Ajker Patrika

কর্মী সেজে গুদাম থেকে চুরি

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৩: ৩৩
কর্মী সেজে গুদাম থেকে চুরি

নগরীর নামী একটি কোম্পানির ডিলারের গুদামে থাকা লাখ লাখ টাকার টিভি ও রেফ্রিজারেটরের হিসাব মিলছিল না মালিকের। কীভাবে মিলবে? গুদাম থেকে যখন মালামাল বের করতেন কর্মীরা, এরপর সেখানে আসত চোরের দল। কর্মী সেজে গুদামের মালামাল গাড়িতে করে নিয়ে যেত তারা। ফলে শোরুম আর গুদামে থাকা মালামালের তথ্যে গরমিল পান মালিক। অবশেষে পুলিশের দ্বারস্থ হন তিনি। অভিযোগ পেয়ে দ্রুত ঘটনাটির রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ।

গত সোমবার রাতে পাঁচলাইশ থানা-পুলিশ চুরির সঙ্গে জড়িত ওই চক্রটির তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। গতকাল মঙ্গলবার থানায় সংবাদ সম্মেলন করে জানানো হয়, মো. পারভেজ (৩৫), সালাউদ্দিন (৩০) ও আরাফাত (৩০) এসব পণ্য চুরিতে জড়িত। তবে এ ঘটনার পেছনে সম্প্রতি চাকরি ছেড়ে যাওয়া প্রতিষ্ঠানটির এক কর্মী জড়িত বলে পুলিশ জানিয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ওয়ালটন কোম্পানির একজন ডিলার তাঁর গুদাম থেকে ২৫টি বিভিন্ন সাইজের এলইডি টিভি, ১২টি রেফ্রিজারেটর চুরির বিষয়ে থানায় অভিযোগ করেন। চুরি যাওয়া মালামালের মূল্য আনুমানিক ১৪ লাখ ৪ হাজার টাকা। গত সোমবার থানায় এই অভিযোগ পেয়ে ওই দিনই চক্রটিকে শনাক্ত করে পুলিশ। পরে অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেন।

মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা পলাশ চন্দ্র ঘোষ আজকের পত্রিকাকে বলেন, পাঁচলাইশের বাদুরতলার আরাকান রোড সংলগ্ন একটি টিনশেডের ঘরে ছিল ওই ডিলারের গুদামটি। শো-রুমের জন্য মালামালগুলো যখন গুদাম থেকে ডেলিভারি হতো তখনই এই চুরি সংঘটিত হতো। শোরুমের কর্মচারীরা গুদাম থেকে মালামালগুলো নিয়ে চলে যাওয়ার পরপরই চক্রটির সদস্যরা কর্মচারী সেজে গুদামে যান। সঙ্গে একটি টিকটিকি গাড়িও (সিএনজিচালিত যাত্রীবাহী যান) নিয়ে যেতেন তাঁরা। স্বাভাবিকভাবে তালা খুলে গুদামে ঢুকে গাড়িতে করে মালামাল চুরি করে চলে যেতেন। এতে তাঁদের চুরির বিষয়টি কেউ বুঝতে পারত না।

গত ২৪ জানুয়ারি থেকে যে কোনো সময় এই চুরির ঘটনা ঘটেছিল বলে মালিকপক্ষ জানিয়েছে। ওই সময় গুদামের মালিক সাতকানিয়ায় নিজ এলাকায় নির্বাচনী কাজে ছিলেন। তখন শো-রুমটি কর্মচারীরা দেখাশোনা করতেন।

উপপরিদর্শক পলাশ বলেন, এই ঘটনায় পরে সিসিটিভি ফুটেজ থেকে একজনকে শনাক্তের পর অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। পর্যায়ক্রমে বাকি দুজনকেও গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাঁদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে একটি বাসা থেকে চুরির কিছু মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩টি এলইডি টিভি, ৬টি ফ্রিজ ও চুরির কাজে ব্যবহৃত একটি টিকটিকি গাড়ি জব্দ করা হয়।

এসআই পলাশ বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানটির এক কর্মচারী ৬ মাস আগে এখান থেকে চাকরি ছেড়ে চলে যান। আমাদের ধারণা, তাঁর যোগসাজশে অভিনব কায়দায় এই চুরি সংঘটিত হয়েছে। এখানে কাজ করার সুবাদে তিনি অনেক কিছুই জানতেন।’ এ বিষয়ে আরও খোঁজ নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

তদন্ত কর্মকর্তা জানান, ‘গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে আরাফাত এলাকায় নিজেকে ছাত্রলীগ নেতা বলে পরিচয় দেন। পারভেজ ও সালাউদ্দিন পেশায় ইলেকট্রিশিয়ান। আরাফাতের সঙ্গে কোম্পানির সাবেক ওই কর্মচারীর মোবাইল ফোনে কথোপকথনের তথ্য আমরা পেয়েছি। ওই কর্মচারী এখন পলাতক রয়েছে। তাঁকে ধরতে পারলে বিস্তারিত জানা যাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত