তোফাজ্জল হোসেন রুবেল, ঢাকা

রাজধানীর বেইলি রোডের যে ভবনে আগুন লাগে সেটির নকশা অনুমোদন দিয়েছিলেন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) কর্মকর্তা মো. খালেকুজ্জামান চৌধুরী। বর্তমানে গণপূর্তের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর দায়িত্বে থাকা এই কর্মকর্তা ২০১১ সালে নকশা অনুমোদনের সময় ছিলেন অথরাইজড অফিসার। সে সময় রাজউকের রেখাকার হিসেবে বেইলি রোড এলাকার দায়িত্বে ছিলেন মো. সেলিম বকাউল। সাততলা এই বাণিজ্যিক ভবনে ছিল না কোনো জরুরি বহির্গমন ব্যবস্থা। একমাত্র সিঁড়িটিও ছিল খুবই সংকীর্ণ। এমন নকশা কীভাবে অনুমোদন পেল, সেই প্রশ্ন উঠেছে এখন।
গত বৃহস্পতিবার বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে আগুনে ৪৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন। দগ্ধ ও আহত হয়েছেন আরও ১৩ জন। এই ঘটনার পর রাজধানীতে হোটেল-রেস্তোরাঁগুলোয় সাঁড়াশি অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ, রাজউক ও সিটি করপোরেশন। এসব অভিযানে তিন দিনে ৮৭২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সেই সঙ্গে আলোচনায় উঠে এসেছে ওই ভবনের অনুমোদন ও সেখানে রেস্তোরাঁ চালানোর অনুমতি দেওয়া কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করার বিষয়টি।
ফায়ার অ্যান্ড ইলেকট্রিক্যাল সেফটি কনসালট্যান্ট অব বাংলাদেশ, এর প্রেসিডেন্ট মো. হাসমতুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বেইলি রোডের ঘটনায় বহু সংস্থার দায় রয়েছে। এখানে যিনি ভবন তৈরি করেছেন এবং যিনি রেস্তোরাঁ পরিচালনা করেছেন তারাও অনেকাংশে আইন ভঙ্গ করেছেন। বাণিজ্যিক ভবন দুই তলার বেশি হলে বিধিমতে দুটি সিঁড়ি হওয়ার কথা। সেখানে তা হয়নি। একটি রেস্তোরাঁয় ৪৫০ লিটারের বেশি দাহ্য পদার্থ মজুত করা যাবে না। কিন্তু সেখানে অনেক বেশি মজুত ছিল। ফলে সব সংস্থাকেই এ জন্য দায়ী করা যায়।’
রাজধানীতে একটি স্থাপনা অনুমোদন ও সেখানে রেস্তোরাঁ করতে গেলে কমপক্ষে ১০টি সরকারি সংস্থার অনুমতি প্রয়োজন। সংস্থাগুলো হলো রাজউক, সিটি করপোরেশন, ফায়ার সার্ভিস, তিতাস গ্যাস, ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ডিপিডিসি), কলকারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তর, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, ঢাকা ওয়াসা এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। বেইলি রোডের ভবনটিতেও এসব সংস্থার বেশির ভাগেরই অনুমোদন ছিল বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ঘটনায় সেসব অনুমোদনের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের যেমন দায় আছে, তেমনি ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে ভবনটিতে রেস্তোরাঁ ব্যবসা চলতে দেওয়ায় বর্তমানে দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারাও দায় এড়াতে পারেন না।
আজকের পত্রিকার অনুসন্ধানে জানা যায়, সরকারি এসব সংস্থার পক্ষে বেইলি রোড এলাকায় কমপক্ষে দুই ডজন কর্মকর্তা দায়িত্বে আছেন, যাঁদের দায়িত্ব ছিল দেখেশুনে অনুমোদন দেওয়া এবং সময়ে সময়ে পরিদর্শন করে ঝুঁকিমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা। মূলত এসব কর্মকর্তার ম্যানেজ করেই চলছিল গ্রিন কোজি কটেজ ভবনের রেস্তোরাঁগুলো।
একটি রেস্তোরাঁ পরিচালনা করতে হলে শুধু সিটি করপোরেশন থেকেই তিন ধরনের তদারকি ও অনুমোদন প্রয়োজন হয়। বেইলি রোড এলাকা ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) অঞ্চল-১-এর আওতাধীন। বর্তমানে আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে এই অঞ্চলের দায়িত্ব আছেন উপসচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম। এর আগে ছিলেন মেরিনা নাজনীন নামের আরেক কর্মকর্তা। রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়নের দায়িত্ব ডিএসসিসির লাইসেন্স ও বিজ্ঞাপন সুপারভাইজারের। এ পদে ইফতেখার আহমেদ নামের একজন ১২ বছর ধরে বেইলি রোড এলাকার দায়িত্বে আছেন।
রেস্তোরাঁর জন্য সিটি করপোরেশনের আরেকটি শাখা স্বাস্থ্য বিভাগেরও অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। সেখানে দায়িত্বে আছেন সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার ফারিয়া ফয়েজ নামের একজন। এরপর যে ভবনে রেস্তোরাঁ চালু করা হচ্ছে, সেখানে অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী হচ্ছে কি না, তা দেখভালের জন্য আছেন একজন স্যানিটারি পরিদর্শক। ডিএসসিসির পক্ষ থেকে বেইলি রোড এলাকায় এ দায়িত্বে আছেন মোয়াজ্জেম খান নামের একজন স্যানিটারি পরিদর্শক।
মাঠপর্যায়ে নিয়মমাফিক ট্রেড লাইসেন্স ও কর আদায় হচ্ছে কি না, তা মনিটরিং করে থাকেন একজন উপকর কর্মকর্তা। রাজধানীর বেইলি রোড, মগবাজার, ধানমন্ডি, পরীবাগ, তোপখানা রোড এলাকার এ দায়িত্বে আছেন ডিএসসিসির কর কর্মকর্তা আবু নাসের কচি। বেইলি রোডের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা কয়েকটি সংস্থার অনুমোদন থাকলে সেখান থেকে কর আদায় করি। বাণিজ্যিক স্থাপনা হিসেবে নকশা অনুমোদন থাকার পর আমাদের ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু করা হয়। এখানে সরকারিভাবে বলা নেই যে বাণিজ্যিক ভবন হলে রেস্তোরাঁ করা যাবে না। এমন কোনো বিধিমালা আছে কি না, তা-ও আমার জানা নেই।’
গ্রিন কোজি কটেজ ভবনের নকশা অনুমোদন করেন রাজউকের তৎকালীন অথরাইজড অফিসার মো. খালেকুজ্জামান চৌধুরী। ভবনটির নকশা অনুমোদনের সময় রেখাকার ছিলেন মো. সেলিম বকাউল। পরে এ দায়িত্বে আসেন আরঙ্গজেব নান্নু। বর্তমানে জোন-৬-এ দায়িত্বে আছেন শুভ্র দেব নামের একজন কর্মকর্তা। কয়েক বছর ধরে ইমারত পরিদর্শকদের কাজ তদারকির জন্য প্রধান ইমারত পরিদর্শক হিসেবে দায়িত্বে আছেন বাসুদেব ভট্টাচার্য নামের এক কর্মকর্তা। এ ছাড়া ভবন তদারকির কাজে আছেন সহকারী অথরাইজড অফিসার শাহনাজ খানম এবং অথরাইজড অফিসার জোটন দেবনাথ। আর তাঁদের সবাইকে তদারকি করেন জোন পরিচালক সালেহ আহমেদ জাকারিয়া নামের একজন কর্মকর্তা।
অগ্নিদুর্ঘটনার শিকার ভবনটি সম্পর্কে জানতে চাইলে ইমারত পরিদর্শক সেলিম বকাউল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা মূলত নকশার ব্যত্যয় ঘটিয়ে স্থাপনা হচ্ছে কি না, তা দেখে থাকি। পরে কারা ভবনে কী করছে বা ব্যবহার কীভাবে করছে, তা দেখি না।’
গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে ডিপিডিসির একটি বাণিজ্যিক সংযোগ ছিল। এর আগে এই ভবনে ছিল আবাসিক সংযোগ। বিদ্যুতের নতুন সংযোগ প্রদানের জন্য গ্রাহকের কাছে ভবনের অকুপেন্সি সনদ বা ভবনটি ব্যবহারের অনুমতিপত্র আছে কি না, তা নিশ্চিত করার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু বেইলি রোডের গ্রাহকের ক্ষেত্রে ডিপিডিসি কোনো অকুপেন্সি সনদ জমা নেয়নি। এ বিষয়ে জানতে চেয়ে বারবার ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল্লা নোমানের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে কল করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। পরে খুদে বার্তা পাঠানো হলেও তিনি সাড়া দেননি।
রাজধানীর বেইলি রোডের ওই ভবনের রেস্তোরাঁগুলোতে ফায়ার সার্ভিসের অনুমোদন ছিল বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। একটি রেস্তোরাঁয় লাইসেন্স দেওয়ার দায়িত্ব পরিচালকের (অপারেশন) দপ্তরের। লাইসেন্স ইস্যুর মূল কাজটি করেন সহকারী পরিচালক (ওয়্যার হাউস)। বর্তমানে এ পদে আছেন মো. আনোয়ার হোসেন। এ কর্মকর্তার পরে মাঠপর্যায়ে এ সংস্থার পক্ষে এসব বিষয় তদারকি করে থাকেন ওয়্যার হাউস পরিদর্শক পদের একজন কর্মকর্তা। বেইলি রোড এলাকায় বর্তমানে দায়িত্বে আছেন অধীর চন্দ্র নামের একজন।
বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডের পর তিতাস গ্যাসের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও দায়িত্বে গাফিলতির অভিযোগ উঠে এসেছে। তিতাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৯৭২ সালে হামিদা খাতুন নামের একজন নারীর নামে এই ভবনে একটি ডাবল বার্নার বা দুই চুলার আবাসিক গ্যাস-সংযোগ দেয় তিতাস। এরপর ২০১৮ সাল পর্যন্ত এই ভবনের মালিক একটি দুই চুলার সংযোগের বিল তিতাস গ্যাসের ব্যাংক হিসাবে জমা দিয়ে আসছে। ২০১৮ সালের পর থেকে ভবনের গ্যাস-সংযোগের বিল বকেয়া রয়েছে। এরপরও সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করেনি তিতাস। ভবনের ব্যবসায়ীরা জানান, ভবনে দুই চুলার সংযোগটি গোপনে ব্যবহার করতেন সেখানকার নিরাপত্তাকর্মীরা।
বেইলি রোড তিতাস গ্যাস বিতরণ অঞ্চল দক্ষিণের আওতাধীন এলাকা। গত ৫ বছরে তিতাস গ্যাস দক্ষিণের উপমহাব্যবস্থাপকের পদে দুজন দায়িত্বে ছিলেন। তাঁরা হলেন মো. তোফাজ্জল হোসেন ও মাহাবুবর রহমান। তাঁদের মধ্যে তোফাজ্জল হোসেন বদলি হয়ে গুলশান জোনের দায়িত্ব নিয়েছেন। বর্তমানে এ পদে রয়েছেন মাহাবুবর রহমান। দায়িত্বরত ব্যক্তিদের কেউই গত ৫ বছরে আবাসিক থেকে বাণিজ্যিক ভবন হওয়া গ্রিন কোজি কটেজ ভবনের গ্যাস-সংযোগটির বিষয়ে কোনো হালনাগাদ তথ্য রাখেননি। একবারও তিতাস থেকে কেউ সেখানে পরিদর্শনে যাননি।
আসনসংখ্যা ৩০টির বেশি—ঢাকায় এমন রেস্তোরাঁ পরিচালনা করতে গেলে বাংলাদেশ হোটেল ও রেস্তোরাঁ আইন, ২০১৪ অনুযায়ী ঢাকার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের অনুমোদন লাগে। সেখানে থেকে প্রথমে প্রাথমিকভাবে নিবন্ধন দেওয়া হয়। পরে সবকিছু মনিটরিং করে লাইসেন্স দেওয়া হয়। জেলা প্রশাসকের পক্ষে কাজটি করে থাকেন সহকারী কমিশনার (ব্যবসা-বাণিজ্য শাখা)। এখানে বর্তমানে দায়িত্বে আছেন মো. শোয়েব শাত-ঈল ইভান নামের একজন কর্মকর্তা। এর আগে দীর্ঘ সময় এ দায়িত্বে ছিলেন মো. জামাল হোসেন নামের একজন কর্মকর্তা। বেইলি রোডের বিষয়ে জানতে চাইলে মো. শোয়েব শাত-ঈল ইভান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বেইলি রোডের কোনো রেস্তোরাঁয় আমাদের অনুমোদন ছিল না। আমাদের কাছে একটিমাত্র রেস্তোরাঁ আবেদন করেছিল; কাগজপত্র ঠিক নেই, তাই অনুমোদন দিইনি।’
বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান বলেন, একটি রেস্তোরাঁ করতে সরকারের প্রয়োজনীয় ১২টি সংস্থার লাইসেন্স লাগে। আমাদের অনেক রেস্তোরাঁর সব লাইসেন্স রয়েছে। আবার কিছু হয়তো নেই। এ ধরনের লাইসেন্স সরবরাহ আরও সহজ করা উচিত।’

রাজধানীর বেইলি রোডের যে ভবনে আগুন লাগে সেটির নকশা অনুমোদন দিয়েছিলেন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) কর্মকর্তা মো. খালেকুজ্জামান চৌধুরী। বর্তমানে গণপূর্তের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর দায়িত্বে থাকা এই কর্মকর্তা ২০১১ সালে নকশা অনুমোদনের সময় ছিলেন অথরাইজড অফিসার। সে সময় রাজউকের রেখাকার হিসেবে বেইলি রোড এলাকার দায়িত্বে ছিলেন মো. সেলিম বকাউল। সাততলা এই বাণিজ্যিক ভবনে ছিল না কোনো জরুরি বহির্গমন ব্যবস্থা। একমাত্র সিঁড়িটিও ছিল খুবই সংকীর্ণ। এমন নকশা কীভাবে অনুমোদন পেল, সেই প্রশ্ন উঠেছে এখন।
গত বৃহস্পতিবার বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে আগুনে ৪৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন। দগ্ধ ও আহত হয়েছেন আরও ১৩ জন। এই ঘটনার পর রাজধানীতে হোটেল-রেস্তোরাঁগুলোয় সাঁড়াশি অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ, রাজউক ও সিটি করপোরেশন। এসব অভিযানে তিন দিনে ৮৭২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সেই সঙ্গে আলোচনায় উঠে এসেছে ওই ভবনের অনুমোদন ও সেখানে রেস্তোরাঁ চালানোর অনুমতি দেওয়া কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করার বিষয়টি।
ফায়ার অ্যান্ড ইলেকট্রিক্যাল সেফটি কনসালট্যান্ট অব বাংলাদেশ, এর প্রেসিডেন্ট মো. হাসমতুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বেইলি রোডের ঘটনায় বহু সংস্থার দায় রয়েছে। এখানে যিনি ভবন তৈরি করেছেন এবং যিনি রেস্তোরাঁ পরিচালনা করেছেন তারাও অনেকাংশে আইন ভঙ্গ করেছেন। বাণিজ্যিক ভবন দুই তলার বেশি হলে বিধিমতে দুটি সিঁড়ি হওয়ার কথা। সেখানে তা হয়নি। একটি রেস্তোরাঁয় ৪৫০ লিটারের বেশি দাহ্য পদার্থ মজুত করা যাবে না। কিন্তু সেখানে অনেক বেশি মজুত ছিল। ফলে সব সংস্থাকেই এ জন্য দায়ী করা যায়।’
রাজধানীতে একটি স্থাপনা অনুমোদন ও সেখানে রেস্তোরাঁ করতে গেলে কমপক্ষে ১০টি সরকারি সংস্থার অনুমতি প্রয়োজন। সংস্থাগুলো হলো রাজউক, সিটি করপোরেশন, ফায়ার সার্ভিস, তিতাস গ্যাস, ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ডিপিডিসি), কলকারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তর, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, ঢাকা ওয়াসা এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। বেইলি রোডের ভবনটিতেও এসব সংস্থার বেশির ভাগেরই অনুমোদন ছিল বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ঘটনায় সেসব অনুমোদনের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের যেমন দায় আছে, তেমনি ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে ভবনটিতে রেস্তোরাঁ ব্যবসা চলতে দেওয়ায় বর্তমানে দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারাও দায় এড়াতে পারেন না।
আজকের পত্রিকার অনুসন্ধানে জানা যায়, সরকারি এসব সংস্থার পক্ষে বেইলি রোড এলাকায় কমপক্ষে দুই ডজন কর্মকর্তা দায়িত্বে আছেন, যাঁদের দায়িত্ব ছিল দেখেশুনে অনুমোদন দেওয়া এবং সময়ে সময়ে পরিদর্শন করে ঝুঁকিমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা। মূলত এসব কর্মকর্তার ম্যানেজ করেই চলছিল গ্রিন কোজি কটেজ ভবনের রেস্তোরাঁগুলো।
একটি রেস্তোরাঁ পরিচালনা করতে হলে শুধু সিটি করপোরেশন থেকেই তিন ধরনের তদারকি ও অনুমোদন প্রয়োজন হয়। বেইলি রোড এলাকা ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) অঞ্চল-১-এর আওতাধীন। বর্তমানে আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে এই অঞ্চলের দায়িত্ব আছেন উপসচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম। এর আগে ছিলেন মেরিনা নাজনীন নামের আরেক কর্মকর্তা। রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়নের দায়িত্ব ডিএসসিসির লাইসেন্স ও বিজ্ঞাপন সুপারভাইজারের। এ পদে ইফতেখার আহমেদ নামের একজন ১২ বছর ধরে বেইলি রোড এলাকার দায়িত্বে আছেন।
রেস্তোরাঁর জন্য সিটি করপোরেশনের আরেকটি শাখা স্বাস্থ্য বিভাগেরও অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। সেখানে দায়িত্বে আছেন সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার ফারিয়া ফয়েজ নামের একজন। এরপর যে ভবনে রেস্তোরাঁ চালু করা হচ্ছে, সেখানে অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী হচ্ছে কি না, তা দেখভালের জন্য আছেন একজন স্যানিটারি পরিদর্শক। ডিএসসিসির পক্ষ থেকে বেইলি রোড এলাকায় এ দায়িত্বে আছেন মোয়াজ্জেম খান নামের একজন স্যানিটারি পরিদর্শক।
মাঠপর্যায়ে নিয়মমাফিক ট্রেড লাইসেন্স ও কর আদায় হচ্ছে কি না, তা মনিটরিং করে থাকেন একজন উপকর কর্মকর্তা। রাজধানীর বেইলি রোড, মগবাজার, ধানমন্ডি, পরীবাগ, তোপখানা রোড এলাকার এ দায়িত্বে আছেন ডিএসসিসির কর কর্মকর্তা আবু নাসের কচি। বেইলি রোডের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা কয়েকটি সংস্থার অনুমোদন থাকলে সেখান থেকে কর আদায় করি। বাণিজ্যিক স্থাপনা হিসেবে নকশা অনুমোদন থাকার পর আমাদের ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু করা হয়। এখানে সরকারিভাবে বলা নেই যে বাণিজ্যিক ভবন হলে রেস্তোরাঁ করা যাবে না। এমন কোনো বিধিমালা আছে কি না, তা-ও আমার জানা নেই।’
গ্রিন কোজি কটেজ ভবনের নকশা অনুমোদন করেন রাজউকের তৎকালীন অথরাইজড অফিসার মো. খালেকুজ্জামান চৌধুরী। ভবনটির নকশা অনুমোদনের সময় রেখাকার ছিলেন মো. সেলিম বকাউল। পরে এ দায়িত্বে আসেন আরঙ্গজেব নান্নু। বর্তমানে জোন-৬-এ দায়িত্বে আছেন শুভ্র দেব নামের একজন কর্মকর্তা। কয়েক বছর ধরে ইমারত পরিদর্শকদের কাজ তদারকির জন্য প্রধান ইমারত পরিদর্শক হিসেবে দায়িত্বে আছেন বাসুদেব ভট্টাচার্য নামের এক কর্মকর্তা। এ ছাড়া ভবন তদারকির কাজে আছেন সহকারী অথরাইজড অফিসার শাহনাজ খানম এবং অথরাইজড অফিসার জোটন দেবনাথ। আর তাঁদের সবাইকে তদারকি করেন জোন পরিচালক সালেহ আহমেদ জাকারিয়া নামের একজন কর্মকর্তা।
অগ্নিদুর্ঘটনার শিকার ভবনটি সম্পর্কে জানতে চাইলে ইমারত পরিদর্শক সেলিম বকাউল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা মূলত নকশার ব্যত্যয় ঘটিয়ে স্থাপনা হচ্ছে কি না, তা দেখে থাকি। পরে কারা ভবনে কী করছে বা ব্যবহার কীভাবে করছে, তা দেখি না।’
গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে ডিপিডিসির একটি বাণিজ্যিক সংযোগ ছিল। এর আগে এই ভবনে ছিল আবাসিক সংযোগ। বিদ্যুতের নতুন সংযোগ প্রদানের জন্য গ্রাহকের কাছে ভবনের অকুপেন্সি সনদ বা ভবনটি ব্যবহারের অনুমতিপত্র আছে কি না, তা নিশ্চিত করার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু বেইলি রোডের গ্রাহকের ক্ষেত্রে ডিপিডিসি কোনো অকুপেন্সি সনদ জমা নেয়নি। এ বিষয়ে জানতে চেয়ে বারবার ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল্লা নোমানের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে কল করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। পরে খুদে বার্তা পাঠানো হলেও তিনি সাড়া দেননি।
রাজধানীর বেইলি রোডের ওই ভবনের রেস্তোরাঁগুলোতে ফায়ার সার্ভিসের অনুমোদন ছিল বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। একটি রেস্তোরাঁয় লাইসেন্স দেওয়ার দায়িত্ব পরিচালকের (অপারেশন) দপ্তরের। লাইসেন্স ইস্যুর মূল কাজটি করেন সহকারী পরিচালক (ওয়্যার হাউস)। বর্তমানে এ পদে আছেন মো. আনোয়ার হোসেন। এ কর্মকর্তার পরে মাঠপর্যায়ে এ সংস্থার পক্ষে এসব বিষয় তদারকি করে থাকেন ওয়্যার হাউস পরিদর্শক পদের একজন কর্মকর্তা। বেইলি রোড এলাকায় বর্তমানে দায়িত্বে আছেন অধীর চন্দ্র নামের একজন।
বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডের পর তিতাস গ্যাসের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও দায়িত্বে গাফিলতির অভিযোগ উঠে এসেছে। তিতাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৯৭২ সালে হামিদা খাতুন নামের একজন নারীর নামে এই ভবনে একটি ডাবল বার্নার বা দুই চুলার আবাসিক গ্যাস-সংযোগ দেয় তিতাস। এরপর ২০১৮ সাল পর্যন্ত এই ভবনের মালিক একটি দুই চুলার সংযোগের বিল তিতাস গ্যাসের ব্যাংক হিসাবে জমা দিয়ে আসছে। ২০১৮ সালের পর থেকে ভবনের গ্যাস-সংযোগের বিল বকেয়া রয়েছে। এরপরও সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করেনি তিতাস। ভবনের ব্যবসায়ীরা জানান, ভবনে দুই চুলার সংযোগটি গোপনে ব্যবহার করতেন সেখানকার নিরাপত্তাকর্মীরা।
বেইলি রোড তিতাস গ্যাস বিতরণ অঞ্চল দক্ষিণের আওতাধীন এলাকা। গত ৫ বছরে তিতাস গ্যাস দক্ষিণের উপমহাব্যবস্থাপকের পদে দুজন দায়িত্বে ছিলেন। তাঁরা হলেন মো. তোফাজ্জল হোসেন ও মাহাবুবর রহমান। তাঁদের মধ্যে তোফাজ্জল হোসেন বদলি হয়ে গুলশান জোনের দায়িত্ব নিয়েছেন। বর্তমানে এ পদে রয়েছেন মাহাবুবর রহমান। দায়িত্বরত ব্যক্তিদের কেউই গত ৫ বছরে আবাসিক থেকে বাণিজ্যিক ভবন হওয়া গ্রিন কোজি কটেজ ভবনের গ্যাস-সংযোগটির বিষয়ে কোনো হালনাগাদ তথ্য রাখেননি। একবারও তিতাস থেকে কেউ সেখানে পরিদর্শনে যাননি।
আসনসংখ্যা ৩০টির বেশি—ঢাকায় এমন রেস্তোরাঁ পরিচালনা করতে গেলে বাংলাদেশ হোটেল ও রেস্তোরাঁ আইন, ২০১৪ অনুযায়ী ঢাকার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের অনুমোদন লাগে। সেখানে থেকে প্রথমে প্রাথমিকভাবে নিবন্ধন দেওয়া হয়। পরে সবকিছু মনিটরিং করে লাইসেন্স দেওয়া হয়। জেলা প্রশাসকের পক্ষে কাজটি করে থাকেন সহকারী কমিশনার (ব্যবসা-বাণিজ্য শাখা)। এখানে বর্তমানে দায়িত্বে আছেন মো. শোয়েব শাত-ঈল ইভান নামের একজন কর্মকর্তা। এর আগে দীর্ঘ সময় এ দায়িত্বে ছিলেন মো. জামাল হোসেন নামের একজন কর্মকর্তা। বেইলি রোডের বিষয়ে জানতে চাইলে মো. শোয়েব শাত-ঈল ইভান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বেইলি রোডের কোনো রেস্তোরাঁয় আমাদের অনুমোদন ছিল না। আমাদের কাছে একটিমাত্র রেস্তোরাঁ আবেদন করেছিল; কাগজপত্র ঠিক নেই, তাই অনুমোদন দিইনি।’
বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান বলেন, একটি রেস্তোরাঁ করতে সরকারের প্রয়োজনীয় ১২টি সংস্থার লাইসেন্স লাগে। আমাদের অনেক রেস্তোরাঁর সব লাইসেন্স রয়েছে। আবার কিছু হয়তো নেই। এ ধরনের লাইসেন্স সরবরাহ আরও সহজ করা উচিত।’
তোফাজ্জল হোসেন রুবেল, ঢাকা

রাজধানীর বেইলি রোডের যে ভবনে আগুন লাগে সেটির নকশা অনুমোদন দিয়েছিলেন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) কর্মকর্তা মো. খালেকুজ্জামান চৌধুরী। বর্তমানে গণপূর্তের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর দায়িত্বে থাকা এই কর্মকর্তা ২০১১ সালে নকশা অনুমোদনের সময় ছিলেন অথরাইজড অফিসার। সে সময় রাজউকের রেখাকার হিসেবে বেইলি রোড এলাকার দায়িত্বে ছিলেন মো. সেলিম বকাউল। সাততলা এই বাণিজ্যিক ভবনে ছিল না কোনো জরুরি বহির্গমন ব্যবস্থা। একমাত্র সিঁড়িটিও ছিল খুবই সংকীর্ণ। এমন নকশা কীভাবে অনুমোদন পেল, সেই প্রশ্ন উঠেছে এখন।
গত বৃহস্পতিবার বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে আগুনে ৪৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন। দগ্ধ ও আহত হয়েছেন আরও ১৩ জন। এই ঘটনার পর রাজধানীতে হোটেল-রেস্তোরাঁগুলোয় সাঁড়াশি অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ, রাজউক ও সিটি করপোরেশন। এসব অভিযানে তিন দিনে ৮৭২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সেই সঙ্গে আলোচনায় উঠে এসেছে ওই ভবনের অনুমোদন ও সেখানে রেস্তোরাঁ চালানোর অনুমতি দেওয়া কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করার বিষয়টি।
ফায়ার অ্যান্ড ইলেকট্রিক্যাল সেফটি কনসালট্যান্ট অব বাংলাদেশ, এর প্রেসিডেন্ট মো. হাসমতুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বেইলি রোডের ঘটনায় বহু সংস্থার দায় রয়েছে। এখানে যিনি ভবন তৈরি করেছেন এবং যিনি রেস্তোরাঁ পরিচালনা করেছেন তারাও অনেকাংশে আইন ভঙ্গ করেছেন। বাণিজ্যিক ভবন দুই তলার বেশি হলে বিধিমতে দুটি সিঁড়ি হওয়ার কথা। সেখানে তা হয়নি। একটি রেস্তোরাঁয় ৪৫০ লিটারের বেশি দাহ্য পদার্থ মজুত করা যাবে না। কিন্তু সেখানে অনেক বেশি মজুত ছিল। ফলে সব সংস্থাকেই এ জন্য দায়ী করা যায়।’
রাজধানীতে একটি স্থাপনা অনুমোদন ও সেখানে রেস্তোরাঁ করতে গেলে কমপক্ষে ১০টি সরকারি সংস্থার অনুমতি প্রয়োজন। সংস্থাগুলো হলো রাজউক, সিটি করপোরেশন, ফায়ার সার্ভিস, তিতাস গ্যাস, ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ডিপিডিসি), কলকারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তর, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, ঢাকা ওয়াসা এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। বেইলি রোডের ভবনটিতেও এসব সংস্থার বেশির ভাগেরই অনুমোদন ছিল বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ঘটনায় সেসব অনুমোদনের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের যেমন দায় আছে, তেমনি ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে ভবনটিতে রেস্তোরাঁ ব্যবসা চলতে দেওয়ায় বর্তমানে দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারাও দায় এড়াতে পারেন না।
আজকের পত্রিকার অনুসন্ধানে জানা যায়, সরকারি এসব সংস্থার পক্ষে বেইলি রোড এলাকায় কমপক্ষে দুই ডজন কর্মকর্তা দায়িত্বে আছেন, যাঁদের দায়িত্ব ছিল দেখেশুনে অনুমোদন দেওয়া এবং সময়ে সময়ে পরিদর্শন করে ঝুঁকিমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা। মূলত এসব কর্মকর্তার ম্যানেজ করেই চলছিল গ্রিন কোজি কটেজ ভবনের রেস্তোরাঁগুলো।
একটি রেস্তোরাঁ পরিচালনা করতে হলে শুধু সিটি করপোরেশন থেকেই তিন ধরনের তদারকি ও অনুমোদন প্রয়োজন হয়। বেইলি রোড এলাকা ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) অঞ্চল-১-এর আওতাধীন। বর্তমানে আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে এই অঞ্চলের দায়িত্ব আছেন উপসচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম। এর আগে ছিলেন মেরিনা নাজনীন নামের আরেক কর্মকর্তা। রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়নের দায়িত্ব ডিএসসিসির লাইসেন্স ও বিজ্ঞাপন সুপারভাইজারের। এ পদে ইফতেখার আহমেদ নামের একজন ১২ বছর ধরে বেইলি রোড এলাকার দায়িত্বে আছেন।
রেস্তোরাঁর জন্য সিটি করপোরেশনের আরেকটি শাখা স্বাস্থ্য বিভাগেরও অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। সেখানে দায়িত্বে আছেন সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার ফারিয়া ফয়েজ নামের একজন। এরপর যে ভবনে রেস্তোরাঁ চালু করা হচ্ছে, সেখানে অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী হচ্ছে কি না, তা দেখভালের জন্য আছেন একজন স্যানিটারি পরিদর্শক। ডিএসসিসির পক্ষ থেকে বেইলি রোড এলাকায় এ দায়িত্বে আছেন মোয়াজ্জেম খান নামের একজন স্যানিটারি পরিদর্শক।
মাঠপর্যায়ে নিয়মমাফিক ট্রেড লাইসেন্স ও কর আদায় হচ্ছে কি না, তা মনিটরিং করে থাকেন একজন উপকর কর্মকর্তা। রাজধানীর বেইলি রোড, মগবাজার, ধানমন্ডি, পরীবাগ, তোপখানা রোড এলাকার এ দায়িত্বে আছেন ডিএসসিসির কর কর্মকর্তা আবু নাসের কচি। বেইলি রোডের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা কয়েকটি সংস্থার অনুমোদন থাকলে সেখান থেকে কর আদায় করি। বাণিজ্যিক স্থাপনা হিসেবে নকশা অনুমোদন থাকার পর আমাদের ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু করা হয়। এখানে সরকারিভাবে বলা নেই যে বাণিজ্যিক ভবন হলে রেস্তোরাঁ করা যাবে না। এমন কোনো বিধিমালা আছে কি না, তা-ও আমার জানা নেই।’
গ্রিন কোজি কটেজ ভবনের নকশা অনুমোদন করেন রাজউকের তৎকালীন অথরাইজড অফিসার মো. খালেকুজ্জামান চৌধুরী। ভবনটির নকশা অনুমোদনের সময় রেখাকার ছিলেন মো. সেলিম বকাউল। পরে এ দায়িত্বে আসেন আরঙ্গজেব নান্নু। বর্তমানে জোন-৬-এ দায়িত্বে আছেন শুভ্র দেব নামের একজন কর্মকর্তা। কয়েক বছর ধরে ইমারত পরিদর্শকদের কাজ তদারকির জন্য প্রধান ইমারত পরিদর্শক হিসেবে দায়িত্বে আছেন বাসুদেব ভট্টাচার্য নামের এক কর্মকর্তা। এ ছাড়া ভবন তদারকির কাজে আছেন সহকারী অথরাইজড অফিসার শাহনাজ খানম এবং অথরাইজড অফিসার জোটন দেবনাথ। আর তাঁদের সবাইকে তদারকি করেন জোন পরিচালক সালেহ আহমেদ জাকারিয়া নামের একজন কর্মকর্তা।
অগ্নিদুর্ঘটনার শিকার ভবনটি সম্পর্কে জানতে চাইলে ইমারত পরিদর্শক সেলিম বকাউল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা মূলত নকশার ব্যত্যয় ঘটিয়ে স্থাপনা হচ্ছে কি না, তা দেখে থাকি। পরে কারা ভবনে কী করছে বা ব্যবহার কীভাবে করছে, তা দেখি না।’
গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে ডিপিডিসির একটি বাণিজ্যিক সংযোগ ছিল। এর আগে এই ভবনে ছিল আবাসিক সংযোগ। বিদ্যুতের নতুন সংযোগ প্রদানের জন্য গ্রাহকের কাছে ভবনের অকুপেন্সি সনদ বা ভবনটি ব্যবহারের অনুমতিপত্র আছে কি না, তা নিশ্চিত করার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু বেইলি রোডের গ্রাহকের ক্ষেত্রে ডিপিডিসি কোনো অকুপেন্সি সনদ জমা নেয়নি। এ বিষয়ে জানতে চেয়ে বারবার ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল্লা নোমানের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে কল করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। পরে খুদে বার্তা পাঠানো হলেও তিনি সাড়া দেননি।
রাজধানীর বেইলি রোডের ওই ভবনের রেস্তোরাঁগুলোতে ফায়ার সার্ভিসের অনুমোদন ছিল বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। একটি রেস্তোরাঁয় লাইসেন্স দেওয়ার দায়িত্ব পরিচালকের (অপারেশন) দপ্তরের। লাইসেন্স ইস্যুর মূল কাজটি করেন সহকারী পরিচালক (ওয়্যার হাউস)। বর্তমানে এ পদে আছেন মো. আনোয়ার হোসেন। এ কর্মকর্তার পরে মাঠপর্যায়ে এ সংস্থার পক্ষে এসব বিষয় তদারকি করে থাকেন ওয়্যার হাউস পরিদর্শক পদের একজন কর্মকর্তা। বেইলি রোড এলাকায় বর্তমানে দায়িত্বে আছেন অধীর চন্দ্র নামের একজন।
বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডের পর তিতাস গ্যাসের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও দায়িত্বে গাফিলতির অভিযোগ উঠে এসেছে। তিতাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৯৭২ সালে হামিদা খাতুন নামের একজন নারীর নামে এই ভবনে একটি ডাবল বার্নার বা দুই চুলার আবাসিক গ্যাস-সংযোগ দেয় তিতাস। এরপর ২০১৮ সাল পর্যন্ত এই ভবনের মালিক একটি দুই চুলার সংযোগের বিল তিতাস গ্যাসের ব্যাংক হিসাবে জমা দিয়ে আসছে। ২০১৮ সালের পর থেকে ভবনের গ্যাস-সংযোগের বিল বকেয়া রয়েছে। এরপরও সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করেনি তিতাস। ভবনের ব্যবসায়ীরা জানান, ভবনে দুই চুলার সংযোগটি গোপনে ব্যবহার করতেন সেখানকার নিরাপত্তাকর্মীরা।
বেইলি রোড তিতাস গ্যাস বিতরণ অঞ্চল দক্ষিণের আওতাধীন এলাকা। গত ৫ বছরে তিতাস গ্যাস দক্ষিণের উপমহাব্যবস্থাপকের পদে দুজন দায়িত্বে ছিলেন। তাঁরা হলেন মো. তোফাজ্জল হোসেন ও মাহাবুবর রহমান। তাঁদের মধ্যে তোফাজ্জল হোসেন বদলি হয়ে গুলশান জোনের দায়িত্ব নিয়েছেন। বর্তমানে এ পদে রয়েছেন মাহাবুবর রহমান। দায়িত্বরত ব্যক্তিদের কেউই গত ৫ বছরে আবাসিক থেকে বাণিজ্যিক ভবন হওয়া গ্রিন কোজি কটেজ ভবনের গ্যাস-সংযোগটির বিষয়ে কোনো হালনাগাদ তথ্য রাখেননি। একবারও তিতাস থেকে কেউ সেখানে পরিদর্শনে যাননি।
আসনসংখ্যা ৩০টির বেশি—ঢাকায় এমন রেস্তোরাঁ পরিচালনা করতে গেলে বাংলাদেশ হোটেল ও রেস্তোরাঁ আইন, ২০১৪ অনুযায়ী ঢাকার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের অনুমোদন লাগে। সেখানে থেকে প্রথমে প্রাথমিকভাবে নিবন্ধন দেওয়া হয়। পরে সবকিছু মনিটরিং করে লাইসেন্স দেওয়া হয়। জেলা প্রশাসকের পক্ষে কাজটি করে থাকেন সহকারী কমিশনার (ব্যবসা-বাণিজ্য শাখা)। এখানে বর্তমানে দায়িত্বে আছেন মো. শোয়েব শাত-ঈল ইভান নামের একজন কর্মকর্তা। এর আগে দীর্ঘ সময় এ দায়িত্বে ছিলেন মো. জামাল হোসেন নামের একজন কর্মকর্তা। বেইলি রোডের বিষয়ে জানতে চাইলে মো. শোয়েব শাত-ঈল ইভান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বেইলি রোডের কোনো রেস্তোরাঁয় আমাদের অনুমোদন ছিল না। আমাদের কাছে একটিমাত্র রেস্তোরাঁ আবেদন করেছিল; কাগজপত্র ঠিক নেই, তাই অনুমোদন দিইনি।’
বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান বলেন, একটি রেস্তোরাঁ করতে সরকারের প্রয়োজনীয় ১২টি সংস্থার লাইসেন্স লাগে। আমাদের অনেক রেস্তোরাঁর সব লাইসেন্স রয়েছে। আবার কিছু হয়তো নেই। এ ধরনের লাইসেন্স সরবরাহ আরও সহজ করা উচিত।’

রাজধানীর বেইলি রোডের যে ভবনে আগুন লাগে সেটির নকশা অনুমোদন দিয়েছিলেন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) কর্মকর্তা মো. খালেকুজ্জামান চৌধুরী। বর্তমানে গণপূর্তের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর দায়িত্বে থাকা এই কর্মকর্তা ২০১১ সালে নকশা অনুমোদনের সময় ছিলেন অথরাইজড অফিসার। সে সময় রাজউকের রেখাকার হিসেবে বেইলি রোড এলাকার দায়িত্বে ছিলেন মো. সেলিম বকাউল। সাততলা এই বাণিজ্যিক ভবনে ছিল না কোনো জরুরি বহির্গমন ব্যবস্থা। একমাত্র সিঁড়িটিও ছিল খুবই সংকীর্ণ। এমন নকশা কীভাবে অনুমোদন পেল, সেই প্রশ্ন উঠেছে এখন।
গত বৃহস্পতিবার বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে আগুনে ৪৬ জন প্রাণ হারিয়েছেন। দগ্ধ ও আহত হয়েছেন আরও ১৩ জন। এই ঘটনার পর রাজধানীতে হোটেল-রেস্তোরাঁগুলোয় সাঁড়াশি অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ, রাজউক ও সিটি করপোরেশন। এসব অভিযানে তিন দিনে ৮৭২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সেই সঙ্গে আলোচনায় উঠে এসেছে ওই ভবনের অনুমোদন ও সেখানে রেস্তোরাঁ চালানোর অনুমতি দেওয়া কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করার বিষয়টি।
ফায়ার অ্যান্ড ইলেকট্রিক্যাল সেফটি কনসালট্যান্ট অব বাংলাদেশ, এর প্রেসিডেন্ট মো. হাসমতুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বেইলি রোডের ঘটনায় বহু সংস্থার দায় রয়েছে। এখানে যিনি ভবন তৈরি করেছেন এবং যিনি রেস্তোরাঁ পরিচালনা করেছেন তারাও অনেকাংশে আইন ভঙ্গ করেছেন। বাণিজ্যিক ভবন দুই তলার বেশি হলে বিধিমতে দুটি সিঁড়ি হওয়ার কথা। সেখানে তা হয়নি। একটি রেস্তোরাঁয় ৪৫০ লিটারের বেশি দাহ্য পদার্থ মজুত করা যাবে না। কিন্তু সেখানে অনেক বেশি মজুত ছিল। ফলে সব সংস্থাকেই এ জন্য দায়ী করা যায়।’
রাজধানীতে একটি স্থাপনা অনুমোদন ও সেখানে রেস্তোরাঁ করতে গেলে কমপক্ষে ১০টি সরকারি সংস্থার অনুমতি প্রয়োজন। সংস্থাগুলো হলো রাজউক, সিটি করপোরেশন, ফায়ার সার্ভিস, তিতাস গ্যাস, ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ডিপিডিসি), কলকারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তর, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, ঢাকা ওয়াসা এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। বেইলি রোডের ভবনটিতেও এসব সংস্থার বেশির ভাগেরই অনুমোদন ছিল বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ঘটনায় সেসব অনুমোদনের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের যেমন দায় আছে, তেমনি ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে ভবনটিতে রেস্তোরাঁ ব্যবসা চলতে দেওয়ায় বর্তমানে দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারাও দায় এড়াতে পারেন না।
আজকের পত্রিকার অনুসন্ধানে জানা যায়, সরকারি এসব সংস্থার পক্ষে বেইলি রোড এলাকায় কমপক্ষে দুই ডজন কর্মকর্তা দায়িত্বে আছেন, যাঁদের দায়িত্ব ছিল দেখেশুনে অনুমোদন দেওয়া এবং সময়ে সময়ে পরিদর্শন করে ঝুঁকিমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা। মূলত এসব কর্মকর্তার ম্যানেজ করেই চলছিল গ্রিন কোজি কটেজ ভবনের রেস্তোরাঁগুলো।
একটি রেস্তোরাঁ পরিচালনা করতে হলে শুধু সিটি করপোরেশন থেকেই তিন ধরনের তদারকি ও অনুমোদন প্রয়োজন হয়। বেইলি রোড এলাকা ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) অঞ্চল-১-এর আওতাধীন। বর্তমানে আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে এই অঞ্চলের দায়িত্ব আছেন উপসচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম। এর আগে ছিলেন মেরিনা নাজনীন নামের আরেক কর্মকর্তা। রেস্তোরাঁর ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়নের দায়িত্ব ডিএসসিসির লাইসেন্স ও বিজ্ঞাপন সুপারভাইজারের। এ পদে ইফতেখার আহমেদ নামের একজন ১২ বছর ধরে বেইলি রোড এলাকার দায়িত্বে আছেন।
রেস্তোরাঁর জন্য সিটি করপোরেশনের আরেকটি শাখা স্বাস্থ্য বিভাগেরও অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। সেখানে দায়িত্বে আছেন সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার ফারিয়া ফয়েজ নামের একজন। এরপর যে ভবনে রেস্তোরাঁ চালু করা হচ্ছে, সেখানে অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী হচ্ছে কি না, তা দেখভালের জন্য আছেন একজন স্যানিটারি পরিদর্শক। ডিএসসিসির পক্ষ থেকে বেইলি রোড এলাকায় এ দায়িত্বে আছেন মোয়াজ্জেম খান নামের একজন স্যানিটারি পরিদর্শক।
মাঠপর্যায়ে নিয়মমাফিক ট্রেড লাইসেন্স ও কর আদায় হচ্ছে কি না, তা মনিটরিং করে থাকেন একজন উপকর কর্মকর্তা। রাজধানীর বেইলি রোড, মগবাজার, ধানমন্ডি, পরীবাগ, তোপখানা রোড এলাকার এ দায়িত্বে আছেন ডিএসসিসির কর কর্মকর্তা আবু নাসের কচি। বেইলি রোডের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা কয়েকটি সংস্থার অনুমোদন থাকলে সেখান থেকে কর আদায় করি। বাণিজ্যিক স্থাপনা হিসেবে নকশা অনুমোদন থাকার পর আমাদের ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু করা হয়। এখানে সরকারিভাবে বলা নেই যে বাণিজ্যিক ভবন হলে রেস্তোরাঁ করা যাবে না। এমন কোনো বিধিমালা আছে কি না, তা-ও আমার জানা নেই।’
গ্রিন কোজি কটেজ ভবনের নকশা অনুমোদন করেন রাজউকের তৎকালীন অথরাইজড অফিসার মো. খালেকুজ্জামান চৌধুরী। ভবনটির নকশা অনুমোদনের সময় রেখাকার ছিলেন মো. সেলিম বকাউল। পরে এ দায়িত্বে আসেন আরঙ্গজেব নান্নু। বর্তমানে জোন-৬-এ দায়িত্বে আছেন শুভ্র দেব নামের একজন কর্মকর্তা। কয়েক বছর ধরে ইমারত পরিদর্শকদের কাজ তদারকির জন্য প্রধান ইমারত পরিদর্শক হিসেবে দায়িত্বে আছেন বাসুদেব ভট্টাচার্য নামের এক কর্মকর্তা। এ ছাড়া ভবন তদারকির কাজে আছেন সহকারী অথরাইজড অফিসার শাহনাজ খানম এবং অথরাইজড অফিসার জোটন দেবনাথ। আর তাঁদের সবাইকে তদারকি করেন জোন পরিচালক সালেহ আহমেদ জাকারিয়া নামের একজন কর্মকর্তা।
অগ্নিদুর্ঘটনার শিকার ভবনটি সম্পর্কে জানতে চাইলে ইমারত পরিদর্শক সেলিম বকাউল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা মূলত নকশার ব্যত্যয় ঘটিয়ে স্থাপনা হচ্ছে কি না, তা দেখে থাকি। পরে কারা ভবনে কী করছে বা ব্যবহার কীভাবে করছে, তা দেখি না।’
গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে ডিপিডিসির একটি বাণিজ্যিক সংযোগ ছিল। এর আগে এই ভবনে ছিল আবাসিক সংযোগ। বিদ্যুতের নতুন সংযোগ প্রদানের জন্য গ্রাহকের কাছে ভবনের অকুপেন্সি সনদ বা ভবনটি ব্যবহারের অনুমতিপত্র আছে কি না, তা নিশ্চিত করার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু বেইলি রোডের গ্রাহকের ক্ষেত্রে ডিপিডিসি কোনো অকুপেন্সি সনদ জমা নেয়নি। এ বিষয়ে জানতে চেয়ে বারবার ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল্লা নোমানের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে কল করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। পরে খুদে বার্তা পাঠানো হলেও তিনি সাড়া দেননি।
রাজধানীর বেইলি রোডের ওই ভবনের রেস্তোরাঁগুলোতে ফায়ার সার্ভিসের অনুমোদন ছিল বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। একটি রেস্তোরাঁয় লাইসেন্স দেওয়ার দায়িত্ব পরিচালকের (অপারেশন) দপ্তরের। লাইসেন্স ইস্যুর মূল কাজটি করেন সহকারী পরিচালক (ওয়্যার হাউস)। বর্তমানে এ পদে আছেন মো. আনোয়ার হোসেন। এ কর্মকর্তার পরে মাঠপর্যায়ে এ সংস্থার পক্ষে এসব বিষয় তদারকি করে থাকেন ওয়্যার হাউস পরিদর্শক পদের একজন কর্মকর্তা। বেইলি রোড এলাকায় বর্তমানে দায়িত্বে আছেন অধীর চন্দ্র নামের একজন।
বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডের পর তিতাস গ্যাসের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও দায়িত্বে গাফিলতির অভিযোগ উঠে এসেছে। তিতাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১৯৭২ সালে হামিদা খাতুন নামের একজন নারীর নামে এই ভবনে একটি ডাবল বার্নার বা দুই চুলার আবাসিক গ্যাস-সংযোগ দেয় তিতাস। এরপর ২০১৮ সাল পর্যন্ত এই ভবনের মালিক একটি দুই চুলার সংযোগের বিল তিতাস গ্যাসের ব্যাংক হিসাবে জমা দিয়ে আসছে। ২০১৮ সালের পর থেকে ভবনের গ্যাস-সংযোগের বিল বকেয়া রয়েছে। এরপরও সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করেনি তিতাস। ভবনের ব্যবসায়ীরা জানান, ভবনে দুই চুলার সংযোগটি গোপনে ব্যবহার করতেন সেখানকার নিরাপত্তাকর্মীরা।
বেইলি রোড তিতাস গ্যাস বিতরণ অঞ্চল দক্ষিণের আওতাধীন এলাকা। গত ৫ বছরে তিতাস গ্যাস দক্ষিণের উপমহাব্যবস্থাপকের পদে দুজন দায়িত্বে ছিলেন। তাঁরা হলেন মো. তোফাজ্জল হোসেন ও মাহাবুবর রহমান। তাঁদের মধ্যে তোফাজ্জল হোসেন বদলি হয়ে গুলশান জোনের দায়িত্ব নিয়েছেন। বর্তমানে এ পদে রয়েছেন মাহাবুবর রহমান। দায়িত্বরত ব্যক্তিদের কেউই গত ৫ বছরে আবাসিক থেকে বাণিজ্যিক ভবন হওয়া গ্রিন কোজি কটেজ ভবনের গ্যাস-সংযোগটির বিষয়ে কোনো হালনাগাদ তথ্য রাখেননি। একবারও তিতাস থেকে কেউ সেখানে পরিদর্শনে যাননি।
আসনসংখ্যা ৩০টির বেশি—ঢাকায় এমন রেস্তোরাঁ পরিচালনা করতে গেলে বাংলাদেশ হোটেল ও রেস্তোরাঁ আইন, ২০১৪ অনুযায়ী ঢাকার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের অনুমোদন লাগে। সেখানে থেকে প্রথমে প্রাথমিকভাবে নিবন্ধন দেওয়া হয়। পরে সবকিছু মনিটরিং করে লাইসেন্স দেওয়া হয়। জেলা প্রশাসকের পক্ষে কাজটি করে থাকেন সহকারী কমিশনার (ব্যবসা-বাণিজ্য শাখা)। এখানে বর্তমানে দায়িত্বে আছেন মো. শোয়েব শাত-ঈল ইভান নামের একজন কর্মকর্তা। এর আগে দীর্ঘ সময় এ দায়িত্বে ছিলেন মো. জামাল হোসেন নামের একজন কর্মকর্তা। বেইলি রোডের বিষয়ে জানতে চাইলে মো. শোয়েব শাত-ঈল ইভান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বেইলি রোডের কোনো রেস্তোরাঁয় আমাদের অনুমোদন ছিল না। আমাদের কাছে একটিমাত্র রেস্তোরাঁ আবেদন করেছিল; কাগজপত্র ঠিক নেই, তাই অনুমোদন দিইনি।’
বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান বলেন, একটি রেস্তোরাঁ করতে সরকারের প্রয়োজনীয় ১২টি সংস্থার লাইসেন্স লাগে। আমাদের অনেক রেস্তোরাঁর সব লাইসেন্স রয়েছে। আবার কিছু হয়তো নেই। এ ধরনের লাইসেন্স সরবরাহ আরও সহজ করা উচিত।’

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

রাজধানীর বেইলি রোডের যে ভবনে আগুন লাগে সেটির নকশা অনুমোদন দিয়েছিলেন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) কর্মকর্তা মো. খালেকুজ্জামান চৌধুরী। বর্তমানে গণপূর্তের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর দায়িত্বে থাকা এই কর্মকর্তা ২০১১ সালে নকশা অনুমোদনের সময় ছিলেন অথরাইজড অফিসার। সে সময় রাজউকের রেখাকার হিসেবে বেইলি রো
০৭ মার্চ ২০২৪
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

রাজধানীর বেইলি রোডের যে ভবনে আগুন লাগে সেটির নকশা অনুমোদন দিয়েছিলেন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) কর্মকর্তা মো. খালেকুজ্জামান চৌধুরী। বর্তমানে গণপূর্তের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর দায়িত্বে থাকা এই কর্মকর্তা ২০১১ সালে নকশা অনুমোদনের সময় ছিলেন অথরাইজড অফিসার। সে সময় রাজউকের রেখাকার হিসেবে বেইলি রো
০৭ মার্চ ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

রাজধানীর বেইলি রোডের যে ভবনে আগুন লাগে সেটির নকশা অনুমোদন দিয়েছিলেন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) কর্মকর্তা মো. খালেকুজ্জামান চৌধুরী। বর্তমানে গণপূর্তের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর দায়িত্বে থাকা এই কর্মকর্তা ২০১১ সালে নকশা অনুমোদনের সময় ছিলেন অথরাইজড অফিসার। সে সময় রাজউকের রেখাকার হিসেবে বেইলি রো
০৭ মার্চ ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

রাজধানীর বেইলি রোডের যে ভবনে আগুন লাগে সেটির নকশা অনুমোদন দিয়েছিলেন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) কর্মকর্তা মো. খালেকুজ্জামান চৌধুরী। বর্তমানে গণপূর্তের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর দায়িত্বে থাকা এই কর্মকর্তা ২০১১ সালে নকশা অনুমোদনের সময় ছিলেন অথরাইজড অফিসার। সে সময় রাজউকের রেখাকার হিসেবে বেইলি রো
০৭ মার্চ ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২০ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫