Ajker Patrika

মরছে চিংড়ি, বিপাকে চাষি

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
আপডেট : ০১ জুন ২০২২, ১৬: ০৫
মরছে চিংড়ি, বিপাকে চাষি

সাতক্ষীরার আশাশুনিতে অধিকাংশ চিংড়িঘেরের মাছ মারা যাচ্ছে। চাষিরা বলছেন, ভাইরাসের আক্রমণে চিংড়ি মারা যাচ্ছে। তবে উপজেলা মৎস্য অফিসের দাবি, অতিরিক্ত তাপমাত্রা, অনাবৃষ্টি ও ঘেরে পানিস্বল্পতার কারণে চিংড়ি মারা যাচ্ছে। এদিকে এর কোনো প্রতিকারের ব্যবস্থা না থাকায় বিপাকে পড়েছেন চাষিরা।

উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, আশাশুনির প্রতাপনগর, শ্রীউলা, আশাশুনি সদর, শোভনালী, বুধহাটা, কুল্যা, দরগাহপুর, কাদাকাটি, আনুলিয়া, খাঁজরা ও বড়দল ইউনিয়নে এ বছর প্রায় ১৭ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে চিংড়ি চাষ হয়েছে। চলতি বছর চিংড়ি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ৪ হাজার মেট্রিক টন। যার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা।

উপজেলায় বাগদা চিংড়ি ঘেরের সংখ্যা (সরকারি হিসাবে) ১৩ হাজার ২৩৬টি। বেসরকারি হিসাবে এ সংখ্যা আরও বেশি। বাগদা চিংড়ি পোনার চাহিদা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ২ হাজার কোটি। এর অধিকাংশ পোনা আনা হয় কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন হ্যাচারি থেকে।

চিংড়ি ব্যবসায়ী আশাশুনি সদরের মহিতুর রহমান, শ্রীউলার ইলিয়াস হোসেন, প্রতাপনগরের আব্দুল খালেকসহ সংশ্লিষ্ট একাধিক ব্যক্তি জানান, অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর চিংড়িঘেরে ভাইরাসের আক্রমণ বেশি। ঘেরে রেনু পোনা ছাড়লে শতকরা ৮০ ভাগ চিংড়ি মারা যাচ্ছে। এ বছর ঘেরে ভাইরাস আক্রমণের পেছনে ভাইরাসযুক্ত চিংড়ি পোনার পাশাপাশি খারাপ আবহাওয়া একটি কারণ। সময়েমতা বৃষ্টি না হওয়ার কারণে ঘেরের লবণাক্ততার পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ভাইরাসমুক্ত চিংড়ি পোনা সরবরাহ নিশ্চিত করা না গেলে চিংড়িশিল্প মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তাঁরা।

আশাশুনি উপজেলার চাষিরা ভাইরাসে চিংড়ি মারা যাচ্ছে বললেও মৎস্য কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, উপজেলায় চলতি বছরে চিংড়ি মরার কারণ মৎস্য ঘেরে প্রয়োজনীয় পানি কম থাকা। অধিক তাপমাত্রা ও অনাবৃষ্টির কারণে হিট স্ট্রোকে চিংড়ি মারা যাচ্ছে। চিংড়ি ভাইরাস মোকাবিলায় কোনো ওষুধ এখনো আবিষ্কৃত হয়নি। তবে নিয়ম মেনে চিংড়ি চাষ করলে ভাইরাস প্রতিরোধ করা সম্ভব।

তিনি চিংড়িচাষিদের পরামর্শ দিয়ে বলেন, চিংড়িঘেরে পানি বাড়াতে হবে। মানসম্মত চিংড়ি খাদ্য প্রয়োগ করতে হবে। অনেকেই ঘের প্রস্তুতের আগে পোকামাকড় মারতে বিষ প্রয়োগ করেন, যা মাছের প্রাকৃতিক পরিবেশ নষ্ট করে। সপ্তাহে বুধবার উপজেলা মৎস্য অফিসে পরামর্শ দেওয়া হয়। উপজেলা অফিসে বা প্রতিটি ইউনিয়নে মৎস্য সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের নিয়োগ করা প্রতিনিধির সঙ্গে সার্বক্ষণিকভাবে যোগাযোগ রেখে চলতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত