Ajker Patrika

তবু বন্ধ হচ্ছে না ইটভাটা

অরূপ রায়, সাভার
আপডেট : ১৯ এপ্রিল ২০২২, ০৮: ৩৩
তবু বন্ধ হচ্ছে না ইটভাটা

ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রণ আইন অমান্য করে ইট পোড়ানোর দায়ে গত মার্চে ঢাকার ধামরাইয়ের দাদা ব্রিকসের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। ঢাকা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে হাইকোর্টে দাখিল করা প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়। কিন্তু গত রোববার উপজেলার শ্রীরামপুর গিয়ে ওই ইটভাটায় আগের মতোই ইট পোড়াতে দেখা যায়।

ইটভাটার মালিক আব্দুল করিম বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে ভাটার কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দিলেও তাঁরা বিনিয়োগের টাকা ঘরে তুলতে ঝুঁকি নিয়েই অবৈধভাবে ইটভাটা পরিচালনা করছেন।

শুধু দাদা ব্রিকস নয়, হাইকোর্টে দেওয়া প্রতিবেদনে যেসব ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়ার দাবি করা হয়েছে, তার সবকটি সচল রয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদের করা রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট গত ১ মার্চ এক আদেশে ঢাকা, মানিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জের অবৈধ ইটভাটা ধ্বংসের নির্দেশ দেন। ১৫ দিনের মধ্যে জেলা প্রশাসকদের এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়। নির্দেশনা অনুযায়ী ধামরাইয়ের যেসব ইটভাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, ঢাকা জেলা প্রশাসন সম্প্রতি আদালতে তার প্রতিবেদন দাখিল করেছে।

ঢাকা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আদালতে দাখিল করা প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, হাইকোর্টের নির্দেশে অবৈধভাবে পরিচালিত ধামরাইয়ের নান্নার ইউনিয়নের নান্নার এলাকার আরএসবি ব্রিকস, জেঅ্যান্ডবি ব্রিকস, আইএনসি ব্রিকস, মোল্লা ব্রিকস, ফাইভ স্টার ব্রিকস, লায়ন ব্রিকস-১ ও ২, এলএএইচ ব্রিকস ও জামাল যোয়ানা ব্রিকসের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়।

সুতিপাড়া ইউনিয়নের শ্রীরামপুর এলাকার দাদা ব্রিকস ও লায়ন ব্রিকস-৩, শাহাবেলিশ্বর এলাকার ঢাকা ব্রিকস, আলাল ব্রিকস ও দীপ্ত-সামি ব্রিকস এবং কুল্লা ইউনিয়নের চন্দ্রাইল এলাকার সনি ব্রিকসের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু গত রোববার সরেজমিনে এসব ইটভাটার একটিও বন্ধ পাওয়া যায়নি।

আদালতে দাখিল করা তালিকার বাইরেও এ বছর অবৈধভাবে ভাটা পরিচালনার দায়ে ধামরাইয়ের জলসীন কান্দাপাড়া এলাকার মা স্টার ব্রিকস, পিউর ব্রিকস, মা ব্রিকস ও এমএইচ এসবি ব্রিকস এবং মধুডাঙ্গা এলাকার মদিনা ব্রিকস, রাহাত ব্রিকস, খান ব্রিকস, এমএসবি ব্রিকস, নূর ব্রিকস ও ফারুক ব্রিকসসহ বেশ কয়েকটি ইটভাটায় অভিযান চালানো হয়। কিন্তু গতকাল সোমবার এসব ইটভাটাতেও ইট পোড়াতে দেখা যায়।

লায়ন ব্রিকস-১, ২ ও ৩-এর মালিকদের একজন আব্দুল মজিদ বলেন, ইটভাটা ভেঙে ও জরিমানা করে পরিবেশের কোনো লাভ হয় না। কারণ এসব করে ইটভাটা বন্ধ করা যায় না। ইটভাটা বন্ধ না হলে পরিবেশের যা ক্ষতি তা হবেই। এতে বরং ক্রেতারা ক্ষতিগ্রস্ত হন। জরিমানার কারণে ইটের দাম বেড়ে যায়।

মোল্লা ব্রিকসের মালিক নাসির উদ্দিন বলেন, ‘পরিবেশ অধিদপ্তর ও প্রশাসন আইন অনুযায়ী কার্যক্রম চালাবে। আমরা ভাটা চালাব। এভাবেই চলে আসছে, ভবিষ্যতেও এভাবেই চলবে।’

ধামরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হোসাইন মোহাম্মদ হাই জকী বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের পাশাপাশি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। আদালতে যেসব ইটভাটার তালিকা দেওয়া হয়েছে তার বাইরেও অনেক ইটভাটায় অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। তবে নানা প্রতিকূলতার কারণে অবৈধ ইটভাটা ধ্বংস করা সম্ভব হয় না। এ কারণেই হয়তো অভিযানের পর আবার সেসব ভাটা চালু করা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইউটিউবে ১০০০ ভিউতে আয় কত

বাকৃবির ৫৭ শিক্ষকসহ ১৫৪ জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা

বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে পারে সরকার, ভয়ে কলকাতায় দিলীপ কুমারের আত্মহত্যা

স্ত্রী রাজি নন, সাবেক সেনাপ্রধান হারুনের মরদেহের ময়নাতদন্ত হবে না: পুলিশ

সাবেক সেনাপ্রধান হারুন ছিলেন চট্টগ্রাম ক্লাবের গেস্ট হাউসে, দরজা ভেঙে বিছানায় মিলল তাঁর লাশ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত