Ajker Patrika

রেলমন্ত্রীর আশ্বাসের পর পেরিয়ে গেছে ২৬ মাস

মিনহাজ তুহিন, চবি
আপডেট : ১৩ অক্টোবর ২০২১, ১০: ১৫
রেলমন্ত্রীর আশ্বাসের পর পেরিয়ে গেছে ২৬ মাস

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের দুর্ভোগের কথা শুনে ১৫-১৬ বগিবিশিষ্ট একটি নতুন ট্রেন চালুর আশ্বাস দিয়েছিলেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। ২০১৯ সালের ২৪ জুলাই চবিতে এসে এই আশ্বাস দেন তিনি। এর ২৬ মাসের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও এ বিষয়ে কিছুই জানেন না সংশ্লিষ্টরা।

সর্বশেষ গত ২৫ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট অধিবেশনে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার বলেছিলেন, এ বিষয়ে রেলমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। ক্যাম্পাস খুললেই শিক্ষার্থীরা দুইটি নতুন শাটল ট্রেন পাবেন। আগামী ১৯ অক্টোবর থেকে ক্যাম্পাস খোলার কথা রয়েছে। এর মধ্যে ওই ট্রেন চালুর কোনো তথ্য দিতে পারেননি কেউই। রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের শীর্ষ কর্মকর্তারাও এ কিছু জানেন না।

রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের অতিরিক্ত মহাব্যবস্থাপক এস এম মুরাদ হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘চবি রুটে নতুন ট্রেন দেওয়ার বিষয়ে আমার কাছে কোনো আপডেট নেই।’

একই রকম মন্তব্য রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের। তিনি বলেন, ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় রুটে নতুন ট্রেন দেওয়ার বিষয়ে জানা নেই। আমাদের কাছে এখন নতুন কোনো ট্রেন নেই।’

চট্টগ্রাম মহানগরী থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। এখান থেকে শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে যাতায়াতের প্রধান বাহন শাটল ট্রেন। ক্যাম্পাস খোলা থাকলে দুটি ট্রেন ও একটি ডেমো ক্যাম্পাস-শহর রুটে ৯ বার আসা যাওয়া করে। এভাবেই প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ হাজার শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে যাতায়াত করেন। শাটলে পর্যাপ্ত আসন, ফ্যান, লাইট না থাকায় তীব্র গরম সহ্য করে গাদাগাদি করে আসা-যাওয়া করতে হয় তাঁদের। ২০১৯ সালের ২৪ জুলাই হঠাৎ করেই ট্রেনে চড়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) আসেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তিনি। এ সময় শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের দুর্দশার কথা শুনে তিনি ১৫-১৬ বগি বিশিষ্ট একটি নতুন ট্রেন চালুর আশ্বাস দেন। বলেন, ওই ট্রেনে এসি, ওয়াইফাই সংযোগ থাকবে। রেলমন্ত্রী এ সময় রেললাইনের দুরবস্থার সমালোচনা করেন। পাশাপাশি দ্রুততম সময়ের মধ্যে রেললাইন সংস্কারের নির্দেশ দেন। তাঁর নির্দেশনার পর নড়েচড়ে বসে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, কাঠ আর স্টিলের জরাজীর্ণ স্লিপার ফেলে দিয়ে চবি রুটের রেললাইনে বসানো হয় কংক্রিটের স্লিপার। বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশনের প্ল্যাটফর্মের আয়তনও বাড়ানো হয়েছে। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে একটা বড় স্টেশন নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে রেলওয়ে। চলতি মাসে নকশা চূড়ান্ত হওয়ার কথা রয়েছে। নকশা চূড়ান্ত হলেই স্টেশন নির্মাণের কাজ শুরু হবে।

রেলওয়ে কর্মকর্তারা জানান, রেললাইন সংস্কার করার ফলে এই রুটে বর্তমানে ৫০ কিলোমিটার বেগে ট্রেন চলে। যেখানে আগে চলত ১৫-২০ কিলোমিটার বেগে। আর কিছুদিন পর চলবে ৬০ কিলোমিটার বেগে। আর এতে করে ২২ মিনিটের মধ্যে শহর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছবেন শিক্ষার্থীরা।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মো. সুবক্তগীন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের রুটের রেললাইন সংস্কারের কাজ গত জুন-জুলাই মাসে শেষ হয়েছে। এই রুটে আগে ২০ কিলোমিটার বেগ ট্রেন চলতো। এখন চলে ৫০ কিলোমিটার বেগে। কিছুদিনের মধ্যে ৬০ কিলোমিটার বেগে চলবে। আমরা চবিতে একটা বড় স্টেশন নির্মাণ করব। নকশা অনেকটা চূড়ান্ত।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক এস এম মনিরুল হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আপাতত নতুন ট্রেন আসছে না। আমাদের উপাচার্য রেলমন্ত্রীর সঙ্গে আবারও বৈঠকে বসবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ