Ajker Patrika

ভেজাল কীটনাশকে সয়লাব

শাহীন আক্তার পলাশ, শৈলকুপা (ঝিনাইদহ) 
আপডেট : ২০ মার্চ ২০২২, ১৫: ০৩
ভেজাল কীটনাশকে সয়লাব

ঝিনাইদহের শৈলকুপায় বেশির ভাগ বাজারে ভেজাল কীটনাশকে সয়লাব হয়ে গেছে। মানহীন এসব কীটনাশক জমিতে দফায় দফায় প্রয়োগ করেও সুফল মিলছে না। এ অবস্থায় পোকার আক্রমণ ঠেকাতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকেরা। তাঁদের অভিযোগ, কৃষি অফিসের তদারকি না থাকায় ভেজাল কীটনাশকে ছেয়ে গেছে।

জানা যায়, উপজেলার বিভিন্ন বাজারে উৎপাদনকারী বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি কোম্পানির নকল ব্র্যান্ডের কীটনাশক বিক্রি হচ্ছে। বাজারে তুলনামূলকভাবে দাম কিছুটা কম ও চকচকে মোড়ক দেখে আসল, না নকল; যাচাই না করেই কীটনাশক কিনছেন কৃষকেরা। তাই বাজারে এখন ভেজাল কীটনাশকের ব্যবসা রমরমা। এসব কীটনাশক বিক্রি করে অধিক মুনাফা হাতিয়ে নিচ্ছে অনেক অসাধু ডিলার। নকল কীটনাশকের পরীক্ষা করার ল্যাব উপজেলা পর্যায়ে না থাকায় ধরা ছোঁয়ার বাইরে থাকছে এসব অসাধু বিক্রেতারা। সিনজেন্টা, অটো, ইমাগ্রিনসহ দেশের নামীদামি কীটনাশক কোম্পানির ব্যান্ডের মোড়কে এসব ভেজাল কীটনাশক বিক্রি হচ্ছে।

লাইসেন্সপ্রাপ্ত কীটনাশক ডিলার নোমান মোল্লা বলেন, ‘কিছু অসাধু ব্যবসায়ী দীর্ঘদিন ধরেই প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে দেশের প্রতিষ্ঠিত কীটনাশক কোম্পানির মোড়কে নকল ও ভেজাল কীটনাশকের অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে আসছে। কৃষকদের এসব নকল ও ভেজাল কীটনাশক চেনার কোনো উপায় নেই। ফলে কৃষকেরা নকল ও ভেজাল কীটনাশক ব্যবহার করলেও পোকামাকড় ও বালাই দমনে তা কোনো কাজে আসছে না। যার কারণে কৃষকেরা আর্থিকভাবে ক্ষতির মধ্যে পড়ছেন।’

কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, কৃষি অফিসের কীটনাশক লাইসেন্সের ১৬টি শর্ত রয়েছে। এর মধ্যে প্রধান শর্ত হলো লাইসেন্সপ্রাপ্ত ডিলাররা সরকারি অনুমোদিত কোম্পানির ছাড়া কীটনাশক বিক্রি করতে পারবেন না। কেউ শর্ত ভঙ্গ করলে তাঁর লাইসেন্স বাতিল বলে গণ্য হবে। কিন্তু এ শর্ত মানছেন না ডিলাররা।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকার প্রায় অর্ধশত কৃষক নকল কীটনাশক ক্রয় করে প্রতারিত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে বায়ের ক্রপসাইন্স, অটো ক্রপ কেয়ার, মিম পেকস, সিনজেনটাসহ বিভিন্ন নামীদামি কোম্পানির নাম ও মোড়ক ব্যবহার করে ভেজাল কীটনাশক বিভিন্ন গ্রামের হাটবাজারে বিক্রি হচ্ছে।

উপজেলার কাতলাগাড়ি গ্রামের রকিব উদ্দিন বলেন, ‘বাজারে প্রায় কীটনাশক ভেজাল। কয়েক দিন আগে বাজার থেকে বেগুনের পোকা মারার জন্য সিনজেনটার ভারটিমেক কীটনাশক কিনে জমিতে প্রয়োগ করে কোনো ফল পাইনি। এসব ভেজাল কীটনাশক কিনে টাকার মতো টাকা চলে যায়, তবে কোনো উপকারে আসে না। আমরা ভেজাল কীটনাশকের কাছে অসহায় হয়ে পড়েছি।’

উপজেলার দামুকদিয়া গ্রামের কৃষক মতিয়ার রহমান বলেন, ‘বায়ারের লুনা নামে কীটনাশক পেঁয়াজের খেতে ব্যবহার করে কোনো উপকার পাইনি। এ ছাড়া সিনজেনটার রিডোমিল পেঁয়াজখেতে প্রয়োগ করে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বিষয়টি স্থানীয় উপকৃষি কর্মকর্তাদের জানানো হলেও কোনো প্রতিকার পাইনি।’

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আকরাম হোসেন বলেন, ‘ভেজাল কীটনাশকের বিষয়ে আমাদের সজাগ দৃষ্টি আছে। কোনোভাবেই ভেজাল কীটনাশক বিক্রি করতে দেওয়া যাবে না।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমা লিজা বলেন, ‘কৃষি কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে, ভেজাল কীটনাশকের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

এনবিআর চেয়ারম্যানের কক্ষের সামনে কর্মকর্তাদের অবস্থান

বন্ধুকে ছাত্রলীগ সাজিয়ে পুলিশে দিয়ে তাঁর প্রেমিকাকে ধর্ষণ করলেন ছাত্রদল নেতা

মানিকগঞ্জে রাতের আঁধারে স্থানান্তর করা বিদ্যালয় ভবন পরিদর্শনে কর্মকর্তারা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত