Ajker Patrika

দিনে চুলা জ্বলে টিমটিম

শরিফুল ইসলাম তনয়, সিদ্ধিরগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ)
দিনে চুলা জ্বলে টিমটিম

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে গ্যাসের তীব্র সংকট চলছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন আবাসিক গ্রাহকেরা। কোনো কোনো এলাকায় বাসাবাড়িতে চুলায় গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে না, আবার কোথাও গ্যাসের চাপ কম থাকায় সারা দিন চুলা মিটমিট করে জ্বলে। অনেকে হোটেল থেকে খাবার কিনে আনছেন। আবার অনেকে গ্যাস বিল দেওয়ার পরেও বাধ্য হয়ে ব্যবহার করছেন এলপিজি সিলিন্ডার। এতে সংসারে বেড়েছে খরচ।

গতকাল সিদ্ধিরগঞ্জের সানারপাড়, মৌচাক, মুক্তিনগর, মাদানিনগর, পাইনাদী নতুন মহল্লা, মিজমিজি কান্দাপাড়া এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে গ্যাসের এ সংকট দেখা গেছে। গ্যাস-সংকটের প্রভাব শুধু পরিবারগুলোর মধ্যেই পড়ছে না, দূরদূরান্ত থেকে সিদ্ধিরগঞ্জে আসা শিক্ষার্থী ও চাকরিজীবী ব্যাচেলররা পড়েছেন আরও ভোগান্তিতে। গ্যাস-সংকটের কারণে সময়মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মস্থলে যেতে পারছেন না তাঁরা।

কথা হয় সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি কান্দাপাড়া এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা আব্দুল ওয়াদুদের সঙ্গে। তিনি বলেন,  নিরবচ্ছিন্ন গ্যাসের দাবিতে আমরা মানববন্ধন করেছিলাম। পাশাপাশি তিতাসের নারায়ণগঞ্জ অঞ্চলের এমডি বরাবর স্মারকলিপিও দিয়েছিলাম। তিনি আশ্বস্ত করেছিলেন গ্যাস আসবে, কিন্তু এখনো পর্যন্ত গ্যাস আসে নাই।’ 
সিদ্ধিরগঞ্জ বাজার এলাকার গৃহিণী রুমি বেগম বলেন, ‘আমার দুই ছেলে। একজন স্কুলে পড়ে। গ্যাস না থাকায় তাদের নাশতা বা দুপুরে টিফিন রান্না করে দিতে পারি না। তাদের বাইরে খেতে হয়। কিছুদিন আগেও অল্প অল্প গ্যাস আসত। এখন তাও আসে না। বাধ্য হয়ে সিলিন্ডার কিনেছি। বিল দিয়েও যদি গ্যাস না পাই তাহলে বিল না নিক।’

পাইনাদি নতুন মহল্লা এলাকার মনোয়ারা নামে ৬৫ বছর বয়সী এক বৃদ্ধা আক্ষেপের সুরে বলেন, ‘গ্যাস না থাকায় আমরা ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করতে পারছি না। আমার নাতিদের অসুখ হয়ে গেছে। আমি ২২ বছর ধরে এই মহল্লায় বসবাস করছি, কখনো এমন কষ্ট করি নাই। আজ পাঁচ-ছয় দিন হয়েছে গ্যাসের কোনো চিহ্ন নাই। প্রতিদিন কেরোসিন কিনতে হচ্ছে। এই মহল্লার সবাই কষ্টে দিন কাটাচ্ছে। আমরা না হয় ১০০ টাকা দিয়ে তেল কিনে আনব, কিন্তু গরিবেরা কী করবে।’ 
একটি সামাজিক সংগঠনের সদস্য রাশেদুল ইসলাম ইমেল বলেন, শহরের মানুষ গ্যাসের চুলায় রান্না করতে অভ্যস্ত। গ্যাসের সংকট থাকায় গৃহিণীরা ভোগান্তিতে পড়েছেন।

একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আসিফ বলেন, ‘গ্যাসসংকটের কারণে মানুষ অনেক কষ্টে দিন কাটাচ্ছে। বিশেষ করে যারা মেসে থাকি তাদের অবস্থা আরও করুণ হয়ে পড়ছে।’

তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক শাকির আহমেদ বলেন, ‘শুধু নারায়ণগঞ্জ না, পুরো বাংলাদেশেরই একই অবস্থা। জ্বালানি-সংকটের কারণে মূলত এই সমস্যাটি হচ্ছে। দেশের ৬১ শতাংশ বিদ্যুৎ গ্যাস থেকে হয়।

এখন স্বাভাবিকভাবে জ্বালানি-সংকটের কারণে বিদ্যুতের উৎপাদন ঠিক রাখার জন্য তাদের বেশি গ্যাস দিতে হচ্ছে। ফলে এই চাপটা চলে এসেছে গ্যাসের গ্রাহকদের ওপর। চলতি মাসের মধ্যেই এই অবস্থা স্বাভাবিক হবে আমরা শুনেছি।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রশিক্ষণ ছাড়াই মাঠে ৪২৬ সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তা

গ্রাহকের ২,৬৩৫ কোটি টাকা দিচ্ছে না ৪৬ বিমা কোম্পানি

১০০ বছর পর জানা গেল ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত