Ajker Patrika

জমে উঠছে হাট, বিক্রি কম

শিপুল ইসলাম, তারাগঞ্জ
আপডেট : ০৯ মার্চ ২০২২, ১১: ১৪
জমে উঠছে হাট, বিক্রি কম

করোনাভাইরাস মহামারিতে সরকারি বিধিনিষেধ থাকায় এত দিন ঐতিহ্যবাহী তারাগঞ্জ পশুর হাটসহ উপজেলার বাকি হাটগুলো ঝিমিয়ে ছিল। এখন প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ টিকার আওতায় আসায় সবকিছু স্বাভাবিক সময়ের মতো চলছে। জমে উঠেছে পশুর হাটও। তবে বিক্রি কম বলে দাবি করেছেন বিক্রেতা ও হাট ইজারাদারেরা।

তারাগঞ্জ পশুর হাটে গত সোমবার গিয়ে দেখা গেছে, সড়কের ধারে গরু বহনকারী সারি সারি ভটভটি, ট্রাক দাঁড়িয়ে। হাটের ভেতরে গিজগিজ করছে মানুষ আর গরু, ছাগল, ভেড়া। হাটের চারদিকে চেয়ার-টেবিল নিয়ে বসেছেন রসিদ লেখকেরা। হাটে মাঝারি ধরনের গরু ছিল বেশি।

হাটে কথা হয় নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার কৃষক লেবু মিয়ার সঙ্গে। দুটি মাঝারি আকারের গরু নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। প্রতিটি গরুর দাম হাঁকান ৭০ হাজার টাকা।

লেবু মিয়া বলেন, ‘গত হাটো গরু দুইটা বেঁচপার পাও নাই। আজ ধরি আসছুং। হটোত আইজ বহুত গরু উঠছে। কিন্তু কেনার লোক নাই। খালি দাম শুনি ঘুরি যাওছে। হাটের অবস্থা দেখি মনে হওছে আইজও গরু বেচা হবার নেয়।’

বিকেল তখন ৩টা। প্রচণ্ড রোদে টপটপ করে ঘাম ঝরছিল চিকলী গ্রামের মোজাহারুল ইসলামের। শক্ত হাতে গরুর রশি ধরে ক্রেতার আশায় দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। চোখেমুখে ছিল হতাশা।

মোজাহারুল বলেন, ‘বাপু গরুর খাওন আর দিবার পারোছোন না। ভুসি, চালের খুদি, ফিড, সউগগুলারে দাম হু হু করি বাড়ছে। সংসার খরচে কুলার পাওছুন না। মাঠোত ঘাস নাই। একমুঠ ঘাস যদি হাটোত কিনার যান ১০ টাকা নেয়। কম করি খাবার দিবার গেইলেও ৬০ থেকে ৭০ টাকা নাগে। ওই জন্যে গরু বেচপার আলছুন। মনের মতোন দাম কায়ও কয় না।’

তবে ক্রেতারা বলছেন, গরুর দাম বেশি চাওয়া হচ্ছে। নাতনির জন্য ২৫ হাজার টাকায় গরু কিনতে এসেছিলেন হাড়িয়ারকুঠির মমিন হোসেন। ৫ ঘণ্টা ঘুরেও তিনি গরু কিনতে পারেননি। তিনি জানান, বিক্রেতারা গরুর দাম অনেক বেশি চাচ্ছেন। আকারের সঙ্গে দামের সামঞ্জস্য নেই। দাম শুনে আর কথা বলার মতো উপায় থাকছে না। বেলা ১১টা থেকে ঘুরেও কাঙ্ক্ষিত দামে গরু কিনতে পারিনি।

হাটে মাংসের গরুর চাহিদা বেশি বলে জানান ব্যবসায়ী শরিফুল ইসলাম। তিনি বলেন, এ সময় যে গরুগুলো বিক্রি হচ্ছে তার ৯০ ভাগই মাংসের উদ্দেশ্যে কেনা। বাজারে গোখাদ্যের দাম বাড়ায় গরুর দামও বেড়েছে।

বিক্রি কেমন জানতে চাইলে রসিদ লেখন জিয়া ইসলাম বিকেল ৪টার দিকে রসিদ বই দেখিয়ে বলেন, ‘এই দেখেন, এখনো সাতটি গরু বিক্রির তথ্য লিখতে পারিনি। অন্য দিনের চেয়ে হাটে গরু বেশি আসলেও বিক্রি খুবই কম।’

করোনার আগে প্রতি হাটে ৬ থেকে ৭ শ পশু বিক্রি হতো জানিয়ে হাট ইজারাদার স্বপন চৌধুরী বলেন, করোনার সময় তা কমে গেছে। ফের হাট শুরু হয়েছে। পর্যাপ্ত পশুও উঠছে। কিন্তু কেনাবেচা আগের থেকে কম। এখন ১০০ থেকে ১৫০টি গরু বেচাকেনা হয়।

পশুর দাম বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ফরহাদ নোমান বলেন, ‘বাজারে গোখাদ্যের দাম বাড়ায় গরু পালন খরচ বেড়েছে। তাই গরুর বাজারও ঊর্ধ্বমুখী। খামারিদের আমরা খরচ কমিয়ে কীভাবে গরু পালন করা যায় তাঁর পরামর্শ দিচ্ছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জামায়াতের সমাবেশের জন্য বিশেষ ট্রেন, যে ব্যাখ্যা দিল রেল মন্ত্রণালয়

আবাসিক হোটেলে অভিযানে গিয়ে অবরুদ্ধ ভ্রাম্যমাণ আদালতের কর্মকর্তারা, সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে উদ্ধার

কোটালীপাড়ায় আওয়ামী লীগের দেড় হাজার নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেপ্তার ১২

শর্তের জালে মার্কিন চাপ

হাবিপ্রবিতে শাস্তি পাচ্ছেন ছাত্রলীগের ১০২ জন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত