Ajker Patrika

রাস্তায় প্রকৌশলীর স্ত্রীর বাড়ি

মিলন উল্লাহ, কুষ্টিয়া
আপডেট : ০১ জানুয়ারি ২০২২, ১৯: ১৪
রাস্তায় প্রকৌশলীর স্ত্রীর বাড়ি

কুষ্টিয়া পৌরসভার সড়ক অবৈধভাবে দখল করে পাঁচতলা ভবন ও সীমানা প্রাচীর নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) খুলনা বিভাগ উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক রেজাউল করিম ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে। স্থানীয়দের দাবি, রেজাউল তাঁর স্ত্রী ফাতেমা করিমের নামে জমি কিনে কোনো প্রকার নিয়মনীতি না মেনেই পৌরসভার সড়কের ওপর বাড়ি ও সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ করেছেন।

গতকাল সরেজমিন দেখা গেছে, কুষ্টিয়া শহরের কমলাপুর এলাকার ১৩৯/১৯ গীর্জানাথ মজুমদার সড়কের মাঝামাঝি বাড়িটি নির্মাণ করা হয়েছে। এতে ওই এলাকাসহ আশপাশের মানুষের চলাচলে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটছে। শুধু তাই-ই না, বাড়িটির জন্য সড়কটির পাকাকরণের কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। বাধ্য হয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা গণস্বাক্ষর নিয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দেন কুষ্টিয়া পৌরসভার মেয়র বরাবর।

কুষ্টিয়া পৌর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ৮ অক্টোবর এবং ২০১৯ সালের ১৩ অক্টোবর দখলকারীকে দুটি নোটিশ দেওয়া হয়। ওই নোটিশে ৭ দিনের মধ্যে সড়কের ওপর থেকে অবৈধ অবকাঠামো সরিয়ে নিতে নির্দেশ দেন পৌর মেয়র। কিন্তু নোটিশ পাওয়ার পরও অবকাঠামো সরিয়ে নেননি প্রকৌশলী রেজাউল করিমের স্ত্রী ফাতেমা করিম।

নোটিশে আরও বলা হয়, পৌরসভার সড়কের জায়গা দখল করে নির্মিত বাড়ি ও সীমানাপ্রাচীর নিজ খরচে ভেঙে নিতে। অন্যথায় নির্মাণকৃত সীমানাপ্রাচীর ও বাড়ির বর্ধিত অংশ পৌরসভার লোকবল দিয়ে ভেঙে দেওয়া হবে। ভাঙার জন্য সব খরচ দখলকারীর কাছ থেকে আদায় করবে পৌর কর্তৃপক্ষ। অজ্ঞাত কারণে নোটিশ দেওয়ার দুই বছর পার হয়ে গেলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি কুষ্টিয়া পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে বাড়ির মালিকও কারও নির্দেশ ও অনুরোধে কর্ণপাত করেননি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গীর্জানাথ মজুমদার সড়ক পাকাকরণ ও সড়কটির পাশ দিয়ে ড্রেন নির্মাণের কাজ এ বাড়ির জন্য বন্ধ রয়েছে।

সড়ক পাকাকরণ ও ড্রেন নির্মাণের কাজ করছিল ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ন্যাশন টেক কমিউনিকেশন। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের অডিট কর্মকর্তা সোহেল পারভেজ বলেন, ‘কুষ্টিয়া পৌরসভার ২৫ কোটি ৬০ লাখ টাকার ড্রেন নির্মাণ ও রাস্তা পাকাকরণ প্রকল্পের কাজ চলছিল। গীর্জানাথ মজুমদার সড়কের সে কাজ গত ২০ দিন আগে আমরা বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছি। কারণ পৌরসভার সড়কের জায়গা দখল করে ভবন ও সীমানাপ্রাচীর তৈরি করা হয়েছে। সেটি ভেঙে বা রাস্তার জায়গা দখলমুক্ত করে না দিলে, আমরা কাজ শুরু করতে পারছি না। পৌর কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি। তাঁরা এ সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছেন।’

জিল্লুর রহমান নামের এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘পৌরসভার সড়কের ওপর প্রকৌশলী রেজাউল করিম অবৈধভাবে বাড়ি ও সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ করেছেন। এতে এলাকার মানুষের চলাচল করতে সমস্যা হচ্ছে। সড়কটি দখলমুক্ত করার জন্য পৌরসভার মেয়র বরাবর আমরা লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। পৌর কর্তৃপক্ষ রেজাউল করিমকে সড়কের জায়গা ফাঁকা করে দেওয়ার নির্দেশ দিলেও তিনি এতে কর্ণপাত করেননি।’

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য প্রকৌশলী রেজাউল করিমকে মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি কল ধরেননি।

রেজাউল করিমের ভাই তৌহিদুর ইসলাম বলেন, ‘আমার ভাই রেজাউল করিমের বাড়ি নিয়মনীতি মেনেই নির্মাণ করা হয়েছে। পৌরসভার সড়কের জায়গা দখল করা হয়নি। এলাকাবাসী অভিযোগ মিথ্যা।

কুষ্টিয়া পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, ‘পৌর মেয়র আমাকে প্যানেল মেয়র ও সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলের মাধ্যমে আমাকে বিষয়টি সমাধানের নির্দেশ দিয়েছিলেন। দখলমুক্ত করার জন্য বাড়ির মালিককে একাধিকবার নোটিশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সড়কটি এখনো দখলমুক্ত হয়নি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মুসলিম ছেলে বিয়ে করে পরিবারহারা, স্বামী পরিত্যক্ত হয়ে ঢাকায় এসে ধর্ষণের শিকার

সামরিক বাহিনীর ৮ সংস্থা ও স্থাপনার নাম পরিবর্তন

মাদারীপুরে ৩ খুন: ঘটনার পেছনে পা ভাঙার প্রতিশোধসহ ৩ কারণ

মসজিদে লুকিয়েও রক্ষা পেলেন না স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ও তাঁর ভাই, ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিল প্রতিপক্ষ

ধর্ষণের শিকার নারী-শিশুর ছবি-পরিচয় প্রকাশ করলেই আটক

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত