Ajker Patrika

প্রথমেই ফাইনালে পাকিস্তান

রানা আব্বাস, অ্যাডিলেড থেকে
প্রথমেই ফাইনালে পাকিস্তান

টুর্নামেন্টজুড়ে বাবর আজম-মোহাম্মদ রিজওয়ানের নিষ্প্রভতা নিয়ে অনেক কথাই হচ্ছিল। গতকাল সেমিফাইনালের আগে একই প্রসঙ্গ উঠলে পাকিস্তান দলের মেন্টর ম্যাথু হেইডেন ২০০৭ বিশ্বকাপে তাঁর উদ্বোধনী সঙ্গী অ্যাডাম গিলক্রিস্টের কথা মনে করিয়ে দিয়েছিলেন। টুর্নামেন্টে গিলক্রিস্ট তাঁর সেরা ইনিংসটা খেলেছিলেন একেবারে ফাইনালে। হেইডেন আশাবাদী ছিলেন, বাবর-রিজওয়ানেরা খেলে দেবেন বড় মঞ্চেই।

এবার বিশ্বকাপের থিম অনুযায়ী বড় ম্যাচেই বড় কিছু করে দেখালেন বাবর-আজম। এ দুজনের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে কিউইদের ৭ উইকেটে হারিয়ে আরেকটি বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠে গেল পাকিস্তান। আর তাতে ১৯৯২ বিশ্বকাপের স্মৃতি আরও জোরেশোরে ফিরে আসছে অস্ট্রেলিয়ায়। ৩০ বছর আগে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়েই ফাইনালে উঠেছিল পাকিস্তান। মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে (এমসিজি) আগামী রোববারের ফাইনালে বাবরদের হাতেই শিরোপা উঠবে কি না, এখন বলা কঠিন। তবে গতকাল সিডনির গ্যালারিতে এক দর্শক প্ল্যাকার্ডে লিখেছেন, ‘ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হবে—১৯৯২ ও ২০২২।’ 

সিডনিতে নিউজিল্যান্ডকে হারাতে পাকিস্তান পেয়েছিল গ্যালারিতে বিপুল সমর্থন। সিডনির গ্যালারি রূপ নিয়েছিল লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে। শুকনো, ন্যাড়া উইকেট দেখে কিউইরা আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিলেও পাকিস্তানি ফাস্ট বোলিংয়ের বিপক্ষে শুরুতে খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি তারা। রিভার্স সুইংয়ে এতটাই চাপে রাখলেন শাহিন-নাসিম-হারিসরা, পাওয়ার প্লেতে ২ উইকেটে ৩৮ রানের বেশি তুলতে পারেননি নিউজিল্যান্ড ব্যাটাররা।

কিউইদের ওপর এই চাপ অব্যাহত থাকল ৭ থেকে ১৫ ওভারেও, এ সময় নিউজিল্যান্ড তুলতে পারে ১ উইকেটে ৬৮ রান। শেষ ৪ ওভারে ৪৬ তুলে স্কোরটা কোনোভাবে ভদ্রস্থ করেছে নিউজিল্যান্ড। ডেরেল মিচেল ৩৫ বলে অপরাজিত ৫৩ রানের ইনিংসটাই সবচেয়ে উজ্জ্বল দিক কিউইদের।

দিস ইজ দ্য বিগ টাইম—বিশ্বকাপের এই থিমকে যথার্থ প্রমাণ করে বাবর-রিজওয়ান জ্বলে উঠলেন ‘বিগ টাইমে’ই। পুরো টুর্নামেন্টে যাঁদের ওপেনিং জুটি মাত্র একবার ৫০ পেরিয়েছে, গতকাল তাঁরা পাত্তাই দিলেন না নিউজিল্যান্ডের বোলারদের। ১৫৩ রান তাড়া করতে নেমে স্বচ্ছন্দে ম্যাচটই নিজেদের মুঠোয় পুড়ে নিলেন। দুজনের ওপেনিং জুটি তুলে দিল ৭৬ বলে ১০৫ রান। এ নিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তৃতীয়বারের মতো শতরানের জুটি গড়ে বাবর-রিজওয়ানের ওপেনিং জুটি পেছনে ফেলেছে হেইডেন-গিলক্রিস্টের দুটি শতরানের জুটিকে। এ সময়ে ধারাভাষ্যকক্ষে থাকা গিলক্রিস্টকে বেশ খুশিই দেখাল নতুন রেকর্ড দেখে।

বাবর-রিজওয়ান জুটি মনে করিয়ে দিচ্ছিল ১৯৯৯ বিশ্বকাপে সাঈদ আনোয়ার-ওয়াজাতুল্লাহ ওয়াস্তির সেই ১৯৪ রানের ওপেনিং জুটিকে। এ জুটির কাছে সেবার সেমিফাইনালে থেমেছিল নিউজিল্যান্ডের যাত্রা। এবার বাবর-রিজওয়ানের কাছে সেমি থেকে বিদায় নিল কিউইরা।

পাকিস্তান ফাইনালে ওঠায় সম্ভাবনা জেগেছে ভারত-পাকিস্তানের ফাইনালের। যদি তা-ই হয়, গতবার এশিয়ায় শিরোপার লড়াই হয়েছিল তাসমান পাড়ের দুই দেশের মধ্যে, এবার তাসমান পাড়ে হবে এশিয়ার দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর লড়াই। এটা নসাৎ হতে পারে একটিই উপায়ে, যদি আজ অ্যাডিলেডে ভারতকে হারিয়ে দেয় ইংল্যান্ড। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত