Ajker Patrika

পৌর এলাকাতেও বসছে নলকূপ

মদন (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৫ মার্চ ২০২২, ১৭: ৪৬
পৌর এলাকাতেও বসছে নলকূপ

নেত্রকোনার মদন উপজেলায় গভীর নলকূপ স্থাপনে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। পৌরসভার বাইরে প্রত্যন্ত অঞ্চলে নলকূপ স্থাপনের কথা থাকলেও তা মানা হয়নি। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ১০ হাজার টাকার পরিবর্তে নেওয়া হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা। আর এ কাজে মদন উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী রনি রায়হান জড়িত বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

তবে উপজেলা প্রকৌশলী রনি রায়হান তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। আর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ বলেছেন, মদন উপজেলা জনস্বাস্থ্য অফিসের উপসহকারী প্রকৌশলী রনি রায়হানের বিরুদ্ধে একটা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে।

মদন জনস্বাস্থ্য কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, হাওরাঞ্চলের গ্রামগুলোয় আর্সেনিকমুক্ত গভীর নলকূপ স্থাপনের জন্য সমগ্র হাওর প্রকল্পের আওতায় ২০২১-২২ অর্থবছরে নেত্রকোনার মদন উপজেলায় ২০৮টি আর্সেনিকমুক্ত গভীর নলকূপ বরাদ্দ দেওয়া হয়। জনস্বাস্থ্য অফিস সুবিধাভোগীদের তালিকা তৈরি করে তা বাস্তবায়ন করছে। নিয়ম রয়েছে প্রান্তিক পর্যায়ে অসহায় পরিবার ব্যাংকের মাধ্যমে সরকারি ফি বাবদ ১০ হাজার ৩৫ টাকা জমা দিয়ে সুবিধাভোগীর আওতায় আসবেন। তবে পৌরসভায় কোনো নলকূপ স্থাপন করা হবে না। কিন্তু মদন উপজেলা জনস্বাস্থ্য অফিসের উপসহকারী প্রকৌশলী রনি রায়হান প্রান্তিক পর্যায়ে হতদরিদ্রের ঠিকানা ব্যবহার করে উৎকোচের বিনিময়ে কৌশলে পৌর সদরসহ বিভিন্ন স্থানে নলকূপ স্থাপন করছেন। ব্যবহার করছেন নিম্নমানের সামগ্রী।

এদিকে পৌরসদরে বাইরে যাঁরা সুবিধাভোগী রয়েছেন তাদের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অফিসের স্টাফদের সহযোগিতায় গ্রামের সুবিধাভোগী মানুষের কাছ থেকে প্রতিটি নলকূপের বিপরীতে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা করে আদায় করা হয়।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, পৌর সদরের বিভিন্ন স্থানে জনস্বাস্থ্যের আওতাধীন আর্সেনিকমুক্ত গভীর নলকূপ স্থাপন করা হচ্ছে। তবে স্থাপনকৃত নলকূপগুলো বরাদ্দ রয়েছে উপজেলার প্রত্যন্ত বিভিন্ন এলাকায়।

এ ব্যাপারে অভিযোগকারী মিনারুল বাবু মুঠোফোনে বলেন, নিয়ম-নীতি না মেনে ইউনিয়নের ঠিকানা ব্যবহার করে পৌর সদরে আর্সেনিকমুক্ত গভীর নলকূপ স্থাপন করেছে জনস্বাস্থ্য অফিস।

এর জন্য সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে ৩০-৪০ হাজার টাকা নেওয়া হচ্ছে। কর্তৃপক্ষ তদন্ত করলেই সত্য বেরিয়ে আসবে। এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে চাই না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপকারভোগী অনেকেই বলেন, পৌর সদরে নলকূপ স্থাপনের নিময় না থাকায় অফিসের লোকজনের পরামর্শে ইউনিয়নের ঠিকানা ব্যবহার করেছি। পরে তাদের সহযোগিতায় পৌর সদরে আর্সেনিকমুক্ত নলকূপ স্থাপন করেছি। এ জন্য অতিরিক্ত টাকাও খরচ করতে হয়েছে।

তিয়শ্রী এলাকার সুবিধাভোগী সাকের খান বলেন, আমার বাড়িতে আর্সেনিক মুক্ত একটি নলকূপ স্থাপন করেছে জনস্বাস্থ্য অফিস। পাইপ ও মোটর স্থাপন করেই চলে গেছে। আমরা জানি পাইপ স্থাপনের পর ইট বালু, সিমেন্ট, রড দিয়ে তা পাকা করে দেওয়ার নিয়ম। কিন্তু কয়েক মাস ঘুরেও এর কোনো ব্যবস্থা করতে পারিনি। একই এলাকার আরেকজন সুবিধাভোগী জুয়েল মিয়া বলেন, নলকূপ স্থাপন করতে আমার প্রায় ৪০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে।

জানতে চাইলে মদন জনস্বাস্থ্য অফিসের উপসহকারী প্রকৌশলী রনি রায়হান বলেন, নিয়মের বাইরে কিছু নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে। তবে টাকা নেওয়ার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ জানান, মদন জনস্বাস্থ্য অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলী রনি রায়হানের বিরুদ্ধে একটা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত