Ajker Patrika

আহত ৩০, চালকের মৃত্যু

লামা (বান্দরবান) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৭ অক্টোবর ২০২১, ১২: ৫৫
Thumbnail image

বান্দরবানের লামায় মালবাহী কার্গোর চাপায় যাত্রীবাহী বাসের ৩০ জনের বেশি যাত্রী আহত হয়েছে। এর মধ্য ১৯ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। আহতদের মধ্যে ১০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজন হওয়ায় তাঁদের চমেক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

এদিকে আহত বাসের চালক আনোয়ার হোসেনকে (৫৫) মুমূর্ষু অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া পথে মৃত্যু হয়েছে।

গতকাল বুধবার সকাল ১০টায় লামা-চকরিয়া সড়কের পশ্চিম লাইনঝিরি স্থানে ওই দুর্ঘটনা ঘটনা ঘটে। বাসটি যাত্রী নিয়ে লামা থেকে কক্সবাজারের চকরিয়া যাচ্ছিল। অপর দিকে বোতলজাত মিনারেল ওয়াটাসহ মালামাল নিয়ে কার্গোটি চট্টগ্রাম থেকে লামা বাজারে আসছিল। দুর্ঘটনার পরই কার্গো চালক ও সহকারী পালিয়ে যান।

বাস চালক আনোয়ারের নিকট আত্মীয় আব্দুল মজিদ বলেন, ‘আমার ভাইকে লামা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চমেকে নিয়ে পথে বিকেল ৪টার সময় মারা যান।’

এ দিকে ঘটনার লামা ফায়ার সার্ভিস সদস্য, পুলিশ ও স্থানীয় জনতা আহতদের উদ্ধার করে লামা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। বাসে ৩৯ জন যাত্রী ছিল।

এদিকে দুর্ঘটনা কবলিত বাস ও কার্গো গাড়ি দুইটি রাস্তার ওপরে পড়ে থাকায় যানবাহন চলাচলে ব্যাহত হচ্ছে। বিকেলে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ওই অবস্থা দেখা গেছে।

লামা থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মো. আলমগীর দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘ঘটনা শোনা মাত্র আমি সঙ্গীয় পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই। ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও স্থানীয়দের সহায়তায় আহতদের চিকিৎসার জন্য দ্রুত লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে।

লামা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত ডাক্তার রায়হান জান্নাত বিলকিচ সুলতানা বলেন, সড়ক দুর্ঘটনার পর হাসপাতালে মোট ১৯ জন আহত যাত্রী আসে। এর মধ্যে আশঙ্কাজনক হওয়ায় ১০ জন চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালে স্থানান্তর করি। ৩ জনকে লামা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকি ৬ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। চালক আনোয়ার ও রফিক এক যাত্রীর অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল।

লামা হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া আহতেরা হলেন জ্যোৎস্না দে (২০), শুভশ্রী (১০), রূপম চাকমা (২), জহর লাল (৫৫), নুর মোহাম্মদ (২৮), মো. সোহেল (৩২), রাজশ্রী দে (২), আনোয়ার হোসেন (৫০), নুরুল আলম (৩০), হাসনা বালা (৬০), মনু আলম (৩৫), তপন (৩৮), সরওয়ার (২৫), মো. রফিক (৩০), সরওয়ার আলম (৫৫), মো. সাহেদ (৬৫), শিব সংকর (৩৭), জেসি মারমা (২২), আবুল হোসেন (৫৫)। এর মধ্যে বমু বিলছড়ি মাইজপাড়া এলাকার মৃত মনির হোসেনের ছেলে মো. রফিকের (৩০) অবস্থা আশঙ্কাজনক।

দুর্ঘটনা কবলিত বাসের যাত্রী মো. ফারুখ বলেন, ‘আমাদের বাসটি ধীরে ধীরে পাহাড়ে দিকে উঠছিল। কিন্তু বিপরীত দিক থেকে আসা মালবাহী কার্গোটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আমাদের বাসটি চাপা দেয়। বাসের চালক গাড়িটি রক্ষা করতে রাস্তার বাম পাশের ড্রেনে ও গাছের কাছে চলে যান। কিন্তু সেখানে এসেই কার্গোটি ধাক্কা দিয়ে বাসটিকে চাপা দেয়। এতে বাসটি দুমড়ে মুচড়ে যায়।

বাসযাত্রীদের অবস্থা সম্পর্কে ফারুখ বলেন, ‘গাড়ির একজন যাত্রীও ভালো নেই। সবাই কমবেশি আহত হয়েছেন। আমার মাথা ও হাত কেটে গেছে। আমার মা, ছোট ভাই আহত। তাদের লামা হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।’

লামা ফায়ার সার্ভিসের উপ-কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লাহ বলেন, ‘দুর্ঘটনায় এত হতাহত হয়েছে যে, আমরা কাকে রেখে কাকে নিব বুঝতে পারছিলাম না। আহতদের দ্রুত উদ্ধার করে আমাদের গাড়িতে করে লামা হাসপাতালে নিয়ে যাই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত