Ajker Patrika

বারবার ধর্মঘটে দক্ষিণের যোগাযোগে বড় ক্ষতি

খান রফিক, বরিশাল
বারবার ধর্মঘটে দক্ষিণের যোগাযোগে বড় ক্ষতি

রাজনৈতিক কারণে বরিশালে এক সপ্তাহের ব্যবধানে দুই দফায় বাস ধর্মঘটের কবলে পড়ে পরিবহন খাত। একই সংকট দেখা দেয় নৌ খাতেও। বারবার এভাবে লঞ্চ ও বাস চলাচল ব্যাহত হওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়েন যাত্রাী, মালিক ও শ্রমিকেরা। সংশ্লিষ্টরা এ জন্য রাজনৈতিক অস্থিরতাকে দায়ী করেছেন। তবে মালিকেরা কৌশলে বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন।

জানা গেছে, ৫ নভেম্বর বিএনপির গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে আগের ও পরের দুই দিন ঠুনকো অজুহাতে ধর্মঘট ডাকে বাস মালিক সমিতি, থ্রি হুইলার মালিক সমিতি এবং নৌযান শ্রমিক ইউনিয়ন। গতকাল শনিবার ফরিদপুরে একই গণসমাবেশ থাকায় দুই দিন ধরে ঢাকা-বরিশাল বাস চলাচল ব্যাহত হয়। এদিকে গত শুক্রবার রাজধানীতে যুবলীগের মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে বরিশাল-ঢাকা পথের অধিকাংশ লঞ্চ রিজার্ভ করে নেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা। এ কারণে বুধ, বৃহস্পতি ও শুক্রবার নিয়মিত লঞ্চ চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়। মাত্র একটি লঞ্চ সার্ভিসে ছিল প্রথম দিনে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক লঞ্চের একাধিক মাস্টার জানান, ঢাকা-বরিশাল নৌপথ এ অঞ্চলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নৌ খাত। পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় যাত্রী তাদের কমে গেছে। এর ওপর ধর্মঘট, রিজার্ভে যাত্রী সাধারণের ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেবে। শ্রমিকদেরও আয় বন্ধ হয়ে যায়।

ঢাকা-বরিশাল পথের যাত্রীবাহী বাসের একাধিক চালক বলেন, ৫ নভেম্বর গণসমাবেশের কারণে বাস চলাচল দুই দিন বন্ধ ছিল। সাত দিনের মাথায় ফরিদপুরের গণসমাবেশের কারণে শুক্রবার থেকে আবার বাস বন্ধ। তাঁরা বলেন, ‘মালিকেরা রাজনৈতিক নির্দেশে ধর্মঘট ডাকছে। এর খেসারত দিতে হচ্ছে শ্রমিকদের।’

ব্যাটারিচালিত রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক চালক সংগ্রাম পরিষদ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বরিশালে ধর্মঘটের নামে সন্ত্রাস ও শ্রমিক হয়রানি বন্ধ করা দরকার। সংগ্রাম পরিষদ বরিশাল জেলা শাখার সংগঠক দুলাল মল্লিক ও মানিক হাওলাদার বলেন, ধর্মঘট শ্রমিকের স্বার্থে ডাকা হয়নি। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ডাকা হয়েছে। কিন্তু রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ডাকা এ ধর্মঘট সফল করতে কতিপয় চিহ্নিত চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসীরা জোরপূর্বক গাড়ি চলাচলে বাধা দিয়েছে। প্রতিপক্ষকে নাস্তানাবুদ করার জন্য শ্রমিকের রুটিরুজির ওপর এভাবে জোরপূর্বক হস্তক্ষেপ করা অমানবিক।

অভ্যন্তরীণ লঞ্চ মালিক সমিতির সহসভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, ‘মানুষ এখন আর তেমন লঞ্চে যায় না। অধিকাংশই বাসে যায়। লঞ্চে লোকসান চলছে।’ তবে নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের বরিশাল জেলা সভাপতি মাস্টার মো. হাশেম বলেন, ধর্মঘটে শ্রমিকদের পাশাপাশি মালিকেরাও লোকসান দিয়েছেন। কিন্তু শ্রমিকদের এ ক্ষতি পূরণ করবেন না মালিক।

এদিকে বরিশাল জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ফরিদ হোসেন জানান, এ টার্মিনালে তালিকাভুক্ত শ্রমিক রয়েছেন সাড়ে ৩ হাজার। বাস ধর্মঘটের জন্য শ্রমিকদের তাঁরা প্রণোদনা দেন না। জেলা বাস মালিক গ্রুপের সভাপতি গোলাম মাশরেক বাবলু বলেন, মহাসড়কে থ্রি হুইলার চলাচল বন্ধের যৌক্তিক দাবিতে তাঁরা ধর্মঘট ডেকেছেন।

এ বিষয়ে নৌ যাত্রী ঐক্য পরিষদ বরিশালের আহ্বায়ক আব্দুর রশিদ নিলু বলেন, ‘বারবার রাজনৈতিক কারণে নৌ ও সড়কপথ স্থবির হওয়ায় এ সেক্টরে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। পরিবহন খাতে যাঁরা ব্যবসা করেন তাঁদেরও লাখ লাখ টাকা ক্ষতি হচ্ছে। আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে এর প্রতিবাদও জানিয়েছি। রাজনীতিতে সুস্থ ধারা না ফিরলে মানুষের এ ভোগান্তির শেষ হবে না।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রশিক্ষণ ছাড়াই মাঠে ৪২৬ সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তা

গ্রাহকের ২,৬৩৫ কোটি টাকা দিচ্ছে না ৪৬ বিমা কোম্পানি

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

১০০ বছর পর জানা গেল ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়: তিন দফা দাবিতে সোমবার মাঠে নামছেন শিক্ষার্থীরা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত