সৃষ্টি জাসওয়াল

ডানপন্থী ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় ফিরে আসার এক বছর আগে ২০১৮ সালে ভারতের তৎকালীন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী বলেছিলেন, তিনি বিশ্বাস করেন যে ভারতীয় হিন্দুরা ‘ঋষিদের’ বংশধর, বানরের নয়।
তৎকালীন মানব সম্পদ উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সত্যপাল সিং বলেছিলেন, চার্লস ডারউইনের বিবর্তন তত্ত্ব ‘বৈজ্ঞানিকভাবে ভুল’। তিনি আরও বলেছিলেন ‘স্কুল ও কলেজের পাঠ্যক্রম পরিবর্তন করা দরকার। পৃথিবীতে সব সময় মানুষকেই দেখা গেছে। কেউ বানরকে মানুষে পরিণত হতে দেখেনি।’
সত্যপাল যা বলেছিলেন তার বাস্তবায়ন এখন ঘটছে। ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে, ডারউইনের তত্ত্বটি নীরবে নবম ও দশম শ্রেণির পাঠ্যসূচি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে বিবর্তনবাদ বিষয়টি স্কুলের পাঠ্যপুস্তক থেকে সম্পূর্ণরূপে মুছে ফেলা হয়।
ভারতের শিক্ষক ও শিক্ষাসংশ্লিষ্টরা বলছেন, এখন লাখ লাখ স্কুল শিক্ষার্থী ডারউইন কে ছিলেন বা তাঁর তত্ত্ব কী বলে, তা জানতে পারবে না, যদি না তারা একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে জীববিদ্যা বিষয়টি বেছে নেয়।
ভারতের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত সংস্থা ন্যাশনাল কাউন্সিল অব এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিংয়ের (এনসিইআরটি) পরামর্শে পাঠ্যপুস্তকে এসব পরিবর্তন আনা হয় ।
ভারতের সেন্ট্রাল বোর্ড অব সেকেন্ডারি এডুকেশনের (সিবিএসই) অধিভুক্ত ২৪ হাজারের বেশি স্কুলে এসব পাঠ্যপুস্তক এখন পড়ানো হচ্ছে। তা ছাড়া, ভারতের ১৪টি রাজ্যের অন্তত ১৯টি স্কুল বোর্ডের অধীন স্কুলগুলোতে এসব বই পড়ানো হচ্ছে।
নরেন্দ্র মোদির রাজনৈতিক দল বিজেপি ও এর পরামর্শদাতা অতি-ডান রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) তাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য পূরণে দীর্ঘদিন ধরে ভারতের পাঠ্যপুস্তকগুলোকে সংশোধনের জন্য ব্যাপক প্রচার চালিয়ে আসছে। সাংবিধানিকভাবে ধর্মনিরপেক্ষ নয় বরং ভারত একটি জাতিগত হিন্দু রাষ্ট্র—এটা প্রতিষ্ঠা করাই তাদের একমাত্র উদ্দেশ্য।
বিজেপি এবং আরএসএস-সংশ্লিষ্ট হিন্দু গোষ্ঠীগুলো ভারতের ২০ কোটি মুসলমানকে কোণঠাসা করার জন্য এই প্রচার চালাচ্ছে, যারা কিনা দেশটির জনসংখ্যার মাত্র ১৪ শতাংশ। মুসলমানরা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে ভারতীয় উপমহাদেশ শাসন করেছে, ঐতিহাসিক এ সত্যকে অস্বীকার করা এবং কথিত হিন্দু নিপীড়নের একটি বিকল্প ইতিহাস তৈরি করে সেই মুসলিম শাসকদের শয়তানরূপে হাজির করা—সেইসব প্রচারের প্রধান উপাদান।
এই প্রচারের অংশ হিসেবে ১৬ ও ১৯ শতকের মধ্যে এই উপমহাদেশ শাসনকারী মোগলদের কথাও ইতিহাসের বই থেকে মুছে ফেলা হয়েছে।
এনসিইআরটি সপ্তম শ্রেণির ইতিহাসের পাঠ্যপুস্তক থেকে বেশ কয়েকটি পৃষ্ঠা বাদ দিয়েছে, যাতে দিল্লি সালতানাতের শাসকদের কথা উল্লেখ ছিল। এটি মোগল সম্রাটদের মাইলফলক এবং সাফল্যের বিস্তারিত ব্যাখ্যা করে—এমন দুটি পৃষ্ঠাও বাদ দিয়েছে।
দিল্লি সালতানাতের সম্প্রসারণ সম্পর্কে বলা তিনটি পৃষ্ঠা এবং একটি ‘মসজিদ’ তৈরির ইতিহাস বিশদভাবে ব্যাখ্যা করে–এমন একটি অনুচ্ছেদও সরিয়ে ফেলা হয়েছে। দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাসের পাঠ্যপুস্তক থেকে কিংস অ্যান্ড ক্রনিকলস নামে একটি অধ্যায়, যেখানে মোগল সম্রাটদের নানা গুরুত্বপূর্ণ ইতিহাস লেখা ছিল, তা সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
তবে এনসিইআরটি দাবি করেছে, করোনাকালে শিক্ষার্থীদের ওপর থেকে পড়ালেখার বোঝা কমাতেই মোগল শাসকদের ইতিহাস বাদ দেওয়া হয়েছে।
এনসিইআরটি ১১ এবং ১২ গ্রেডের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের নতুন বইতে হিন্দুত্ববাদীদের প্রতি স্বাধীনতাসংগ্রামী মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী বা মহাত্মা গান্ধীর নেতিবাচক মনোভাব এবং গান্ধীকে হত্যার পরে আরএসএসের ওপর নিষেধাজ্ঞার ঘটনাটি মুছে দিয়েছে। ১৯৪৮ সালে গান্ধীকে হত্যাকারী নাথুরাম গডসের সঙ্গে আরএসএসের যোগসূত্র ছিল—এই তথ্য এখন আর খুঁজে পাওয়া যাবে না।
পাঠ্যপুস্তকের ২০২০-২১ সংস্করণের একটি বাক্য—গান্ধী ‘বিশ্বাস করতেন যে ভারতকে শুধু হিন্দুদের জন্য একটি দেশে পরিণত করার যেকোনো প্রচেষ্টা দেশটিকে ধ্বংস করবে’—এটিও মুছে ফেলা হয়েছে। অন্য একটি বাক্যও বাদ দেওয়া হয়েছে, যাতে বলা হয়েছে, গান্ধীর ‘হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের অবিচল সাধনা হিন্দু চরমপন্থীদের এতটাই উত্তেজিত করেছিল যে তারা গান্ধীজিকে হত্যা করার জন্য বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেছিল’।
এনসিইআরটি একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বই থেকে ভারতের মুসলিম স্বাধীনতাসংগ্রামী মৌলানা আবুল কালাম আজাদের কথাও মুছে দিয়েছে। আজাদ ছিলেন ভারতের প্রথম শিক্ষামন্ত্রী এবং গণপরিষদের সদস্য, যিনি ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসন থেকে স্বাধীনতার পর দেশের সংবিধানের খসড়া তৈরির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
পাঠ্যপুস্তকের আগের সংস্করণে একটি বাক্য ছিল: ‘গণপরিষদের বিভিন্ন বিষয়ে আটটি প্রধান কমিটি ছিল। সাধারণত, জওহরলাল নেহরু (ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী), রাজেন্দ্র প্রসাদ (প্রথম ভারতীয় রাষ্ট্রপতি), সর্দার প্যাটেল (বল্লভভাই প্যাটেল, প্রথম উপ-প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী), মৌলানা আজাদ ও আম্বেদকর (ভীম রাও আম্বেদকর, খসড়া কমিটির চেয়ারম্যান) এসব কমিটি সভাপতিত্ব করতেন।’
দ্য হিন্দু পত্রিকার মতে, সংশোধিত পাঠ্যপুস্তকে বলা হয়েছে: ‘সাধারণত, জওহরলাল নেহরু, রাজেন্দ্র প্রসাদ, সর্দার প্যাটেল এবং বি আর আম্বেদকর এই কমিটিগুলোর সভাপতিত্ব করতেন।’
দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকার তদন্তে পাওয়া গেছে, সামাজিক বিজ্ঞানের সব বই থেকে নরেন্দ্র মোদির নিজ রাজ্য গুজরাটে ২০০২ সালের দাঙ্গার ঘটনা মুছে ফেলা হয়েছে। সেই দাঙ্গায় প্রায় দুই হাজার লোক, যাদের বেশির ভাগই মুসলমান নিহত হয়েছিল। সম্প্রতি, ভারত সরকার বিবিসির একটি তথ্যচিত্র নিষিদ্ধ করেছে, যেখানে বলা হয়েছিল যে মোদি তখন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন এবং হত্যাকাণ্ডের জন্য সরাসরি দায়ী ছিলেন।
ভারতের ইতিহাসবিদ এস ইরফান হাবিব বলেছেন, ইতিহাসের পুনর্লিখন বিজেপির হিন্দু জাতীয়তাবাদী প্রচারণার একটি প্রচেষ্টা। পাঠ্যবইয়ে কাটছাঁটকে একটি ‘বড় হামলা’ হিসেবে অভিহিত করে হাবিব বলেন, ‘এটি তরুণ প্রজন্মকে আমরা যা ভাবতে পারি তার চেয়ে বেশি প্রভাবিত করবে।’
হাবিব বলেন, ছোট বাচ্চাদের মগজ ধোলাই করে ভারতে ধর্মীয় বিভাজন আরও বাড়াতে অ্যাজেন্ডা অনুসরণ করা বর্তমান সরকারের একটি সচেতন কাজ। সরকার স্কুলের পাঠ্যক্রম বিষাক্ত করে ভারতের নৈতিকতাকে আঘাত করছে।
ভারতের মুসলিম সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে বৈষম্যের কথা বলা হয়েছে—এমন একটি অধ্যায় ষষ্ঠ শ্রেণির পাঠ্যপুস্তক থেকে মুছে ফেলা হয়েছে।
সপ্তম শ্রেণির সামাজিক বিজ্ঞান বই থেকে দুটি অধ্যায় মুছে ফেলা হয়েছে। একটি আন্ডারস্ট্যান্ডিং অ্যাডভার্টাইজমেন্টস শিরোনামে, যেখানে মিডিয়াতে বড় ব্যবসার ভূমিকা সম্পর্কে বলা হয়েছে। অন্যটি, স্ট্রাগলস ফর ইকুয়ালিটি শিরোনামে, যেখানে ভারতে কেন মানুষের সঙ্গে অসম আচরণ করা হয়, তার বিভিন্ন কারণ ব্যাখ্যা করা হয়েছিল এবং নারীর ক্ষমতায়নের জন্য আন্দোলনের কথা লেখা ছিল।
ইতিহাসবিদ হাবিব বলেছেন, ‘স্কুলের বইকে রাজনৈতিকীকরণের প্রচেষ্টা নতুন কিছু নয় কিন্তু এটি আরএসএস এবং হিন্দুত্ববাদীদের বহুদিনের অ্যাজেন্ডা। এবং মাত্রাটি উদ্বেগজনক।’ তিনি বলেন, ‘ভারতের শতাব্দীপ্রাচীন ধর্মনিরপেক্ষতা এবং হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে সম্প্রীতিকে তুলে ধরে— এমন তথ্য বিজেপি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে লুকিয়ে রাখছে একটি বিকৃত হিন্দু জাতীয়তাবাদী দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করতে যে ভারত শুধু হিন্দুদের জন্য।’
এক বিবৃতিতে এনসিইআরটির পরিচালক ডি পি সাকলানি বলেছেন, মুছে ফেলা অধ্যায়গুলো পুনরুদ্ধার করা হবে না, কারণ সেগুলো একটি বিশেষজ্ঞ কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে করা হয়েছে।
বিশিষ্ট মুসলিম সংসদ সদস্য আসাদুদ্দিন ওয়াইসি শাসক বিজেপির বিরুদ্ধে স্কুলের পাঠ্যপুস্তক সংশোধন ও পুনর্লিখনের মাধ্যমে ‘তার রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডাকে চাপিয়ে দেওয়ার’ অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি ভীত যে তারা শিগগিরই স্কুলে শেখাবে গডসের গান্ধীকে হত্যা করা ঠিক কাজ ছিল। বিজেপি যা করছে তা অন্যান্য ফ্যাসিবাদী শাসকদের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। আমরা অন্যান্য দেশে দেখেছি কীভাবে ফ্যাসিস্টরা তাদের আদর্শের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে ইতিহাস নিয়ে খেলা করেছে। একই ঘটনা এখন ভারতেও ঘটছে, তবে মাত্রাটি অনেক বেশি।
সৃষ্টি জাসওয়াল ভারতীয় সাংবাদিক
(আল জাজিরায় প্রকাশিত লেখাটি ইংরেজি থেকে অনুবাদ করেছেন সাংবাদিক ও কলাম লেখক রোকেয়া রহমান)

ডানপন্থী ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় ফিরে আসার এক বছর আগে ২০১৮ সালে ভারতের তৎকালীন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী বলেছিলেন, তিনি বিশ্বাস করেন যে ভারতীয় হিন্দুরা ‘ঋষিদের’ বংশধর, বানরের নয়।
তৎকালীন মানব সম্পদ উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সত্যপাল সিং বলেছিলেন, চার্লস ডারউইনের বিবর্তন তত্ত্ব ‘বৈজ্ঞানিকভাবে ভুল’। তিনি আরও বলেছিলেন ‘স্কুল ও কলেজের পাঠ্যক্রম পরিবর্তন করা দরকার। পৃথিবীতে সব সময় মানুষকেই দেখা গেছে। কেউ বানরকে মানুষে পরিণত হতে দেখেনি।’
সত্যপাল যা বলেছিলেন তার বাস্তবায়ন এখন ঘটছে। ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে, ডারউইনের তত্ত্বটি নীরবে নবম ও দশম শ্রেণির পাঠ্যসূচি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে বিবর্তনবাদ বিষয়টি স্কুলের পাঠ্যপুস্তক থেকে সম্পূর্ণরূপে মুছে ফেলা হয়।
ভারতের শিক্ষক ও শিক্ষাসংশ্লিষ্টরা বলছেন, এখন লাখ লাখ স্কুল শিক্ষার্থী ডারউইন কে ছিলেন বা তাঁর তত্ত্ব কী বলে, তা জানতে পারবে না, যদি না তারা একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে জীববিদ্যা বিষয়টি বেছে নেয়।
ভারতের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত সংস্থা ন্যাশনাল কাউন্সিল অব এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিংয়ের (এনসিইআরটি) পরামর্শে পাঠ্যপুস্তকে এসব পরিবর্তন আনা হয় ।
ভারতের সেন্ট্রাল বোর্ড অব সেকেন্ডারি এডুকেশনের (সিবিএসই) অধিভুক্ত ২৪ হাজারের বেশি স্কুলে এসব পাঠ্যপুস্তক এখন পড়ানো হচ্ছে। তা ছাড়া, ভারতের ১৪টি রাজ্যের অন্তত ১৯টি স্কুল বোর্ডের অধীন স্কুলগুলোতে এসব বই পড়ানো হচ্ছে।
নরেন্দ্র মোদির রাজনৈতিক দল বিজেপি ও এর পরামর্শদাতা অতি-ডান রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) তাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য পূরণে দীর্ঘদিন ধরে ভারতের পাঠ্যপুস্তকগুলোকে সংশোধনের জন্য ব্যাপক প্রচার চালিয়ে আসছে। সাংবিধানিকভাবে ধর্মনিরপেক্ষ নয় বরং ভারত একটি জাতিগত হিন্দু রাষ্ট্র—এটা প্রতিষ্ঠা করাই তাদের একমাত্র উদ্দেশ্য।
বিজেপি এবং আরএসএস-সংশ্লিষ্ট হিন্দু গোষ্ঠীগুলো ভারতের ২০ কোটি মুসলমানকে কোণঠাসা করার জন্য এই প্রচার চালাচ্ছে, যারা কিনা দেশটির জনসংখ্যার মাত্র ১৪ শতাংশ। মুসলমানরা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে ভারতীয় উপমহাদেশ শাসন করেছে, ঐতিহাসিক এ সত্যকে অস্বীকার করা এবং কথিত হিন্দু নিপীড়নের একটি বিকল্প ইতিহাস তৈরি করে সেই মুসলিম শাসকদের শয়তানরূপে হাজির করা—সেইসব প্রচারের প্রধান উপাদান।
এই প্রচারের অংশ হিসেবে ১৬ ও ১৯ শতকের মধ্যে এই উপমহাদেশ শাসনকারী মোগলদের কথাও ইতিহাসের বই থেকে মুছে ফেলা হয়েছে।
এনসিইআরটি সপ্তম শ্রেণির ইতিহাসের পাঠ্যপুস্তক থেকে বেশ কয়েকটি পৃষ্ঠা বাদ দিয়েছে, যাতে দিল্লি সালতানাতের শাসকদের কথা উল্লেখ ছিল। এটি মোগল সম্রাটদের মাইলফলক এবং সাফল্যের বিস্তারিত ব্যাখ্যা করে—এমন দুটি পৃষ্ঠাও বাদ দিয়েছে।
দিল্লি সালতানাতের সম্প্রসারণ সম্পর্কে বলা তিনটি পৃষ্ঠা এবং একটি ‘মসজিদ’ তৈরির ইতিহাস বিশদভাবে ব্যাখ্যা করে–এমন একটি অনুচ্ছেদও সরিয়ে ফেলা হয়েছে। দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাসের পাঠ্যপুস্তক থেকে কিংস অ্যান্ড ক্রনিকলস নামে একটি অধ্যায়, যেখানে মোগল সম্রাটদের নানা গুরুত্বপূর্ণ ইতিহাস লেখা ছিল, তা সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
তবে এনসিইআরটি দাবি করেছে, করোনাকালে শিক্ষার্থীদের ওপর থেকে পড়ালেখার বোঝা কমাতেই মোগল শাসকদের ইতিহাস বাদ দেওয়া হয়েছে।
এনসিইআরটি ১১ এবং ১২ গ্রেডের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের নতুন বইতে হিন্দুত্ববাদীদের প্রতি স্বাধীনতাসংগ্রামী মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী বা মহাত্মা গান্ধীর নেতিবাচক মনোভাব এবং গান্ধীকে হত্যার পরে আরএসএসের ওপর নিষেধাজ্ঞার ঘটনাটি মুছে দিয়েছে। ১৯৪৮ সালে গান্ধীকে হত্যাকারী নাথুরাম গডসের সঙ্গে আরএসএসের যোগসূত্র ছিল—এই তথ্য এখন আর খুঁজে পাওয়া যাবে না।
পাঠ্যপুস্তকের ২০২০-২১ সংস্করণের একটি বাক্য—গান্ধী ‘বিশ্বাস করতেন যে ভারতকে শুধু হিন্দুদের জন্য একটি দেশে পরিণত করার যেকোনো প্রচেষ্টা দেশটিকে ধ্বংস করবে’—এটিও মুছে ফেলা হয়েছে। অন্য একটি বাক্যও বাদ দেওয়া হয়েছে, যাতে বলা হয়েছে, গান্ধীর ‘হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের অবিচল সাধনা হিন্দু চরমপন্থীদের এতটাই উত্তেজিত করেছিল যে তারা গান্ধীজিকে হত্যা করার জন্য বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেছিল’।
এনসিইআরটি একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বই থেকে ভারতের মুসলিম স্বাধীনতাসংগ্রামী মৌলানা আবুল কালাম আজাদের কথাও মুছে দিয়েছে। আজাদ ছিলেন ভারতের প্রথম শিক্ষামন্ত্রী এবং গণপরিষদের সদস্য, যিনি ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসন থেকে স্বাধীনতার পর দেশের সংবিধানের খসড়া তৈরির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
পাঠ্যপুস্তকের আগের সংস্করণে একটি বাক্য ছিল: ‘গণপরিষদের বিভিন্ন বিষয়ে আটটি প্রধান কমিটি ছিল। সাধারণত, জওহরলাল নেহরু (ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী), রাজেন্দ্র প্রসাদ (প্রথম ভারতীয় রাষ্ট্রপতি), সর্দার প্যাটেল (বল্লভভাই প্যাটেল, প্রথম উপ-প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী), মৌলানা আজাদ ও আম্বেদকর (ভীম রাও আম্বেদকর, খসড়া কমিটির চেয়ারম্যান) এসব কমিটি সভাপতিত্ব করতেন।’
দ্য হিন্দু পত্রিকার মতে, সংশোধিত পাঠ্যপুস্তকে বলা হয়েছে: ‘সাধারণত, জওহরলাল নেহরু, রাজেন্দ্র প্রসাদ, সর্দার প্যাটেল এবং বি আর আম্বেদকর এই কমিটিগুলোর সভাপতিত্ব করতেন।’
দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকার তদন্তে পাওয়া গেছে, সামাজিক বিজ্ঞানের সব বই থেকে নরেন্দ্র মোদির নিজ রাজ্য গুজরাটে ২০০২ সালের দাঙ্গার ঘটনা মুছে ফেলা হয়েছে। সেই দাঙ্গায় প্রায় দুই হাজার লোক, যাদের বেশির ভাগই মুসলমান নিহত হয়েছিল। সম্প্রতি, ভারত সরকার বিবিসির একটি তথ্যচিত্র নিষিদ্ধ করেছে, যেখানে বলা হয়েছিল যে মোদি তখন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন এবং হত্যাকাণ্ডের জন্য সরাসরি দায়ী ছিলেন।
ভারতের ইতিহাসবিদ এস ইরফান হাবিব বলেছেন, ইতিহাসের পুনর্লিখন বিজেপির হিন্দু জাতীয়তাবাদী প্রচারণার একটি প্রচেষ্টা। পাঠ্যবইয়ে কাটছাঁটকে একটি ‘বড় হামলা’ হিসেবে অভিহিত করে হাবিব বলেন, ‘এটি তরুণ প্রজন্মকে আমরা যা ভাবতে পারি তার চেয়ে বেশি প্রভাবিত করবে।’
হাবিব বলেন, ছোট বাচ্চাদের মগজ ধোলাই করে ভারতে ধর্মীয় বিভাজন আরও বাড়াতে অ্যাজেন্ডা অনুসরণ করা বর্তমান সরকারের একটি সচেতন কাজ। সরকার স্কুলের পাঠ্যক্রম বিষাক্ত করে ভারতের নৈতিকতাকে আঘাত করছে।
ভারতের মুসলিম সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে বৈষম্যের কথা বলা হয়েছে—এমন একটি অধ্যায় ষষ্ঠ শ্রেণির পাঠ্যপুস্তক থেকে মুছে ফেলা হয়েছে।
সপ্তম শ্রেণির সামাজিক বিজ্ঞান বই থেকে দুটি অধ্যায় মুছে ফেলা হয়েছে। একটি আন্ডারস্ট্যান্ডিং অ্যাডভার্টাইজমেন্টস শিরোনামে, যেখানে মিডিয়াতে বড় ব্যবসার ভূমিকা সম্পর্কে বলা হয়েছে। অন্যটি, স্ট্রাগলস ফর ইকুয়ালিটি শিরোনামে, যেখানে ভারতে কেন মানুষের সঙ্গে অসম আচরণ করা হয়, তার বিভিন্ন কারণ ব্যাখ্যা করা হয়েছিল এবং নারীর ক্ষমতায়নের জন্য আন্দোলনের কথা লেখা ছিল।
ইতিহাসবিদ হাবিব বলেছেন, ‘স্কুলের বইকে রাজনৈতিকীকরণের প্রচেষ্টা নতুন কিছু নয় কিন্তু এটি আরএসএস এবং হিন্দুত্ববাদীদের বহুদিনের অ্যাজেন্ডা। এবং মাত্রাটি উদ্বেগজনক।’ তিনি বলেন, ‘ভারতের শতাব্দীপ্রাচীন ধর্মনিরপেক্ষতা এবং হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে সম্প্রীতিকে তুলে ধরে— এমন তথ্য বিজেপি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে লুকিয়ে রাখছে একটি বিকৃত হিন্দু জাতীয়তাবাদী দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করতে যে ভারত শুধু হিন্দুদের জন্য।’
এক বিবৃতিতে এনসিইআরটির পরিচালক ডি পি সাকলানি বলেছেন, মুছে ফেলা অধ্যায়গুলো পুনরুদ্ধার করা হবে না, কারণ সেগুলো একটি বিশেষজ্ঞ কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে করা হয়েছে।
বিশিষ্ট মুসলিম সংসদ সদস্য আসাদুদ্দিন ওয়াইসি শাসক বিজেপির বিরুদ্ধে স্কুলের পাঠ্যপুস্তক সংশোধন ও পুনর্লিখনের মাধ্যমে ‘তার রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডাকে চাপিয়ে দেওয়ার’ অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি ভীত যে তারা শিগগিরই স্কুলে শেখাবে গডসের গান্ধীকে হত্যা করা ঠিক কাজ ছিল। বিজেপি যা করছে তা অন্যান্য ফ্যাসিবাদী শাসকদের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। আমরা অন্যান্য দেশে দেখেছি কীভাবে ফ্যাসিস্টরা তাদের আদর্শের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে ইতিহাস নিয়ে খেলা করেছে। একই ঘটনা এখন ভারতেও ঘটছে, তবে মাত্রাটি অনেক বেশি।
সৃষ্টি জাসওয়াল ভারতীয় সাংবাদিক
(আল জাজিরায় প্রকাশিত লেখাটি ইংরেজি থেকে অনুবাদ করেছেন সাংবাদিক ও কলাম লেখক রোকেয়া রহমান)
সৃষ্টি জাসওয়াল

ডানপন্থী ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় ফিরে আসার এক বছর আগে ২০১৮ সালে ভারতের তৎকালীন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী বলেছিলেন, তিনি বিশ্বাস করেন যে ভারতীয় হিন্দুরা ‘ঋষিদের’ বংশধর, বানরের নয়।
তৎকালীন মানব সম্পদ উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সত্যপাল সিং বলেছিলেন, চার্লস ডারউইনের বিবর্তন তত্ত্ব ‘বৈজ্ঞানিকভাবে ভুল’। তিনি আরও বলেছিলেন ‘স্কুল ও কলেজের পাঠ্যক্রম পরিবর্তন করা দরকার। পৃথিবীতে সব সময় মানুষকেই দেখা গেছে। কেউ বানরকে মানুষে পরিণত হতে দেখেনি।’
সত্যপাল যা বলেছিলেন তার বাস্তবায়ন এখন ঘটছে। ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে, ডারউইনের তত্ত্বটি নীরবে নবম ও দশম শ্রেণির পাঠ্যসূচি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে বিবর্তনবাদ বিষয়টি স্কুলের পাঠ্যপুস্তক থেকে সম্পূর্ণরূপে মুছে ফেলা হয়।
ভারতের শিক্ষক ও শিক্ষাসংশ্লিষ্টরা বলছেন, এখন লাখ লাখ স্কুল শিক্ষার্থী ডারউইন কে ছিলেন বা তাঁর তত্ত্ব কী বলে, তা জানতে পারবে না, যদি না তারা একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে জীববিদ্যা বিষয়টি বেছে নেয়।
ভারতের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত সংস্থা ন্যাশনাল কাউন্সিল অব এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিংয়ের (এনসিইআরটি) পরামর্শে পাঠ্যপুস্তকে এসব পরিবর্তন আনা হয় ।
ভারতের সেন্ট্রাল বোর্ড অব সেকেন্ডারি এডুকেশনের (সিবিএসই) অধিভুক্ত ২৪ হাজারের বেশি স্কুলে এসব পাঠ্যপুস্তক এখন পড়ানো হচ্ছে। তা ছাড়া, ভারতের ১৪টি রাজ্যের অন্তত ১৯টি স্কুল বোর্ডের অধীন স্কুলগুলোতে এসব বই পড়ানো হচ্ছে।
নরেন্দ্র মোদির রাজনৈতিক দল বিজেপি ও এর পরামর্শদাতা অতি-ডান রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) তাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য পূরণে দীর্ঘদিন ধরে ভারতের পাঠ্যপুস্তকগুলোকে সংশোধনের জন্য ব্যাপক প্রচার চালিয়ে আসছে। সাংবিধানিকভাবে ধর্মনিরপেক্ষ নয় বরং ভারত একটি জাতিগত হিন্দু রাষ্ট্র—এটা প্রতিষ্ঠা করাই তাদের একমাত্র উদ্দেশ্য।
বিজেপি এবং আরএসএস-সংশ্লিষ্ট হিন্দু গোষ্ঠীগুলো ভারতের ২০ কোটি মুসলমানকে কোণঠাসা করার জন্য এই প্রচার চালাচ্ছে, যারা কিনা দেশটির জনসংখ্যার মাত্র ১৪ শতাংশ। মুসলমানরা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে ভারতীয় উপমহাদেশ শাসন করেছে, ঐতিহাসিক এ সত্যকে অস্বীকার করা এবং কথিত হিন্দু নিপীড়নের একটি বিকল্প ইতিহাস তৈরি করে সেই মুসলিম শাসকদের শয়তানরূপে হাজির করা—সেইসব প্রচারের প্রধান উপাদান।
এই প্রচারের অংশ হিসেবে ১৬ ও ১৯ শতকের মধ্যে এই উপমহাদেশ শাসনকারী মোগলদের কথাও ইতিহাসের বই থেকে মুছে ফেলা হয়েছে।
এনসিইআরটি সপ্তম শ্রেণির ইতিহাসের পাঠ্যপুস্তক থেকে বেশ কয়েকটি পৃষ্ঠা বাদ দিয়েছে, যাতে দিল্লি সালতানাতের শাসকদের কথা উল্লেখ ছিল। এটি মোগল সম্রাটদের মাইলফলক এবং সাফল্যের বিস্তারিত ব্যাখ্যা করে—এমন দুটি পৃষ্ঠাও বাদ দিয়েছে।
দিল্লি সালতানাতের সম্প্রসারণ সম্পর্কে বলা তিনটি পৃষ্ঠা এবং একটি ‘মসজিদ’ তৈরির ইতিহাস বিশদভাবে ব্যাখ্যা করে–এমন একটি অনুচ্ছেদও সরিয়ে ফেলা হয়েছে। দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাসের পাঠ্যপুস্তক থেকে কিংস অ্যান্ড ক্রনিকলস নামে একটি অধ্যায়, যেখানে মোগল সম্রাটদের নানা গুরুত্বপূর্ণ ইতিহাস লেখা ছিল, তা সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
তবে এনসিইআরটি দাবি করেছে, করোনাকালে শিক্ষার্থীদের ওপর থেকে পড়ালেখার বোঝা কমাতেই মোগল শাসকদের ইতিহাস বাদ দেওয়া হয়েছে।
এনসিইআরটি ১১ এবং ১২ গ্রেডের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের নতুন বইতে হিন্দুত্ববাদীদের প্রতি স্বাধীনতাসংগ্রামী মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী বা মহাত্মা গান্ধীর নেতিবাচক মনোভাব এবং গান্ধীকে হত্যার পরে আরএসএসের ওপর নিষেধাজ্ঞার ঘটনাটি মুছে দিয়েছে। ১৯৪৮ সালে গান্ধীকে হত্যাকারী নাথুরাম গডসের সঙ্গে আরএসএসের যোগসূত্র ছিল—এই তথ্য এখন আর খুঁজে পাওয়া যাবে না।
পাঠ্যপুস্তকের ২০২০-২১ সংস্করণের একটি বাক্য—গান্ধী ‘বিশ্বাস করতেন যে ভারতকে শুধু হিন্দুদের জন্য একটি দেশে পরিণত করার যেকোনো প্রচেষ্টা দেশটিকে ধ্বংস করবে’—এটিও মুছে ফেলা হয়েছে। অন্য একটি বাক্যও বাদ দেওয়া হয়েছে, যাতে বলা হয়েছে, গান্ধীর ‘হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের অবিচল সাধনা হিন্দু চরমপন্থীদের এতটাই উত্তেজিত করেছিল যে তারা গান্ধীজিকে হত্যা করার জন্য বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেছিল’।
এনসিইআরটি একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বই থেকে ভারতের মুসলিম স্বাধীনতাসংগ্রামী মৌলানা আবুল কালাম আজাদের কথাও মুছে দিয়েছে। আজাদ ছিলেন ভারতের প্রথম শিক্ষামন্ত্রী এবং গণপরিষদের সদস্য, যিনি ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসন থেকে স্বাধীনতার পর দেশের সংবিধানের খসড়া তৈরির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
পাঠ্যপুস্তকের আগের সংস্করণে একটি বাক্য ছিল: ‘গণপরিষদের বিভিন্ন বিষয়ে আটটি প্রধান কমিটি ছিল। সাধারণত, জওহরলাল নেহরু (ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী), রাজেন্দ্র প্রসাদ (প্রথম ভারতীয় রাষ্ট্রপতি), সর্দার প্যাটেল (বল্লভভাই প্যাটেল, প্রথম উপ-প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী), মৌলানা আজাদ ও আম্বেদকর (ভীম রাও আম্বেদকর, খসড়া কমিটির চেয়ারম্যান) এসব কমিটি সভাপতিত্ব করতেন।’
দ্য হিন্দু পত্রিকার মতে, সংশোধিত পাঠ্যপুস্তকে বলা হয়েছে: ‘সাধারণত, জওহরলাল নেহরু, রাজেন্দ্র প্রসাদ, সর্দার প্যাটেল এবং বি আর আম্বেদকর এই কমিটিগুলোর সভাপতিত্ব করতেন।’
দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকার তদন্তে পাওয়া গেছে, সামাজিক বিজ্ঞানের সব বই থেকে নরেন্দ্র মোদির নিজ রাজ্য গুজরাটে ২০০২ সালের দাঙ্গার ঘটনা মুছে ফেলা হয়েছে। সেই দাঙ্গায় প্রায় দুই হাজার লোক, যাদের বেশির ভাগই মুসলমান নিহত হয়েছিল। সম্প্রতি, ভারত সরকার বিবিসির একটি তথ্যচিত্র নিষিদ্ধ করেছে, যেখানে বলা হয়েছিল যে মোদি তখন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন এবং হত্যাকাণ্ডের জন্য সরাসরি দায়ী ছিলেন।
ভারতের ইতিহাসবিদ এস ইরফান হাবিব বলেছেন, ইতিহাসের পুনর্লিখন বিজেপির হিন্দু জাতীয়তাবাদী প্রচারণার একটি প্রচেষ্টা। পাঠ্যবইয়ে কাটছাঁটকে একটি ‘বড় হামলা’ হিসেবে অভিহিত করে হাবিব বলেন, ‘এটি তরুণ প্রজন্মকে আমরা যা ভাবতে পারি তার চেয়ে বেশি প্রভাবিত করবে।’
হাবিব বলেন, ছোট বাচ্চাদের মগজ ধোলাই করে ভারতে ধর্মীয় বিভাজন আরও বাড়াতে অ্যাজেন্ডা অনুসরণ করা বর্তমান সরকারের একটি সচেতন কাজ। সরকার স্কুলের পাঠ্যক্রম বিষাক্ত করে ভারতের নৈতিকতাকে আঘাত করছে।
ভারতের মুসলিম সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে বৈষম্যের কথা বলা হয়েছে—এমন একটি অধ্যায় ষষ্ঠ শ্রেণির পাঠ্যপুস্তক থেকে মুছে ফেলা হয়েছে।
সপ্তম শ্রেণির সামাজিক বিজ্ঞান বই থেকে দুটি অধ্যায় মুছে ফেলা হয়েছে। একটি আন্ডারস্ট্যান্ডিং অ্যাডভার্টাইজমেন্টস শিরোনামে, যেখানে মিডিয়াতে বড় ব্যবসার ভূমিকা সম্পর্কে বলা হয়েছে। অন্যটি, স্ট্রাগলস ফর ইকুয়ালিটি শিরোনামে, যেখানে ভারতে কেন মানুষের সঙ্গে অসম আচরণ করা হয়, তার বিভিন্ন কারণ ব্যাখ্যা করা হয়েছিল এবং নারীর ক্ষমতায়নের জন্য আন্দোলনের কথা লেখা ছিল।
ইতিহাসবিদ হাবিব বলেছেন, ‘স্কুলের বইকে রাজনৈতিকীকরণের প্রচেষ্টা নতুন কিছু নয় কিন্তু এটি আরএসএস এবং হিন্দুত্ববাদীদের বহুদিনের অ্যাজেন্ডা। এবং মাত্রাটি উদ্বেগজনক।’ তিনি বলেন, ‘ভারতের শতাব্দীপ্রাচীন ধর্মনিরপেক্ষতা এবং হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে সম্প্রীতিকে তুলে ধরে— এমন তথ্য বিজেপি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে লুকিয়ে রাখছে একটি বিকৃত হিন্দু জাতীয়তাবাদী দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করতে যে ভারত শুধু হিন্দুদের জন্য।’
এক বিবৃতিতে এনসিইআরটির পরিচালক ডি পি সাকলানি বলেছেন, মুছে ফেলা অধ্যায়গুলো পুনরুদ্ধার করা হবে না, কারণ সেগুলো একটি বিশেষজ্ঞ কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে করা হয়েছে।
বিশিষ্ট মুসলিম সংসদ সদস্য আসাদুদ্দিন ওয়াইসি শাসক বিজেপির বিরুদ্ধে স্কুলের পাঠ্যপুস্তক সংশোধন ও পুনর্লিখনের মাধ্যমে ‘তার রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডাকে চাপিয়ে দেওয়ার’ অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি ভীত যে তারা শিগগিরই স্কুলে শেখাবে গডসের গান্ধীকে হত্যা করা ঠিক কাজ ছিল। বিজেপি যা করছে তা অন্যান্য ফ্যাসিবাদী শাসকদের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। আমরা অন্যান্য দেশে দেখেছি কীভাবে ফ্যাসিস্টরা তাদের আদর্শের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে ইতিহাস নিয়ে খেলা করেছে। একই ঘটনা এখন ভারতেও ঘটছে, তবে মাত্রাটি অনেক বেশি।
সৃষ্টি জাসওয়াল ভারতীয় সাংবাদিক
(আল জাজিরায় প্রকাশিত লেখাটি ইংরেজি থেকে অনুবাদ করেছেন সাংবাদিক ও কলাম লেখক রোকেয়া রহমান)

ডানপন্থী ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় ফিরে আসার এক বছর আগে ২০১৮ সালে ভারতের তৎকালীন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী বলেছিলেন, তিনি বিশ্বাস করেন যে ভারতীয় হিন্দুরা ‘ঋষিদের’ বংশধর, বানরের নয়।
তৎকালীন মানব সম্পদ উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সত্যপাল সিং বলেছিলেন, চার্লস ডারউইনের বিবর্তন তত্ত্ব ‘বৈজ্ঞানিকভাবে ভুল’। তিনি আরও বলেছিলেন ‘স্কুল ও কলেজের পাঠ্যক্রম পরিবর্তন করা দরকার। পৃথিবীতে সব সময় মানুষকেই দেখা গেছে। কেউ বানরকে মানুষে পরিণত হতে দেখেনি।’
সত্যপাল যা বলেছিলেন তার বাস্তবায়ন এখন ঘটছে। ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে, ডারউইনের তত্ত্বটি নীরবে নবম ও দশম শ্রেণির পাঠ্যসূচি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে বিবর্তনবাদ বিষয়টি স্কুলের পাঠ্যপুস্তক থেকে সম্পূর্ণরূপে মুছে ফেলা হয়।
ভারতের শিক্ষক ও শিক্ষাসংশ্লিষ্টরা বলছেন, এখন লাখ লাখ স্কুল শিক্ষার্থী ডারউইন কে ছিলেন বা তাঁর তত্ত্ব কী বলে, তা জানতে পারবে না, যদি না তারা একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে জীববিদ্যা বিষয়টি বেছে নেয়।
ভারতের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত সংস্থা ন্যাশনাল কাউন্সিল অব এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিংয়ের (এনসিইআরটি) পরামর্শে পাঠ্যপুস্তকে এসব পরিবর্তন আনা হয় ।
ভারতের সেন্ট্রাল বোর্ড অব সেকেন্ডারি এডুকেশনের (সিবিএসই) অধিভুক্ত ২৪ হাজারের বেশি স্কুলে এসব পাঠ্যপুস্তক এখন পড়ানো হচ্ছে। তা ছাড়া, ভারতের ১৪টি রাজ্যের অন্তত ১৯টি স্কুল বোর্ডের অধীন স্কুলগুলোতে এসব বই পড়ানো হচ্ছে।
নরেন্দ্র মোদির রাজনৈতিক দল বিজেপি ও এর পরামর্শদাতা অতি-ডান রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) তাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য পূরণে দীর্ঘদিন ধরে ভারতের পাঠ্যপুস্তকগুলোকে সংশোধনের জন্য ব্যাপক প্রচার চালিয়ে আসছে। সাংবিধানিকভাবে ধর্মনিরপেক্ষ নয় বরং ভারত একটি জাতিগত হিন্দু রাষ্ট্র—এটা প্রতিষ্ঠা করাই তাদের একমাত্র উদ্দেশ্য।
বিজেপি এবং আরএসএস-সংশ্লিষ্ট হিন্দু গোষ্ঠীগুলো ভারতের ২০ কোটি মুসলমানকে কোণঠাসা করার জন্য এই প্রচার চালাচ্ছে, যারা কিনা দেশটির জনসংখ্যার মাত্র ১৪ শতাংশ। মুসলমানরা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে ভারতীয় উপমহাদেশ শাসন করেছে, ঐতিহাসিক এ সত্যকে অস্বীকার করা এবং কথিত হিন্দু নিপীড়নের একটি বিকল্প ইতিহাস তৈরি করে সেই মুসলিম শাসকদের শয়তানরূপে হাজির করা—সেইসব প্রচারের প্রধান উপাদান।
এই প্রচারের অংশ হিসেবে ১৬ ও ১৯ শতকের মধ্যে এই উপমহাদেশ শাসনকারী মোগলদের কথাও ইতিহাসের বই থেকে মুছে ফেলা হয়েছে।
এনসিইআরটি সপ্তম শ্রেণির ইতিহাসের পাঠ্যপুস্তক থেকে বেশ কয়েকটি পৃষ্ঠা বাদ দিয়েছে, যাতে দিল্লি সালতানাতের শাসকদের কথা উল্লেখ ছিল। এটি মোগল সম্রাটদের মাইলফলক এবং সাফল্যের বিস্তারিত ব্যাখ্যা করে—এমন দুটি পৃষ্ঠাও বাদ দিয়েছে।
দিল্লি সালতানাতের সম্প্রসারণ সম্পর্কে বলা তিনটি পৃষ্ঠা এবং একটি ‘মসজিদ’ তৈরির ইতিহাস বিশদভাবে ব্যাখ্যা করে–এমন একটি অনুচ্ছেদও সরিয়ে ফেলা হয়েছে। দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাসের পাঠ্যপুস্তক থেকে কিংস অ্যান্ড ক্রনিকলস নামে একটি অধ্যায়, যেখানে মোগল সম্রাটদের নানা গুরুত্বপূর্ণ ইতিহাস লেখা ছিল, তা সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
তবে এনসিইআরটি দাবি করেছে, করোনাকালে শিক্ষার্থীদের ওপর থেকে পড়ালেখার বোঝা কমাতেই মোগল শাসকদের ইতিহাস বাদ দেওয়া হয়েছে।
এনসিইআরটি ১১ এবং ১২ গ্রেডের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের নতুন বইতে হিন্দুত্ববাদীদের প্রতি স্বাধীনতাসংগ্রামী মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী বা মহাত্মা গান্ধীর নেতিবাচক মনোভাব এবং গান্ধীকে হত্যার পরে আরএসএসের ওপর নিষেধাজ্ঞার ঘটনাটি মুছে দিয়েছে। ১৯৪৮ সালে গান্ধীকে হত্যাকারী নাথুরাম গডসের সঙ্গে আরএসএসের যোগসূত্র ছিল—এই তথ্য এখন আর খুঁজে পাওয়া যাবে না।
পাঠ্যপুস্তকের ২০২০-২১ সংস্করণের একটি বাক্য—গান্ধী ‘বিশ্বাস করতেন যে ভারতকে শুধু হিন্দুদের জন্য একটি দেশে পরিণত করার যেকোনো প্রচেষ্টা দেশটিকে ধ্বংস করবে’—এটিও মুছে ফেলা হয়েছে। অন্য একটি বাক্যও বাদ দেওয়া হয়েছে, যাতে বলা হয়েছে, গান্ধীর ‘হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের অবিচল সাধনা হিন্দু চরমপন্থীদের এতটাই উত্তেজিত করেছিল যে তারা গান্ধীজিকে হত্যা করার জন্য বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেছিল’।
এনসিইআরটি একাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বই থেকে ভারতের মুসলিম স্বাধীনতাসংগ্রামী মৌলানা আবুল কালাম আজাদের কথাও মুছে দিয়েছে। আজাদ ছিলেন ভারতের প্রথম শিক্ষামন্ত্রী এবং গণপরিষদের সদস্য, যিনি ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসন থেকে স্বাধীনতার পর দেশের সংবিধানের খসড়া তৈরির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
পাঠ্যপুস্তকের আগের সংস্করণে একটি বাক্য ছিল: ‘গণপরিষদের বিভিন্ন বিষয়ে আটটি প্রধান কমিটি ছিল। সাধারণত, জওহরলাল নেহরু (ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী), রাজেন্দ্র প্রসাদ (প্রথম ভারতীয় রাষ্ট্রপতি), সর্দার প্যাটেল (বল্লভভাই প্যাটেল, প্রথম উপ-প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী), মৌলানা আজাদ ও আম্বেদকর (ভীম রাও আম্বেদকর, খসড়া কমিটির চেয়ারম্যান) এসব কমিটি সভাপতিত্ব করতেন।’
দ্য হিন্দু পত্রিকার মতে, সংশোধিত পাঠ্যপুস্তকে বলা হয়েছে: ‘সাধারণত, জওহরলাল নেহরু, রাজেন্দ্র প্রসাদ, সর্দার প্যাটেল এবং বি আর আম্বেদকর এই কমিটিগুলোর সভাপতিত্ব করতেন।’
দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকার তদন্তে পাওয়া গেছে, সামাজিক বিজ্ঞানের সব বই থেকে নরেন্দ্র মোদির নিজ রাজ্য গুজরাটে ২০০২ সালের দাঙ্গার ঘটনা মুছে ফেলা হয়েছে। সেই দাঙ্গায় প্রায় দুই হাজার লোক, যাদের বেশির ভাগই মুসলমান নিহত হয়েছিল। সম্প্রতি, ভারত সরকার বিবিসির একটি তথ্যচিত্র নিষিদ্ধ করেছে, যেখানে বলা হয়েছিল যে মোদি তখন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন এবং হত্যাকাণ্ডের জন্য সরাসরি দায়ী ছিলেন।
ভারতের ইতিহাসবিদ এস ইরফান হাবিব বলেছেন, ইতিহাসের পুনর্লিখন বিজেপির হিন্দু জাতীয়তাবাদী প্রচারণার একটি প্রচেষ্টা। পাঠ্যবইয়ে কাটছাঁটকে একটি ‘বড় হামলা’ হিসেবে অভিহিত করে হাবিব বলেন, ‘এটি তরুণ প্রজন্মকে আমরা যা ভাবতে পারি তার চেয়ে বেশি প্রভাবিত করবে।’
হাবিব বলেন, ছোট বাচ্চাদের মগজ ধোলাই করে ভারতে ধর্মীয় বিভাজন আরও বাড়াতে অ্যাজেন্ডা অনুসরণ করা বর্তমান সরকারের একটি সচেতন কাজ। সরকার স্কুলের পাঠ্যক্রম বিষাক্ত করে ভারতের নৈতিকতাকে আঘাত করছে।
ভারতের মুসলিম সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে বৈষম্যের কথা বলা হয়েছে—এমন একটি অধ্যায় ষষ্ঠ শ্রেণির পাঠ্যপুস্তক থেকে মুছে ফেলা হয়েছে।
সপ্তম শ্রেণির সামাজিক বিজ্ঞান বই থেকে দুটি অধ্যায় মুছে ফেলা হয়েছে। একটি আন্ডারস্ট্যান্ডিং অ্যাডভার্টাইজমেন্টস শিরোনামে, যেখানে মিডিয়াতে বড় ব্যবসার ভূমিকা সম্পর্কে বলা হয়েছে। অন্যটি, স্ট্রাগলস ফর ইকুয়ালিটি শিরোনামে, যেখানে ভারতে কেন মানুষের সঙ্গে অসম আচরণ করা হয়, তার বিভিন্ন কারণ ব্যাখ্যা করা হয়েছিল এবং নারীর ক্ষমতায়নের জন্য আন্দোলনের কথা লেখা ছিল।
ইতিহাসবিদ হাবিব বলেছেন, ‘স্কুলের বইকে রাজনৈতিকীকরণের প্রচেষ্টা নতুন কিছু নয় কিন্তু এটি আরএসএস এবং হিন্দুত্ববাদীদের বহুদিনের অ্যাজেন্ডা। এবং মাত্রাটি উদ্বেগজনক।’ তিনি বলেন, ‘ভারতের শতাব্দীপ্রাচীন ধর্মনিরপেক্ষতা এবং হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে সম্প্রীতিকে তুলে ধরে— এমন তথ্য বিজেপি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে লুকিয়ে রাখছে একটি বিকৃত হিন্দু জাতীয়তাবাদী দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করতে যে ভারত শুধু হিন্দুদের জন্য।’
এক বিবৃতিতে এনসিইআরটির পরিচালক ডি পি সাকলানি বলেছেন, মুছে ফেলা অধ্যায়গুলো পুনরুদ্ধার করা হবে না, কারণ সেগুলো একটি বিশেষজ্ঞ কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে করা হয়েছে।
বিশিষ্ট মুসলিম সংসদ সদস্য আসাদুদ্দিন ওয়াইসি শাসক বিজেপির বিরুদ্ধে স্কুলের পাঠ্যপুস্তক সংশোধন ও পুনর্লিখনের মাধ্যমে ‘তার রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডাকে চাপিয়ে দেওয়ার’ অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি ভীত যে তারা শিগগিরই স্কুলে শেখাবে গডসের গান্ধীকে হত্যা করা ঠিক কাজ ছিল। বিজেপি যা করছে তা অন্যান্য ফ্যাসিবাদী শাসকদের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ। আমরা অন্যান্য দেশে দেখেছি কীভাবে ফ্যাসিস্টরা তাদের আদর্শের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে ইতিহাস নিয়ে খেলা করেছে। একই ঘটনা এখন ভারতেও ঘটছে, তবে মাত্রাটি অনেক বেশি।
সৃষ্টি জাসওয়াল ভারতীয় সাংবাদিক
(আল জাজিরায় প্রকাশিত লেখাটি ইংরেজি থেকে অনুবাদ করেছেন সাংবাদিক ও কলাম লেখক রোকেয়া রহমান)

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৯ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

ডানপন্থী ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় ফিরে আসার এক বছর আগে ২০১৮ সালে ভারতের তৎকালীন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী বলেছিলেন, তিনি বিশ্বাস করেন যে ভারতীয় হিন্দুরা ‘ঋষিদের’ বংশধর, বানরের নয়।
১৯ এপ্রিল ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

ডানপন্থী ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় ফিরে আসার এক বছর আগে ২০১৮ সালে ভারতের তৎকালীন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী বলেছিলেন, তিনি বিশ্বাস করেন যে ভারতীয় হিন্দুরা ‘ঋষিদের’ বংশধর, বানরের নয়।
১৯ এপ্রিল ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৯ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ডানপন্থী ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় ফিরে আসার এক বছর আগে ২০১৮ সালে ভারতের তৎকালীন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী বলেছিলেন, তিনি বিশ্বাস করেন যে ভারতীয় হিন্দুরা ‘ঋষিদের’ বংশধর, বানরের নয়।
১৯ এপ্রিল ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৯ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

ডানপন্থী ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় ফিরে আসার এক বছর আগে ২০১৮ সালে ভারতের তৎকালীন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী বলেছিলেন, তিনি বিশ্বাস করেন যে ভারতীয় হিন্দুরা ‘ঋষিদের’ বংশধর, বানরের নয়।
১৯ এপ্রিল ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৯ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫