Ajker Patrika

উদ্যোক্তাদের ২৭০০ কোটি টাকা ঋণ দেবে বিশ্বব্যাংক

জয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা
আপডেট : ১০ নভেম্বর ২০২১, ২০: ৫৯
উদ্যোক্তাদের ২৭০০ কোটি টাকা ঋণ দেবে বিশ্বব্যাংক

কুটির, ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তা (সিএমএসএমই) খাতে অর্থায়ন সহজ করার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিমের মাধ্যমে ঋণ বিতরণ করতে যাচ্ছে বিশ্বব্যাংক গ্রুপ। এই দাতা সংস্থাটি প্রাথমিকভাবে ব্যাংকের সঙ্গে লেনদেন নেই—এমন উদ্যোক্তাদের অগ্রাধিকার দিতে তাগাদা দিয়েছে।

বিশ্বব্যাংক গ্রুপ শতকরা ২ ভাগ ক্রেডিট গ্যারান্টি নিয়ে এসব উদ্যোক্তার মাঝে ৩০ কোটি মার্কিন ডলার (প্রায় ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকা) ঋণ বিতরণ করতে একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। গ্যারান্টি ফি ঋণের বছরের তারিখ থেকে ধরা হয়েছে। গ্যারান্টি পরিশোধের ক্ষেত্রে ৯০ থেকে ১৮০ দিনের আগপর্যন্ত বকেয়া ধরা হয়েছে। আর প্রতি লোনের ৭০ শতাংশ পর্যন্ত স্কিমের ওপর ঝুঁকি বিবেচনা করে পরিশোধ করবে বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিম শাখা এবং বাকি ৩০ শতাংশ দেবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান। এই ২ ভাগ ক্রেডিট গ্যারান্টির বাইরে অতিরিক্ত কোনো ফি কোনোভাবেই আরোপ করা যাবে না। আর এ স্কিমের অধীনে বরাদ্দকৃত ঋণ ব্যাংক এবং অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিতরণ করা হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট শাখা থেকে জানা যায়, প্রান্তিক পর্যায়ে তথা কুটির, ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য অর্থায়ন সহজ করতেই প্রাথমিকভাবে ৩০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে বিশ্বব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিমের মাধ্যমে প্রথম পর্যায়ে প্রায় ৫ হাজার উদ্যোক্তার মাঝে এ ঋণ বিতরণ করা হবে। একজন উদ্যোক্তা কমপক্ষে ১০ লাখ টাকা ঋণ পাবেন। আর এ ঋণের সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে আড়াই কোটি টাকা। ঋণ পরিশোধের সর্বনিম্ন সময় ধরা হয়েছে দুই বছর এবং তা শর্ত সাপেক্ষে ছয় মাস পর্যন্ত বর্ধিত করা যেতে পারে। আর সর্বোচ্চ সময় ধরা হয়েছে পাঁচ বছর এবং ক্ষেত্রবিশেষে তা ছয় মাস পর্যন্ত বৃদ্ধি করা যাবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, এ ঋণ কার্যক্রমকে বাস্তবায়ন করতে অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সরকারের বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে সম্প্রতি একাধিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সর্বশেষ ২ নভেম্বর অর্থ বিভাগ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ঋণ বিতরণ প্রকল্পের যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে।

প্রকল্পটি চালুর আগে বিশ্বব্যাংক ২০১৪ সালে ৯০টি গ্যারান্টি নিয়ে জরিপ পরিচালনা করে। এ ধরনের স্কিম মরক্কো, পাকিস্তান, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া, আলজেরিয়া, জর্ডান, জ্যামাইকা, ভারতসহ বেশ কিছু দেশে আগে থেকেই চালু ছিল।

সিএমএসএমই খাতে বিশ্বব্যাংকের এ ঋণের মাধ্যমে কর্মসংস্থান এবং উৎপাদন দুটিই বৃদ্ধি পাবে। প্রকল্পটি পরিকল্পনামাফিক সম্পন্ন হলে পরবর্তী সময়ে আরও বেশি অর্থায়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। তাঁর দাবি, বিশ্বব্যাংকের পরিবেশ এবং সামাজিক সুরক্ষার প্রয়োজনীয়তা সাপেক্ষে প্রকৃত সুবিধাভোগীদের মাঝে ঋণ প্রদানের উদ্দেশ্যে এই স্কিমের নকশা করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রকল্পটি চালু হলে কুটির, ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পে উৎপাদন বাড়বে এবং নতুন কর্মক্ষেত্র তৈরির সুযোগ সৃষ্টি হবে। এতে ব্যবসা-বাণিজ্য, বিশেষ করে রপ্তানির প্রবাহ বাড়বে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিও বৃদ্ধি পাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত