ড. এম আবদুল আলীম

১৯৪৮ সালের ভাষা আন্দোলনে নেতৃত্বদানের কারণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পুলিশি নির্যাতন, গ্রেপ্তার ও কারাভোগ করেন; ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের সময় নিরাপত্তা-বন্দী হিসেবে ঢাকা ও ফরিদপুর কারাগার থেকে আন্দোলনকারীদের নির্দেশনা দিয়ে ভাষা আন্দোলনে পরোক্ষ অবদান রাখেন। যদিও বায়ান্নতে তাঁর ভাষা আন্দোলনে ভূমিকা নিয়ে বদরুদ্দীন উমরসহ অনেকেই ধূম্রজাল সৃষ্টি করেছেন। কিন্তু পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার গোপন প্রতিবেদন, ‘বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী’, ‘কারাগারের রোজনামচা’ এবং ‘আমার দেখা নয়াচীন’ গ্রন্থ প্রকাশসহ ভাষা আন্দোলনের সময়কার বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা ও দলিলপত্র পর্যালোচনা করলে ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা দিবালোকের মতো স্পষ্ট হয়।
বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের সময়, অর্থাৎ ১৯৫১ সালের ৩০ আগস্ট থেকে ১৯৫২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বেশ কয়েকবার তাঁকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। এ সময় তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন আইনজীবী, রাজনীতিবিদ, ছাত্রনেতা, চিকিৎসক, গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন এবং আত্মীয়স্বজন। ১৯৫১ সালের ১৩ নভেম্বর সকাল ৯টায় তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন আনোয়ারা খাতুন এমএনএ, খয়রাত হোসেন এমএনএ, তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া, আহমদ হোসাইনসহ প্রায় ৩০ জন মেডিকেল ছাত্র। ১৯৫১ সালের ৩০ নভেম্বর তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক খালেক নেওয়াজ খান। তিনি সকাল সোয়া ৯টা থেকে পৌনে ১০টা পর্যন্ত কথা বলেন। ১৯৫২ সালের জানুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের সহসভাপতি আতাউর রহমান খান, আজিজ আহমদ, পূর্ব পাকিস্তান যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক অলি আহাদ, পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শামসুল হক চৌধুরী, পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের সহসভাপতি কাজী গোলাম মাহবুব প্রমুখ। এসব তথ্য জানা যায়, পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার গোপন প্রতিবেদন থেকে।
বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের সময় বঙ্গবন্ধু পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ব্যক্তিগত খোঁজখবর নেওয়া ছাড়াও রাজনৈতিক নির্দেশনা গ্রহণের জন্য রাজনীতিবিদ ও ছাত্রনেতারা তাঁর সঙ্গে বারবার কারাগারে সাক্ষাৎ করেন। এদিকে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন তখন চূড়ান্ত রূপ পরিগ্রহ করে। ১৯৫২ সালের ২৭ জানুয়ারি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দীন পল্টন ময়দানের জনসভায় ঘোষণা করেন, উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা। এর প্রতিবাদে ছাত্ররা রাজপথে নেমে আসেন এবং রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে একত্র হয়ে আন্দোলনের করণীয় ঠিক করতে দফায় দফায় বৈঠক করেন। পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সভাপতি মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর সভাপতিত্বে আয়োজিত সভায় গঠন করা হয় ৪০ সদস্যের ‘সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’। এর আহ্বায়ক হন পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের সহসভাপতি কাজী গোলাম মাহবুব। রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠন এবং আন্দোলন পরিচালনার জন্য নিরাপত্তা-বন্দী শেখ মুজিবুর রহমান ছাত্রনেতাদের বারবার নির্দেশনা দেন। কারাগারের রোজনামচায় তিনি লিখেছেন: ‘জানুয়ারি মাসে আমাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়।...আমি তখন বন্দি অবস্থায় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। রাত্রের অন্ধকারে মেডিকেল কলেজের ছাত্রদের সহায়তায় নেতৃবৃন্দের সাথে পরামর্শ করে ২১শে ফেব্রুয়ারি প্রতিবাদের দিন স্থির করা হয়। আমি ১৬ই ফেব্রুয়ারি থেকে অনশন শুরু করব মুক্তির জন্য। কাজী গোলাম মাহবুব, অলি আহাদ, মোল্লা জালালউদ্দিন, মোহাম্মদ তোয়াহা, নাইমউদ্দিন, খালেক নেওয়াজ, আজিজ আহমদ, আবদুল ওয়াদুদ ও আরও অনেকে গোপনে গভীর রাতে আমার সঙ্গে দেখা করত।’ ‘সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদে’র সভায় ২১ ফেব্রুয়ারি প্রদেশব্যাপী ধর্মঘট পালন ছাড়াও একটি প্রস্তাবে নিরাপত্তা-বন্দী শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তির দাবি জানানো হয়।
সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠনের পর ভাষা আন্দোলন প্রবল থেকে প্রবলতর হয়। ৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্মঘট পালিত হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেখ মুজিবুর রহমান অতিমাত্রায় রাজনৈতিক তৎপরতা শুরু করলে সরকার তাঁকে এবং সহবন্দী মহিউদ্দিন আহমেদকে ফরিদপুর কারাগারে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এবং ১৫ ফেব্রুয়ারি সেখানে স্থানান্তর করে। যাত্রাপথে নারায়ণগঞ্জের ছাত্রনেতারা তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ফরিদপুর কারাগারে স্থানান্তর করা হলে তাঁরা ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে অনশন শুরু করেন। বঙ্গবন্ধু ফরিদপুর কারাগারে অনশন শুরু করলে ভাষা আন্দোলনে নতুন গতি সঞ্চারিত হয়। বিভিন্ন পত্রিকা মারফত এ সংবাদ প্রচারের পর আন্দোলনকারীরা তাঁদের মুক্তির দাবিতে নানা কর্মসূচি পালন করেন। পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ এবং পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে লিফলেট প্রকাশ করে ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে বিতরণ করা হয়। ওই লিফলেটে মুসলিম লীগ সরকারকে ‘ফ্যাসিস্ট’ বলে অভিহিত করে তাদের অতীত থেকে শিক্ষা নিতে বলা হয়। এর আগে আতাউর রহমান খান, শামসুল হক, মওলানা ভাসানী প্রমুখ নেতা তাঁদের মুক্তির দাবিতে বিবৃতি দেন। ১৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে তাঁদের মুক্তির দাবিতে এক ছাত্রসভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় বক্তব্য দেন শামসুল হক চৌধুরী, নাদেরা বেগম, জিল্লুর রহমান প্রমুখ। বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়ালে দেয়ালে মুক্তির দাবিসংবলিত পোস্টার লাগানো হয়।
ঢাকার বাইরেও ভাষা আন্দোলনের বিভিন্ন সভা-সমাবেশ থেকে একই দাবি উচ্চারিত হয়। মূলত বঙ্গবন্ধুর অনশন ও অসুস্থতাকে কেন্দ্র করে পূর্ববঙ্গের রাজনীতির মাঠ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ওই সময় মুখ্যমন্ত্রী নূরুল আমীন একদিন ট্রেনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সফর শেষে ঢাকায় ফিরছিলেন, নরসিংদী রেলস্টেশনে মতিউর রহমান নামের এক ব্যক্তি তাঁকে শেখ মুজিবুর রহমানকে মুক্তিদানের অনুরোধ জানান। এ ছাড়া যশোর, কুষ্টিয়া, ফরিদপুরসহ বিভিন্ন স্থানে ‘শেখ মুজিবের মুক্তি চাই’ স্লোগান ওঠে। যশোরের ইতনার প্রতিবাদ সম্পর্কে সাপ্তাহিক ইত্তেফাক পত্রিকায় এক চিঠিতে বলা হয়: ‘ইতনা, যশোর, ১৭ ফেব্রুয়ারি। পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের জয়েন্ট সেক্রেটারি জনাব শেখ মুজিবুর রহমান সাহেবের মুক্তির দাবিতে ইতনা হাইস্কুল প্রাঙ্গণে এক বিরাট সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় রহমান সাহেবের অসুস্থতার দিক লক্ষ করিয়া ছাত্রনেতা জনাব সিরাজুল ইসলাম বলেন, খোদা না করুক, যদি মি. রহমানের অকাল মৃত্যু হয়, তা হইলে জনসাধারণ গদিধারীদের ক্ষমা করিবে না।...আমাদের কোনো দাবী যদি গদিওয়ালারা না শোনেন তাহা হইলে তাহাদের মনে করাইয়া দেই যে, “এক মাঘে শীত যায় না।” ...জনসাধারণ আওয়ামী লীগ জিন্দাবাদ, শেখ মুজিবুর রহমান জিন্দাবাদ ধ্বনিতে সভা ত্যাগ করেন। সভায় হাজার হাজার লোক উপস্থিত ছিলেন।’ কেবল সভা-সমাবেশ নয়, পূর্ববঙ্গ আইন পরিষদেও শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তির দাবি তোলা হয়। ১৯৫২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি বিকেলে তাঁর অনশন বিষয়ে আলোচনার জন্য আইন পরিষদে মুলতবি প্রস্তাব উত্থাপন করেন আনোয়ারা খাতুন এমএলএ।
এদিকে ভাষা আন্দোলনকারীদের দমনে সরকার ২০ ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা জারি করে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলার সমাবেশ থেকে ছাত্ররা তা ভঙ্গ করে ২১ ফেব্রুয়ারি খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে পূর্ববঙ্গ আইন পরিষদ অভিমুখে যাত্রা করে। ওই দিন পুলিশের গুলিতে শহীদ হন রফিক, সালাম, বরকতসহ নাম না-জানা অনেকে। ২১ ফেব্রুয়ারি কারাগারে অনশনরত অবস্থাতেই বঙ্গবন্ধু ঢাকায় হতাহতের খবর পান। সেদিন ফরিদপুর কারাগারের গেটে গিয়ে পিকেটাররা স্লোগান দেয় ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’, ‘শেখ মুজিবের মুক্তি চাই’। ২৩ ফেব্রুয়ারি ফরিদপুর জেল থেকে ঢাকার যুবলীগ অফিসে একটি টেলিগ্রাম আসে দপ্তর সম্পাদক আনিসুজ্জামানের কাছে। তাতে বলা হয়, শেখ মুজিবুর রহমান এবং মহিউদ্দিন আহমেদ একুশে ফেব্রুয়ারি গুলিবর্ষণের খবর পেয়ে তাঁদের মুক্তির দাবির সঙ্গে হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদও যুক্ত করেছেন।
তাঁদের অনশনে দেশময় ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হলে সরকার ১৯৫২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি শেখ মুজিবুর রহমানকে এবং ২৮ ফেব্রুয়ারি মহিউদ্দিন আহমেদকে মুক্তি দেয়। মুক্তির পর বঙ্গবন্ধু ভগ্নস্বাস্থ্য নিয়ে গ্রামের বাড়িতে হাজির হন। এরপর এক বিবৃতি দিয়ে ২১ ফেব্রুয়ারির গুলিবর্ষণের ঘটনায় মর্মাহত হওয়ার কথা জানান এবং শহীদদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। তিনি পুলিশের গুলিবর্ষণ ও হয়রানির নিন্দা জানান। গ্রামের বাড়িতে অবস্থানরত অবস্থায় পুলিশ হেডকোয়ার্টারের নির্দেশে তাঁকে স্থানীয় পুলিশ কঠোর নজরদারিতে রাখে। কিছুদিন গ্রামে কাটিয়ে তিনি ঢাকায় ফিরে আসেন এবং নব-উদ্যমে রাজনীতি শুরু করেন। তিনি বাংলা ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার দাবিতে সোচ্চার হন এবং ভাষা আন্দোলন ও একুশের চেতনা প্রসারে কাজ করেন।
২৭ এপ্রিল সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের জেলা প্রতিনিধিদের সভায় যোগ দেন এবং বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি তুলে ধরেন। এরপর পশ্চিম পাকিস্তানে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দীনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ভাষা আন্দোলনের বন্দীদের মুক্তির দাবি জানান এবং পুলিশের গুলিতে হতাহতের বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেন। তিনি পশ্চিম পাকিস্তানে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সেখানকার সুধীমহলে ভাষা আন্দোলনের যৌক্তিকতা তুলে ধরেন এবং হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বাংলা ভাষাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার পক্ষে তাঁর বিবৃতি আদায় করেন।
এভাবে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন নিরাপত্তা-বন্দী শেখ মুজিবুর রহমান কারাগারের ভেতরে ও বাইরে অবদান রাখেন। তাঁর অনশন ভাষা আন্দোলন বেগবানে বিশেষভাবে সহায়ক হয়।
লেখক: ড. এম আবদুল আলীম, ভাষা আন্দোলন গবেষক; পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক

১৯৪৮ সালের ভাষা আন্দোলনে নেতৃত্বদানের কারণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পুলিশি নির্যাতন, গ্রেপ্তার ও কারাভোগ করেন; ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের সময় নিরাপত্তা-বন্দী হিসেবে ঢাকা ও ফরিদপুর কারাগার থেকে আন্দোলনকারীদের নির্দেশনা দিয়ে ভাষা আন্দোলনে পরোক্ষ অবদান রাখেন। যদিও বায়ান্নতে তাঁর ভাষা আন্দোলনে ভূমিকা নিয়ে বদরুদ্দীন উমরসহ অনেকেই ধূম্রজাল সৃষ্টি করেছেন। কিন্তু পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার গোপন প্রতিবেদন, ‘বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী’, ‘কারাগারের রোজনামচা’ এবং ‘আমার দেখা নয়াচীন’ গ্রন্থ প্রকাশসহ ভাষা আন্দোলনের সময়কার বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা ও দলিলপত্র পর্যালোচনা করলে ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা দিবালোকের মতো স্পষ্ট হয়।
বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের সময়, অর্থাৎ ১৯৫১ সালের ৩০ আগস্ট থেকে ১৯৫২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বেশ কয়েকবার তাঁকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। এ সময় তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন আইনজীবী, রাজনীতিবিদ, ছাত্রনেতা, চিকিৎসক, গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন এবং আত্মীয়স্বজন। ১৯৫১ সালের ১৩ নভেম্বর সকাল ৯টায় তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন আনোয়ারা খাতুন এমএনএ, খয়রাত হোসেন এমএনএ, তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া, আহমদ হোসাইনসহ প্রায় ৩০ জন মেডিকেল ছাত্র। ১৯৫১ সালের ৩০ নভেম্বর তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক খালেক নেওয়াজ খান। তিনি সকাল সোয়া ৯টা থেকে পৌনে ১০টা পর্যন্ত কথা বলেন। ১৯৫২ সালের জানুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের সহসভাপতি আতাউর রহমান খান, আজিজ আহমদ, পূর্ব পাকিস্তান যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক অলি আহাদ, পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শামসুল হক চৌধুরী, পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের সহসভাপতি কাজী গোলাম মাহবুব প্রমুখ। এসব তথ্য জানা যায়, পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার গোপন প্রতিবেদন থেকে।
বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের সময় বঙ্গবন্ধু পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ব্যক্তিগত খোঁজখবর নেওয়া ছাড়াও রাজনৈতিক নির্দেশনা গ্রহণের জন্য রাজনীতিবিদ ও ছাত্রনেতারা তাঁর সঙ্গে বারবার কারাগারে সাক্ষাৎ করেন। এদিকে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন তখন চূড়ান্ত রূপ পরিগ্রহ করে। ১৯৫২ সালের ২৭ জানুয়ারি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দীন পল্টন ময়দানের জনসভায় ঘোষণা করেন, উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা। এর প্রতিবাদে ছাত্ররা রাজপথে নেমে আসেন এবং রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে একত্র হয়ে আন্দোলনের করণীয় ঠিক করতে দফায় দফায় বৈঠক করেন। পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সভাপতি মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর সভাপতিত্বে আয়োজিত সভায় গঠন করা হয় ৪০ সদস্যের ‘সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’। এর আহ্বায়ক হন পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের সহসভাপতি কাজী গোলাম মাহবুব। রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠন এবং আন্দোলন পরিচালনার জন্য নিরাপত্তা-বন্দী শেখ মুজিবুর রহমান ছাত্রনেতাদের বারবার নির্দেশনা দেন। কারাগারের রোজনামচায় তিনি লিখেছেন: ‘জানুয়ারি মাসে আমাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়।...আমি তখন বন্দি অবস্থায় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। রাত্রের অন্ধকারে মেডিকেল কলেজের ছাত্রদের সহায়তায় নেতৃবৃন্দের সাথে পরামর্শ করে ২১শে ফেব্রুয়ারি প্রতিবাদের দিন স্থির করা হয়। আমি ১৬ই ফেব্রুয়ারি থেকে অনশন শুরু করব মুক্তির জন্য। কাজী গোলাম মাহবুব, অলি আহাদ, মোল্লা জালালউদ্দিন, মোহাম্মদ তোয়াহা, নাইমউদ্দিন, খালেক নেওয়াজ, আজিজ আহমদ, আবদুল ওয়াদুদ ও আরও অনেকে গোপনে গভীর রাতে আমার সঙ্গে দেখা করত।’ ‘সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদে’র সভায় ২১ ফেব্রুয়ারি প্রদেশব্যাপী ধর্মঘট পালন ছাড়াও একটি প্রস্তাবে নিরাপত্তা-বন্দী শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তির দাবি জানানো হয়।
সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠনের পর ভাষা আন্দোলন প্রবল থেকে প্রবলতর হয়। ৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্মঘট পালিত হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেখ মুজিবুর রহমান অতিমাত্রায় রাজনৈতিক তৎপরতা শুরু করলে সরকার তাঁকে এবং সহবন্দী মহিউদ্দিন আহমেদকে ফরিদপুর কারাগারে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এবং ১৫ ফেব্রুয়ারি সেখানে স্থানান্তর করে। যাত্রাপথে নারায়ণগঞ্জের ছাত্রনেতারা তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ফরিদপুর কারাগারে স্থানান্তর করা হলে তাঁরা ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে অনশন শুরু করেন। বঙ্গবন্ধু ফরিদপুর কারাগারে অনশন শুরু করলে ভাষা আন্দোলনে নতুন গতি সঞ্চারিত হয়। বিভিন্ন পত্রিকা মারফত এ সংবাদ প্রচারের পর আন্দোলনকারীরা তাঁদের মুক্তির দাবিতে নানা কর্মসূচি পালন করেন। পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ এবং পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে লিফলেট প্রকাশ করে ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে বিতরণ করা হয়। ওই লিফলেটে মুসলিম লীগ সরকারকে ‘ফ্যাসিস্ট’ বলে অভিহিত করে তাদের অতীত থেকে শিক্ষা নিতে বলা হয়। এর আগে আতাউর রহমান খান, শামসুল হক, মওলানা ভাসানী প্রমুখ নেতা তাঁদের মুক্তির দাবিতে বিবৃতি দেন। ১৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে তাঁদের মুক্তির দাবিতে এক ছাত্রসভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় বক্তব্য দেন শামসুল হক চৌধুরী, নাদেরা বেগম, জিল্লুর রহমান প্রমুখ। বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়ালে দেয়ালে মুক্তির দাবিসংবলিত পোস্টার লাগানো হয়।
ঢাকার বাইরেও ভাষা আন্দোলনের বিভিন্ন সভা-সমাবেশ থেকে একই দাবি উচ্চারিত হয়। মূলত বঙ্গবন্ধুর অনশন ও অসুস্থতাকে কেন্দ্র করে পূর্ববঙ্গের রাজনীতির মাঠ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ওই সময় মুখ্যমন্ত্রী নূরুল আমীন একদিন ট্রেনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সফর শেষে ঢাকায় ফিরছিলেন, নরসিংদী রেলস্টেশনে মতিউর রহমান নামের এক ব্যক্তি তাঁকে শেখ মুজিবুর রহমানকে মুক্তিদানের অনুরোধ জানান। এ ছাড়া যশোর, কুষ্টিয়া, ফরিদপুরসহ বিভিন্ন স্থানে ‘শেখ মুজিবের মুক্তি চাই’ স্লোগান ওঠে। যশোরের ইতনার প্রতিবাদ সম্পর্কে সাপ্তাহিক ইত্তেফাক পত্রিকায় এক চিঠিতে বলা হয়: ‘ইতনা, যশোর, ১৭ ফেব্রুয়ারি। পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের জয়েন্ট সেক্রেটারি জনাব শেখ মুজিবুর রহমান সাহেবের মুক্তির দাবিতে ইতনা হাইস্কুল প্রাঙ্গণে এক বিরাট সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় রহমান সাহেবের অসুস্থতার দিক লক্ষ করিয়া ছাত্রনেতা জনাব সিরাজুল ইসলাম বলেন, খোদা না করুক, যদি মি. রহমানের অকাল মৃত্যু হয়, তা হইলে জনসাধারণ গদিধারীদের ক্ষমা করিবে না।...আমাদের কোনো দাবী যদি গদিওয়ালারা না শোনেন তাহা হইলে তাহাদের মনে করাইয়া দেই যে, “এক মাঘে শীত যায় না।” ...জনসাধারণ আওয়ামী লীগ জিন্দাবাদ, শেখ মুজিবুর রহমান জিন্দাবাদ ধ্বনিতে সভা ত্যাগ করেন। সভায় হাজার হাজার লোক উপস্থিত ছিলেন।’ কেবল সভা-সমাবেশ নয়, পূর্ববঙ্গ আইন পরিষদেও শেখ মুজিবুর রহমানের মুক্তির দাবি তোলা হয়। ১৯৫২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি বিকেলে তাঁর অনশন বিষয়ে আলোচনার জন্য আইন পরিষদে মুলতবি প্রস্তাব উত্থাপন করেন আনোয়ারা খাতুন এমএলএ।
এদিকে ভাষা আন্দোলনকারীদের দমনে সরকার ২০ ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা জারি করে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলার সমাবেশ থেকে ছাত্ররা তা ভঙ্গ করে ২১ ফেব্রুয়ারি খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে পূর্ববঙ্গ আইন পরিষদ অভিমুখে যাত্রা করে। ওই দিন পুলিশের গুলিতে শহীদ হন রফিক, সালাম, বরকতসহ নাম না-জানা অনেকে। ২১ ফেব্রুয়ারি কারাগারে অনশনরত অবস্থাতেই বঙ্গবন্ধু ঢাকায় হতাহতের খবর পান। সেদিন ফরিদপুর কারাগারের গেটে গিয়ে পিকেটাররা স্লোগান দেয় ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’, ‘শেখ মুজিবের মুক্তি চাই’। ২৩ ফেব্রুয়ারি ফরিদপুর জেল থেকে ঢাকার যুবলীগ অফিসে একটি টেলিগ্রাম আসে দপ্তর সম্পাদক আনিসুজ্জামানের কাছে। তাতে বলা হয়, শেখ মুজিবুর রহমান এবং মহিউদ্দিন আহমেদ একুশে ফেব্রুয়ারি গুলিবর্ষণের খবর পেয়ে তাঁদের মুক্তির দাবির সঙ্গে হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদও যুক্ত করেছেন।
তাঁদের অনশনে দেশময় ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হলে সরকার ১৯৫২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি শেখ মুজিবুর রহমানকে এবং ২৮ ফেব্রুয়ারি মহিউদ্দিন আহমেদকে মুক্তি দেয়। মুক্তির পর বঙ্গবন্ধু ভগ্নস্বাস্থ্য নিয়ে গ্রামের বাড়িতে হাজির হন। এরপর এক বিবৃতি দিয়ে ২১ ফেব্রুয়ারির গুলিবর্ষণের ঘটনায় মর্মাহত হওয়ার কথা জানান এবং শহীদদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। তিনি পুলিশের গুলিবর্ষণ ও হয়রানির নিন্দা জানান। গ্রামের বাড়িতে অবস্থানরত অবস্থায় পুলিশ হেডকোয়ার্টারের নির্দেশে তাঁকে স্থানীয় পুলিশ কঠোর নজরদারিতে রাখে। কিছুদিন গ্রামে কাটিয়ে তিনি ঢাকায় ফিরে আসেন এবং নব-উদ্যমে রাজনীতি শুরু করেন। তিনি বাংলা ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার দাবিতে সোচ্চার হন এবং ভাষা আন্দোলন ও একুশের চেতনা প্রসারে কাজ করেন।
২৭ এপ্রিল সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের জেলা প্রতিনিধিদের সভায় যোগ দেন এবং বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি তুলে ধরেন। এরপর পশ্চিম পাকিস্তানে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দীনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ভাষা আন্দোলনের বন্দীদের মুক্তির দাবি জানান এবং পুলিশের গুলিতে হতাহতের বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেন। তিনি পশ্চিম পাকিস্তানে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সেখানকার সুধীমহলে ভাষা আন্দোলনের যৌক্তিকতা তুলে ধরেন এবং হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বাংলা ভাষাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার পক্ষে তাঁর বিবৃতি আদায় করেন।
এভাবে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন নিরাপত্তা-বন্দী শেখ মুজিবুর রহমান কারাগারের ভেতরে ও বাইরে অবদান রাখেন। তাঁর অনশন ভাষা আন্দোলন বেগবানে বিশেষভাবে সহায়ক হয়।
লেখক: ড. এম আবদুল আলীম, ভাষা আন্দোলন গবেষক; পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

১৯৪৮ সালের ভাষা আন্দোলনে নেতৃত্বদানের কারণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পুলিশি নির্যাতন, গ্রেপ্তার ও কারাভোগ করেন; ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের সময় নিরাপত্তা-বন্দী হিসেবে ঢাকা ও ফরিদপুর কারাগার থেকে আন্দোলনকারীদের নির্দেশনা দিয়ে ভাষা
২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

১৯৪৮ সালের ভাষা আন্দোলনে নেতৃত্বদানের কারণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পুলিশি নির্যাতন, গ্রেপ্তার ও কারাভোগ করেন; ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের সময় নিরাপত্তা-বন্দী হিসেবে ঢাকা ও ফরিদপুর কারাগার থেকে আন্দোলনকারীদের নির্দেশনা দিয়ে ভাষা
২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

১৯৪৮ সালের ভাষা আন্দোলনে নেতৃত্বদানের কারণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পুলিশি নির্যাতন, গ্রেপ্তার ও কারাভোগ করেন; ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের সময় নিরাপত্তা-বন্দী হিসেবে ঢাকা ও ফরিদপুর কারাগার থেকে আন্দোলনকারীদের নির্দেশনা দিয়ে ভাষা
২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

১৯৪৮ সালের ভাষা আন্দোলনে নেতৃত্বদানের কারণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পুলিশি নির্যাতন, গ্রেপ্তার ও কারাভোগ করেন; ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের সময় নিরাপত্তা-বন্দী হিসেবে ঢাকা ও ফরিদপুর কারাগার থেকে আন্দোলনকারীদের নির্দেশনা দিয়ে ভাষা
২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫