মহিউদ্দিন খান মোহন
সিলেটের ছক্কা ছয়ফুরের কথা মনে পড়ে? সেই যে চালচুলোহীন একজন সহজ-সরল মানুষ উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে দেশব্যাপী আলোড়ন তুলেছিলেন! নামের গোড়ায় ‘ছক্কা’ শব্দটি লেগেছিল তা থেকেই। ১৯৯০ সালে শক্তিশালী একজন প্রতিদ্বন্দ্বীকে পরাজিত করে তিনি যখন সিলেট সদর উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন, তখন সবাই এই বলে মন্তব্য করেছিলেন, ছয়ফুর রহমান ‘ছক্কা’ মেরেছেন। সে থেকে তাঁর পরিচিতি হয়ে গেল ‘ছক্কা ছয়ফুর’ হিসেবে। বিপুল ভোটের ব্যবধানে জিতেছিলেন ছয়ফুর রহমান। তিনি পেয়েছিলেন ৫২ হাজার ভোট, আর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী পেয়েছিলেন ৩০ হাজার ভোট। পেশায় তিনি ছিলেন একজন বাবুর্চি। তা-ও বড়সড় কোনো শহর-বন্দরে নয়, সিলেট সদর উপজেলার শালুটিকর নামের এক গ্রাম্য বাজারে। যখন বাবুর্চির কাজ থাকত না, তখন ঠেলাগাড়ি চালিয়ে পেট চালাতেন। বাজারের পাশেই ছিল তাঁর ছাপরানিবাস। সেই ছয়ফুর রহমান প্রথম আলোচনায় আসেন ১৯৮১ সালের ১৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে। রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর অনুষ্ঠিত ওই নির্বাচনে মোট প্রার্থী ছিলেন ৩৩ জন।
না, ছয়ফুর রহমান সেই নির্বাচনে তেমন কোনো সাড়া জাগাতে পারেননি। পারার কথাও নয়। বিএনপিদলীয় প্রার্থী অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবদুস সাত্তার ও আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ড. কামাল হোসেনের মহা ভোট-রণের ময়দানে ছয়ফুর রহমান গণনার মধ্যে ছিলেন না। তবে তিনি তাঁর বক্তব্য-মন্তব্যের দ্বারা দেশবাসীর দৃষ্টি আকর্ষণে সক্ষম হয়েছিলেন। ছয়ফুর রহমান একটি রাজনৈতিক দলও করেছিলেন ‘ইসলামী সমাজতান্ত্রিক দল’ নামে। সেই দলের তিনিই ছিলেন একমাত্র সদস্য। আর কাউকে তিনি দলের সদস্য করেননি। এমনকি তাঁর স্ত্রীকেও না। এ ব্যাপারে তাঁর নিজস্ব ব্যাখ্যাও ছিল।
একবার এক সাংবাদিক গিয়েছিলেন তাঁর সাক্ষাৎকার নিতে। সকালবেলা গিয়ে দেখেন তিনি ঘর ঝাঁট দিচ্ছেন। কারণ জিজ্ঞেস করায় বলেছিলেন, নিজের কাজটা নিজেরই করা উচিত। দলের সদস্যসংখ্যা বাড়াচ্ছেন না কেন—এই প্রশ্নের জবাবে ছয়ফুর বলেছিলেন, বেশি লোক হলেই ঝামেলা। দুজন হলেও দল ভাগ হয়ে যেতে পারে। বহুল আলোচিত ছয়ফুর রহমান ওরফে ছক্কা ছয়ফুর আজ দুনিয়ায় নেই।
সম্প্রতি ছক্কা ছয়ফুরের মতোই দেশবাসীর মনোযোগ আকর্ষণে সক্ষম হয়েছেন আরেক তরুণ। তাঁর নাম হিরো আলম। বর্তমানে সবচেয়ে আলোচিত নাম। তাঁকে এখন আর পরিচয় করিয়ে দেওয়ার কিছু নেই। নিজ নামেই পরিচিত। হিরো আলম তাঁর আসল নাম নয়। আসল নাম আশরাফুল হোসেন আলম। সিনেমায় কাজ করতে গিয়ে নিজের নামের গোড়ায় ‘হিরো’ শব্দটি বসিয়ে নিয়েছেন। বেসুরো গলায় এবং উদ্ভট কথা ও সুরে গান গেয়ে হিরো আলম দেশব্যাপী পরিচিতি অর্জন করেছেন ভালোই। ইউটিউবে মানুষ তাঁর গান শোনে, লাইক দেয়, শেয়ার করে। শোনা যায় ইউটিউব থেকে তাঁর আয়-ইনকামও খারাপ না। তার চেয়ে বড় কথা, সবাই তাঁকে চেনে। এটাই তাঁর আত্মতৃপ্তির বিষয়। এই গান গাওয়া নিয়ে তাঁকে কম ভোগান্তিতে পড়তে হয়নি। থানা-পুলিশও হয়েছে। পুলিশ তাঁকে ধরে নিয়ে গেলেও কর্মকর্তারা ছেড়ে দিয়েছেন শুদ্ধ করে গান গাওয়ার পরামর্শ দিয়ে।
এত দিন যে হিরো আলম মানুষের কাছে ছিল হাস্যরসের পাত্র, তিনি এখন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। তাঁকে নিয়ে এখন পত্রিকায় হেডিং হয়, টিভিতে তাঁর খবর প্রচার করা হয়। টক শোতেও দাওয়াত পান কথা বলার জন্য। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদের বগুড়া-৪ ও ৬ আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে একটিতে পরাজিত হয়েছেন, অন্যটিতে জয়ী হতে হতে হেরে গেছেন। বগুড়া-৪ আসনে মাত্র ৮৩৪ ভোটের ব্যবধানে ক্ষমতাসীন ১৪-দলীয় জোটের প্রার্থীর কাছে পরাজিত হয়েছেন তিনি। একটি বিষয় অবশ্যই স্বীকার্য যে বর্তমান সময়ে অন্য দশজন প্রার্থী যেভাবে নির্বাচন করেন, হিরো আলম তা করেননি বা করতে পারেননি। এখন নির্বাচন মানেই তো কোটি কোটি টাকার কারবার। হিরো আলমের তো সে রকম টাকা নেই। তারপরও ১৪-দলীয় জোটের প্রার্থীর সঙ্গে যেভাবে তিনি পাল্লা দিয়েছেন, তাকে খাটো করে দেখার উপায় নেই। নিজে হাট-বাজার, পাড়া-মহল্লায় হেঁটে হেঁটে ভোট চেয়েছেন। মানুষ যে হিরো আলমকে ভালোবাসে, তার প্রমাণ পাওয়া গেছে দূরদূরান্ত থেকে বহু মানুষের তাঁর জন্য বিভিন্ন উপহার নিয়ে যাওয়ার ঘটনায়। অনেকে অবশ্য হিরো আলমের প্রার্থী হওয়া, এত ভোট পাওয়া ইত্যাদিকে ফাঁকা মাঠে গোল দেওয়ার চেষ্টা হিসেবে দেখতে চান। তাঁদের কথা, বিএনপি যেহেতু নির্বাচন থেকে দূরে থেকেছে, তাই হিরো আলম এ সুযোগটি পেয়েছেন এবং নিয়েছেনও। এ বিষয়ে একটি কথা না বললেই নয়। কোনো শূন্যস্থানই অপূর্ণ থাকে না। বিএনপি নির্বাচনে না এলে যে নির্বাচনী মাঠ খালি থাকবে না, হিরো আলমের প্রার্থী হওয়া এবং ভোটের মাঠে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই তার প্রমাণ। অবশ্য হিরো আলম নির্বাচনী ফলাফল মেনে নিতে অস্বীকার করে বগুড়া-৪ আসনের ৪৯টি কেন্দ্রের ফলাফল পুনর্গণনার জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে দাবি জানিয়েছেন।
এদিকে হিরো আলমকে নিয়ে দেশের দুই প্রধান রাজনৈতিক দল লিপ্ত হয়েছে চিরাচরিত বাগ্যুদ্ধে। একপক্ষ আরেকপক্ষকে ঘায়েল করতে হিরো আলমকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করার চেষ্টা করছে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আজকে হিরো আলম হিরো হয়েছে একটি মাত্র কারণে। সে প্রমাণ করেছে, এই আওয়ামী লীগ হিরো আলমের কাছেও কতটা অসহায়। রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে তাদের টিকে থাকতে হয়’। অর্থাৎ তিনি বোঝাতে চেয়েছেন, রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করেই হিরো আলমকে পরাজিত করা হয়েছে। অপরদিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘জাতীয় সংসদকে ছোট করার উদ্দেশ্যে উপনির্বাচনে বিএনপি হিরো আলমকে প্রার্থী করেছিল।’ তাঁর এ বক্তব্যে জনমনে প্রশ্ন ওঠায় পরে তিনি ব্যাখ্যা করে বলেছেন, হিরো আলমকে তিনি কিছু বলেননি। বিএনপির মহাসচিবের বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়েই প্রসঙ্গক্রমে হিরো আলমের নাম এসে গেছে।
যেভাবেই এসে থাকুক, এটা তো অস্বীকার করা যাবে না, হিরো আলমের সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়াকে ওবায়দুল কাদেরের কাছে ‘সংসদকে ছোট করার চেষ্টা’ বলেই মনে হয়েছে। এটা নিয়ে বলার কিছু নেই। কেননা, একটি কথা বা বিষয়ের অর্থ বা ব্যাখ্যা কে কীভাবে করবেন, সেটা তাঁর নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গির ব্যাপার। তবে একটি বিষয় অস্বীকার করা যাবে না, আমাদের দেশের রাজনীতিকদের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, তাঁরা যা বলেন বা করেন, তার জন্য কারও কাছে জবাবদিহি করতে হয় না। কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেও তার প্রমাণ দিতে হয় না।
এই সুবিধার সুযোগ নিয়ে তাঁরা যা খুশি বলতে পারেন। সংবিধান অনুযায়ী বাংলাদেশের যেকোনো যোগ্য নাগরিক সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার অধিকার রাখেন, যদি আইনত তিনি অযোগ্য না হন। তাহলে হিরো আলম প্রার্থী হওয়া কেন সংসদকে ছোট করার চেষ্টা হবে? অথচ নানা কারণে আমাদের সংসদের মর্যাদা খর্ব হয়েছে, হচ্ছে। বর্তমান সংসদেই এমন সংসদ সদস্যও রয়েছেন, যিনি লিখিত কাগজও শুদ্ধভাবে উচ্চারণ করে পড়তে পারেন না। এ সংসদেরই সদস্য ছিলেন শহীদুল ইসলাম পাপুলের মতো চিহ্নিত অপরাধী, যিনি মানব পাচারের মতো ঘৃণ্য অপরাধে বিদেশের আদালতে দণ্ডিত হয়ে কারাভোগ করছেন।
ছক্কা ছয়ফুর কিংবা হিরো আলমদের রাজনীতির অঙ্গনে চমক সৃষ্টি করা কারও কারও কাছে বিসদৃশ মনে হতেই পারে। তবে, এটা নিশ্চয়ই অস্বীকার করা যাবে না, আমাদের রাজনীতির দৈন্যদশাই তাঁদের নিয়ে আসে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।
সিলেটের ছক্কা ছয়ফুরের কথা মনে পড়ে? সেই যে চালচুলোহীন একজন সহজ-সরল মানুষ উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে দেশব্যাপী আলোড়ন তুলেছিলেন! নামের গোড়ায় ‘ছক্কা’ শব্দটি লেগেছিল তা থেকেই। ১৯৯০ সালে শক্তিশালী একজন প্রতিদ্বন্দ্বীকে পরাজিত করে তিনি যখন সিলেট সদর উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন, তখন সবাই এই বলে মন্তব্য করেছিলেন, ছয়ফুর রহমান ‘ছক্কা’ মেরেছেন। সে থেকে তাঁর পরিচিতি হয়ে গেল ‘ছক্কা ছয়ফুর’ হিসেবে। বিপুল ভোটের ব্যবধানে জিতেছিলেন ছয়ফুর রহমান। তিনি পেয়েছিলেন ৫২ হাজার ভোট, আর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী পেয়েছিলেন ৩০ হাজার ভোট। পেশায় তিনি ছিলেন একজন বাবুর্চি। তা-ও বড়সড় কোনো শহর-বন্দরে নয়, সিলেট সদর উপজেলার শালুটিকর নামের এক গ্রাম্য বাজারে। যখন বাবুর্চির কাজ থাকত না, তখন ঠেলাগাড়ি চালিয়ে পেট চালাতেন। বাজারের পাশেই ছিল তাঁর ছাপরানিবাস। সেই ছয়ফুর রহমান প্রথম আলোচনায় আসেন ১৯৮১ সালের ১৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে। রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর অনুষ্ঠিত ওই নির্বাচনে মোট প্রার্থী ছিলেন ৩৩ জন।
না, ছয়ফুর রহমান সেই নির্বাচনে তেমন কোনো সাড়া জাগাতে পারেননি। পারার কথাও নয়। বিএনপিদলীয় প্রার্থী অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবদুস সাত্তার ও আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ড. কামাল হোসেনের মহা ভোট-রণের ময়দানে ছয়ফুর রহমান গণনার মধ্যে ছিলেন না। তবে তিনি তাঁর বক্তব্য-মন্তব্যের দ্বারা দেশবাসীর দৃষ্টি আকর্ষণে সক্ষম হয়েছিলেন। ছয়ফুর রহমান একটি রাজনৈতিক দলও করেছিলেন ‘ইসলামী সমাজতান্ত্রিক দল’ নামে। সেই দলের তিনিই ছিলেন একমাত্র সদস্য। আর কাউকে তিনি দলের সদস্য করেননি। এমনকি তাঁর স্ত্রীকেও না। এ ব্যাপারে তাঁর নিজস্ব ব্যাখ্যাও ছিল।
একবার এক সাংবাদিক গিয়েছিলেন তাঁর সাক্ষাৎকার নিতে। সকালবেলা গিয়ে দেখেন তিনি ঘর ঝাঁট দিচ্ছেন। কারণ জিজ্ঞেস করায় বলেছিলেন, নিজের কাজটা নিজেরই করা উচিত। দলের সদস্যসংখ্যা বাড়াচ্ছেন না কেন—এই প্রশ্নের জবাবে ছয়ফুর বলেছিলেন, বেশি লোক হলেই ঝামেলা। দুজন হলেও দল ভাগ হয়ে যেতে পারে। বহুল আলোচিত ছয়ফুর রহমান ওরফে ছক্কা ছয়ফুর আজ দুনিয়ায় নেই।
সম্প্রতি ছক্কা ছয়ফুরের মতোই দেশবাসীর মনোযোগ আকর্ষণে সক্ষম হয়েছেন আরেক তরুণ। তাঁর নাম হিরো আলম। বর্তমানে সবচেয়ে আলোচিত নাম। তাঁকে এখন আর পরিচয় করিয়ে দেওয়ার কিছু নেই। নিজ নামেই পরিচিত। হিরো আলম তাঁর আসল নাম নয়। আসল নাম আশরাফুল হোসেন আলম। সিনেমায় কাজ করতে গিয়ে নিজের নামের গোড়ায় ‘হিরো’ শব্দটি বসিয়ে নিয়েছেন। বেসুরো গলায় এবং উদ্ভট কথা ও সুরে গান গেয়ে হিরো আলম দেশব্যাপী পরিচিতি অর্জন করেছেন ভালোই। ইউটিউবে মানুষ তাঁর গান শোনে, লাইক দেয়, শেয়ার করে। শোনা যায় ইউটিউব থেকে তাঁর আয়-ইনকামও খারাপ না। তার চেয়ে বড় কথা, সবাই তাঁকে চেনে। এটাই তাঁর আত্মতৃপ্তির বিষয়। এই গান গাওয়া নিয়ে তাঁকে কম ভোগান্তিতে পড়তে হয়নি। থানা-পুলিশও হয়েছে। পুলিশ তাঁকে ধরে নিয়ে গেলেও কর্মকর্তারা ছেড়ে দিয়েছেন শুদ্ধ করে গান গাওয়ার পরামর্শ দিয়ে।
এত দিন যে হিরো আলম মানুষের কাছে ছিল হাস্যরসের পাত্র, তিনি এখন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। তাঁকে নিয়ে এখন পত্রিকায় হেডিং হয়, টিভিতে তাঁর খবর প্রচার করা হয়। টক শোতেও দাওয়াত পান কথা বলার জন্য। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদের বগুড়া-৪ ও ৬ আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে একটিতে পরাজিত হয়েছেন, অন্যটিতে জয়ী হতে হতে হেরে গেছেন। বগুড়া-৪ আসনে মাত্র ৮৩৪ ভোটের ব্যবধানে ক্ষমতাসীন ১৪-দলীয় জোটের প্রার্থীর কাছে পরাজিত হয়েছেন তিনি। একটি বিষয় অবশ্যই স্বীকার্য যে বর্তমান সময়ে অন্য দশজন প্রার্থী যেভাবে নির্বাচন করেন, হিরো আলম তা করেননি বা করতে পারেননি। এখন নির্বাচন মানেই তো কোটি কোটি টাকার কারবার। হিরো আলমের তো সে রকম টাকা নেই। তারপরও ১৪-দলীয় জোটের প্রার্থীর সঙ্গে যেভাবে তিনি পাল্লা দিয়েছেন, তাকে খাটো করে দেখার উপায় নেই। নিজে হাট-বাজার, পাড়া-মহল্লায় হেঁটে হেঁটে ভোট চেয়েছেন। মানুষ যে হিরো আলমকে ভালোবাসে, তার প্রমাণ পাওয়া গেছে দূরদূরান্ত থেকে বহু মানুষের তাঁর জন্য বিভিন্ন উপহার নিয়ে যাওয়ার ঘটনায়। অনেকে অবশ্য হিরো আলমের প্রার্থী হওয়া, এত ভোট পাওয়া ইত্যাদিকে ফাঁকা মাঠে গোল দেওয়ার চেষ্টা হিসেবে দেখতে চান। তাঁদের কথা, বিএনপি যেহেতু নির্বাচন থেকে দূরে থেকেছে, তাই হিরো আলম এ সুযোগটি পেয়েছেন এবং নিয়েছেনও। এ বিষয়ে একটি কথা না বললেই নয়। কোনো শূন্যস্থানই অপূর্ণ থাকে না। বিএনপি নির্বাচনে না এলে যে নির্বাচনী মাঠ খালি থাকবে না, হিরো আলমের প্রার্থী হওয়া এবং ভোটের মাঠে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই তার প্রমাণ। অবশ্য হিরো আলম নির্বাচনী ফলাফল মেনে নিতে অস্বীকার করে বগুড়া-৪ আসনের ৪৯টি কেন্দ্রের ফলাফল পুনর্গণনার জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে দাবি জানিয়েছেন।
এদিকে হিরো আলমকে নিয়ে দেশের দুই প্রধান রাজনৈতিক দল লিপ্ত হয়েছে চিরাচরিত বাগ্যুদ্ধে। একপক্ষ আরেকপক্ষকে ঘায়েল করতে হিরো আলমকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করার চেষ্টা করছে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আজকে হিরো আলম হিরো হয়েছে একটি মাত্র কারণে। সে প্রমাণ করেছে, এই আওয়ামী লীগ হিরো আলমের কাছেও কতটা অসহায়। রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে তাদের টিকে থাকতে হয়’। অর্থাৎ তিনি বোঝাতে চেয়েছেন, রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করেই হিরো আলমকে পরাজিত করা হয়েছে। অপরদিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘জাতীয় সংসদকে ছোট করার উদ্দেশ্যে উপনির্বাচনে বিএনপি হিরো আলমকে প্রার্থী করেছিল।’ তাঁর এ বক্তব্যে জনমনে প্রশ্ন ওঠায় পরে তিনি ব্যাখ্যা করে বলেছেন, হিরো আলমকে তিনি কিছু বলেননি। বিএনপির মহাসচিবের বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়েই প্রসঙ্গক্রমে হিরো আলমের নাম এসে গেছে।
যেভাবেই এসে থাকুক, এটা তো অস্বীকার করা যাবে না, হিরো আলমের সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়াকে ওবায়দুল কাদেরের কাছে ‘সংসদকে ছোট করার চেষ্টা’ বলেই মনে হয়েছে। এটা নিয়ে বলার কিছু নেই। কেননা, একটি কথা বা বিষয়ের অর্থ বা ব্যাখ্যা কে কীভাবে করবেন, সেটা তাঁর নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গির ব্যাপার। তবে একটি বিষয় অস্বীকার করা যাবে না, আমাদের দেশের রাজনীতিকদের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, তাঁরা যা বলেন বা করেন, তার জন্য কারও কাছে জবাবদিহি করতে হয় না। কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেও তার প্রমাণ দিতে হয় না।
এই সুবিধার সুযোগ নিয়ে তাঁরা যা খুশি বলতে পারেন। সংবিধান অনুযায়ী বাংলাদেশের যেকোনো যোগ্য নাগরিক সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার অধিকার রাখেন, যদি আইনত তিনি অযোগ্য না হন। তাহলে হিরো আলম প্রার্থী হওয়া কেন সংসদকে ছোট করার চেষ্টা হবে? অথচ নানা কারণে আমাদের সংসদের মর্যাদা খর্ব হয়েছে, হচ্ছে। বর্তমান সংসদেই এমন সংসদ সদস্যও রয়েছেন, যিনি লিখিত কাগজও শুদ্ধভাবে উচ্চারণ করে পড়তে পারেন না। এ সংসদেরই সদস্য ছিলেন শহীদুল ইসলাম পাপুলের মতো চিহ্নিত অপরাধী, যিনি মানব পাচারের মতো ঘৃণ্য অপরাধে বিদেশের আদালতে দণ্ডিত হয়ে কারাভোগ করছেন।
ছক্কা ছয়ফুর কিংবা হিরো আলমদের রাজনীতির অঙ্গনে চমক সৃষ্টি করা কারও কারও কাছে বিসদৃশ মনে হতেই পারে। তবে, এটা নিশ্চয়ই অস্বীকার করা যাবে না, আমাদের রাজনীতির দৈন্যদশাই তাঁদের নিয়ে আসে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।
মহিউদ্দিন খান মোহন
সিলেটের ছক্কা ছয়ফুরের কথা মনে পড়ে? সেই যে চালচুলোহীন একজন সহজ-সরল মানুষ উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে দেশব্যাপী আলোড়ন তুলেছিলেন! নামের গোড়ায় ‘ছক্কা’ শব্দটি লেগেছিল তা থেকেই। ১৯৯০ সালে শক্তিশালী একজন প্রতিদ্বন্দ্বীকে পরাজিত করে তিনি যখন সিলেট সদর উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন, তখন সবাই এই বলে মন্তব্য করেছিলেন, ছয়ফুর রহমান ‘ছক্কা’ মেরেছেন। সে থেকে তাঁর পরিচিতি হয়ে গেল ‘ছক্কা ছয়ফুর’ হিসেবে। বিপুল ভোটের ব্যবধানে জিতেছিলেন ছয়ফুর রহমান। তিনি পেয়েছিলেন ৫২ হাজার ভোট, আর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী পেয়েছিলেন ৩০ হাজার ভোট। পেশায় তিনি ছিলেন একজন বাবুর্চি। তা-ও বড়সড় কোনো শহর-বন্দরে নয়, সিলেট সদর উপজেলার শালুটিকর নামের এক গ্রাম্য বাজারে। যখন বাবুর্চির কাজ থাকত না, তখন ঠেলাগাড়ি চালিয়ে পেট চালাতেন। বাজারের পাশেই ছিল তাঁর ছাপরানিবাস। সেই ছয়ফুর রহমান প্রথম আলোচনায় আসেন ১৯৮১ সালের ১৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে। রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর অনুষ্ঠিত ওই নির্বাচনে মোট প্রার্থী ছিলেন ৩৩ জন।
না, ছয়ফুর রহমান সেই নির্বাচনে তেমন কোনো সাড়া জাগাতে পারেননি। পারার কথাও নয়। বিএনপিদলীয় প্রার্থী অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবদুস সাত্তার ও আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ড. কামাল হোসেনের মহা ভোট-রণের ময়দানে ছয়ফুর রহমান গণনার মধ্যে ছিলেন না। তবে তিনি তাঁর বক্তব্য-মন্তব্যের দ্বারা দেশবাসীর দৃষ্টি আকর্ষণে সক্ষম হয়েছিলেন। ছয়ফুর রহমান একটি রাজনৈতিক দলও করেছিলেন ‘ইসলামী সমাজতান্ত্রিক দল’ নামে। সেই দলের তিনিই ছিলেন একমাত্র সদস্য। আর কাউকে তিনি দলের সদস্য করেননি। এমনকি তাঁর স্ত্রীকেও না। এ ব্যাপারে তাঁর নিজস্ব ব্যাখ্যাও ছিল।
একবার এক সাংবাদিক গিয়েছিলেন তাঁর সাক্ষাৎকার নিতে। সকালবেলা গিয়ে দেখেন তিনি ঘর ঝাঁট দিচ্ছেন। কারণ জিজ্ঞেস করায় বলেছিলেন, নিজের কাজটা নিজেরই করা উচিত। দলের সদস্যসংখ্যা বাড়াচ্ছেন না কেন—এই প্রশ্নের জবাবে ছয়ফুর বলেছিলেন, বেশি লোক হলেই ঝামেলা। দুজন হলেও দল ভাগ হয়ে যেতে পারে। বহুল আলোচিত ছয়ফুর রহমান ওরফে ছক্কা ছয়ফুর আজ দুনিয়ায় নেই।
সম্প্রতি ছক্কা ছয়ফুরের মতোই দেশবাসীর মনোযোগ আকর্ষণে সক্ষম হয়েছেন আরেক তরুণ। তাঁর নাম হিরো আলম। বর্তমানে সবচেয়ে আলোচিত নাম। তাঁকে এখন আর পরিচয় করিয়ে দেওয়ার কিছু নেই। নিজ নামেই পরিচিত। হিরো আলম তাঁর আসল নাম নয়। আসল নাম আশরাফুল হোসেন আলম। সিনেমায় কাজ করতে গিয়ে নিজের নামের গোড়ায় ‘হিরো’ শব্দটি বসিয়ে নিয়েছেন। বেসুরো গলায় এবং উদ্ভট কথা ও সুরে গান গেয়ে হিরো আলম দেশব্যাপী পরিচিতি অর্জন করেছেন ভালোই। ইউটিউবে মানুষ তাঁর গান শোনে, লাইক দেয়, শেয়ার করে। শোনা যায় ইউটিউব থেকে তাঁর আয়-ইনকামও খারাপ না। তার চেয়ে বড় কথা, সবাই তাঁকে চেনে। এটাই তাঁর আত্মতৃপ্তির বিষয়। এই গান গাওয়া নিয়ে তাঁকে কম ভোগান্তিতে পড়তে হয়নি। থানা-পুলিশও হয়েছে। পুলিশ তাঁকে ধরে নিয়ে গেলেও কর্মকর্তারা ছেড়ে দিয়েছেন শুদ্ধ করে গান গাওয়ার পরামর্শ দিয়ে।
এত দিন যে হিরো আলম মানুষের কাছে ছিল হাস্যরসের পাত্র, তিনি এখন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। তাঁকে নিয়ে এখন পত্রিকায় হেডিং হয়, টিভিতে তাঁর খবর প্রচার করা হয়। টক শোতেও দাওয়াত পান কথা বলার জন্য। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদের বগুড়া-৪ ও ৬ আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে একটিতে পরাজিত হয়েছেন, অন্যটিতে জয়ী হতে হতে হেরে গেছেন। বগুড়া-৪ আসনে মাত্র ৮৩৪ ভোটের ব্যবধানে ক্ষমতাসীন ১৪-দলীয় জোটের প্রার্থীর কাছে পরাজিত হয়েছেন তিনি। একটি বিষয় অবশ্যই স্বীকার্য যে বর্তমান সময়ে অন্য দশজন প্রার্থী যেভাবে নির্বাচন করেন, হিরো আলম তা করেননি বা করতে পারেননি। এখন নির্বাচন মানেই তো কোটি কোটি টাকার কারবার। হিরো আলমের তো সে রকম টাকা নেই। তারপরও ১৪-দলীয় জোটের প্রার্থীর সঙ্গে যেভাবে তিনি পাল্লা দিয়েছেন, তাকে খাটো করে দেখার উপায় নেই। নিজে হাট-বাজার, পাড়া-মহল্লায় হেঁটে হেঁটে ভোট চেয়েছেন। মানুষ যে হিরো আলমকে ভালোবাসে, তার প্রমাণ পাওয়া গেছে দূরদূরান্ত থেকে বহু মানুষের তাঁর জন্য বিভিন্ন উপহার নিয়ে যাওয়ার ঘটনায়। অনেকে অবশ্য হিরো আলমের প্রার্থী হওয়া, এত ভোট পাওয়া ইত্যাদিকে ফাঁকা মাঠে গোল দেওয়ার চেষ্টা হিসেবে দেখতে চান। তাঁদের কথা, বিএনপি যেহেতু নির্বাচন থেকে দূরে থেকেছে, তাই হিরো আলম এ সুযোগটি পেয়েছেন এবং নিয়েছেনও। এ বিষয়ে একটি কথা না বললেই নয়। কোনো শূন্যস্থানই অপূর্ণ থাকে না। বিএনপি নির্বাচনে না এলে যে নির্বাচনী মাঠ খালি থাকবে না, হিরো আলমের প্রার্থী হওয়া এবং ভোটের মাঠে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই তার প্রমাণ। অবশ্য হিরো আলম নির্বাচনী ফলাফল মেনে নিতে অস্বীকার করে বগুড়া-৪ আসনের ৪৯টি কেন্দ্রের ফলাফল পুনর্গণনার জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে দাবি জানিয়েছেন।
এদিকে হিরো আলমকে নিয়ে দেশের দুই প্রধান রাজনৈতিক দল লিপ্ত হয়েছে চিরাচরিত বাগ্যুদ্ধে। একপক্ষ আরেকপক্ষকে ঘায়েল করতে হিরো আলমকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করার চেষ্টা করছে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আজকে হিরো আলম হিরো হয়েছে একটি মাত্র কারণে। সে প্রমাণ করেছে, এই আওয়ামী লীগ হিরো আলমের কাছেও কতটা অসহায়। রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে তাদের টিকে থাকতে হয়’। অর্থাৎ তিনি বোঝাতে চেয়েছেন, রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করেই হিরো আলমকে পরাজিত করা হয়েছে। অপরদিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘জাতীয় সংসদকে ছোট করার উদ্দেশ্যে উপনির্বাচনে বিএনপি হিরো আলমকে প্রার্থী করেছিল।’ তাঁর এ বক্তব্যে জনমনে প্রশ্ন ওঠায় পরে তিনি ব্যাখ্যা করে বলেছেন, হিরো আলমকে তিনি কিছু বলেননি। বিএনপির মহাসচিবের বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়েই প্রসঙ্গক্রমে হিরো আলমের নাম এসে গেছে।
যেভাবেই এসে থাকুক, এটা তো অস্বীকার করা যাবে না, হিরো আলমের সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়াকে ওবায়দুল কাদেরের কাছে ‘সংসদকে ছোট করার চেষ্টা’ বলেই মনে হয়েছে। এটা নিয়ে বলার কিছু নেই। কেননা, একটি কথা বা বিষয়ের অর্থ বা ব্যাখ্যা কে কীভাবে করবেন, সেটা তাঁর নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গির ব্যাপার। তবে একটি বিষয় অস্বীকার করা যাবে না, আমাদের দেশের রাজনীতিকদের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, তাঁরা যা বলেন বা করেন, তার জন্য কারও কাছে জবাবদিহি করতে হয় না। কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেও তার প্রমাণ দিতে হয় না।
এই সুবিধার সুযোগ নিয়ে তাঁরা যা খুশি বলতে পারেন। সংবিধান অনুযায়ী বাংলাদেশের যেকোনো যোগ্য নাগরিক সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার অধিকার রাখেন, যদি আইনত তিনি অযোগ্য না হন। তাহলে হিরো আলম প্রার্থী হওয়া কেন সংসদকে ছোট করার চেষ্টা হবে? অথচ নানা কারণে আমাদের সংসদের মর্যাদা খর্ব হয়েছে, হচ্ছে। বর্তমান সংসদেই এমন সংসদ সদস্যও রয়েছেন, যিনি লিখিত কাগজও শুদ্ধভাবে উচ্চারণ করে পড়তে পারেন না। এ সংসদেরই সদস্য ছিলেন শহীদুল ইসলাম পাপুলের মতো চিহ্নিত অপরাধী, যিনি মানব পাচারের মতো ঘৃণ্য অপরাধে বিদেশের আদালতে দণ্ডিত হয়ে কারাভোগ করছেন।
ছক্কা ছয়ফুর কিংবা হিরো আলমদের রাজনীতির অঙ্গনে চমক সৃষ্টি করা কারও কারও কাছে বিসদৃশ মনে হতেই পারে। তবে, এটা নিশ্চয়ই অস্বীকার করা যাবে না, আমাদের রাজনীতির দৈন্যদশাই তাঁদের নিয়ে আসে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।
সিলেটের ছক্কা ছয়ফুরের কথা মনে পড়ে? সেই যে চালচুলোহীন একজন সহজ-সরল মানুষ উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে দেশব্যাপী আলোড়ন তুলেছিলেন! নামের গোড়ায় ‘ছক্কা’ শব্দটি লেগেছিল তা থেকেই। ১৯৯০ সালে শক্তিশালী একজন প্রতিদ্বন্দ্বীকে পরাজিত করে তিনি যখন সিলেট সদর উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন, তখন সবাই এই বলে মন্তব্য করেছিলেন, ছয়ফুর রহমান ‘ছক্কা’ মেরেছেন। সে থেকে তাঁর পরিচিতি হয়ে গেল ‘ছক্কা ছয়ফুর’ হিসেবে। বিপুল ভোটের ব্যবধানে জিতেছিলেন ছয়ফুর রহমান। তিনি পেয়েছিলেন ৫২ হাজার ভোট, আর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী পেয়েছিলেন ৩০ হাজার ভোট। পেশায় তিনি ছিলেন একজন বাবুর্চি। তা-ও বড়সড় কোনো শহর-বন্দরে নয়, সিলেট সদর উপজেলার শালুটিকর নামের এক গ্রাম্য বাজারে। যখন বাবুর্চির কাজ থাকত না, তখন ঠেলাগাড়ি চালিয়ে পেট চালাতেন। বাজারের পাশেই ছিল তাঁর ছাপরানিবাস। সেই ছয়ফুর রহমান প্রথম আলোচনায় আসেন ১৯৮১ সালের ১৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে। রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর অনুষ্ঠিত ওই নির্বাচনে মোট প্রার্থী ছিলেন ৩৩ জন।
না, ছয়ফুর রহমান সেই নির্বাচনে তেমন কোনো সাড়া জাগাতে পারেননি। পারার কথাও নয়। বিএনপিদলীয় প্রার্থী অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবদুস সাত্তার ও আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ড. কামাল হোসেনের মহা ভোট-রণের ময়দানে ছয়ফুর রহমান গণনার মধ্যে ছিলেন না। তবে তিনি তাঁর বক্তব্য-মন্তব্যের দ্বারা দেশবাসীর দৃষ্টি আকর্ষণে সক্ষম হয়েছিলেন। ছয়ফুর রহমান একটি রাজনৈতিক দলও করেছিলেন ‘ইসলামী সমাজতান্ত্রিক দল’ নামে। সেই দলের তিনিই ছিলেন একমাত্র সদস্য। আর কাউকে তিনি দলের সদস্য করেননি। এমনকি তাঁর স্ত্রীকেও না। এ ব্যাপারে তাঁর নিজস্ব ব্যাখ্যাও ছিল।
একবার এক সাংবাদিক গিয়েছিলেন তাঁর সাক্ষাৎকার নিতে। সকালবেলা গিয়ে দেখেন তিনি ঘর ঝাঁট দিচ্ছেন। কারণ জিজ্ঞেস করায় বলেছিলেন, নিজের কাজটা নিজেরই করা উচিত। দলের সদস্যসংখ্যা বাড়াচ্ছেন না কেন—এই প্রশ্নের জবাবে ছয়ফুর বলেছিলেন, বেশি লোক হলেই ঝামেলা। দুজন হলেও দল ভাগ হয়ে যেতে পারে। বহুল আলোচিত ছয়ফুর রহমান ওরফে ছক্কা ছয়ফুর আজ দুনিয়ায় নেই।
সম্প্রতি ছক্কা ছয়ফুরের মতোই দেশবাসীর মনোযোগ আকর্ষণে সক্ষম হয়েছেন আরেক তরুণ। তাঁর নাম হিরো আলম। বর্তমানে সবচেয়ে আলোচিত নাম। তাঁকে এখন আর পরিচয় করিয়ে দেওয়ার কিছু নেই। নিজ নামেই পরিচিত। হিরো আলম তাঁর আসল নাম নয়। আসল নাম আশরাফুল হোসেন আলম। সিনেমায় কাজ করতে গিয়ে নিজের নামের গোড়ায় ‘হিরো’ শব্দটি বসিয়ে নিয়েছেন। বেসুরো গলায় এবং উদ্ভট কথা ও সুরে গান গেয়ে হিরো আলম দেশব্যাপী পরিচিতি অর্জন করেছেন ভালোই। ইউটিউবে মানুষ তাঁর গান শোনে, লাইক দেয়, শেয়ার করে। শোনা যায় ইউটিউব থেকে তাঁর আয়-ইনকামও খারাপ না। তার চেয়ে বড় কথা, সবাই তাঁকে চেনে। এটাই তাঁর আত্মতৃপ্তির বিষয়। এই গান গাওয়া নিয়ে তাঁকে কম ভোগান্তিতে পড়তে হয়নি। থানা-পুলিশও হয়েছে। পুলিশ তাঁকে ধরে নিয়ে গেলেও কর্মকর্তারা ছেড়ে দিয়েছেন শুদ্ধ করে গান গাওয়ার পরামর্শ দিয়ে।
এত দিন যে হিরো আলম মানুষের কাছে ছিল হাস্যরসের পাত্র, তিনি এখন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। তাঁকে নিয়ে এখন পত্রিকায় হেডিং হয়, টিভিতে তাঁর খবর প্রচার করা হয়। টক শোতেও দাওয়াত পান কথা বলার জন্য। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদের বগুড়া-৪ ও ৬ আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে একটিতে পরাজিত হয়েছেন, অন্যটিতে জয়ী হতে হতে হেরে গেছেন। বগুড়া-৪ আসনে মাত্র ৮৩৪ ভোটের ব্যবধানে ক্ষমতাসীন ১৪-দলীয় জোটের প্রার্থীর কাছে পরাজিত হয়েছেন তিনি। একটি বিষয় অবশ্যই স্বীকার্য যে বর্তমান সময়ে অন্য দশজন প্রার্থী যেভাবে নির্বাচন করেন, হিরো আলম তা করেননি বা করতে পারেননি। এখন নির্বাচন মানেই তো কোটি কোটি টাকার কারবার। হিরো আলমের তো সে রকম টাকা নেই। তারপরও ১৪-দলীয় জোটের প্রার্থীর সঙ্গে যেভাবে তিনি পাল্লা দিয়েছেন, তাকে খাটো করে দেখার উপায় নেই। নিজে হাট-বাজার, পাড়া-মহল্লায় হেঁটে হেঁটে ভোট চেয়েছেন। মানুষ যে হিরো আলমকে ভালোবাসে, তার প্রমাণ পাওয়া গেছে দূরদূরান্ত থেকে বহু মানুষের তাঁর জন্য বিভিন্ন উপহার নিয়ে যাওয়ার ঘটনায়। অনেকে অবশ্য হিরো আলমের প্রার্থী হওয়া, এত ভোট পাওয়া ইত্যাদিকে ফাঁকা মাঠে গোল দেওয়ার চেষ্টা হিসেবে দেখতে চান। তাঁদের কথা, বিএনপি যেহেতু নির্বাচন থেকে দূরে থেকেছে, তাই হিরো আলম এ সুযোগটি পেয়েছেন এবং নিয়েছেনও। এ বিষয়ে একটি কথা না বললেই নয়। কোনো শূন্যস্থানই অপূর্ণ থাকে না। বিএনপি নির্বাচনে না এলে যে নির্বাচনী মাঠ খালি থাকবে না, হিরো আলমের প্রার্থী হওয়া এবং ভোটের মাঠে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই তার প্রমাণ। অবশ্য হিরো আলম নির্বাচনী ফলাফল মেনে নিতে অস্বীকার করে বগুড়া-৪ আসনের ৪৯টি কেন্দ্রের ফলাফল পুনর্গণনার জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে দাবি জানিয়েছেন।
এদিকে হিরো আলমকে নিয়ে দেশের দুই প্রধান রাজনৈতিক দল লিপ্ত হয়েছে চিরাচরিত বাগ্যুদ্ধে। একপক্ষ আরেকপক্ষকে ঘায়েল করতে হিরো আলমকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করার চেষ্টা করছে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আজকে হিরো আলম হিরো হয়েছে একটি মাত্র কারণে। সে প্রমাণ করেছে, এই আওয়ামী লীগ হিরো আলমের কাছেও কতটা অসহায়। রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে তাদের টিকে থাকতে হয়’। অর্থাৎ তিনি বোঝাতে চেয়েছেন, রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করেই হিরো আলমকে পরাজিত করা হয়েছে। অপরদিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘জাতীয় সংসদকে ছোট করার উদ্দেশ্যে উপনির্বাচনে বিএনপি হিরো আলমকে প্রার্থী করেছিল।’ তাঁর এ বক্তব্যে জনমনে প্রশ্ন ওঠায় পরে তিনি ব্যাখ্যা করে বলেছেন, হিরো আলমকে তিনি কিছু বলেননি। বিএনপির মহাসচিবের বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়েই প্রসঙ্গক্রমে হিরো আলমের নাম এসে গেছে।
যেভাবেই এসে থাকুক, এটা তো অস্বীকার করা যাবে না, হিরো আলমের সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়াকে ওবায়দুল কাদেরের কাছে ‘সংসদকে ছোট করার চেষ্টা’ বলেই মনে হয়েছে। এটা নিয়ে বলার কিছু নেই। কেননা, একটি কথা বা বিষয়ের অর্থ বা ব্যাখ্যা কে কীভাবে করবেন, সেটা তাঁর নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গির ব্যাপার। তবে একটি বিষয় অস্বীকার করা যাবে না, আমাদের দেশের রাজনীতিকদের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, তাঁরা যা বলেন বা করেন, তার জন্য কারও কাছে জবাবদিহি করতে হয় না। কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেও তার প্রমাণ দিতে হয় না।
এই সুবিধার সুযোগ নিয়ে তাঁরা যা খুশি বলতে পারেন। সংবিধান অনুযায়ী বাংলাদেশের যেকোনো যোগ্য নাগরিক সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার অধিকার রাখেন, যদি আইনত তিনি অযোগ্য না হন। তাহলে হিরো আলম প্রার্থী হওয়া কেন সংসদকে ছোট করার চেষ্টা হবে? অথচ নানা কারণে আমাদের সংসদের মর্যাদা খর্ব হয়েছে, হচ্ছে। বর্তমান সংসদেই এমন সংসদ সদস্যও রয়েছেন, যিনি লিখিত কাগজও শুদ্ধভাবে উচ্চারণ করে পড়তে পারেন না। এ সংসদেরই সদস্য ছিলেন শহীদুল ইসলাম পাপুলের মতো চিহ্নিত অপরাধী, যিনি মানব পাচারের মতো ঘৃণ্য অপরাধে বিদেশের আদালতে দণ্ডিত হয়ে কারাভোগ করছেন।
ছক্কা ছয়ফুর কিংবা হিরো আলমদের রাজনীতির অঙ্গনে চমক সৃষ্টি করা কারও কারও কাছে বিসদৃশ মনে হতেই পারে। তবে, এটা নিশ্চয়ই অস্বীকার করা যাবে না, আমাদের রাজনীতির দৈন্যদশাই তাঁদের নিয়ে আসে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৩ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।
সিলেটের ছক্কা ছয়ফুরের কথা মনে পড়ে? সেই যে চালচুলোহীন একজন সহজ-সরল মানুষ উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে দেশব্যাপী আলোড়ন তুলেছিলেন! নামের গোড়ায় ‘ছক্কা’ শব্দটি লেগেছিল তা থেকেই। ১৯৯০ সালে শক্তিশালী একজন প্রতিদ্বন্দ্বীকে পরাজিত করে তিনি যখন সিলেট সদর উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন, তখন সবাই এই বলে মন
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]
সিলেটের ছক্কা ছয়ফুরের কথা মনে পড়ে? সেই যে চালচুলোহীন একজন সহজ-সরল মানুষ উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে দেশব্যাপী আলোড়ন তুলেছিলেন! নামের গোড়ায় ‘ছক্কা’ শব্দটি লেগেছিল তা থেকেই। ১৯৯০ সালে শক্তিশালী একজন প্রতিদ্বন্দ্বীকে পরাজিত করে তিনি যখন সিলেট সদর উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন, তখন সবাই এই বলে মন
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৩ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।
সিলেটের ছক্কা ছয়ফুরের কথা মনে পড়ে? সেই যে চালচুলোহীন একজন সহজ-সরল মানুষ উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে দেশব্যাপী আলোড়ন তুলেছিলেন! নামের গোড়ায় ‘ছক্কা’ শব্দটি লেগেছিল তা থেকেই। ১৯৯০ সালে শক্তিশালী একজন প্রতিদ্বন্দ্বীকে পরাজিত করে তিনি যখন সিলেট সদর উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন, তখন সবাই এই বলে মন
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৩ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।
সিলেটের ছক্কা ছয়ফুরের কথা মনে পড়ে? সেই যে চালচুলোহীন একজন সহজ-সরল মানুষ উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে দেশব্যাপী আলোড়ন তুলেছিলেন! নামের গোড়ায় ‘ছক্কা’ শব্দটি লেগেছিল তা থেকেই। ১৯৯০ সালে শক্তিশালী একজন প্রতিদ্বন্দ্বীকে পরাজিত করে তিনি যখন সিলেট সদর উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন, তখন সবাই এই বলে মন
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৩ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫