Ajker Patrika

‘সহশিল্পীদের সাফল্য আমাকে ভীষণভাবে অনুপ্রাণিত করে’

আপডেট : ১৫ অক্টোবর ২০২৩, ১০: ৪৭
‘সহশিল্পীদের সাফল্য আমাকে ভীষণভাবে অনুপ্রাণিত করে’

সিনেমা, ওয়েব কনটেন্ট কিংবা মঞ্চনাটক—সব মাধ্যমে ব্যস্ত সময় পার করছেন অভিনেত্রী কাজী নওশাবা আহমেদ। আজ কানাডার টরন্টোতে ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল অব সাউথ এশিয়ায় প্রদর্শিত হবে নওশাবা অভিনীত সিনেমা ‘মেঘনা কন্যা’। সম্প্রতি তিনি টালিউডে কাজ শুরু করেছেন। অভিনয় করছেন অনিক দত্তের ‘যত কাণ্ড কলকাতায়’ সিনেমায়। নওশাবার সঙ্গে কথা বলেছেন শিহাব আহমেদ

আজ টরন্টোতে আপনার অভিনীত ‘মেঘনা কন্যা’ সিনেমার প্রিমিয়ার হবে। কেমন লাগছে?
ভীষণ ভালো লাগছে। সিনেমার প্রথম প্রদর্শনী আইএফএফএসএতে হচ্ছে। শারীরিকভাবে উপস্থিত থাকতে না পারলেও মন সেখানেই থাকবে। শিগগির দেশেও মুক্তি পাবে মেঘনা কন্যা। সে সময় সবার সঙ্গে সিনেমাটি উপভোগ করব। 

মেঘনা কন্যা কী ধরনের গল্পের সিনেমা? 
আমাদের দেশে সাধারণত নারীকেন্দ্রিক সিনেমা কম হয়। যেগুলো হয় সেখানে কমার্শিয়াল উপাদান থাকে না। ‘মেঘনা কন্যা’ যেমন নারীকেন্দ্রিক গল্প, তেমনি বাণিজ্যিক সিনেমার সব উপাদান গান, প্রেম, অ্যাকশন, রোমান্স—সব এতে রয়েছে। নারীশক্তির বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে এতে। একটা মেয়ে নৃত্যশিল্পী হতে চায়, যার বাবা একজন গায়েন। সমাজের দৃষ্টিতে এটাই তার দোষ। তার ছোট বোনও তাকে দেখে শিল্পী হতে চায়। একপর্যায়ে শহর থেকে এক মেয়ে আসে। তারও স্বপ্ন শিল্পের সঙ্গে যুক্ত থাকার। তারও একটা স্ট্রাগল আছে। কীভাবে তাদের দেখা হয় এবং কীভাবে তারা নিজেদের প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে ওঠে, সেটাই এ সিনেমার গল্প। নির্মাতা ফুয়াদ চৌধুরীকে ধন্যবাদ দিতে চাই এমন একটি সিনেমার জন্য। 

আপনি কোন চরিত্রে অভিনয় করেছেন?
এতে আমি অভিনয় করেছি মেঘনাপারের সেই কন্যার চরিত্রে। যার নাম হাসি। চেষ্টা করেছি পর্দায় নিজেকে হাসি চরিত্রে উপস্থাপন করার।

সিনেমাটি নিয়ে কেমন প্রত্যাশা করছেন?
মেঘনা কন্যা একটি সাহসী নির্মাণ। কারণ, সিনেমাটি নির্মিত হয়েছে নারীকেন্দ্রিক গল্পে। এখানে কোনো তারকা অভিনয়শিল্পী নেওয়ার কথা চিন্তা করেননি নির্মাতা। চরিত্র অনুযায়ী শিল্পী বাছাই করেছেন। আমি খুব করে চাই সিনেমাটি এ দেশে ভালো করুক। আমাদের দেশে একটা গৎবাঁধা কথা রয়েছে, অমুককে না নিলে কিংবা যাঁদের ফেসভ্যালু নেই, তাঁদের নিলে বাণিজ্যিক সিনেমা চলে না। আশা করি এসব বিষয় থেকে উত্তরণের পথটা শুরু হবে মেঘনা কন্যা দিয়ে। 

নওশাবা আহমেদসাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বাংলাদেশের সিনেমার অংশগ্রহণ বেড়েছে। পুরস্কারও পাচ্ছে। এ বিষয়টি কীভাবে দেখেন?
আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে আমাদের সিনেমার সাফল্য আমাকে ভীষণভাবে অনুপ্রাণিত করে। আমি যখন অভিনয় শুরু করি তখন কিন্তু ওটিটি ছিল না। তখন সিনেমা থেকে মানুষ মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, নাটকের মান পড়ে যাচ্ছে। সবকিছু মিলিয়ে আমরা দাঁত কামড়ে পড়ে ছিলাম। সে জায়গা থেকে ‘রেহানা মরিয়ম নূর’, ‘বলী’, ‘মশারী’সহ অন্য কাজগুলোর আন্তর্জাতিক সাফল্য পুরো ইন্ডাস্ট্রিকে সামনে এগিয়ে যাওয়ার রসদ জোগায়। আমাদের সহশিল্পীদের সাফল্য সেটা সংস্কৃতির যে মাধ্যমেই হোক, আমাকে অনুপ্রাণিত করে। আমি একটু অন্তর্মুখী স্বভাবের। খুব বেশি কাজ করা হয় না। মাঝে মাঝেই দমে যাই। পরিবার থেকেও বলে, ছেড়ে দাও। যখন আমাদের দেশের সাফল্যের খবর শুনি, তখন সাহস ফিরে পাই।

সম্প্রতি কলকাতার ‘যত কাণ্ড কলকাতায়’ সিনেমায় কাজ শুরু করেছেন। শুটিং কি শেষ?
যত কাণ্ড কলকাতায় আমার খরা জীবনে বৃষ্টির মতো। একেবারেই অপ্রত্যাশিত বৃষ্টি। ব্যাপারটা এমন নয় যে এটার আভাস আমি আগে থেকেই পেয়েছিলাম। ভালো কাজের জন্য আমি সব সময় অপেক্ষা করি, এটা মনে হয় তারই পুরস্কার। দার্জিলিংয়ে প্রথম লটের কাজ শেষ করেছি। পূজার পরে আবার শুরু হবে বাকি অংশের কাজ। শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা দুর্দান্ত। অনীক দত্ত গুছিয়ে কাজ করেন। আমি আগে থেকেই নির্মাতার মতো করে কাজ করতে পছন্দ করি। বলা যায়, আমি পুরোপুরি ডিরেক্টরস আর্টিস্ট। পরিচালক যেভাবে চান সেভাবেই চ্যালেঞ্জ নিতে ভালো লাগে। অনীকদা ও তাঁর পুরো টিমের প্রতি আমার অগাধ বিশ্বাস। জানি না কতটুকু ভালো করতে পারব। তবে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি।

এ বছর আপনাকে মঞ্চেও দেখা গেছে 
রেজা আরিফ স্যারের নির্দেশনায় নাটকের দল আরশিনগরের প্রযোজনায় ‘সিদ্ধার্থ’ নাটকের পাঁচটি শো করেছি। মঞ্চ আমার কাছে ভালোবাসার জায়গা। মঞ্চের দর্শককে খুব আপন মনে হয়। মঞ্চে অভিনয় আমার কাছে চিঠি লেখার মতো আনন্দ দেয়। যখনই খুব অস্থির লাগে, খুব মন চায় মঞ্চে উঠতে। অপেক্ষায় থাকি কবে থিয়েটার করতে পারব। থিয়েটার করলে আমার আত্মার শান্তি হয়। কিছু শিখতে পারি। আমি যেভাবে অভিনয়টা করতে চাই, সেই সুযোগটা মঞ্চে পাওয়া যায়। থিয়েটারে হয়তো আমার অর্থ আসে না তবে মানসিক শান্তিটা আসে। জীবনধারণের জন্য যদি পর্যাপ্ত অর্থ থাকত, তাহলে শুধু থিয়েটারই করতাম।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত