হাসান মামুন

এই নিবন্ধ লেখার সময় চট্টগ্রাম-১০ আসনের উপনির্বাচনে ভোট গ্রহণ চলছে। তাতে যথারীতি মাঠের বিরোধী দল বিএনপি অংশ নিচ্ছে না ঘোষণা দিয়েই আর সেটি হলো, এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়। জাতীয় নির্বাচনের আর মাত্র চার-পাঁচ মাস বাকি। এ অবস্থায় এমন উপনির্বাচনের আয়োজন বাধ্যতামূলক হলেও দুর্ভাগ্যজনক বলা যায়।
যিনি নির্বাচিত হবেন, তিনি হবেন মাত্র কয়েক মাসের এমপি। এতে প্রধান বিরোধী দল অংশ নিলে অবশ্য সরকারের জনপ্রিয়তার একটা পরীক্ষা হয়ে যেত জাতীয় নির্বাচনের আগমুহূর্তে। সেটা যখন হচ্ছে না, তখন দুশ্চিন্তা ভোট পড়ার হার নিয়ে।
কিছুদিন আগে রাজধানীর একটি আসনেও উপনির্বাচন হলো। একজন আলোচিত প্রার্থীর কারণে সেটা অবশ্য কিছুটা আলোচনায় ছিল শুরু থেকে। নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে বলেও মনে হয়েছিল। তারপরও সেখানে ১২ শতাংশ ভোট পড়েনি। অনেকে বলছেন, সেখানে কিছু জাল ভোটও পড়েছে। ভোটের প্রকৃত হার নাকি আরও কম। চট্টগ্রাম উপনির্বাচনে কত শতাংশ ভোট পড়বে, তা জানা যাবে এ লেখা প্রকাশের আগেই। যেহেতু প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন সেখানে হচ্ছে না, তাই ক্ষমতাসীন দলের নেতারা জয়ের ব্যাপারে একরকম নিশ্চিত।
কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোটাই তাঁদের জন্য চ্যালেঞ্জের। কেন্দ্র থেকেও স্থানীয় নেতাদের কাছে ভোটের হার বাড়ানোর তাগিদ থাকতে পারে। তবে সে লক্ষ্য অর্জনে অনিয়ম করাটা আবার বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে উপনির্বাচন, এমনকি স্থানীয় নির্বাচনের ওপরও নানা দিক থেকে মনিটরিং চলছে। কারচুপি না হয়ে ভোট কম পড়া বরং ভালো। সে ক্ষেত্রে নির্বাচন তো বাতিল হচ্ছে না। এ দেশে ন্যূনতম ভোটের বিধান এখনো হয়নি। এর আগে গত এপ্রিলে চট্টগ্রাম-৮ আসনেও উপনির্বাচন হয়। তাতে অবশ্য ভোট পড়ে ঢাকা-১৭ উপনির্বাচনের চেয়ে কিছু বেশি, প্রায় ১৫ শতাংশ। এতে হতাশ হয়েছিল নির্বাচন নিয়ে উৎসাহী সবাই; তবে নির্বাচনটি অবৈধ হয়নি।
গণতন্ত্রে বৈধতার পাশাপাশি গ্রহণযোগ্যতার প্রশ্ন আছে বলেই এত কথা বলা। নির্বাচন গ্রহণযোগ্য না হলে অর্থবহও হয় না। আর শুধু নির্বাচনের মাধ্যমেই গণতন্ত্র সফলতা অর্জন করে না। তাকে আরও কিছু শর্ত পূরণ করতে হয়। সর্বোপরি গণতন্ত্রচর্চাটা চালিয়ে যেতে হয় সব ক্ষেত্রে। তাহলেই গভীরতা লাভ করে এটা হয়ে উঠতে পারে একটি জীবনধারা। দুর্ভাগ্যবশত আমরা অবস্থান করছি সেখান থেকে অনেক দূরে।
বাংলাদেশ আয়তনে ছোট হলেও জনসংখ্যা ও ভোটারের দিক থেকে এক বিশাল দেশ। দেশের কথা ভুলে চট্টগ্রাম-১০ আসনের কথাই যদি ধরি, তাহলে দেখব ওখানে ভোটার ৪ লাখ ৮৮ হাজার। এদিকে আসছে সেপ্টেম্বরে মালদ্বীপে হতে যাচ্ছে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। তাতে ভোট দেবেন মাত্র ২ লাখ ৮০ হাজার ভোটার। মালদ্বীপের চেয়েও ২ লাখ ভোটার বেশি আমাদের একটি সংসদীয় আসনে! সব আসনে ভোটার অবশ্য এত বেশি নয়। কিন্তু সারা দেশে কত ভোটার আমাদের! বর্তমানে দেশে মোট ভোটার ১১ কোটি ৯১ লাখের বেশি। দেশে জনসংখ্যা প্রায় ১৭ কোটি; ভোটার তার প্রায় ৭০ শতাংশ।
এ দেশে ভোটার বেশি শুধু তা-ই নয়; ভোটের হারও সাধারণভাবে বেশি। প্রধান সব রাজনৈতিক দল অংশ নিলে, বেছে নেওয়ার মতো যথেষ্টসংখ্যক বিশ্বাসযোগ্য প্রার্থী থাকলে, পরিবেশ শান্তিপূর্ণ হলে, এখানে মানুষ উৎসব করে ভোট দিতে যান। সে ক্ষেত্রে নারী ভোটারের অংশগ্রহণও বাড়ে। বাড়ে প্রবীণদের ভোটাধিকার প্রয়োগ।
দেশে নারী ভোটার তো পুরুষের প্রায় সমান। নির্বাচনে তাঁদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হলে শুধু প্রধান সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করলে হবে না, নির্বাচনের পরিবেশ ভোটের দিন পর্যন্ত রাখতে হবে শান্তিপূর্ণ। ভোটের পরও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ধরে রাখাটা নির্বাচন কমিশন ও সরকারের কর্তব্য।
আমরা দেখেছি, মোটামুটি গ্রহণযোগ্য পরিবেশে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের পরও সহিংসতা হয়েছে দেশে। নতুন করে ক্ষমতায় এসে যাওয়ারা প্রতিশোধ নিতে শুরু করে বিজয়ের মুহূর্ত থেকেই। কখনো কখনো সহিংসতা চালানো হয় ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুর ওপর। সেটা আমাদের কলঙ্ক বৈকি।
যা-ই হোক, নির্বাচন ঠিকমতো হলে এ দেশে ভোটের হার ৯০ শতাংশের কাছাকাছি চলে যেতেও দেখা যায়। সেটা ঘটেছিল সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে। ভোট পড়েছিল ৮৭ শতাংশ। এটাই দেশে ভোটের সর্বোচ্চ হার। লক্ষ করব, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত চারটি নির্বাচনে ভোটের হার ক্রমে বেড়েছে। এ ধারার প্রথম নির্বাচনে ভোটের হার যদিও ছিল ৫৫ শতাংশ; তবে সেটা বাড়তে বাড়তে হয়ে ওঠে ৮৭ শতাংশ।
সেনাশাসক এরশাদের পতনের পর আন্দোলনকারী দলগুলোর ঐতিহাসিক সমঝোতার ভিত্তিতে গঠিত সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ভোট কেন অপেক্ষাকৃত কম পড়েছিল, তা নিয়ে গবেষণা হয়েছে কি না, জানি না। তবে মানতে হবে, সেই নির্বাচনের ভেতর দিয়ে আমরা অন্তত একটি নির্বাচনী গণতন্ত্রে প্রবেশ করেছিলাম। এ আশায়ও বুক বেঁধেছিলাম যে ভোটের মাধ্যমে সরকার গঠন বা পরিবর্তনের সুযোগ আর হাতছাড়া হবে না। সেটা ফিরে পাওয়ার জন্য আন্দোলনেও শামিল হতে হবে না। এ অবস্থায় আমরা হয়তো সংগ্রামে অবতীর্ণ হব নতুন কিছু অধিকার আদায়ে।
কিন্তু হায়! সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি নতুন করে সামনে এসেছে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের চরম বিতর্কিত নির্বাচনের অভিজ্ঞতার পর। খালেদা জিয়া নেতৃত্বাধীন প্রথম শাসনামলের পর অনুষ্ঠিত ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন নিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীরা যেমন গর্ব করেন না; তেমনি ওই দুটি নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও আওয়ামী লীগের লোকজন এখন আর তর্ক করার উৎসাহ পান না। তাঁরা বরং বলছেন, এবারের নির্বাচনটি সুষ্ঠু হবে। সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হলে তো সেটা অংশগ্রহণমূলকও হওয়ার কথা।
আর নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে তখনই, যখন দেশের প্রধান দলগুলো এতে অবাধে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবে। সব রাজনৈতিক দল সরকার গঠনের জন্য অবশ্য নির্বাচনে আসে না। অল্প কিছু আসনে জিতে সংসদে বসে ভূমিকা রাখার জন্যও কোনো দল নির্বাচনে অংশ নিতে পারে। যে বামপন্থীরা পুঁজিবাদী দেশের নির্বাচনব্যবস্থা নিয়ে সমালোচনামুখর, তারাও এতে অংশ নেয় এমনকি নিজেদের জনসমর্থন যাচাইয়ের জন্য। তবে ক্ষমতাপ্রত্যাশী দল এতে অংশ নেয় সরকার গঠনের জন্যই।
ক্ষমতায় যাওয়া সম্ভব হবে না জেনেও এসব দল নির্বাচনে আসে অন্তত প্রধান বিরোধী দলের অবস্থান ধরে রাখতে। এমন দুটি দলের একটি যদি নির্বাচনের বাইরে থাকে, তখনই আমরা বলি—এটি অংশগ্রহণমূলক হলো না। আগামী নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক করার ওপর যখন দেশ-বিদেশ থেকে জোর দেওয়া হচ্ছে, তখন বলা যেতে পারে এটাই হলো এর ভালো সংজ্ঞা।
আসলে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনই নির্বাচন। সরকার গঠন ও প্রধান বিরোধী দল হিসেবে আবির্ভূত হতে সক্ষম দুটি দলের একটিকেও নির্বাচনের বাইরে রেখে এটা অনুষ্ঠানের সত্যি কোনো মানে হয় না। তাতে জনগণের করের অর্থের অপচয়ই হয় আসলে।
কেননা এতে জনপ্রতিনিধিত্বমূলক সংসদ গঠন সম্ভব হয় না; সরকারে জনগণের ইচ্ছার প্রকাশও ঘটে না। এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করা বা হওয়াটা গণতন্ত্রচর্চার জন্য অশুভ বৈকি। এটা রাজনীতি ও দেশকে গভীর সংকটেই নিক্ষেপ করে, যেখান থেকে উঠে আসতে লেগে যেতে পারে দীর্ঘ সময়। দেশে এমন একটা পরিস্থিতিরই সৃষ্টি হয়েছে—ইত্যবসরে বড় অর্থনৈতিক অগ্রগতি সাধিত হলেও।
গণতন্ত্রচর্চায় যেখানে আমাদের আরও কিছুটা এগিয়ে যাওয়ার কথা ছিল, সেখানে বরং পিছিয়ে চলে গিয়েছি ১৯৯০ সালের দিকে।পরিস্থিতিটা তখনকার চেয়েও জটিল এ জন্য যে প্রধান যে দুই পক্ষের গুরুত্বপূর্ণ সমঝোতায় গণতন্ত্রে উত্তরণের পথ তৈরি হয়েছিল, তার একটি পক্ষ এখন রাষ্ট্রক্ষমতায় এবং নির্বাচন অনুষ্ঠানের গ্রহণযোগ্য উপায় নিয়ে তারা অবস্থান করছে পরস্পরের বিপরীতে।
এ অবস্থায় কীভাবে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করা যাবে? তবে অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, কিছুটা অদ্ভুত ব্যবস্থা হলেও নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনগুলোই এ দেশে কমবেশি গ্রহণযোগ্য হয়েছে। তাতে ভোটের হারও বাড়তে বাড়তে করেছে রেকর্ড। কম্বোডিয়ার মতো দেশেও ভোটের হার অবশ্য বেশি। কিন্তু সেখানে কীভাবে কী হয়, সেটা তো সবারই জানা।
আমরা বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে কথা বলছি, যার জন্ম হয়েছিল রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের ভেতর দিয়ে এবং এর ন্যূনতম অঙ্গীকার ছিল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা। আর গ্রহণযোগ্য ভোট ছাড়া নিশ্চয়ই গণতন্ত্রচর্চার পথ উন্মুক্ত করা যাবে না। তেমন ভোট নিশ্চিত করার পরও আরও অনেক কিছুর চাহিদা আমাদের থাকবে। তবে ভোটাধিকার সুরক্ষার ইস্যুটি থাকবে সেই তালিকার শীর্ষে। তারপর যেতে হবে দীর্ঘ সংস্কার ও পুনর্গঠনের ভেতর দিয়ে।

এই নিবন্ধ লেখার সময় চট্টগ্রাম-১০ আসনের উপনির্বাচনে ভোট গ্রহণ চলছে। তাতে যথারীতি মাঠের বিরোধী দল বিএনপি অংশ নিচ্ছে না ঘোষণা দিয়েই আর সেটি হলো, এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়। জাতীয় নির্বাচনের আর মাত্র চার-পাঁচ মাস বাকি। এ অবস্থায় এমন উপনির্বাচনের আয়োজন বাধ্যতামূলক হলেও দুর্ভাগ্যজনক বলা যায়।
যিনি নির্বাচিত হবেন, তিনি হবেন মাত্র কয়েক মাসের এমপি। এতে প্রধান বিরোধী দল অংশ নিলে অবশ্য সরকারের জনপ্রিয়তার একটা পরীক্ষা হয়ে যেত জাতীয় নির্বাচনের আগমুহূর্তে। সেটা যখন হচ্ছে না, তখন দুশ্চিন্তা ভোট পড়ার হার নিয়ে।
কিছুদিন আগে রাজধানীর একটি আসনেও উপনির্বাচন হলো। একজন আলোচিত প্রার্থীর কারণে সেটা অবশ্য কিছুটা আলোচনায় ছিল শুরু থেকে। নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে বলেও মনে হয়েছিল। তারপরও সেখানে ১২ শতাংশ ভোট পড়েনি। অনেকে বলছেন, সেখানে কিছু জাল ভোটও পড়েছে। ভোটের প্রকৃত হার নাকি আরও কম। চট্টগ্রাম উপনির্বাচনে কত শতাংশ ভোট পড়বে, তা জানা যাবে এ লেখা প্রকাশের আগেই। যেহেতু প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন সেখানে হচ্ছে না, তাই ক্ষমতাসীন দলের নেতারা জয়ের ব্যাপারে একরকম নিশ্চিত।
কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোটাই তাঁদের জন্য চ্যালেঞ্জের। কেন্দ্র থেকেও স্থানীয় নেতাদের কাছে ভোটের হার বাড়ানোর তাগিদ থাকতে পারে। তবে সে লক্ষ্য অর্জনে অনিয়ম করাটা আবার বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে উপনির্বাচন, এমনকি স্থানীয় নির্বাচনের ওপরও নানা দিক থেকে মনিটরিং চলছে। কারচুপি না হয়ে ভোট কম পড়া বরং ভালো। সে ক্ষেত্রে নির্বাচন তো বাতিল হচ্ছে না। এ দেশে ন্যূনতম ভোটের বিধান এখনো হয়নি। এর আগে গত এপ্রিলে চট্টগ্রাম-৮ আসনেও উপনির্বাচন হয়। তাতে অবশ্য ভোট পড়ে ঢাকা-১৭ উপনির্বাচনের চেয়ে কিছু বেশি, প্রায় ১৫ শতাংশ। এতে হতাশ হয়েছিল নির্বাচন নিয়ে উৎসাহী সবাই; তবে নির্বাচনটি অবৈধ হয়নি।
গণতন্ত্রে বৈধতার পাশাপাশি গ্রহণযোগ্যতার প্রশ্ন আছে বলেই এত কথা বলা। নির্বাচন গ্রহণযোগ্য না হলে অর্থবহও হয় না। আর শুধু নির্বাচনের মাধ্যমেই গণতন্ত্র সফলতা অর্জন করে না। তাকে আরও কিছু শর্ত পূরণ করতে হয়। সর্বোপরি গণতন্ত্রচর্চাটা চালিয়ে যেতে হয় সব ক্ষেত্রে। তাহলেই গভীরতা লাভ করে এটা হয়ে উঠতে পারে একটি জীবনধারা। দুর্ভাগ্যবশত আমরা অবস্থান করছি সেখান থেকে অনেক দূরে।
বাংলাদেশ আয়তনে ছোট হলেও জনসংখ্যা ও ভোটারের দিক থেকে এক বিশাল দেশ। দেশের কথা ভুলে চট্টগ্রাম-১০ আসনের কথাই যদি ধরি, তাহলে দেখব ওখানে ভোটার ৪ লাখ ৮৮ হাজার। এদিকে আসছে সেপ্টেম্বরে মালদ্বীপে হতে যাচ্ছে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। তাতে ভোট দেবেন মাত্র ২ লাখ ৮০ হাজার ভোটার। মালদ্বীপের চেয়েও ২ লাখ ভোটার বেশি আমাদের একটি সংসদীয় আসনে! সব আসনে ভোটার অবশ্য এত বেশি নয়। কিন্তু সারা দেশে কত ভোটার আমাদের! বর্তমানে দেশে মোট ভোটার ১১ কোটি ৯১ লাখের বেশি। দেশে জনসংখ্যা প্রায় ১৭ কোটি; ভোটার তার প্রায় ৭০ শতাংশ।
এ দেশে ভোটার বেশি শুধু তা-ই নয়; ভোটের হারও সাধারণভাবে বেশি। প্রধান সব রাজনৈতিক দল অংশ নিলে, বেছে নেওয়ার মতো যথেষ্টসংখ্যক বিশ্বাসযোগ্য প্রার্থী থাকলে, পরিবেশ শান্তিপূর্ণ হলে, এখানে মানুষ উৎসব করে ভোট দিতে যান। সে ক্ষেত্রে নারী ভোটারের অংশগ্রহণও বাড়ে। বাড়ে প্রবীণদের ভোটাধিকার প্রয়োগ।
দেশে নারী ভোটার তো পুরুষের প্রায় সমান। নির্বাচনে তাঁদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হলে শুধু প্রধান সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করলে হবে না, নির্বাচনের পরিবেশ ভোটের দিন পর্যন্ত রাখতে হবে শান্তিপূর্ণ। ভোটের পরও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ধরে রাখাটা নির্বাচন কমিশন ও সরকারের কর্তব্য।
আমরা দেখেছি, মোটামুটি গ্রহণযোগ্য পরিবেশে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের পরও সহিংসতা হয়েছে দেশে। নতুন করে ক্ষমতায় এসে যাওয়ারা প্রতিশোধ নিতে শুরু করে বিজয়ের মুহূর্ত থেকেই। কখনো কখনো সহিংসতা চালানো হয় ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুর ওপর। সেটা আমাদের কলঙ্ক বৈকি।
যা-ই হোক, নির্বাচন ঠিকমতো হলে এ দেশে ভোটের হার ৯০ শতাংশের কাছাকাছি চলে যেতেও দেখা যায়। সেটা ঘটেছিল সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে। ভোট পড়েছিল ৮৭ শতাংশ। এটাই দেশে ভোটের সর্বোচ্চ হার। লক্ষ করব, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত চারটি নির্বাচনে ভোটের হার ক্রমে বেড়েছে। এ ধারার প্রথম নির্বাচনে ভোটের হার যদিও ছিল ৫৫ শতাংশ; তবে সেটা বাড়তে বাড়তে হয়ে ওঠে ৮৭ শতাংশ।
সেনাশাসক এরশাদের পতনের পর আন্দোলনকারী দলগুলোর ঐতিহাসিক সমঝোতার ভিত্তিতে গঠিত সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ভোট কেন অপেক্ষাকৃত কম পড়েছিল, তা নিয়ে গবেষণা হয়েছে কি না, জানি না। তবে মানতে হবে, সেই নির্বাচনের ভেতর দিয়ে আমরা অন্তত একটি নির্বাচনী গণতন্ত্রে প্রবেশ করেছিলাম। এ আশায়ও বুক বেঁধেছিলাম যে ভোটের মাধ্যমে সরকার গঠন বা পরিবর্তনের সুযোগ আর হাতছাড়া হবে না। সেটা ফিরে পাওয়ার জন্য আন্দোলনেও শামিল হতে হবে না। এ অবস্থায় আমরা হয়তো সংগ্রামে অবতীর্ণ হব নতুন কিছু অধিকার আদায়ে।
কিন্তু হায়! সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি নতুন করে সামনে এসেছে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের চরম বিতর্কিত নির্বাচনের অভিজ্ঞতার পর। খালেদা জিয়া নেতৃত্বাধীন প্রথম শাসনামলের পর অনুষ্ঠিত ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন নিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীরা যেমন গর্ব করেন না; তেমনি ওই দুটি নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও আওয়ামী লীগের লোকজন এখন আর তর্ক করার উৎসাহ পান না। তাঁরা বরং বলছেন, এবারের নির্বাচনটি সুষ্ঠু হবে। সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হলে তো সেটা অংশগ্রহণমূলকও হওয়ার কথা।
আর নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে তখনই, যখন দেশের প্রধান দলগুলো এতে অবাধে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবে। সব রাজনৈতিক দল সরকার গঠনের জন্য অবশ্য নির্বাচনে আসে না। অল্প কিছু আসনে জিতে সংসদে বসে ভূমিকা রাখার জন্যও কোনো দল নির্বাচনে অংশ নিতে পারে। যে বামপন্থীরা পুঁজিবাদী দেশের নির্বাচনব্যবস্থা নিয়ে সমালোচনামুখর, তারাও এতে অংশ নেয় এমনকি নিজেদের জনসমর্থন যাচাইয়ের জন্য। তবে ক্ষমতাপ্রত্যাশী দল এতে অংশ নেয় সরকার গঠনের জন্যই।
ক্ষমতায় যাওয়া সম্ভব হবে না জেনেও এসব দল নির্বাচনে আসে অন্তত প্রধান বিরোধী দলের অবস্থান ধরে রাখতে। এমন দুটি দলের একটি যদি নির্বাচনের বাইরে থাকে, তখনই আমরা বলি—এটি অংশগ্রহণমূলক হলো না। আগামী নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক করার ওপর যখন দেশ-বিদেশ থেকে জোর দেওয়া হচ্ছে, তখন বলা যেতে পারে এটাই হলো এর ভালো সংজ্ঞা।
আসলে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনই নির্বাচন। সরকার গঠন ও প্রধান বিরোধী দল হিসেবে আবির্ভূত হতে সক্ষম দুটি দলের একটিকেও নির্বাচনের বাইরে রেখে এটা অনুষ্ঠানের সত্যি কোনো মানে হয় না। তাতে জনগণের করের অর্থের অপচয়ই হয় আসলে।
কেননা এতে জনপ্রতিনিধিত্বমূলক সংসদ গঠন সম্ভব হয় না; সরকারে জনগণের ইচ্ছার প্রকাশও ঘটে না। এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করা বা হওয়াটা গণতন্ত্রচর্চার জন্য অশুভ বৈকি। এটা রাজনীতি ও দেশকে গভীর সংকটেই নিক্ষেপ করে, যেখান থেকে উঠে আসতে লেগে যেতে পারে দীর্ঘ সময়। দেশে এমন একটা পরিস্থিতিরই সৃষ্টি হয়েছে—ইত্যবসরে বড় অর্থনৈতিক অগ্রগতি সাধিত হলেও।
গণতন্ত্রচর্চায় যেখানে আমাদের আরও কিছুটা এগিয়ে যাওয়ার কথা ছিল, সেখানে বরং পিছিয়ে চলে গিয়েছি ১৯৯০ সালের দিকে।পরিস্থিতিটা তখনকার চেয়েও জটিল এ জন্য যে প্রধান যে দুই পক্ষের গুরুত্বপূর্ণ সমঝোতায় গণতন্ত্রে উত্তরণের পথ তৈরি হয়েছিল, তার একটি পক্ষ এখন রাষ্ট্রক্ষমতায় এবং নির্বাচন অনুষ্ঠানের গ্রহণযোগ্য উপায় নিয়ে তারা অবস্থান করছে পরস্পরের বিপরীতে।
এ অবস্থায় কীভাবে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করা যাবে? তবে অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, কিছুটা অদ্ভুত ব্যবস্থা হলেও নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনগুলোই এ দেশে কমবেশি গ্রহণযোগ্য হয়েছে। তাতে ভোটের হারও বাড়তে বাড়তে করেছে রেকর্ড। কম্বোডিয়ার মতো দেশেও ভোটের হার অবশ্য বেশি। কিন্তু সেখানে কীভাবে কী হয়, সেটা তো সবারই জানা।
আমরা বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে কথা বলছি, যার জন্ম হয়েছিল রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের ভেতর দিয়ে এবং এর ন্যূনতম অঙ্গীকার ছিল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা। আর গ্রহণযোগ্য ভোট ছাড়া নিশ্চয়ই গণতন্ত্রচর্চার পথ উন্মুক্ত করা যাবে না। তেমন ভোট নিশ্চিত করার পরও আরও অনেক কিছুর চাহিদা আমাদের থাকবে। তবে ভোটাধিকার সুরক্ষার ইস্যুটি থাকবে সেই তালিকার শীর্ষে। তারপর যেতে হবে দীর্ঘ সংস্কার ও পুনর্গঠনের ভেতর দিয়ে।
হাসান মামুন

এই নিবন্ধ লেখার সময় চট্টগ্রাম-১০ আসনের উপনির্বাচনে ভোট গ্রহণ চলছে। তাতে যথারীতি মাঠের বিরোধী দল বিএনপি অংশ নিচ্ছে না ঘোষণা দিয়েই আর সেটি হলো, এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়। জাতীয় নির্বাচনের আর মাত্র চার-পাঁচ মাস বাকি। এ অবস্থায় এমন উপনির্বাচনের আয়োজন বাধ্যতামূলক হলেও দুর্ভাগ্যজনক বলা যায়।
যিনি নির্বাচিত হবেন, তিনি হবেন মাত্র কয়েক মাসের এমপি। এতে প্রধান বিরোধী দল অংশ নিলে অবশ্য সরকারের জনপ্রিয়তার একটা পরীক্ষা হয়ে যেত জাতীয় নির্বাচনের আগমুহূর্তে। সেটা যখন হচ্ছে না, তখন দুশ্চিন্তা ভোট পড়ার হার নিয়ে।
কিছুদিন আগে রাজধানীর একটি আসনেও উপনির্বাচন হলো। একজন আলোচিত প্রার্থীর কারণে সেটা অবশ্য কিছুটা আলোচনায় ছিল শুরু থেকে। নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে বলেও মনে হয়েছিল। তারপরও সেখানে ১২ শতাংশ ভোট পড়েনি। অনেকে বলছেন, সেখানে কিছু জাল ভোটও পড়েছে। ভোটের প্রকৃত হার নাকি আরও কম। চট্টগ্রাম উপনির্বাচনে কত শতাংশ ভোট পড়বে, তা জানা যাবে এ লেখা প্রকাশের আগেই। যেহেতু প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন সেখানে হচ্ছে না, তাই ক্ষমতাসীন দলের নেতারা জয়ের ব্যাপারে একরকম নিশ্চিত।
কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোটাই তাঁদের জন্য চ্যালেঞ্জের। কেন্দ্র থেকেও স্থানীয় নেতাদের কাছে ভোটের হার বাড়ানোর তাগিদ থাকতে পারে। তবে সে লক্ষ্য অর্জনে অনিয়ম করাটা আবার বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে উপনির্বাচন, এমনকি স্থানীয় নির্বাচনের ওপরও নানা দিক থেকে মনিটরিং চলছে। কারচুপি না হয়ে ভোট কম পড়া বরং ভালো। সে ক্ষেত্রে নির্বাচন তো বাতিল হচ্ছে না। এ দেশে ন্যূনতম ভোটের বিধান এখনো হয়নি। এর আগে গত এপ্রিলে চট্টগ্রাম-৮ আসনেও উপনির্বাচন হয়। তাতে অবশ্য ভোট পড়ে ঢাকা-১৭ উপনির্বাচনের চেয়ে কিছু বেশি, প্রায় ১৫ শতাংশ। এতে হতাশ হয়েছিল নির্বাচন নিয়ে উৎসাহী সবাই; তবে নির্বাচনটি অবৈধ হয়নি।
গণতন্ত্রে বৈধতার পাশাপাশি গ্রহণযোগ্যতার প্রশ্ন আছে বলেই এত কথা বলা। নির্বাচন গ্রহণযোগ্য না হলে অর্থবহও হয় না। আর শুধু নির্বাচনের মাধ্যমেই গণতন্ত্র সফলতা অর্জন করে না। তাকে আরও কিছু শর্ত পূরণ করতে হয়। সর্বোপরি গণতন্ত্রচর্চাটা চালিয়ে যেতে হয় সব ক্ষেত্রে। তাহলেই গভীরতা লাভ করে এটা হয়ে উঠতে পারে একটি জীবনধারা। দুর্ভাগ্যবশত আমরা অবস্থান করছি সেখান থেকে অনেক দূরে।
বাংলাদেশ আয়তনে ছোট হলেও জনসংখ্যা ও ভোটারের দিক থেকে এক বিশাল দেশ। দেশের কথা ভুলে চট্টগ্রাম-১০ আসনের কথাই যদি ধরি, তাহলে দেখব ওখানে ভোটার ৪ লাখ ৮৮ হাজার। এদিকে আসছে সেপ্টেম্বরে মালদ্বীপে হতে যাচ্ছে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। তাতে ভোট দেবেন মাত্র ২ লাখ ৮০ হাজার ভোটার। মালদ্বীপের চেয়েও ২ লাখ ভোটার বেশি আমাদের একটি সংসদীয় আসনে! সব আসনে ভোটার অবশ্য এত বেশি নয়। কিন্তু সারা দেশে কত ভোটার আমাদের! বর্তমানে দেশে মোট ভোটার ১১ কোটি ৯১ লাখের বেশি। দেশে জনসংখ্যা প্রায় ১৭ কোটি; ভোটার তার প্রায় ৭০ শতাংশ।
এ দেশে ভোটার বেশি শুধু তা-ই নয়; ভোটের হারও সাধারণভাবে বেশি। প্রধান সব রাজনৈতিক দল অংশ নিলে, বেছে নেওয়ার মতো যথেষ্টসংখ্যক বিশ্বাসযোগ্য প্রার্থী থাকলে, পরিবেশ শান্তিপূর্ণ হলে, এখানে মানুষ উৎসব করে ভোট দিতে যান। সে ক্ষেত্রে নারী ভোটারের অংশগ্রহণও বাড়ে। বাড়ে প্রবীণদের ভোটাধিকার প্রয়োগ।
দেশে নারী ভোটার তো পুরুষের প্রায় সমান। নির্বাচনে তাঁদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হলে শুধু প্রধান সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করলে হবে না, নির্বাচনের পরিবেশ ভোটের দিন পর্যন্ত রাখতে হবে শান্তিপূর্ণ। ভোটের পরও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ধরে রাখাটা নির্বাচন কমিশন ও সরকারের কর্তব্য।
আমরা দেখেছি, মোটামুটি গ্রহণযোগ্য পরিবেশে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের পরও সহিংসতা হয়েছে দেশে। নতুন করে ক্ষমতায় এসে যাওয়ারা প্রতিশোধ নিতে শুরু করে বিজয়ের মুহূর্ত থেকেই। কখনো কখনো সহিংসতা চালানো হয় ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুর ওপর। সেটা আমাদের কলঙ্ক বৈকি।
যা-ই হোক, নির্বাচন ঠিকমতো হলে এ দেশে ভোটের হার ৯০ শতাংশের কাছাকাছি চলে যেতেও দেখা যায়। সেটা ঘটেছিল সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে। ভোট পড়েছিল ৮৭ শতাংশ। এটাই দেশে ভোটের সর্বোচ্চ হার। লক্ষ করব, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত চারটি নির্বাচনে ভোটের হার ক্রমে বেড়েছে। এ ধারার প্রথম নির্বাচনে ভোটের হার যদিও ছিল ৫৫ শতাংশ; তবে সেটা বাড়তে বাড়তে হয়ে ওঠে ৮৭ শতাংশ।
সেনাশাসক এরশাদের পতনের পর আন্দোলনকারী দলগুলোর ঐতিহাসিক সমঝোতার ভিত্তিতে গঠিত সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ভোট কেন অপেক্ষাকৃত কম পড়েছিল, তা নিয়ে গবেষণা হয়েছে কি না, জানি না। তবে মানতে হবে, সেই নির্বাচনের ভেতর দিয়ে আমরা অন্তত একটি নির্বাচনী গণতন্ত্রে প্রবেশ করেছিলাম। এ আশায়ও বুক বেঁধেছিলাম যে ভোটের মাধ্যমে সরকার গঠন বা পরিবর্তনের সুযোগ আর হাতছাড়া হবে না। সেটা ফিরে পাওয়ার জন্য আন্দোলনেও শামিল হতে হবে না। এ অবস্থায় আমরা হয়তো সংগ্রামে অবতীর্ণ হব নতুন কিছু অধিকার আদায়ে।
কিন্তু হায়! সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি নতুন করে সামনে এসেছে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের চরম বিতর্কিত নির্বাচনের অভিজ্ঞতার পর। খালেদা জিয়া নেতৃত্বাধীন প্রথম শাসনামলের পর অনুষ্ঠিত ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন নিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীরা যেমন গর্ব করেন না; তেমনি ওই দুটি নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও আওয়ামী লীগের লোকজন এখন আর তর্ক করার উৎসাহ পান না। তাঁরা বরং বলছেন, এবারের নির্বাচনটি সুষ্ঠু হবে। সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হলে তো সেটা অংশগ্রহণমূলকও হওয়ার কথা।
আর নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে তখনই, যখন দেশের প্রধান দলগুলো এতে অবাধে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবে। সব রাজনৈতিক দল সরকার গঠনের জন্য অবশ্য নির্বাচনে আসে না। অল্প কিছু আসনে জিতে সংসদে বসে ভূমিকা রাখার জন্যও কোনো দল নির্বাচনে অংশ নিতে পারে। যে বামপন্থীরা পুঁজিবাদী দেশের নির্বাচনব্যবস্থা নিয়ে সমালোচনামুখর, তারাও এতে অংশ নেয় এমনকি নিজেদের জনসমর্থন যাচাইয়ের জন্য। তবে ক্ষমতাপ্রত্যাশী দল এতে অংশ নেয় সরকার গঠনের জন্যই।
ক্ষমতায় যাওয়া সম্ভব হবে না জেনেও এসব দল নির্বাচনে আসে অন্তত প্রধান বিরোধী দলের অবস্থান ধরে রাখতে। এমন দুটি দলের একটি যদি নির্বাচনের বাইরে থাকে, তখনই আমরা বলি—এটি অংশগ্রহণমূলক হলো না। আগামী নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক করার ওপর যখন দেশ-বিদেশ থেকে জোর দেওয়া হচ্ছে, তখন বলা যেতে পারে এটাই হলো এর ভালো সংজ্ঞা।
আসলে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনই নির্বাচন। সরকার গঠন ও প্রধান বিরোধী দল হিসেবে আবির্ভূত হতে সক্ষম দুটি দলের একটিকেও নির্বাচনের বাইরে রেখে এটা অনুষ্ঠানের সত্যি কোনো মানে হয় না। তাতে জনগণের করের অর্থের অপচয়ই হয় আসলে।
কেননা এতে জনপ্রতিনিধিত্বমূলক সংসদ গঠন সম্ভব হয় না; সরকারে জনগণের ইচ্ছার প্রকাশও ঘটে না। এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করা বা হওয়াটা গণতন্ত্রচর্চার জন্য অশুভ বৈকি। এটা রাজনীতি ও দেশকে গভীর সংকটেই নিক্ষেপ করে, যেখান থেকে উঠে আসতে লেগে যেতে পারে দীর্ঘ সময়। দেশে এমন একটা পরিস্থিতিরই সৃষ্টি হয়েছে—ইত্যবসরে বড় অর্থনৈতিক অগ্রগতি সাধিত হলেও।
গণতন্ত্রচর্চায় যেখানে আমাদের আরও কিছুটা এগিয়ে যাওয়ার কথা ছিল, সেখানে বরং পিছিয়ে চলে গিয়েছি ১৯৯০ সালের দিকে।পরিস্থিতিটা তখনকার চেয়েও জটিল এ জন্য যে প্রধান যে দুই পক্ষের গুরুত্বপূর্ণ সমঝোতায় গণতন্ত্রে উত্তরণের পথ তৈরি হয়েছিল, তার একটি পক্ষ এখন রাষ্ট্রক্ষমতায় এবং নির্বাচন অনুষ্ঠানের গ্রহণযোগ্য উপায় নিয়ে তারা অবস্থান করছে পরস্পরের বিপরীতে।
এ অবস্থায় কীভাবে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করা যাবে? তবে অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, কিছুটা অদ্ভুত ব্যবস্থা হলেও নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনগুলোই এ দেশে কমবেশি গ্রহণযোগ্য হয়েছে। তাতে ভোটের হারও বাড়তে বাড়তে করেছে রেকর্ড। কম্বোডিয়ার মতো দেশেও ভোটের হার অবশ্য বেশি। কিন্তু সেখানে কীভাবে কী হয়, সেটা তো সবারই জানা।
আমরা বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে কথা বলছি, যার জন্ম হয়েছিল রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের ভেতর দিয়ে এবং এর ন্যূনতম অঙ্গীকার ছিল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা। আর গ্রহণযোগ্য ভোট ছাড়া নিশ্চয়ই গণতন্ত্রচর্চার পথ উন্মুক্ত করা যাবে না। তেমন ভোট নিশ্চিত করার পরও আরও অনেক কিছুর চাহিদা আমাদের থাকবে। তবে ভোটাধিকার সুরক্ষার ইস্যুটি থাকবে সেই তালিকার শীর্ষে। তারপর যেতে হবে দীর্ঘ সংস্কার ও পুনর্গঠনের ভেতর দিয়ে।

এই নিবন্ধ লেখার সময় চট্টগ্রাম-১০ আসনের উপনির্বাচনে ভোট গ্রহণ চলছে। তাতে যথারীতি মাঠের বিরোধী দল বিএনপি অংশ নিচ্ছে না ঘোষণা দিয়েই আর সেটি হলো, এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়। জাতীয় নির্বাচনের আর মাত্র চার-পাঁচ মাস বাকি। এ অবস্থায় এমন উপনির্বাচনের আয়োজন বাধ্যতামূলক হলেও দুর্ভাগ্যজনক বলা যায়।
যিনি নির্বাচিত হবেন, তিনি হবেন মাত্র কয়েক মাসের এমপি। এতে প্রধান বিরোধী দল অংশ নিলে অবশ্য সরকারের জনপ্রিয়তার একটা পরীক্ষা হয়ে যেত জাতীয় নির্বাচনের আগমুহূর্তে। সেটা যখন হচ্ছে না, তখন দুশ্চিন্তা ভোট পড়ার হার নিয়ে।
কিছুদিন আগে রাজধানীর একটি আসনেও উপনির্বাচন হলো। একজন আলোচিত প্রার্থীর কারণে সেটা অবশ্য কিছুটা আলোচনায় ছিল শুরু থেকে। নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে বলেও মনে হয়েছিল। তারপরও সেখানে ১২ শতাংশ ভোট পড়েনি। অনেকে বলছেন, সেখানে কিছু জাল ভোটও পড়েছে। ভোটের প্রকৃত হার নাকি আরও কম। চট্টগ্রাম উপনির্বাচনে কত শতাংশ ভোট পড়বে, তা জানা যাবে এ লেখা প্রকাশের আগেই। যেহেতু প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন সেখানে হচ্ছে না, তাই ক্ষমতাসীন দলের নেতারা জয়ের ব্যাপারে একরকম নিশ্চিত।
কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি বাড়ানোটাই তাঁদের জন্য চ্যালেঞ্জের। কেন্দ্র থেকেও স্থানীয় নেতাদের কাছে ভোটের হার বাড়ানোর তাগিদ থাকতে পারে। তবে সে লক্ষ্য অর্জনে অনিয়ম করাটা আবার বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে উপনির্বাচন, এমনকি স্থানীয় নির্বাচনের ওপরও নানা দিক থেকে মনিটরিং চলছে। কারচুপি না হয়ে ভোট কম পড়া বরং ভালো। সে ক্ষেত্রে নির্বাচন তো বাতিল হচ্ছে না। এ দেশে ন্যূনতম ভোটের বিধান এখনো হয়নি। এর আগে গত এপ্রিলে চট্টগ্রাম-৮ আসনেও উপনির্বাচন হয়। তাতে অবশ্য ভোট পড়ে ঢাকা-১৭ উপনির্বাচনের চেয়ে কিছু বেশি, প্রায় ১৫ শতাংশ। এতে হতাশ হয়েছিল নির্বাচন নিয়ে উৎসাহী সবাই; তবে নির্বাচনটি অবৈধ হয়নি।
গণতন্ত্রে বৈধতার পাশাপাশি গ্রহণযোগ্যতার প্রশ্ন আছে বলেই এত কথা বলা। নির্বাচন গ্রহণযোগ্য না হলে অর্থবহও হয় না। আর শুধু নির্বাচনের মাধ্যমেই গণতন্ত্র সফলতা অর্জন করে না। তাকে আরও কিছু শর্ত পূরণ করতে হয়। সর্বোপরি গণতন্ত্রচর্চাটা চালিয়ে যেতে হয় সব ক্ষেত্রে। তাহলেই গভীরতা লাভ করে এটা হয়ে উঠতে পারে একটি জীবনধারা। দুর্ভাগ্যবশত আমরা অবস্থান করছি সেখান থেকে অনেক দূরে।
বাংলাদেশ আয়তনে ছোট হলেও জনসংখ্যা ও ভোটারের দিক থেকে এক বিশাল দেশ। দেশের কথা ভুলে চট্টগ্রাম-১০ আসনের কথাই যদি ধরি, তাহলে দেখব ওখানে ভোটার ৪ লাখ ৮৮ হাজার। এদিকে আসছে সেপ্টেম্বরে মালদ্বীপে হতে যাচ্ছে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। তাতে ভোট দেবেন মাত্র ২ লাখ ৮০ হাজার ভোটার। মালদ্বীপের চেয়েও ২ লাখ ভোটার বেশি আমাদের একটি সংসদীয় আসনে! সব আসনে ভোটার অবশ্য এত বেশি নয়। কিন্তু সারা দেশে কত ভোটার আমাদের! বর্তমানে দেশে মোট ভোটার ১১ কোটি ৯১ লাখের বেশি। দেশে জনসংখ্যা প্রায় ১৭ কোটি; ভোটার তার প্রায় ৭০ শতাংশ।
এ দেশে ভোটার বেশি শুধু তা-ই নয়; ভোটের হারও সাধারণভাবে বেশি। প্রধান সব রাজনৈতিক দল অংশ নিলে, বেছে নেওয়ার মতো যথেষ্টসংখ্যক বিশ্বাসযোগ্য প্রার্থী থাকলে, পরিবেশ শান্তিপূর্ণ হলে, এখানে মানুষ উৎসব করে ভোট দিতে যান। সে ক্ষেত্রে নারী ভোটারের অংশগ্রহণও বাড়ে। বাড়ে প্রবীণদের ভোটাধিকার প্রয়োগ।
দেশে নারী ভোটার তো পুরুষের প্রায় সমান। নির্বাচনে তাঁদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হলে শুধু প্রধান সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করলে হবে না, নির্বাচনের পরিবেশ ভোটের দিন পর্যন্ত রাখতে হবে শান্তিপূর্ণ। ভোটের পরও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ধরে রাখাটা নির্বাচন কমিশন ও সরকারের কর্তব্য।
আমরা দেখেছি, মোটামুটি গ্রহণযোগ্য পরিবেশে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের পরও সহিংসতা হয়েছে দেশে। নতুন করে ক্ষমতায় এসে যাওয়ারা প্রতিশোধ নিতে শুরু করে বিজয়ের মুহূর্ত থেকেই। কখনো কখনো সহিংসতা চালানো হয় ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুর ওপর। সেটা আমাদের কলঙ্ক বৈকি।
যা-ই হোক, নির্বাচন ঠিকমতো হলে এ দেশে ভোটের হার ৯০ শতাংশের কাছাকাছি চলে যেতেও দেখা যায়। সেটা ঘটেছিল সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে। ভোট পড়েছিল ৮৭ শতাংশ। এটাই দেশে ভোটের সর্বোচ্চ হার। লক্ষ করব, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত চারটি নির্বাচনে ভোটের হার ক্রমে বেড়েছে। এ ধারার প্রথম নির্বাচনে ভোটের হার যদিও ছিল ৫৫ শতাংশ; তবে সেটা বাড়তে বাড়তে হয়ে ওঠে ৮৭ শতাংশ।
সেনাশাসক এরশাদের পতনের পর আন্দোলনকারী দলগুলোর ঐতিহাসিক সমঝোতার ভিত্তিতে গঠিত সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ভোট কেন অপেক্ষাকৃত কম পড়েছিল, তা নিয়ে গবেষণা হয়েছে কি না, জানি না। তবে মানতে হবে, সেই নির্বাচনের ভেতর দিয়ে আমরা অন্তত একটি নির্বাচনী গণতন্ত্রে প্রবেশ করেছিলাম। এ আশায়ও বুক বেঁধেছিলাম যে ভোটের মাধ্যমে সরকার গঠন বা পরিবর্তনের সুযোগ আর হাতছাড়া হবে না। সেটা ফিরে পাওয়ার জন্য আন্দোলনেও শামিল হতে হবে না। এ অবস্থায় আমরা হয়তো সংগ্রামে অবতীর্ণ হব নতুন কিছু অধিকার আদায়ে।
কিন্তু হায়! সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি নতুন করে সামনে এসেছে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের চরম বিতর্কিত নির্বাচনের অভিজ্ঞতার পর। খালেদা জিয়া নেতৃত্বাধীন প্রথম শাসনামলের পর অনুষ্ঠিত ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন নিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীরা যেমন গর্ব করেন না; তেমনি ওই দুটি নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও আওয়ামী লীগের লোকজন এখন আর তর্ক করার উৎসাহ পান না। তাঁরা বরং বলছেন, এবারের নির্বাচনটি সুষ্ঠু হবে। সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হলে তো সেটা অংশগ্রহণমূলকও হওয়ার কথা।
আর নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে তখনই, যখন দেশের প্রধান দলগুলো এতে অবাধে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবে। সব রাজনৈতিক দল সরকার গঠনের জন্য অবশ্য নির্বাচনে আসে না। অল্প কিছু আসনে জিতে সংসদে বসে ভূমিকা রাখার জন্যও কোনো দল নির্বাচনে অংশ নিতে পারে। যে বামপন্থীরা পুঁজিবাদী দেশের নির্বাচনব্যবস্থা নিয়ে সমালোচনামুখর, তারাও এতে অংশ নেয় এমনকি নিজেদের জনসমর্থন যাচাইয়ের জন্য। তবে ক্ষমতাপ্রত্যাশী দল এতে অংশ নেয় সরকার গঠনের জন্যই।
ক্ষমতায় যাওয়া সম্ভব হবে না জেনেও এসব দল নির্বাচনে আসে অন্তত প্রধান বিরোধী দলের অবস্থান ধরে রাখতে। এমন দুটি দলের একটি যদি নির্বাচনের বাইরে থাকে, তখনই আমরা বলি—এটি অংশগ্রহণমূলক হলো না। আগামী নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক করার ওপর যখন দেশ-বিদেশ থেকে জোর দেওয়া হচ্ছে, তখন বলা যেতে পারে এটাই হলো এর ভালো সংজ্ঞা।
আসলে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনই নির্বাচন। সরকার গঠন ও প্রধান বিরোধী দল হিসেবে আবির্ভূত হতে সক্ষম দুটি দলের একটিকেও নির্বাচনের বাইরে রেখে এটা অনুষ্ঠানের সত্যি কোনো মানে হয় না। তাতে জনগণের করের অর্থের অপচয়ই হয় আসলে।
কেননা এতে জনপ্রতিনিধিত্বমূলক সংসদ গঠন সম্ভব হয় না; সরকারে জনগণের ইচ্ছার প্রকাশও ঘটে না। এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করা বা হওয়াটা গণতন্ত্রচর্চার জন্য অশুভ বৈকি। এটা রাজনীতি ও দেশকে গভীর সংকটেই নিক্ষেপ করে, যেখান থেকে উঠে আসতে লেগে যেতে পারে দীর্ঘ সময়। দেশে এমন একটা পরিস্থিতিরই সৃষ্টি হয়েছে—ইত্যবসরে বড় অর্থনৈতিক অগ্রগতি সাধিত হলেও।
গণতন্ত্রচর্চায় যেখানে আমাদের আরও কিছুটা এগিয়ে যাওয়ার কথা ছিল, সেখানে বরং পিছিয়ে চলে গিয়েছি ১৯৯০ সালের দিকে।পরিস্থিতিটা তখনকার চেয়েও জটিল এ জন্য যে প্রধান যে দুই পক্ষের গুরুত্বপূর্ণ সমঝোতায় গণতন্ত্রে উত্তরণের পথ তৈরি হয়েছিল, তার একটি পক্ষ এখন রাষ্ট্রক্ষমতায় এবং নির্বাচন অনুষ্ঠানের গ্রহণযোগ্য উপায় নিয়ে তারা অবস্থান করছে পরস্পরের বিপরীতে।
এ অবস্থায় কীভাবে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করা যাবে? তবে অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, কিছুটা অদ্ভুত ব্যবস্থা হলেও নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনগুলোই এ দেশে কমবেশি গ্রহণযোগ্য হয়েছে। তাতে ভোটের হারও বাড়তে বাড়তে করেছে রেকর্ড। কম্বোডিয়ার মতো দেশেও ভোটের হার অবশ্য বেশি। কিন্তু সেখানে কীভাবে কী হয়, সেটা তো সবারই জানা।
আমরা বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে কথা বলছি, যার জন্ম হয়েছিল রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের ভেতর দিয়ে এবং এর ন্যূনতম অঙ্গীকার ছিল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা। আর গ্রহণযোগ্য ভোট ছাড়া নিশ্চয়ই গণতন্ত্রচর্চার পথ উন্মুক্ত করা যাবে না। তেমন ভোট নিশ্চিত করার পরও আরও অনেক কিছুর চাহিদা আমাদের থাকবে। তবে ভোটাধিকার সুরক্ষার ইস্যুটি থাকবে সেই তালিকার শীর্ষে। তারপর যেতে হবে দীর্ঘ সংস্কার ও পুনর্গঠনের ভেতর দিয়ে।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২২ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

এই নিবন্ধ লেখার সময় চট্টগ্রাম-১০ আসনের উপনির্বাচনে ভোট গ্রহণ চলছে। তাতে যথারীতি মাঠের বিরোধী দল বিএনপি অংশ নিচ্ছে না ঘোষণা দিয়েই আর সেটি হলো, এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়। জাতীয় নির্বাচনের আর মাত্র চার-পাঁচ মাস বাকি। এ অবস্থায় এমন উপনির্বাচনের আয়োজন বাধ্যতামূলক হলেও দুর্ভাগ্যজনক বলা যায়।
৩১ জুলাই ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

এই নিবন্ধ লেখার সময় চট্টগ্রাম-১০ আসনের উপনির্বাচনে ভোট গ্রহণ চলছে। তাতে যথারীতি মাঠের বিরোধী দল বিএনপি অংশ নিচ্ছে না ঘোষণা দিয়েই আর সেটি হলো, এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়। জাতীয় নির্বাচনের আর মাত্র চার-পাঁচ মাস বাকি। এ অবস্থায় এমন উপনির্বাচনের আয়োজন বাধ্যতামূলক হলেও দুর্ভাগ্যজনক বলা যায়।
৩১ জুলাই ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২২ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

এই নিবন্ধ লেখার সময় চট্টগ্রাম-১০ আসনের উপনির্বাচনে ভোট গ্রহণ চলছে। তাতে যথারীতি মাঠের বিরোধী দল বিএনপি অংশ নিচ্ছে না ঘোষণা দিয়েই আর সেটি হলো, এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়। জাতীয় নির্বাচনের আর মাত্র চার-পাঁচ মাস বাকি। এ অবস্থায় এমন উপনির্বাচনের আয়োজন বাধ্যতামূলক হলেও দুর্ভাগ্যজনক বলা যায়।
৩১ জুলাই ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২২ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

এই নিবন্ধ লেখার সময় চট্টগ্রাম-১০ আসনের উপনির্বাচনে ভোট গ্রহণ চলছে। তাতে যথারীতি মাঠের বিরোধী দল বিএনপি অংশ নিচ্ছে না ঘোষণা দিয়েই আর সেটি হলো, এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়। জাতীয় নির্বাচনের আর মাত্র চার-পাঁচ মাস বাকি। এ অবস্থায় এমন উপনির্বাচনের আয়োজন বাধ্যতামূলক হলেও দুর্ভাগ্যজনক বলা যায়।
৩১ জুলাই ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২২ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫