Ajker Patrika

বিজ্ঞাপন দিয়ে জন্মনিবন্ধন করিয়ে দিচ্ছে দালাল চক্র

মো. নাজিম উদ্দিন ইমন, কেরানীগঞ্জ (ঢাকা)
আপডেট : ০৭ জুন ২০২২, ০৮: ৩৯
বিজ্ঞাপন দিয়ে জন্মনিবন্ধন করিয়ে দিচ্ছে দালাল চক্র

ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলার শুভাঢ্যা ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. আলমাস উদ্দিন। এ বছরের শুরুতে তাঁর ছেলেকে স্কুলে ভর্তি করাতে গিয়ে প্রয়োজন হয় জন্মনিবন্ধন সনদ। কিন্তু আলমাস উদ্দিনের নিজের ও তাঁর স্ত্রীর জন্মনিবন্ধন না থাকায় সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে কাঙ্ক্ষিত সেবা পাননি তিনি। পরে তিন হাজার টাকা দিয়ে দালালের মাধ্যমে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন থেকে জন্মনিবন্ধন সনদ তৈরির কাজ সারেন। এ রকম অভিযোগ রয়েছে উপজেলার প্রায় সব ইউনিয়নেই।

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জন্মনিবন্ধনের কেন্দ্রীয় সার্ভারে জটিলতার কারণে সারা দেশেই সেবা পেতে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। তবে বর্তমানে সে সমস্যা আর নেই। কিন্তু একটি চক্র সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে সাধারণ মানুষকে দালাল চক্রের দ্বারস্থ হতে বাধ্য করছে।

সম্প্রতি ঢাকার কেরানীগঞ্জে এমনই একটি চক্রের সন্ধান পাওয়া গেছে। চক্রটি রীতিমতো লিফলেট বিতরণ করে পোস্টার লাগিয়ে বিজ্ঞাপন দিয়ে করছে জন্মনিবন্ধনের দালালি। গতকাল সোমবার সকালে উপজেলার চুনকুটিয়া চৌরাস্তা এলাকায় একটি দেয়ালে এমনই একটি পোস্টার নজরে আসে প্রতিবেদকের। পোস্টারে লেখা ‘মাত্র ২ দিনে জন্মনিবন্ধন করা হয়।’ যোগাযোগের জন্য একটি মোবাইল নম্বর দেওয়া হয়।

পরিচয় গোপন রেখে পোস্টারের ওই নম্বরে যোগাযোগ করা হলে নিজেকে হাবিব পরিচয় দিয়ে একজন কথা বলেন। এ সময় তাঁর কাছে জন্মনিবন্ধন করার বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, ‘শুধু বাবা ও মায়ের স্পষ্ট আইডি কার্ডের ফটোকপি দিলেই তিনি দুদিনের মধ্যে জন্মনিবন্ধন করে দেবেন। টাকা লাগবে সাড়ে ৩ হাজার। যেখানে ইউনিয়ন পরিষদ দুদিনে দিতে পারে না, সেখানে আপনি কীভাবে দেবেন জানতে চাইলে ওই ব্যক্তি বলেন, ‘তারা পারে না বলেই তো আপনি আমার কাছে এসেছেন। তাদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ আছে, আমাদের ফাইল আগে হবে।’ পরে ওই ব্যক্তির সঙ্গে সাক্ষাতে কথা বলতে চাইলে তিনি কৌশলে বিষয়টি এড়িয়ে যান।

এ বিষয়ে শুভাঢ্যা ইউনিয়ন তথ্যসেবা কেন্দ্রের উদ্যোক্তা মো. শওকত বলেন, ‘আমরা কোনো দালাল চিনি না। যাঁরা সেবা নিতে আসেন, তাঁদের সেবা দেওয়ার চেষ্টা করি। সার্ভার জটিলতার কারণে সেবা কিছুটা বিলম্ব হয়েছে, তবে দালালের বিষয়টি সঠিক নয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা কারও কাছ থেকে টাকা বেশি নিই কি না সেটা দেখেন, প্রমাণ থাকলে আমাদের চেয়ারম্যান ও সচিবের সঙ্গে কথা বলে দেখেন।’

এ বিষয়ে কেরানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন, ‘কেরানীগঞ্জে জন্মনিবন্ধনের কোনো জটিলতা নেই। এক সপ্তাহ আগেও সার্ভার জটিলতা ছিল, তবে এখন কোনো সমস্যা নেই।’ দালাল চক্রের বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি এ রকম কোনো অভিযোগ পাইনি। কোনো তথ্যপ্রমাণ থাকলে আমাকে দিন, ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত