Ajker Patrika

আগুনে সব হারালেন মাজেদা

মনিরামপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ২৩ মার্চ ২০২২, ১৩: ০১
Thumbnail image

তিন বছর আগে স্বামী মারা যান মাজেদা বেগমের। শুরু হয় জীবনযুদ্ধ। খেতে দিনমজুরের কাজ করে এবং কিছু হাঁস–মুরগি পুষে যে আয় হতো, তা দিয়েই কোনোমতে দিনাতিপাত করছিলেন অসহায় এ বৃদ্ধা। ছিল না শোয়ার ঘরও। রাতে ঘুমাতেন রান্নাঘরের এক কোণে। কিন্তু কদিন আগে অনেক কষ্টে তৈরি করা গরু ও হাঁস–মুরগির ঘরটিতে আগুন লেগে সব পুড়ে গেছে মাজেদার। আগুনে নগদ সাড়ে সাত হাজার টাকা, ৬০টি মুরগি, দুটি হাঁস, ৫০টি ডিম, চাল, হাঁড়ি পাতিল সবই কেড়ে নিয়েছে এ বিধবার।

আগুনের হাত থেকে বাঁচতে একমাত্র গরুটিও দড়ি ছিঁড়ে কোথায় চলে গেছে, তাও খুঁজে পাচ্ছেন না তিনি। এখন মাথা গোঁজার ঠাঁই তো দূরের কথা, খাওয়ার জন্য এক মুঠো চালও নেই মাজেদা বেগমের। সব হারিয়ে তিনি নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন।

ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল মঙ্গলবার শেষ রাতে মনিরামপুরের জোঁকা গ্রামে। মাজেদা বেগম মৃত সমসের আলীর স্ত্রী। প্রতিবেশীরা জাতীয় জরুরি সহায়তার ৯৯৯ নম্বরে কল করলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে আগুন নেভায়। ততক্ষণে আগুন সবকিছু ছাই করে দিয়েছে এ বিধবার।

ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, গোয়াল ঘরের সাজাল (মশা তাড়ানোর আগুনের মশাল) থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। আগুনে অন্তত ৮০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে এ অসহায় নারীর।

প্রতিবেশীরা জানান, কদিন আগে ৪৫ হাজার টাকা খরচ করে খুঁটি আর টিন দিয়ে রান্না ও গোয়াল ঘর করেছিলেন মাজেদা বেগম। একমাত্র ছেলে দিনমজুরের কাজ করে সংসার চালান। নিজের সংসারে অভাব থাকায় তাঁর মায়ের খরচ জোগানোও সম্ভব হয় না। ফলে মাজেদা বেগম দিনমজুরের কাজ করেই নিজের খাবার জুগিয়ে আসছিলেন।

মাজেদা বেগম বলেন, ‘ভোরে আগুন টের পাইছি। সব পুড়ে গেছে। কিচ্ছু নেই। দুপুরে খাব, সে চালও নেই ঘরে। গরুর গায় আগুন লাগলি দড়ি ছিঁড়ে ও পালাইছে। গরুটা এখনো খুঁজে পাইনি।’

মনিরামপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার প্রণব বিশ্বাস আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘৯৯৯ নম্বরে কল পেয়ে আমরা গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনি। গোয়াল ঘরের সাজাল থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। আগুনে বিধবার সবকিছু পুড়ে গেছে। আমরা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৮০ হাজার টাকা উল্লেখ করেছি।’

ঝাঁপা ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘আগুন লেগে বিধবা মাজেদার বড় ক্ষতি হয়েছে। স্থানীয়ভাবে ও পরিষদের মাধ্যমে আমরা তাঁকে সাহায্য করার চেষ্টা করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত