Ajker Patrika

অনাগত সন্তান দেখা হলো না মনিরের

মাদারীপুর প্রতিনিধি
অনাগত সন্তান দেখা হলো না মনিরের

আর দুই মাস পরই পৃথিবীতে আসবে সন্তান। তাকে ঘিরে শত স্বপ্ন ছিল মনিরুজ্জামান মোল্যা মনিরের (২৫)। কিন্তু সেই স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে গেল এই যুবকের। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার ডাকা ‘মার্চ টু ঢাকা’য় যোগ দিতে গিয়ে গুলিতে প্রাণ হারান তিনি। 

মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার শাখারপাড় মোল্যাবাড়ি এলাকার মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম মোল্যার ছেলে মনির রাজধানীর সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজে পড়ালেখা করতেন। পাশাপাশি একটি জুতার কোম্পানিতে চাকরি করতেন। তিন ভাই, দুই বোনের মধ্যে সবার ছোট ছিলেন তিনি। তাঁর স্ত্রী সামিরা ইসলাম ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। 

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ৫ আগস্ট সকালে বন্ধু কাজী আলমকে সঙ্গে নিয়ে ঢাকায় যান মনির। সেখানে তাঁরা ছাত্র-জনতার ডাকা মার্চ টু ঢাকায় যোগ দেন। মাদারীপুরে ফেরার পথে পুলিশ সদর দপ্তরসংলগ্ন ফুলবাড়িয়া এলাকার একটি মসজিদে মাগরিবের নামাজ পড়েন। নামাজ শেষে এসে দেখেন, পুলিশ সদর দপ্তরের সামনে গোলাগুলি হচ্ছে। তখন মনির ও তাঁর বন্ধু আলম জীবন বাঁচাতে ওই স্থান থেকে দ্রুত সরে যেতে চেষ্টা করেন। কিন্তু তখন গুলিবিদ্ধ হয়ে মনির রাস্তায় পড়ে যান। পরে গুরুতর অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

ওই দিন থেকে মনিরের পরিবার তাঁর মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়ায় খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। পরে তাঁরা ৬ আগস্ট সন্ধ্যায় জানতে পারেন, মনির গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। তাঁর লাশ ঢামেকের মর্গে আছে।

আড়াই বছর আগে ভালোবেসে মনির বিয়ে করেন সদর উপজেলার মধ্যখাগদী এলাকার জলিল সরদারের মেয়ে সামিরাকে। মাদারীপুরের নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় স্ত্রীকে নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন মনির। নিজের উপার্জনের টাকায় স্ত্রী, মা, বাবা, এক বোন ও তাঁর সন্তানদের খরচ জোগাতেন।

স্ত্রী সামিরা ইসলাম বলেন, ‘আমার সন্তান এখনো পৃথিবীর আলো দেখেনি, তার আগেই আমার অনাগত সন্তান বাবাকে হারাল। আমার সন্তান এতিম হয়ে গেল। আমি এখন কী করব। আমার সন্তানের কী হবে। আমি আমার স্বামীর হত্যাকারীর বিচার চাই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত