Ajker Patrika

নদীতে বিলীন হচ্ছে বাজার

দাকোপ প্রতিনিধি
আপডেট : ১২ জুন ২০২২, ১২: ৩০
Thumbnail image

দাকোপে ভয়াবহ নদীভাঙনে বিলীন হচ্ছে বটবুনিয়া বাজার। জোয়ারের পানির চাপে এ বাজারটি ঢাকি নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে। দ্রুত ভাঙনকবলিত স্থান মেরামত না করলে আরও ভেঙে জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।

সরেজমিনে গত শুক্রবার উপজেলার তিলডাঙা ইউনিয়নের বটবুনিয়া বাজার এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩১ নম্বর পোল্ডারে বটবুনিয়া বাজার অবস্থিত। বাজারের অনেক দোকান ঢাকি নদীগর্ভে চলে গেছে। বাজারের লঞ্চঘাট, ট্রলার ঘাট, খেয়াঘাট ভেঙে নদীতে চলে গেছে।

জোয়ারের পানি বাড়লে ওয়াপদা রাস্তা ছাপিয়ে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করে। স্থানীয় বাজার কমিটির উদ্যোগে ওয়াপদা রাস্তার ওপর বালুর বস্তা ও কিছু কিছু জায়গায় মাটি দিয়ে ছোট বাঁধ দেওয়া হয়েছে।

বাজারের আশপাশে বসবাসকারী এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা ভয়ে ভয়ে দিন কাটাচ্ছেন। যেকোনো মুহূর্তে ওয়াপদা বাঁধ ভেঙে পানিতে প্লাবিত হতে পারে এলাকা। তারা অতি দ্রুত নদীভাঙনকবলিত স্থান মেরামতসহ টেকসই বাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।

বটবুনিয়া বাজারের হোটেল ব্যবসায়ী লালন বলেন, ‘আমার এখানে একটি হোটেল ছিল। মোটামুটি ভালো আয় করতাম। কিন্তু দোকানটি ১০ দিন আগে নদীতে চলে গেছে। এখন আমি অত্যন্ত মানবেতর জীবনযাপন করছি।’

বটবুনিয়া বাজারের সভাপতি নিত্যানন্দ রায় জানান, বটবুনিয়া বাজার দাকোপের একটি ঐতিহ্যবাহী বাজার। এটি ঢাকি নদীর ভাঙনে বিলীন হতে চলেছে। বাজারের অধিকাংশ দোকানপাট নদীতে চলে গেছে। ফলে ব্যবসায়ীদের লাখ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। যে দোকান অবশিষ্ট ছিল, তা আবার নদীগর্ভে যেতে চলেছে। তিনি বাজারটি রক্ষার্থে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য বিশ্বজিত রায় বলেন, ওয়াপদা রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ। তিন ভাগের দুই ভাগ ভেঙে গেছে নদীতে। যদি নদীতে বড় ধরনের জোয়ার হয়, তাহলে যেকোনো সময় ওয়াপদা ভেঙে এলাকা পানিতে প্লাবিত হবে। সাধারণ মানুষের জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হবে। ইউনিয়নের প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়বে।

তিলডাঙা ইউপি চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন গাজী বলেন, বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে। এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল আলম বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধের পেছন দিয়ে বিকল্প বাঁধ নির্মাণকাজ শুরু হবে। সেখানে জিও ব্যাগ ও ডাম্পিং করে ভাঙন প্রতিরোধের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এদিকে দাকোপের সুতারখালি ইউনিয়নের গুনারি কালিবাড়ি লঞ্চঘাট এলাকায় ভয়াবহ নদীভাঙন দেখা দিয়েছে। এ কারণে বেড়িবাঁধ মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। জোয়ারের পানির চাপে বিশ্বব্যাংকের নবনির্মিত ওয়াপদা রাস্তাটি শিবসা নদীগর্ভেবিলীন হচ্ছে।

গত সপ্তাহে সুতারখালি ইউনিয়নের গুনারি কালিবাড়ি লঞ্চঘাট এলাকায় নদীভাঙনকবলিত স্থানে গিয়ে দেখা যায়, পানি উন্নয়ন বোর্ডে ৩২ নম্বর পোল্ডারে কালিবাড়ি লঞ্চঘাট অবস্থিত। জয়নগর থেকে ভিটেভাঙ্গা, কালিবাড়ি, গুনারি যাওয়ার রাস্তাটি শিবসা নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। ওয়াপদা রাস্তার পাশে প্রায় ১০০ ফুট হঠাৎ করে নদীতে দেবে গেছে। ফলে নদীভাঙন মারাত্মক আকার ধারণ করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত