Ajker Patrika

খাদির ব্যবসায় মন্দাভাব

দেলোয়ার হোসাইন আকাইদ, কুমিল্লা
আপডেট : ২৪ এপ্রিল ২০২২, ১১: ৫২
Thumbnail image

কুমিল্লার খাদি কাপড়ের তৈরি পাঞ্জাবির চাহিদা দেশজুড়ে। বিশেষ করে ঈদের সময় চাহিদা বেড়ে যায় কয়েক গুণ। প্রতি বছরই রমজান মাসে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কুমিল্লায় এ কাপড়ের জন্য আসেন ব্যবসায়ীরা। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ব্যবসায়ী ও সাধারণ ক্রেতাদের হাঁক-ডাকে মুখরিত থাকে খাদি কাপড়ের দোকানগুলো। কিন্তু এবারের চিত্র ভিন্ন। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এবার পাইকার না আসায় হতাশ ব্যবসায়ীরা। এখন স্থানীয় ক্রেতাদের ওপরই শেষ ভরসা তাঁদের।

জানা গেছে, মহামারি করোনার কারণে দুই বছর ভালো ব্যবসা করতে পারেননি খাদি কাপড়ের ব্যবসায়ীরা। এবার সেই ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার আশা ছিল তাঁদের। তবে অন্যান্য বারেরমতো এবার দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রত্যাশা অনুযায়ী আসেনি পাইকারি ক্রেতারা। তাই হতাশা থাকলেও এখন স্থানীয় ক্রেতাদের ওপরই তাঁদের ভরসা করতে হচ্ছে।

সরেজমিনে নগরীর কান্দিরপাড়, মনোহরপুর ও রাজগঞ্জের খাদি মিউজিয়াম, নিপুণ খাদি ফ্যাশন, খাদি বিপণি, কুমিল্লা খাদি ভান্ডার, খাদি প্রিয়াঙ্গন, খাদি কুটির শিল্প ভবন, খাদি ইয়াছিন বস্ত্রালয়, কুমিল্লা খদ্দর, খাদি শিল্প ভবন, খাদি কটেজ, শিল্পী খাদি বিতান, খাদি বস্ত্র বিতান, পূর্বাশা গিফট অ্যান্ড খাদি-১, জ্যোৎস্না স্টোর, আজকাল খাদি ফ্যাশন, খাদি বসুন্ধরা, শুভেচ্ছা খাদি বিতান, আল আমিন খাদি ঘর, খাদি বস্ত্রালয় ও খাদি বস্ত্র বিতান ঘুরে দেখা গেছে, ঢিলেঢালাভাবে চলছে কেনাবেচা। প্রায় অর্ধশতাধিক খাদি দোকানে একই চিত্র দেখা গেছে।

নগরীর কান্দিরপাড়ের খাদি বস্ত্র ব্যবসায়ী তপন কুমার পাল বলেন, ‘গত বারের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এ বছর অনেক ডিজাইনের কাপড় তুলেছিলাম। কিন্তু এবার পাইকার কম। তবে রমজানের শেষ দিকে স্থানীয় ক্রেতারা আসেন পাঞ্জাবি কিনতে। এখন তাঁরাই আমাদের শেষ ভরসা।’

আজকাল খাদি ফ্যাশনের স্বত্বাধিকারী অশোক পাল বলেন, ‘ক্রেতা কম। এ ব্যবসা এখন অনলাইনে চলে যাচ্ছে। অনলাইনে কিছু কেনাবেচা হচ্ছে।’

কুমিল্লা খদ্দর-এর স্বত্বাধিকারী কামরুজ্জামান মজুমদার নিজাম বলেন, ‘কিছু বড় বড় খাদি দোকানে কেনাবেচা থাকলেও ছোট ব্যবসায়ীদের ব্যবসা নাই। আমাদের পণ্য বিভিন্ন ব্র্যান্ডের দোকানে একটু পরিবর্তন করে উচ্চমূল্যে বিক্রি হচ্ছে।’

খাদি বিপণি বিতানের স্বত্বাধিকারী শিবুপাল বলেন, ‘পুঁজি সংকট, অনলাইনে কেনাবেচা ও বড় বড় শপিং মলে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্রদর্শনী কেন্দ্রগুলো খাদি কাপড় বিক্রি হওয়ায় আমাদের ক্রেতা কমে গেছে।’

কান্দিরপাড় খাদি ব্যবসায়ী সমিতির সহসভাপতি ও কুমিল্লা খদ্দরের স্বত্বাধিকারী কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, ‘ঈদে এ পোশাকের চাহিদা বেশি। কুমিল্লা জেলার বাইরে থেকেও প্রচুর ক্রেতা আসেন। কিন্তু পর পর দুই বছরে মহামারি করোনার কারণে পুঁজি সংকটে অনেকে এবার আসেননি।’

কুমিল্লা মহানগরীর খাদি ঘরের স্বত্বাধিকারী ও খাদি বস্ত্র ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি প্রদীপ কুমার রাহা বলেন, ‘একসময় খাদি কাপড় অনেক ভারী ছিল। এখন ওই কাপড় প্রতিনিয়ত মিহি করা হচ্ছে। তরুণ প্রজন্মের হাত ধরে খাদি কাপড় এবং এ কাপড়ের পাঞ্জাবি ও ফতুয়ার নকশায় বৈচিত্র্য আসছে। বিশ্বব্যাপী চাহিদা থাকলেও বাজারজাতকরণে বিভিন্ন সমস্যার কারণে এখন আশানুরূপ ব্যবসা হচ্ছে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত