মো. ইমরান হোসাইন, কর্ণফুলী
করোনাভাইরাসে মহামারির কারণে বড় পরিবর্তন এসেছে চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিয়ের অনুষ্ঠানে। কিছুদিন আগেও বিয়ের আয়োজনে হাজার মানুষের খাবার-দাবারের আয়োজন থাকত। কিন্তু এখন নগদ যৌতুকের চাপে আয়োজন ছোট করছে কনেপক্ষ। আবার এই সময়ে জেলার কর্ণফুলীতে জন্মনিবন্ধনে বয়স বদলে বেড়েছে বাল্যবিবাহ, যা ভাবিয়ে তুলেছে জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় সচেতন মহলকে।
উপজেলার বেশ কয়েকজন অভিভাবকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাঁদের কেউ কেউ মেয়ের বিয়েতে খাবারের আয়োজন সীমিত করে সেই টাকা বরপক্ষকে নগদ দিয়েছেন। মেয়ের সুখের কথা ভেবে তাঁরা পরিচয় দিতে রাজি হননি।
বড়উঠান এলাকার এক অভিভাবক বলেন, বিয়েতে এখন বেশি বরযাত্রী খাওয়াতে হচ্ছে না। তাতে খাওয়া খরচ কমেছে বটে, কিন্তু সেই টাকা নগদ পরিশোধ করতে বলেছে বরপক্ষ। এটা যেন করোনাকালে যৌতুকের নতুন সংস্করণ। শুধু তাই নয়, ঈদে বাজার ও কোরবানির সময় মেয়ের জামাইকে দিতে হয়েছে বড় একটি গরু।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক এসএসসি পরীক্ষার্থী বলে, ‘কিছুদিন পর আমার পরীক্ষা। কিন্তু বাবা জোর করে আমাকে এক প্রবাসীর কাছে বিয়ে দিতে চাচ্ছেন। আমি রাজি হচ্ছি না, তাই প্রতিদিন আমাকে ও মাকে মারধরও করছেন। কিন্তু লজ্জায় আমি কাউকে এসব জানাতেও পারছি না। আত্মীয়-স্বজনেরাও এটার বিরোধিতা করছেন, কিন্তু বাবাকে কেউ বুঝাতে পারছেন না। আমি লেখাপড়া করে অনেক বড় হতে চাই।’
আইনজীবী এম লোকমান শাহ্ বলেন, করোনার পরিস্থিতি ও লকডাউনের প্রথম দিকে বিয়ের প্রবণতা বেশি ছিল। গত ঈদের পর বিয়ের সংখ্যা আরও বেড়ে গেছে। দীর্ঘ দিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের সুযোগে বাল্যবিবাহের সংখ্যাও বেড়েছে নতুন করে। অনেক শিক্ষার্থীর জন্মতারিখ জালিয়াতি করে কিছু অসাধু কাজি বিশেষ সুবিধা নিয়ে পড়িয়েছেন এসব বিয়ে। এ রকম ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটছে। সেই সঙ্গে ছেলের পরিবার থেকে যৌতুকের চাহিদাও বেড়েছে।
দেশে প্রকৃতপক্ষে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন থাকলেও বাস্তবে এর প্রয়োগ নেই বলেও উল্লেখ করেন তিনি। বলেন, ‘যেসব কাজি অনৈতিক সুবিধা নিয়ে বাল্যবিবাহ পড়াচ্ছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমি প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানাই।’
বড়উঠান ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ দিদারুল আলম বলেন, বিয়েতে আত্মীয়-স্বজনদের খাওয়া-দাওয়ার বিষয়টা কমে গেছে। বেশির ভাগ ছেলেপক্ষ এসব খরচ বাবদ নগদ টাকা নিয়ে নিচ্ছেন। ধরতে গেলে এটাও এক ধরনের যৌতুক। এমন কাজ কারও কাম্য নয়।
এই জনপ্রতিনিধি বলেন, ‘আমার এলাকায় যেন কোনো মেয়ে বাল্যবিবাহের শিকার না হয়—সেদিকে নজর রেখেছি। কেউ বিয়েতে দাওয়াত দিতে আসলে শুরুতে মেয়ের বয়স ও পাত্রপক্ষকে কী কী দিতে হচ্ছে—সে বিষয়ে জানতেই চাচ্ছি। সবার মুখে একই কথা, “তেমন কিছু না। খাওয়া-দাওয়া বাবদ নগদ টাকা।” কিছুদিন আগে আমি ইউএনও মহোদয়কে নিয়ে একটি বাল্যবিবাহ বন্ধ করে দিয়েছি।’
উপজেলার দৌলতপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাছির উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমাদের বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থী রয়েছে ৪৭৫ জন। স্কুল বন্ধ থাকার সময়ে তাদের মধ্যে দুই-তিনজনের বিয়ে হয়ে গেছে। আমরা বাধা দেব বলে অভিভাবকেরা বিয়ের সংবাদ জানান না। পরে খোঁজ-খবর নিয়ে বিয়ের বিষয়ে জানতে পারি। তারপরও আমরা বিদ্যালয়ের প্রতিটি শিক্ষার্থীর খোঁজ রাখছি যাতে কোনো শিক্ষার্থী বাল্যবিবাহের শিকার না হয়।’
মাওলানা শাকের আহমদ নামের একজন কাজি বলেন, ‘জন্মনিবন্ধন বা ভোটার আইডি কার্ডে ১৮ নিশ্চিত হয়ে আমি বিয়ে পড়াই। অনলাইনের মাধ্যমে বয়স সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে তারপর বিয়ে পড়ানো হয়।’
যাদের বয়স ১৮ হয়নি তাদের জন্মনিবন্ধন জালিয়াতির মাধ্যমে বিয়ে হচ্ছে—এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘স্কুলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বেশির ভাগ ইউপি সদস্যের মাধ্যমে জন্মনিবন্ধন ঠিক করে আনার পর বিয়ে হচ্ছে। সেখানে আমাদের কিছু করার থাকে না।’
যৌতুককে একটি সামাজিক ব্যাধি হিসেবে উল্লেখ করেন কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহিনা সুলতানা। তিনি বলেন, কোথাও বাল্যবিবাহের খবর পেলে প্রশাসন তা বন্ধ করছে। এ ক্ষেত্রে দু’পক্ষের অভিভাবক ও কাজিসহ জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে। যে কাজি বিয়ে এমন পড়াবেন, তাঁর বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
করোনাভাইরাসে মহামারির কারণে বড় পরিবর্তন এসেছে চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিয়ের অনুষ্ঠানে। কিছুদিন আগেও বিয়ের আয়োজনে হাজার মানুষের খাবার-দাবারের আয়োজন থাকত। কিন্তু এখন নগদ যৌতুকের চাপে আয়োজন ছোট করছে কনেপক্ষ। আবার এই সময়ে জেলার কর্ণফুলীতে জন্মনিবন্ধনে বয়স বদলে বেড়েছে বাল্যবিবাহ, যা ভাবিয়ে তুলেছে জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় সচেতন মহলকে।
উপজেলার বেশ কয়েকজন অভিভাবকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাঁদের কেউ কেউ মেয়ের বিয়েতে খাবারের আয়োজন সীমিত করে সেই টাকা বরপক্ষকে নগদ দিয়েছেন। মেয়ের সুখের কথা ভেবে তাঁরা পরিচয় দিতে রাজি হননি।
বড়উঠান এলাকার এক অভিভাবক বলেন, বিয়েতে এখন বেশি বরযাত্রী খাওয়াতে হচ্ছে না। তাতে খাওয়া খরচ কমেছে বটে, কিন্তু সেই টাকা নগদ পরিশোধ করতে বলেছে বরপক্ষ। এটা যেন করোনাকালে যৌতুকের নতুন সংস্করণ। শুধু তাই নয়, ঈদে বাজার ও কোরবানির সময় মেয়ের জামাইকে দিতে হয়েছে বড় একটি গরু।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক এসএসসি পরীক্ষার্থী বলে, ‘কিছুদিন পর আমার পরীক্ষা। কিন্তু বাবা জোর করে আমাকে এক প্রবাসীর কাছে বিয়ে দিতে চাচ্ছেন। আমি রাজি হচ্ছি না, তাই প্রতিদিন আমাকে ও মাকে মারধরও করছেন। কিন্তু লজ্জায় আমি কাউকে এসব জানাতেও পারছি না। আত্মীয়-স্বজনেরাও এটার বিরোধিতা করছেন, কিন্তু বাবাকে কেউ বুঝাতে পারছেন না। আমি লেখাপড়া করে অনেক বড় হতে চাই।’
আইনজীবী এম লোকমান শাহ্ বলেন, করোনার পরিস্থিতি ও লকডাউনের প্রথম দিকে বিয়ের প্রবণতা বেশি ছিল। গত ঈদের পর বিয়ের সংখ্যা আরও বেড়ে গেছে। দীর্ঘ দিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের সুযোগে বাল্যবিবাহের সংখ্যাও বেড়েছে নতুন করে। অনেক শিক্ষার্থীর জন্মতারিখ জালিয়াতি করে কিছু অসাধু কাজি বিশেষ সুবিধা নিয়ে পড়িয়েছেন এসব বিয়ে। এ রকম ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটছে। সেই সঙ্গে ছেলের পরিবার থেকে যৌতুকের চাহিদাও বেড়েছে।
দেশে প্রকৃতপক্ষে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন থাকলেও বাস্তবে এর প্রয়োগ নেই বলেও উল্লেখ করেন তিনি। বলেন, ‘যেসব কাজি অনৈতিক সুবিধা নিয়ে বাল্যবিবাহ পড়াচ্ছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমি প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানাই।’
বড়উঠান ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ দিদারুল আলম বলেন, বিয়েতে আত্মীয়-স্বজনদের খাওয়া-দাওয়ার বিষয়টা কমে গেছে। বেশির ভাগ ছেলেপক্ষ এসব খরচ বাবদ নগদ টাকা নিয়ে নিচ্ছেন। ধরতে গেলে এটাও এক ধরনের যৌতুক। এমন কাজ কারও কাম্য নয়।
এই জনপ্রতিনিধি বলেন, ‘আমার এলাকায় যেন কোনো মেয়ে বাল্যবিবাহের শিকার না হয়—সেদিকে নজর রেখেছি। কেউ বিয়েতে দাওয়াত দিতে আসলে শুরুতে মেয়ের বয়স ও পাত্রপক্ষকে কী কী দিতে হচ্ছে—সে বিষয়ে জানতেই চাচ্ছি। সবার মুখে একই কথা, “তেমন কিছু না। খাওয়া-দাওয়া বাবদ নগদ টাকা।” কিছুদিন আগে আমি ইউএনও মহোদয়কে নিয়ে একটি বাল্যবিবাহ বন্ধ করে দিয়েছি।’
উপজেলার দৌলতপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাছির উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমাদের বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থী রয়েছে ৪৭৫ জন। স্কুল বন্ধ থাকার সময়ে তাদের মধ্যে দুই-তিনজনের বিয়ে হয়ে গেছে। আমরা বাধা দেব বলে অভিভাবকেরা বিয়ের সংবাদ জানান না। পরে খোঁজ-খবর নিয়ে বিয়ের বিষয়ে জানতে পারি। তারপরও আমরা বিদ্যালয়ের প্রতিটি শিক্ষার্থীর খোঁজ রাখছি যাতে কোনো শিক্ষার্থী বাল্যবিবাহের শিকার না হয়।’
মাওলানা শাকের আহমদ নামের একজন কাজি বলেন, ‘জন্মনিবন্ধন বা ভোটার আইডি কার্ডে ১৮ নিশ্চিত হয়ে আমি বিয়ে পড়াই। অনলাইনের মাধ্যমে বয়স সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে তারপর বিয়ে পড়ানো হয়।’
যাদের বয়স ১৮ হয়নি তাদের জন্মনিবন্ধন জালিয়াতির মাধ্যমে বিয়ে হচ্ছে—এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘স্কুলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বেশির ভাগ ইউপি সদস্যের মাধ্যমে জন্মনিবন্ধন ঠিক করে আনার পর বিয়ে হচ্ছে। সেখানে আমাদের কিছু করার থাকে না।’
যৌতুককে একটি সামাজিক ব্যাধি হিসেবে উল্লেখ করেন কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহিনা সুলতানা। তিনি বলেন, কোথাও বাল্যবিবাহের খবর পেলে প্রশাসন তা বন্ধ করছে। এ ক্ষেত্রে দু’পক্ষের অভিভাবক ও কাজিসহ জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে। যে কাজি বিয়ে এমন পড়াবেন, তাঁর বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫পাকিস্তানে ভারতের হামলার সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীনও এই হামলাকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছে। উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘও। উত্তেজনা যেন আরও না বাড়ে, সে জন্য দুই পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশ। এদিকে ভারতের অবস্থানকে সমর্থন করেছে...
০৮ মে ২০২৫