহত্যাকারী মানুষের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৫২ জন।
এ বিষয়ে বগুড়া জেলা পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘পুলিশের পক্ষ থেকে ১২টি থানার প্রতিটি ইউনিয়ন এবং ১২টি পৌরসভার ওয়ার্ড পর্যায়ে মানুষকে প্রতিনিয়ত সচেতন করে যাচ্ছি। সব সময় বলা হচ্ছে আইন ও ধর্মীয় দৃষ্টিতে আত্মহত্যা করা অপরাধ। আত্মহত্যার প্রবণতা কমাতে পুলিশ ছাড়াও জনপ্রতিনিধি ও সুশীল সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে।’
কলেজশিক্ষক সোবহানা লীনা হাসিনও বললেন, শুধু পুলিশের ওপর দায়িত্ব দিয়ে বসে থাকলে হবে না, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে কাউন্সেলর নিয়োগ করে কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যা থেকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব। এ ছাড়া সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে কাউন্সেলিং করতে মসজিদ কমিটি এবং ইউনিয়ন পরিষদ থেকে উদ্যোগ নিতে হবে।
বিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
১৬ দিন আগেগাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪দেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
২০ নভেম্বর ২০২৪