দলের পদ পেতে আ.লীগ নেতাদের তোড়জোড়

নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের তিন বছর মেয়াদি কমিটি ছয় বছর ধরে বলবৎ আছে। এই উপজেলায় দ্রুত আওয়ামী লীগের সম্মেলন হবে বলে কেন্দ্রীয় নেতারা ইঙ্গিত দিয়েছেন। আগামী মাসের (জুন) প্রথম সপ্তাহে দুর্গাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হতে পারে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য উপাধ্যক্ষ রেমন্ড আরেং।

তাঁর এমন বক্তব্যের পর উপজেলায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে নতুন কমিটিতে পদ পেতে তোড়জোড় শুরু হয়েছে। সভাপতি পদ পেতে ইতিমধ্যে ৯ জন নেতা আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও বিভিন্ন এলাকায় ছবি সংবলিত বড় বড় বিলবোর্ড, ফেস্টুন ও তোরণ সাঁটিয়েছেন। প্রতিদিনই নতুন নতুন পোস্টার সাঁটানো হচ্ছে শহরের আশেপাশে। চায়ের আড্ডা কিংবা পথের আলাপেও উপজেলা আওয়ামী লীগের নতুন নেতৃত্ব নিয়ে চলছে নানা জল্পনা।

স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুর্গাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সভাপতি পদে এখন পর্যন্ত ৯ জন প্রচারণা চালাচ্ছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন বর্তমান সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলা উদ্দিন আল আজাদ, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জান্নাতুল ফেরদৌস আরা ঝুমা তালুকদার ও শাহ কুতুব উদ্দিন তালুকদার রুয়েল (তাঁরা সম্পর্কে ভাইবোন ও প্রয়াত সাবেক সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা জালাল উদ্দিন তালুকদারের সন্তান)। এ ছাড়া পৌর মেয়র মো. আলা উদ্দিন, সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদস্য অ্যাডভোকেট প্রবীর মজুমদার চন্দন, সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও বর্তমান উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো. এমদাদুল হক খান, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র হাজী আব্দুস সালাম, সাবেক মেয়র ও বর্তমান উপজেলা আওয়ামী সহসভাপতি শ. ম. জয়নাল আবেদিন, সহসভাপতি অ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে আলোচনা চলছে।

এ বিষয়ে বর্তমান সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিন আল আজাদ বলেন, ‘নেত্রী যদি মনে করেন একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমাকে পুনরায় একই পদে বহাল রাখবেন, তবে আমি আরেকটি বার ওই পদে দায়িত্ব পালন করতে চাই।’

জেলা আওয়ামী লীগের অন্যতম সদস্য ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জান্নাতুল ফেরদৌস আরা ঝুমা তালুকদার বলেন, ‘উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি হওয়ার জন্য অধিক সময় ধরে তৃণমূল আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে নিয়ে আমি মাঠে কাজ করছি। করোনাকালীন সময় অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছি। আসন্ন কাউন্সিলে দলের সভাপতি হিসেবে দল আমাকে মনোনীত করবে বলে আশাবাদী।’

সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদস্য অ্যাডভোকেট প্রবীর মজুমদার চন্দন বলেন, ‘১৯৭৫ পরবর্তী কঠিন সময়ে আমি রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা রাখি। আমি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদস্য ছিলাম। দলের দুঃসময়ে আমার পরিবারের ওপর দিয়েও অনেক ঝড় গেছে। আমি প্রত্যাশা করি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত করবেন।’

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য উপাধ্যক্ষ রেমন্ড আরেং বলেন, দুর্গাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনটি জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দ্রুত সম্মেলনের তারিখ জানিয়ে দেব।

আওয়ামী লীগের স্থানীয় ত্যাগী নেতা-কর্মীরা মনে করছেন, যোগ্য ব্যক্তিই সভাপতি পদে আসুক এটাই আমাদের চাওয়া।