Ajker Patrika

১৫ প্যাঁচের রেশমি জিলাপি

যশোর প্রতিনিধি
আপডেট : ২৫ মার্চ ২০২৪, ০৯: ০৭
১৫ প্যাঁচের রেশমি জিলাপি

১৫ প্যাঁচের জিলাপি! কোনো এক গভীর গূঢ় কারণে জিলাপির প্যাঁচ হয় আড়াইটি। সেই আড়াই প্যাঁচের জিলাপি নিয়ে খাদ্যরসিক থেকে শুরু করে কবি-সাহিত্যিকদের আদিখ্যেতার অন্ত নেই। এবার এই ১৫ প্যাঁচের জিলাপি নিয়ে কী হয়, তা ভবিষ্যতের ওপরেই থাক। তবে খাদ্যরসিকেরা যে এর রূপে-গুণে মজে গেছেন, সেটা বোঝা যায় এর জনপ্রিয়তা দেখলে।

যশোর শহরের খয়েরতলা এলাকার সিরাজুল ইসলাম। চৈত্রের তপ্ত দুপুরে রোদে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে তিনি এসেছেন ইফতারের জন্য জিলাপি কিনতে। এত আগে আসার কারণ, বিকেলে জিলাপির দোকানটিতে খুব ভিড় হয়। লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় দীর্ঘ সময়। সিরাজুল জানালেন, তাঁর পরিবারের সবার কাছে এই জিলাপি ‘স্পেশাল’। তাই একটু আগেই এসেছেন।

এক দশকের বেশি সময় ধরে যশোর শহরের মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠা এই জিলাপির নাম ‘১৫ প্যাঁচের রেশমি জিলাপি’। শহরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সড়কের ক্যাফে প্রেসক্লাবে তৈরি হয় এই জিলাপি। সারা বছর এ ক্যাফেতে বিভিন্ন ধরনের জিলাপি তৈরি হলেও শুধু রমজানে ১৫ প্যাঁচের রেশমি জিলাপি তৈরি হয়। ফলে পুরো রমজান মাসে এর জনপ্রিয়তা থাকে আকাশচুম্বী। শুধু যশোরের নয়, দেশের বিভিন্ন জায়গার মানুষও কিনে নিয়ে যাচ্ছেন মচমচে, সুস্বাদু, রসাল এবং ঘিয়ের সুবাসযুক্ত এই রেশমি জিলাপি।

তৈরি হচ্ছে ১৫ প্যাঁচের রেশমি জিলাপি১৫ প্যাঁচের রেশমি জিলাপির প্রতি কেজি ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গতকাল রোববার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সড়কে গিয়ে দেখা গেছে, ক্যাফে প্রেসক্লাবে ইফতারসামগ্রী সাজিয়ে বসেছেন কর্মচারীরা। একটি কাচের শোকেসে আলুর চপ, বেগুনি, নিমকি, জালি কাবাব, চিকেন টিকিয়া, হালিম, জিলাপি রাখা আছে। তবে এসব খাদ্যদ্রব্যের চেয়ে এখান থেকে লোকজন বেশি কিনছেন রেশমি জিলাপি। পাশেই ভাজা হচ্ছে ১৫ প্যাঁচের জিলাপি। তিনজন বিক্রেতা মিলে সামাল দিচ্ছেন রেশমি জিলাপিভক্তদের।

ক্যাফে প্রেসক্লাবের স্বত্বাধিকারী রফিকুল ইসলাম। ১৫ প্যাঁচের এ জিলাপি এবং তার জনপ্রিয়তা বিষয়ে কথা হয় তাঁর সঙ্গে। তিনি জানান, প্রায় এক দশক আগে ২০১২ সালে তাঁর বাবা নুর ইসলাম এই জিলাপি তৈরির উদ্যোগ নেন। মূলত রমজান মাস উপলক্ষে বিশেষ এই জিলাপি তৈরি করা হয় ক্রেতাদের চাহিদার কথা চিন্তা করে। আইয়ুব হোসেন নামের একজন কারিগর এ রেশমি জিলাপির উদ্ভাবক। ক্যাফের পুরোনো কারিগরেরা রেশমি জিলাপি তৈরির রেসিপি তাঁর কাছ থেকে আয়ত্ত করে এখন তৈরি করছেন। প্রতিদিন প্রায় ১০০ কেজি জিলাপি তৈরি হয়। তবু চাহিদা মেটানো যায় না ক্রেতাদের। ১৫ প্যাঁচের এই রেশমি জিলাপি ঘিয়ে ভাজা হয়। এ জন্য দাম বেশি। এই জিলাপি কয়েক দিন  টাটকা ও মচমচে থাকে। রোজার সময়ের বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও রেশমি জিলাপির রয়েছে আলাদা কদর।

সিরাজুল ইসলামের মতো চাঁচড়া ডাল মিল এলাকার জাহিদুল আলমও এসেছিলেন এই ১৫ প্যাঁচের রেশমি জিলাপি কিনতে। তিনি জানালেন, এই জিলাপি খুবই সুস্বাদু বলে তাঁর মেয়ের বিশেষ পছন্দের। পরিবারের অন্য সদস্যদের কাছেও প্রিয়। জাহিদুল এককথায় জানালেন, এর স্বাদ অন্য জিলাপি থেকে ভিন্ন। দর্শনদারি  এবং গুণবিচারি—উভয়ই আছে ১৫ প্যাঁচের এ জিলাপির।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ডিএনসিসির পদ ছাড়লেন এস্তোনিয়ার নাগরিক আমিনুল ইসলাম

ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল নিয়ে ভারতের সঙ্গে উত্তেজনা, চ্যালেঞ্জের মুখে বাংলাদেশ

এনআইডির নাম ও জন্মতারিখ সংশোধনের দায়িত্বে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা

পদত্যাগ করব না, আলোচনা করে সমাধান করব: কুয়েট উপাচার্য

কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর অতর্কিত গুলি, নিহত ২৬

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত