Ajker Patrika

দুষ্প্রাপ্য ডাকটিকিটে চিঠি পাবে প্রাপক

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
দুষ্প্রাপ্য ডাকটিকিটে চিঠি পাবে প্রাপক

একদল মানুষ গোল হয়ে বসে চিঠি লিখছেন। কেউ বাবার কাছে, কেউ মায়ের কাছে আবার কেউ প্রিয়জনের কাছে সেগুলো পাঠাবেন। পাশেই রয়েছে অস্থায়ী পোস্ট অফিস। সেখানে রানার সুমন শেখ একের পর এক খাম বুঝে নিচ্ছেন। ডাক বিভাগের সেই পুরোনো কালি প্যাড আর ডেটস্ট্যাম্পে দুম দুম শব্দে খামের ওপর বসিয়ে দিচ্ছেন সিলমোহর। এ চিত্র ‘বরেন্দ্রপেক্স-২০২৪’ শীর্ষক ডাকটিকিট প্রদর্শনীর।

দেশি-বিদেশি এক হাজারের বেশি ডাকটিকিট নিয়ে গতকাল রোববার রাজশাহী নগরীর সিঅ্যান্ডবি মোড়ের একটি রেস্তোরাঁয় বরেন্দ্র ফিলাটেলিক সোসাইটির উদ্যোগে শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী এ প্রদর্শনী।

 অনুষ্ঠান উপলক্ষে ডাক বিভাগ ‘বরেন্দ্রপেক্স-২০২৪’ নামে দুই দিনের জন্য বিশেষ একটি খামও এনেছে। এ ছাড়া ডাক বিভাগের পক্ষ থেকে দুটি সিলমোহর দেওয়া হয়েছে অনুষ্ঠানের নামে।

প্রদর্শনীতে সারা দেশের বাছাই করা ২৫ জন ডাকটিকিটের সংগ্রাহক তাঁদের সংগ্রহ প্রদর্শন করছেন। পাশাপাশি তাঁরা ডাকটিকিট বিক্রিও করছেন। প্রদর্শনীতে পাকিস্তান আমল থেকে বর্তমান সময়ের সব ডাকটিকিটই রয়েছে। বিশ্বের নানা দেশের দুষ্প্রাপ্য সব ডাকটিকিট প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে। দেয়ালে দেয়ালে প্রদর্শন করা হচ্ছে অনেক পুরোনো চিঠির খাম।

ঢাকার উত্তরা থেকে প্রদর্শনীতে অংশ নিয়েছেন ডাকটিকিটের সংগ্রাহক কাজী মাহবুবুর রহমান। স্বাধীনতার আগেও বাংলাদেশকে নিয়ে যে আটটি ডাকটিকিট ছাপানো হয়েছিল, সেগুলো সংগ্রহ রয়েছে মাহবুবুরের কাছে। ওই ডাকটিকিটগুলো ছাপানো হয়েছিল রুপির হিসাবে। ১০ পয়সা, ২০ পয়সা, ৫০ পয়সা, ১ রুপি, ২ রুপি, ৩ রুপি, ৫ রুপি ও ১০ রুপির ডাকটিকিটগুলোর কোনটিতে কোন বিষয়টি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে, তা তিনি বর্ণনা করে জানাচ্ছেন। মাহবুবুর আরও ১৫টি ডাকটিকিট বের করে দেখালেন। বললেন, এই ডাকটিকিটগুলোও স্বাধীনতার আগে ছাপানো হয়েছিল প্রকাশের জন্য। কিন্তু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধু আটটি প্রকাশের অনুমতি দিয়েছিলেন। বাকি ১৫টি ‘আনইস্যুড’ হিসেবে থেকে গেছে।

অস্থায়ী পোস্ট অফিসে একটি ডাকবক্সও রাখা হয়েছে। বরেন্দ্রপেক্স খামে ৫ টাকার ডাকটিকিট দিয়ে সেখানে চিঠি পোস্ট করছিলেন অনেকে। এ ছাড়া ৮ টাকার ডাকটিকিটে রেজিস্ট্রি করে এবং দ্রুত চিঠি পৌঁছাতে ১০ টাকার ডাকটিকিট দিয়ে জিইপি চিঠি পাঠাচ্ছিলেন অনেকে। গতকাল প্রথম এক ঘণ্টায় ৩০টি জিইপি ও ৮টি রেজিস্ট্রি করা চিঠি জমা হয় পোস্ট অফিসে।

বরেন্দ্র ফিলাটেলিক সোসাইটির সাংগঠনিক সম্পাদক সুমন্ত কুমার বলেন, ‘যাঁরা এখন প্রবীণ, তাঁদের শৈশবের স্মৃতি এই ডাকটিকিট। মোবাইল ফোন আর ইন্টারনেটের যুগে এগুলো এখন স্মৃতি। সেই স্মৃতিময় ইতিহাস নতুন প্রজন্মের সামনে আনতে আমাদের এই আয়োজন।’

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ড. উদয় শংকর বিশ্বাস বলেন, ‘এখানে আজ সবাই পোস্ট অফিসের মাধ্যমে চিঠি পাঠাচ্ছেন। যাঁরা চিঠি পাঠাচ্ছেন, এ অনুভূতিটা শুধু তাঁরাই বুঝতে পারছেন। আমরা আশা করছি, আজ যাঁরা চিঠি পাঠাচ্ছেন, তাঁদের একটা অভ্যাস তৈরি হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত