মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী

করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন অবশেষে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। করোনার তৃতীয় বছরে এটি আমাদের জন্য তৃতীয় ঢেউ। প্রথম ঢেউ ২০২০ সালে যখন আঘাত হানে, তখনই দেশের শিক্ষাব্যবস্থা তড়িঘড়ি করে বন্ধ করে দিতে হয়। করোনার কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকায় দুনিয়াজুড়েই এক ভয়াবহ আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছিল। এর চিকিৎসা সম্পর্কে কারও কোনো ধারণা ছিল না, কোনো ওষুধও আবিষ্কৃত হয়নি। ছোঁয়াচে এ ভাইরাসটি খুব অল্প সময়ের মধ্যেই পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত ছড়িয়ে গিয়েছিল। ফলে সব দেশেই লকডাউন, মাস্ক পরা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কথা উচ্চারিত হতে থাকে। কিন্তু এসবের কোনোটির সঙ্গেই মানুষ আগে পরিচিত বা অভ্যস্ত ছিল না। ডাক্তাররাও কী চিকিৎসা দেবেন, তা জানতেন না। ফলে বিভিন্ন দেশে এর প্রতিক্রিয়া বিভিন্ন রকমের হয়। লকডাউন শুনে তো সবাই সবকিছুতেই যেন তালা মেরে দেওয়া বুঝেছিল। ঘর থেকে বের হওয়া নিষিদ্ধ, কলকারখানা, দোকানপাট, অফিস-আদালত—সবই বন্ধ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তালা পড়েছিল বেশ শক্তভাবেই।
এরই মধ্যে ২০২১-এ ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট সারা বিশ্বকে আরও বেশি বিপর্যয়ের মধ্যে ফেলে দেয়। ডেলটা যেন দ্বিতীয় মহা ঢেউ নিয়ে আছড়ে পড়েছিল। সত্যি সত্যি বাংলাদেশে তখন করোনার অভিঘাতে অনেক কিছু দীর্ঘ মেয়াদে এলোমেলো হয়ে যায়। বহু প্রাণ ঝরে যায়। প্রথম ঢেউ কিছুটা সীমিত আকারে আতঙ্কের মধ্যে রাখলেও, দ্বিতীয় ঢেউ গ্রাম ও শহরভেদে সর্বত্র মানুষকে সন্ত্রস্ত করে তোলে। চারদিকে অক্সিজেনের হাহাকার, চিকিৎসার অভাব, ভবিষ্যৎ নিয়ে চরম অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছিল। সেই অবস্থায় স্বাভাবিকভাবেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালা খোলা নিয়ে আমরা ছিলাম অসহায়। দেড় বছরের বেশি সময় বেশির ভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই বন্ধ ছিল। শহরের কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনলাইন পদ্ধতি ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের কিছুটা ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করেছিল। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সংসদ টিভির ব্যবহার এবং অ্যাসাইনমেন্ট চালু করে বই-পুস্তকের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ধরে রাখার চেষ্টা করেছিল। এ নিয়ে ব্যস্ত এবং তুষ্ট থাকতে হয়েছিল দেশের বেশির ভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে।
অবশেষে দ্বিতীয় ঢেউ সেপ্টেম্বর মাসে দুর্বল হয়ে গেলে সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেওয়া হয়। নির্ধারিত সময়ে না হওয়া এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা হয়। গত নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে এই দুটো পাবলিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং এর মধ্যে এসএসসির ফলও প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু শিক্ষায় গতি পুরোপুরি ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে কিছু প্রতিবন্ধকতা থেকেই যায়। সীমিত আকারে ক্লাস নেওয়ার ব্যবস্থা হলেও কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই পরীক্ষা গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুললেও অনেক পরীক্ষা নেওয়া যায়নি। ফলে শিক্ষাবর্ষ দীর্ঘায়িত হয়েছে। শিক্ষাসংশ্লিষ্ট সবাই ধরে নিয়েছিলেন ২০২২-এ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো নতুন করে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পরিকল্পনামতো এগিয়ে যাবে। কিন্তু সে আশাও মনে হয় পূর্ণ হচ্ছে না।
এরই মধ্যে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেই ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষজ্ঞ মহল নিশ্চিত হয়ে যায় যে ওমিক্রনের ঢেউ থেকে আমরাও মুক্ত থাকতে পারব না। তবে আমরা অনেক দেশের চেয়ে কিছুটা সময় পেয়েছি, বুঝতে পেরেছি নতুন এই ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ ক্ষমতা সম্পর্কে। বিশেষত, করোনা প্রতিষেধক টিকা আবিষ্কার এবং প্রয়োগ শুরু হলে বাংলাদেশেও টিকাকরণ শুরু হয়। কিন্তু আন্তর্জাতিক পরাশক্তির রাজনীতি, কূটনীতি ও বাণিজ্যের কারণে প্রত্যাশিত টিকা পেতে আমাদেরও বেগ পেতে হয়েছে। সরকারের সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রাখার কারণে আমাদের টিকা প্রাপ্তি ঘটেছে। কিন্তু ওমিক্রন নামের নতুন ভ্যারিয়েন্ট আমাদের দরজায় কড়া নাড়ার ফলে অর্থনীতি, সমাজ, রাজনীতি ইত্যাদি নিয়ে নতুন করে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। সরকারের গত দুই বছর দেশের অর্থনীতির স্বাভাবিক গতি ধরে রাখার জন্য নানা আঁকাবাঁকা পথে হাঁটার সুফল বাংলাদেশ পেয়েছে। দেশের অর্থনীতির চাকা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়নি। ফলে খাদ্যসংকটসহ বড় ধরনের কোনো অর্থনৈতিক সমস্যা তৈরি হয়নি। পোশাকশিল্প চালু থাকায় রপ্তানি খাতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি। মানুষ কাজ হারিয়েছে, আয় কমেছে, ব্যয় বেড়েছে কিন্তু দেশজুড়ে হাহাকার দেখা দেয়নি। ওমিক্রন কিংবা পরবর্তী পরিস্থিতি কী হবে, সেটি নিয়ে এখন বিশ্বব্যাপী দুশ্চিন্তা দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশও এই দুশ্চিন্তার বাইরে নয়।
এ অবস্থায় আবার শিক্ষাব্যবস্থা বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী নাজুক এক পরিস্থিতির মুখে পড়েছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যদি আরও কিছুদিন শিক্ষার জটে আটকে পড়ে, তাহলে সংকট থেকে উত্তরণের উপায় অনেক দেশেরই বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হতে পারে।
২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে অবশ্য বোঝা গিয়েছিল যে একসঙ্গে সব জায়গায়, সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে না দিয়েও আমরা হয়তো শিক্ষাব্যবস্থা কিছুদিন কোনো না কোনোভাবে সচল রাখতে পারতাম। তাতে অসংক্রমিত অঞ্চলের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ২০২০ সালটি মোটামুটি সচল থাকতে পারত। ২০২১ সালে অবশ্য গ্রামাঞ্চলে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে না দিয়ে উপায় ছিল না। তাতে ক্ষতির পরিমাণটা এত বিশাল হতো না। এটা আমরা পরে বুঝতে পেরেছি।
দুই বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় একদিকে যেমন শিক্ষাক্ষেত্রে বৈষম্য তৈরি হয়েছে, অন্যদিকে বাল্যবিবাহ, প্রশাসনের নজর এড়িয়ে নানা ধরনের মাদ্রাসা বেড়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছে, প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক স্তরের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শিক্ষার্থী স্কুল বন্ধ থাকার কারণে ওই সব প্রতিষ্ঠানে চলে গেছে। এ ছাড়া ঝরে পড়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে বেড়ে গেছে। শহর ও উপশহর অঞ্চলে কিছু কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনলাইন পদ্ধতির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শিক্ষার সঙ্গে ধরে রাখতে পেরেছে। কিন্তু গ্রামাঞ্চলের বেশির ভাগ স্কুলের শিক্ষার্থীরা সেই সুযোগ পায়নি। ফলে তারা দুই ক্লাস ওপরে উঠে এলেও পঠনপাঠনের ঘাটতি তাদের ভবিষ্যতে বেশ বেকায়দায় ফেলবে বলেই মনে হচ্ছে।
ওমিক্রনের সংক্রমণের গতিপ্রকৃতি আরও ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ না করে সরকার যেন সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একসঙ্গে বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা না দেয়। এখন ১২ থেকে ১৮ বছরের শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া হচ্ছে। এই বয়সের সব শিক্ষার্থীকে যত দ্রুত টিকা দেওয়া যাবে, তত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সচল রাখার বাস্তবতা তৈরি হবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। তবে মাস্ক ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশনা যত বেশি নিখুঁতভাবে অনুসরণ করা হবে, তত বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংক্রমণ থেকে মুক্ত থাকবে।
যেখানে তৃতীয় ঢেউ ছড়িয়ে পড়বে, সেখানেই কেবল বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখা না-রাখার সিদ্ধান্ত কার্যকর করা যেতে পারে। অনলাইন পদ্ধতিতে এবং সংসদ টিভিতে মানসম্মত আকর্ষণীয় পাঠদানের ব্যবস্থাটি কীভাবে সব শিক্ষার্থীর জন্য নিশ্চিত করা যায়, সেটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে গভীরভাবে ভেবে দেখতে হবে। বিশেষত প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইন্টারনেটের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি এবং অনলাইন পদ্ধতিতে শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করার ওপর শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে জোর দিতে হবে। দরিদ্র ও অসচ্ছল পরিবারের শিক্ষার্থীদের শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত রাখার জন্য কিছু প্রণোদনার ব্যবস্থা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করতে হবে।
এ ছাড়া শিক্ষকদেরও আধুনিক পাঠদান পদ্ধতির সঙ্গে প্রশিক্ষিত করে তোলার প্রতি নজর দিতে হবে। ওমিক্রনের সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় রেখেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে ব্যবস্থা নিতে হবে। কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি প্রতিষ্ঠানগুলোর থাকা বাঞ্ছনীয়। করোনার প্রাদুর্ভাব কমে আসার লক্ষণ দেখামাত্রই যেন শিক্ষার সব স্তরে আমরা মনোযোগ দিতে পারি, সেই সচেতনতা বৃদ্ধির কাজ করতে হবে। মনে রাখতে হবে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের বেশ কিছু ক্ষতি দ্রুত পুষিয়ে নেওয়া গেলেও দেশের সামগ্রিক শিক্ষাব্যবস্থার করোনাজনিত ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা খুবই কঠিন হবে। তবে আমাদের সন্তানদের মানবসম্পদরূপে গড়ে তোলার জন্য শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো এবং মানের সমতা বিধান করা ছাড়া দ্বিতীয় কোনো পথ খোলা নেই।
মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী: অধ্যাপক, ইতিহাসবিদ ও কলামিস্ট

করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন অবশেষে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। করোনার তৃতীয় বছরে এটি আমাদের জন্য তৃতীয় ঢেউ। প্রথম ঢেউ ২০২০ সালে যখন আঘাত হানে, তখনই দেশের শিক্ষাব্যবস্থা তড়িঘড়ি করে বন্ধ করে দিতে হয়। করোনার কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকায় দুনিয়াজুড়েই এক ভয়াবহ আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছিল। এর চিকিৎসা সম্পর্কে কারও কোনো ধারণা ছিল না, কোনো ওষুধও আবিষ্কৃত হয়নি। ছোঁয়াচে এ ভাইরাসটি খুব অল্প সময়ের মধ্যেই পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত ছড়িয়ে গিয়েছিল। ফলে সব দেশেই লকডাউন, মাস্ক পরা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কথা উচ্চারিত হতে থাকে। কিন্তু এসবের কোনোটির সঙ্গেই মানুষ আগে পরিচিত বা অভ্যস্ত ছিল না। ডাক্তাররাও কী চিকিৎসা দেবেন, তা জানতেন না। ফলে বিভিন্ন দেশে এর প্রতিক্রিয়া বিভিন্ন রকমের হয়। লকডাউন শুনে তো সবাই সবকিছুতেই যেন তালা মেরে দেওয়া বুঝেছিল। ঘর থেকে বের হওয়া নিষিদ্ধ, কলকারখানা, দোকানপাট, অফিস-আদালত—সবই বন্ধ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তালা পড়েছিল বেশ শক্তভাবেই।
এরই মধ্যে ২০২১-এ ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট সারা বিশ্বকে আরও বেশি বিপর্যয়ের মধ্যে ফেলে দেয়। ডেলটা যেন দ্বিতীয় মহা ঢেউ নিয়ে আছড়ে পড়েছিল। সত্যি সত্যি বাংলাদেশে তখন করোনার অভিঘাতে অনেক কিছু দীর্ঘ মেয়াদে এলোমেলো হয়ে যায়। বহু প্রাণ ঝরে যায়। প্রথম ঢেউ কিছুটা সীমিত আকারে আতঙ্কের মধ্যে রাখলেও, দ্বিতীয় ঢেউ গ্রাম ও শহরভেদে সর্বত্র মানুষকে সন্ত্রস্ত করে তোলে। চারদিকে অক্সিজেনের হাহাকার, চিকিৎসার অভাব, ভবিষ্যৎ নিয়ে চরম অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছিল। সেই অবস্থায় স্বাভাবিকভাবেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালা খোলা নিয়ে আমরা ছিলাম অসহায়। দেড় বছরের বেশি সময় বেশির ভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই বন্ধ ছিল। শহরের কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনলাইন পদ্ধতি ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের কিছুটা ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করেছিল। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সংসদ টিভির ব্যবহার এবং অ্যাসাইনমেন্ট চালু করে বই-পুস্তকের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ধরে রাখার চেষ্টা করেছিল। এ নিয়ে ব্যস্ত এবং তুষ্ট থাকতে হয়েছিল দেশের বেশির ভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে।
অবশেষে দ্বিতীয় ঢেউ সেপ্টেম্বর মাসে দুর্বল হয়ে গেলে সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেওয়া হয়। নির্ধারিত সময়ে না হওয়া এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা হয়। গত নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে এই দুটো পাবলিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং এর মধ্যে এসএসসির ফলও প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু শিক্ষায় গতি পুরোপুরি ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে কিছু প্রতিবন্ধকতা থেকেই যায়। সীমিত আকারে ক্লাস নেওয়ার ব্যবস্থা হলেও কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই পরীক্ষা গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুললেও অনেক পরীক্ষা নেওয়া যায়নি। ফলে শিক্ষাবর্ষ দীর্ঘায়িত হয়েছে। শিক্ষাসংশ্লিষ্ট সবাই ধরে নিয়েছিলেন ২০২২-এ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো নতুন করে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পরিকল্পনামতো এগিয়ে যাবে। কিন্তু সে আশাও মনে হয় পূর্ণ হচ্ছে না।
এরই মধ্যে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেই ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষজ্ঞ মহল নিশ্চিত হয়ে যায় যে ওমিক্রনের ঢেউ থেকে আমরাও মুক্ত থাকতে পারব না। তবে আমরা অনেক দেশের চেয়ে কিছুটা সময় পেয়েছি, বুঝতে পেরেছি নতুন এই ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ ক্ষমতা সম্পর্কে। বিশেষত, করোনা প্রতিষেধক টিকা আবিষ্কার এবং প্রয়োগ শুরু হলে বাংলাদেশেও টিকাকরণ শুরু হয়। কিন্তু আন্তর্জাতিক পরাশক্তির রাজনীতি, কূটনীতি ও বাণিজ্যের কারণে প্রত্যাশিত টিকা পেতে আমাদেরও বেগ পেতে হয়েছে। সরকারের সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রাখার কারণে আমাদের টিকা প্রাপ্তি ঘটেছে। কিন্তু ওমিক্রন নামের নতুন ভ্যারিয়েন্ট আমাদের দরজায় কড়া নাড়ার ফলে অর্থনীতি, সমাজ, রাজনীতি ইত্যাদি নিয়ে নতুন করে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। সরকারের গত দুই বছর দেশের অর্থনীতির স্বাভাবিক গতি ধরে রাখার জন্য নানা আঁকাবাঁকা পথে হাঁটার সুফল বাংলাদেশ পেয়েছে। দেশের অর্থনীতির চাকা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়নি। ফলে খাদ্যসংকটসহ বড় ধরনের কোনো অর্থনৈতিক সমস্যা তৈরি হয়নি। পোশাকশিল্প চালু থাকায় রপ্তানি খাতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি। মানুষ কাজ হারিয়েছে, আয় কমেছে, ব্যয় বেড়েছে কিন্তু দেশজুড়ে হাহাকার দেখা দেয়নি। ওমিক্রন কিংবা পরবর্তী পরিস্থিতি কী হবে, সেটি নিয়ে এখন বিশ্বব্যাপী দুশ্চিন্তা দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশও এই দুশ্চিন্তার বাইরে নয়।
এ অবস্থায় আবার শিক্ষাব্যবস্থা বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী নাজুক এক পরিস্থিতির মুখে পড়েছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যদি আরও কিছুদিন শিক্ষার জটে আটকে পড়ে, তাহলে সংকট থেকে উত্তরণের উপায় অনেক দেশেরই বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হতে পারে।
২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে অবশ্য বোঝা গিয়েছিল যে একসঙ্গে সব জায়গায়, সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে না দিয়েও আমরা হয়তো শিক্ষাব্যবস্থা কিছুদিন কোনো না কোনোভাবে সচল রাখতে পারতাম। তাতে অসংক্রমিত অঞ্চলের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ২০২০ সালটি মোটামুটি সচল থাকতে পারত। ২০২১ সালে অবশ্য গ্রামাঞ্চলে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে না দিয়ে উপায় ছিল না। তাতে ক্ষতির পরিমাণটা এত বিশাল হতো না। এটা আমরা পরে বুঝতে পেরেছি।
দুই বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় একদিকে যেমন শিক্ষাক্ষেত্রে বৈষম্য তৈরি হয়েছে, অন্যদিকে বাল্যবিবাহ, প্রশাসনের নজর এড়িয়ে নানা ধরনের মাদ্রাসা বেড়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছে, প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক স্তরের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শিক্ষার্থী স্কুল বন্ধ থাকার কারণে ওই সব প্রতিষ্ঠানে চলে গেছে। এ ছাড়া ঝরে পড়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে বেড়ে গেছে। শহর ও উপশহর অঞ্চলে কিছু কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনলাইন পদ্ধতির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শিক্ষার সঙ্গে ধরে রাখতে পেরেছে। কিন্তু গ্রামাঞ্চলের বেশির ভাগ স্কুলের শিক্ষার্থীরা সেই সুযোগ পায়নি। ফলে তারা দুই ক্লাস ওপরে উঠে এলেও পঠনপাঠনের ঘাটতি তাদের ভবিষ্যতে বেশ বেকায়দায় ফেলবে বলেই মনে হচ্ছে।
ওমিক্রনের সংক্রমণের গতিপ্রকৃতি আরও ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ না করে সরকার যেন সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একসঙ্গে বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা না দেয়। এখন ১২ থেকে ১৮ বছরের শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া হচ্ছে। এই বয়সের সব শিক্ষার্থীকে যত দ্রুত টিকা দেওয়া যাবে, তত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সচল রাখার বাস্তবতা তৈরি হবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। তবে মাস্ক ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশনা যত বেশি নিখুঁতভাবে অনুসরণ করা হবে, তত বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংক্রমণ থেকে মুক্ত থাকবে।
যেখানে তৃতীয় ঢেউ ছড়িয়ে পড়বে, সেখানেই কেবল বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখা না-রাখার সিদ্ধান্ত কার্যকর করা যেতে পারে। অনলাইন পদ্ধতিতে এবং সংসদ টিভিতে মানসম্মত আকর্ষণীয় পাঠদানের ব্যবস্থাটি কীভাবে সব শিক্ষার্থীর জন্য নিশ্চিত করা যায়, সেটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে গভীরভাবে ভেবে দেখতে হবে। বিশেষত প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইন্টারনেটের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি এবং অনলাইন পদ্ধতিতে শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করার ওপর শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে জোর দিতে হবে। দরিদ্র ও অসচ্ছল পরিবারের শিক্ষার্থীদের শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত রাখার জন্য কিছু প্রণোদনার ব্যবস্থা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করতে হবে।
এ ছাড়া শিক্ষকদেরও আধুনিক পাঠদান পদ্ধতির সঙ্গে প্রশিক্ষিত করে তোলার প্রতি নজর দিতে হবে। ওমিক্রনের সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় রেখেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে ব্যবস্থা নিতে হবে। কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি প্রতিষ্ঠানগুলোর থাকা বাঞ্ছনীয়। করোনার প্রাদুর্ভাব কমে আসার লক্ষণ দেখামাত্রই যেন শিক্ষার সব স্তরে আমরা মনোযোগ দিতে পারি, সেই সচেতনতা বৃদ্ধির কাজ করতে হবে। মনে রাখতে হবে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের বেশ কিছু ক্ষতি দ্রুত পুষিয়ে নেওয়া গেলেও দেশের সামগ্রিক শিক্ষাব্যবস্থার করোনাজনিত ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা খুবই কঠিন হবে। তবে আমাদের সন্তানদের মানবসম্পদরূপে গড়ে তোলার জন্য শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো এবং মানের সমতা বিধান করা ছাড়া দ্বিতীয় কোনো পথ খোলা নেই।
মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী: অধ্যাপক, ইতিহাসবিদ ও কলামিস্ট
মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী

করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন অবশেষে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। করোনার তৃতীয় বছরে এটি আমাদের জন্য তৃতীয় ঢেউ। প্রথম ঢেউ ২০২০ সালে যখন আঘাত হানে, তখনই দেশের শিক্ষাব্যবস্থা তড়িঘড়ি করে বন্ধ করে দিতে হয়। করোনার কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকায় দুনিয়াজুড়েই এক ভয়াবহ আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছিল। এর চিকিৎসা সম্পর্কে কারও কোনো ধারণা ছিল না, কোনো ওষুধও আবিষ্কৃত হয়নি। ছোঁয়াচে এ ভাইরাসটি খুব অল্প সময়ের মধ্যেই পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত ছড়িয়ে গিয়েছিল। ফলে সব দেশেই লকডাউন, মাস্ক পরা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কথা উচ্চারিত হতে থাকে। কিন্তু এসবের কোনোটির সঙ্গেই মানুষ আগে পরিচিত বা অভ্যস্ত ছিল না। ডাক্তাররাও কী চিকিৎসা দেবেন, তা জানতেন না। ফলে বিভিন্ন দেশে এর প্রতিক্রিয়া বিভিন্ন রকমের হয়। লকডাউন শুনে তো সবাই সবকিছুতেই যেন তালা মেরে দেওয়া বুঝেছিল। ঘর থেকে বের হওয়া নিষিদ্ধ, কলকারখানা, দোকানপাট, অফিস-আদালত—সবই বন্ধ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তালা পড়েছিল বেশ শক্তভাবেই।
এরই মধ্যে ২০২১-এ ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট সারা বিশ্বকে আরও বেশি বিপর্যয়ের মধ্যে ফেলে দেয়। ডেলটা যেন দ্বিতীয় মহা ঢেউ নিয়ে আছড়ে পড়েছিল। সত্যি সত্যি বাংলাদেশে তখন করোনার অভিঘাতে অনেক কিছু দীর্ঘ মেয়াদে এলোমেলো হয়ে যায়। বহু প্রাণ ঝরে যায়। প্রথম ঢেউ কিছুটা সীমিত আকারে আতঙ্কের মধ্যে রাখলেও, দ্বিতীয় ঢেউ গ্রাম ও শহরভেদে সর্বত্র মানুষকে সন্ত্রস্ত করে তোলে। চারদিকে অক্সিজেনের হাহাকার, চিকিৎসার অভাব, ভবিষ্যৎ নিয়ে চরম অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছিল। সেই অবস্থায় স্বাভাবিকভাবেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালা খোলা নিয়ে আমরা ছিলাম অসহায়। দেড় বছরের বেশি সময় বেশির ভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই বন্ধ ছিল। শহরের কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনলাইন পদ্ধতি ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের কিছুটা ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করেছিল। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সংসদ টিভির ব্যবহার এবং অ্যাসাইনমেন্ট চালু করে বই-পুস্তকের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ধরে রাখার চেষ্টা করেছিল। এ নিয়ে ব্যস্ত এবং তুষ্ট থাকতে হয়েছিল দেশের বেশির ভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে।
অবশেষে দ্বিতীয় ঢেউ সেপ্টেম্বর মাসে দুর্বল হয়ে গেলে সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেওয়া হয়। নির্ধারিত সময়ে না হওয়া এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা হয়। গত নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে এই দুটো পাবলিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং এর মধ্যে এসএসসির ফলও প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু শিক্ষায় গতি পুরোপুরি ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে কিছু প্রতিবন্ধকতা থেকেই যায়। সীমিত আকারে ক্লাস নেওয়ার ব্যবস্থা হলেও কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই পরীক্ষা গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুললেও অনেক পরীক্ষা নেওয়া যায়নি। ফলে শিক্ষাবর্ষ দীর্ঘায়িত হয়েছে। শিক্ষাসংশ্লিষ্ট সবাই ধরে নিয়েছিলেন ২০২২-এ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো নতুন করে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পরিকল্পনামতো এগিয়ে যাবে। কিন্তু সে আশাও মনে হয় পূর্ণ হচ্ছে না।
এরই মধ্যে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেই ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষজ্ঞ মহল নিশ্চিত হয়ে যায় যে ওমিক্রনের ঢেউ থেকে আমরাও মুক্ত থাকতে পারব না। তবে আমরা অনেক দেশের চেয়ে কিছুটা সময় পেয়েছি, বুঝতে পেরেছি নতুন এই ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ ক্ষমতা সম্পর্কে। বিশেষত, করোনা প্রতিষেধক টিকা আবিষ্কার এবং প্রয়োগ শুরু হলে বাংলাদেশেও টিকাকরণ শুরু হয়। কিন্তু আন্তর্জাতিক পরাশক্তির রাজনীতি, কূটনীতি ও বাণিজ্যের কারণে প্রত্যাশিত টিকা পেতে আমাদেরও বেগ পেতে হয়েছে। সরকারের সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রাখার কারণে আমাদের টিকা প্রাপ্তি ঘটেছে। কিন্তু ওমিক্রন নামের নতুন ভ্যারিয়েন্ট আমাদের দরজায় কড়া নাড়ার ফলে অর্থনীতি, সমাজ, রাজনীতি ইত্যাদি নিয়ে নতুন করে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। সরকারের গত দুই বছর দেশের অর্থনীতির স্বাভাবিক গতি ধরে রাখার জন্য নানা আঁকাবাঁকা পথে হাঁটার সুফল বাংলাদেশ পেয়েছে। দেশের অর্থনীতির চাকা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়নি। ফলে খাদ্যসংকটসহ বড় ধরনের কোনো অর্থনৈতিক সমস্যা তৈরি হয়নি। পোশাকশিল্প চালু থাকায় রপ্তানি খাতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি। মানুষ কাজ হারিয়েছে, আয় কমেছে, ব্যয় বেড়েছে কিন্তু দেশজুড়ে হাহাকার দেখা দেয়নি। ওমিক্রন কিংবা পরবর্তী পরিস্থিতি কী হবে, সেটি নিয়ে এখন বিশ্বব্যাপী দুশ্চিন্তা দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশও এই দুশ্চিন্তার বাইরে নয়।
এ অবস্থায় আবার শিক্ষাব্যবস্থা বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী নাজুক এক পরিস্থিতির মুখে পড়েছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যদি আরও কিছুদিন শিক্ষার জটে আটকে পড়ে, তাহলে সংকট থেকে উত্তরণের উপায় অনেক দেশেরই বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হতে পারে।
২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে অবশ্য বোঝা গিয়েছিল যে একসঙ্গে সব জায়গায়, সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে না দিয়েও আমরা হয়তো শিক্ষাব্যবস্থা কিছুদিন কোনো না কোনোভাবে সচল রাখতে পারতাম। তাতে অসংক্রমিত অঞ্চলের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ২০২০ সালটি মোটামুটি সচল থাকতে পারত। ২০২১ সালে অবশ্য গ্রামাঞ্চলে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে না দিয়ে উপায় ছিল না। তাতে ক্ষতির পরিমাণটা এত বিশাল হতো না। এটা আমরা পরে বুঝতে পেরেছি।
দুই বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় একদিকে যেমন শিক্ষাক্ষেত্রে বৈষম্য তৈরি হয়েছে, অন্যদিকে বাল্যবিবাহ, প্রশাসনের নজর এড়িয়ে নানা ধরনের মাদ্রাসা বেড়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছে, প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক স্তরের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শিক্ষার্থী স্কুল বন্ধ থাকার কারণে ওই সব প্রতিষ্ঠানে চলে গেছে। এ ছাড়া ঝরে পড়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে বেড়ে গেছে। শহর ও উপশহর অঞ্চলে কিছু কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনলাইন পদ্ধতির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শিক্ষার সঙ্গে ধরে রাখতে পেরেছে। কিন্তু গ্রামাঞ্চলের বেশির ভাগ স্কুলের শিক্ষার্থীরা সেই সুযোগ পায়নি। ফলে তারা দুই ক্লাস ওপরে উঠে এলেও পঠনপাঠনের ঘাটতি তাদের ভবিষ্যতে বেশ বেকায়দায় ফেলবে বলেই মনে হচ্ছে।
ওমিক্রনের সংক্রমণের গতিপ্রকৃতি আরও ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ না করে সরকার যেন সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একসঙ্গে বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা না দেয়। এখন ১২ থেকে ১৮ বছরের শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া হচ্ছে। এই বয়সের সব শিক্ষার্থীকে যত দ্রুত টিকা দেওয়া যাবে, তত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সচল রাখার বাস্তবতা তৈরি হবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। তবে মাস্ক ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশনা যত বেশি নিখুঁতভাবে অনুসরণ করা হবে, তত বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংক্রমণ থেকে মুক্ত থাকবে।
যেখানে তৃতীয় ঢেউ ছড়িয়ে পড়বে, সেখানেই কেবল বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখা না-রাখার সিদ্ধান্ত কার্যকর করা যেতে পারে। অনলাইন পদ্ধতিতে এবং সংসদ টিভিতে মানসম্মত আকর্ষণীয় পাঠদানের ব্যবস্থাটি কীভাবে সব শিক্ষার্থীর জন্য নিশ্চিত করা যায়, সেটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে গভীরভাবে ভেবে দেখতে হবে। বিশেষত প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইন্টারনেটের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি এবং অনলাইন পদ্ধতিতে শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করার ওপর শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে জোর দিতে হবে। দরিদ্র ও অসচ্ছল পরিবারের শিক্ষার্থীদের শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত রাখার জন্য কিছু প্রণোদনার ব্যবস্থা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করতে হবে।
এ ছাড়া শিক্ষকদেরও আধুনিক পাঠদান পদ্ধতির সঙ্গে প্রশিক্ষিত করে তোলার প্রতি নজর দিতে হবে। ওমিক্রনের সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় রেখেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে ব্যবস্থা নিতে হবে। কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি প্রতিষ্ঠানগুলোর থাকা বাঞ্ছনীয়। করোনার প্রাদুর্ভাব কমে আসার লক্ষণ দেখামাত্রই যেন শিক্ষার সব স্তরে আমরা মনোযোগ দিতে পারি, সেই সচেতনতা বৃদ্ধির কাজ করতে হবে। মনে রাখতে হবে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের বেশ কিছু ক্ষতি দ্রুত পুষিয়ে নেওয়া গেলেও দেশের সামগ্রিক শিক্ষাব্যবস্থার করোনাজনিত ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা খুবই কঠিন হবে। তবে আমাদের সন্তানদের মানবসম্পদরূপে গড়ে তোলার জন্য শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো এবং মানের সমতা বিধান করা ছাড়া দ্বিতীয় কোনো পথ খোলা নেই।
মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী: অধ্যাপক, ইতিহাসবিদ ও কলামিস্ট

করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন অবশেষে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। করোনার তৃতীয় বছরে এটি আমাদের জন্য তৃতীয় ঢেউ। প্রথম ঢেউ ২০২০ সালে যখন আঘাত হানে, তখনই দেশের শিক্ষাব্যবস্থা তড়িঘড়ি করে বন্ধ করে দিতে হয়। করোনার কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকায় দুনিয়াজুড়েই এক ভয়াবহ আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছিল। এর চিকিৎসা সম্পর্কে কারও কোনো ধারণা ছিল না, কোনো ওষুধও আবিষ্কৃত হয়নি। ছোঁয়াচে এ ভাইরাসটি খুব অল্প সময়ের মধ্যেই পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত ছড়িয়ে গিয়েছিল। ফলে সব দেশেই লকডাউন, মাস্ক পরা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কথা উচ্চারিত হতে থাকে। কিন্তু এসবের কোনোটির সঙ্গেই মানুষ আগে পরিচিত বা অভ্যস্ত ছিল না। ডাক্তাররাও কী চিকিৎসা দেবেন, তা জানতেন না। ফলে বিভিন্ন দেশে এর প্রতিক্রিয়া বিভিন্ন রকমের হয়। লকডাউন শুনে তো সবাই সবকিছুতেই যেন তালা মেরে দেওয়া বুঝেছিল। ঘর থেকে বের হওয়া নিষিদ্ধ, কলকারখানা, দোকানপাট, অফিস-আদালত—সবই বন্ধ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তালা পড়েছিল বেশ শক্তভাবেই।
এরই মধ্যে ২০২১-এ ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট সারা বিশ্বকে আরও বেশি বিপর্যয়ের মধ্যে ফেলে দেয়। ডেলটা যেন দ্বিতীয় মহা ঢেউ নিয়ে আছড়ে পড়েছিল। সত্যি সত্যি বাংলাদেশে তখন করোনার অভিঘাতে অনেক কিছু দীর্ঘ মেয়াদে এলোমেলো হয়ে যায়। বহু প্রাণ ঝরে যায়। প্রথম ঢেউ কিছুটা সীমিত আকারে আতঙ্কের মধ্যে রাখলেও, দ্বিতীয় ঢেউ গ্রাম ও শহরভেদে সর্বত্র মানুষকে সন্ত্রস্ত করে তোলে। চারদিকে অক্সিজেনের হাহাকার, চিকিৎসার অভাব, ভবিষ্যৎ নিয়ে চরম অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছিল। সেই অবস্থায় স্বাভাবিকভাবেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালা খোলা নিয়ে আমরা ছিলাম অসহায়। দেড় বছরের বেশি সময় বেশির ভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই বন্ধ ছিল। শহরের কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনলাইন পদ্ধতি ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের কিছুটা ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করেছিল। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সংসদ টিভির ব্যবহার এবং অ্যাসাইনমেন্ট চালু করে বই-পুস্তকের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ধরে রাখার চেষ্টা করেছিল। এ নিয়ে ব্যস্ত এবং তুষ্ট থাকতে হয়েছিল দেশের বেশির ভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে।
অবশেষে দ্বিতীয় ঢেউ সেপ্টেম্বর মাসে দুর্বল হয়ে গেলে সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেওয়া হয়। নির্ধারিত সময়ে না হওয়া এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা হয়। গত নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে এই দুটো পাবলিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং এর মধ্যে এসএসসির ফলও প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু শিক্ষায় গতি পুরোপুরি ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে কিছু প্রতিবন্ধকতা থেকেই যায়। সীমিত আকারে ক্লাস নেওয়ার ব্যবস্থা হলেও কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই পরীক্ষা গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুললেও অনেক পরীক্ষা নেওয়া যায়নি। ফলে শিক্ষাবর্ষ দীর্ঘায়িত হয়েছে। শিক্ষাসংশ্লিষ্ট সবাই ধরে নিয়েছিলেন ২০২২-এ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো নতুন করে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পরিকল্পনামতো এগিয়ে যাবে। কিন্তু সে আশাও মনে হয় পূর্ণ হচ্ছে না।
এরই মধ্যে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেই ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষজ্ঞ মহল নিশ্চিত হয়ে যায় যে ওমিক্রনের ঢেউ থেকে আমরাও মুক্ত থাকতে পারব না। তবে আমরা অনেক দেশের চেয়ে কিছুটা সময় পেয়েছি, বুঝতে পেরেছি নতুন এই ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ ক্ষমতা সম্পর্কে। বিশেষত, করোনা প্রতিষেধক টিকা আবিষ্কার এবং প্রয়োগ শুরু হলে বাংলাদেশেও টিকাকরণ শুরু হয়। কিন্তু আন্তর্জাতিক পরাশক্তির রাজনীতি, কূটনীতি ও বাণিজ্যের কারণে প্রত্যাশিত টিকা পেতে আমাদেরও বেগ পেতে হয়েছে। সরকারের সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রাখার কারণে আমাদের টিকা প্রাপ্তি ঘটেছে। কিন্তু ওমিক্রন নামের নতুন ভ্যারিয়েন্ট আমাদের দরজায় কড়া নাড়ার ফলে অর্থনীতি, সমাজ, রাজনীতি ইত্যাদি নিয়ে নতুন করে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। সরকারের গত দুই বছর দেশের অর্থনীতির স্বাভাবিক গতি ধরে রাখার জন্য নানা আঁকাবাঁকা পথে হাঁটার সুফল বাংলাদেশ পেয়েছে। দেশের অর্থনীতির চাকা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়নি। ফলে খাদ্যসংকটসহ বড় ধরনের কোনো অর্থনৈতিক সমস্যা তৈরি হয়নি। পোশাকশিল্প চালু থাকায় রপ্তানি খাতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি। মানুষ কাজ হারিয়েছে, আয় কমেছে, ব্যয় বেড়েছে কিন্তু দেশজুড়ে হাহাকার দেখা দেয়নি। ওমিক্রন কিংবা পরবর্তী পরিস্থিতি কী হবে, সেটি নিয়ে এখন বিশ্বব্যাপী দুশ্চিন্তা দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশও এই দুশ্চিন্তার বাইরে নয়।
এ অবস্থায় আবার শিক্ষাব্যবস্থা বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী নাজুক এক পরিস্থিতির মুখে পড়েছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যদি আরও কিছুদিন শিক্ষার জটে আটকে পড়ে, তাহলে সংকট থেকে উত্তরণের উপায় অনেক দেশেরই বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হতে পারে।
২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে অবশ্য বোঝা গিয়েছিল যে একসঙ্গে সব জায়গায়, সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে না দিয়েও আমরা হয়তো শিক্ষাব্যবস্থা কিছুদিন কোনো না কোনোভাবে সচল রাখতে পারতাম। তাতে অসংক্রমিত অঞ্চলের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ২০২০ সালটি মোটামুটি সচল থাকতে পারত। ২০২১ সালে অবশ্য গ্রামাঞ্চলে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে না দিয়ে উপায় ছিল না। তাতে ক্ষতির পরিমাণটা এত বিশাল হতো না। এটা আমরা পরে বুঝতে পেরেছি।
দুই বছর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় একদিকে যেমন শিক্ষাক্ষেত্রে বৈষম্য তৈরি হয়েছে, অন্যদিকে বাল্যবিবাহ, প্রশাসনের নজর এড়িয়ে নানা ধরনের মাদ্রাসা বেড়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছে, প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক স্তরের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শিক্ষার্থী স্কুল বন্ধ থাকার কারণে ওই সব প্রতিষ্ঠানে চলে গেছে। এ ছাড়া ঝরে পড়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে বেড়ে গেছে। শহর ও উপশহর অঞ্চলে কিছু কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনলাইন পদ্ধতির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শিক্ষার সঙ্গে ধরে রাখতে পেরেছে। কিন্তু গ্রামাঞ্চলের বেশির ভাগ স্কুলের শিক্ষার্থীরা সেই সুযোগ পায়নি। ফলে তারা দুই ক্লাস ওপরে উঠে এলেও পঠনপাঠনের ঘাটতি তাদের ভবিষ্যতে বেশ বেকায়দায় ফেলবে বলেই মনে হচ্ছে।
ওমিক্রনের সংক্রমণের গতিপ্রকৃতি আরও ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ না করে সরকার যেন সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একসঙ্গে বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা না দেয়। এখন ১২ থেকে ১৮ বছরের শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া হচ্ছে। এই বয়সের সব শিক্ষার্থীকে যত দ্রুত টিকা দেওয়া যাবে, তত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সচল রাখার বাস্তবতা তৈরি হবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। তবে মাস্ক ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশনা যত বেশি নিখুঁতভাবে অনুসরণ করা হবে, তত বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংক্রমণ থেকে মুক্ত থাকবে।
যেখানে তৃতীয় ঢেউ ছড়িয়ে পড়বে, সেখানেই কেবল বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখা না-রাখার সিদ্ধান্ত কার্যকর করা যেতে পারে। অনলাইন পদ্ধতিতে এবং সংসদ টিভিতে মানসম্মত আকর্ষণীয় পাঠদানের ব্যবস্থাটি কীভাবে সব শিক্ষার্থীর জন্য নিশ্চিত করা যায়, সেটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে গভীরভাবে ভেবে দেখতে হবে। বিশেষত প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইন্টারনেটের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি এবং অনলাইন পদ্ধতিতে শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করার ওপর শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে জোর দিতে হবে। দরিদ্র ও অসচ্ছল পরিবারের শিক্ষার্থীদের শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত রাখার জন্য কিছু প্রণোদনার ব্যবস্থা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করতে হবে।
এ ছাড়া শিক্ষকদেরও আধুনিক পাঠদান পদ্ধতির সঙ্গে প্রশিক্ষিত করে তোলার প্রতি নজর দিতে হবে। ওমিক্রনের সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় রেখেই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে ব্যবস্থা নিতে হবে। কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি প্রতিষ্ঠানগুলোর থাকা বাঞ্ছনীয়। করোনার প্রাদুর্ভাব কমে আসার লক্ষণ দেখামাত্রই যেন শিক্ষার সব স্তরে আমরা মনোযোগ দিতে পারি, সেই সচেতনতা বৃদ্ধির কাজ করতে হবে। মনে রাখতে হবে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের বেশ কিছু ক্ষতি দ্রুত পুষিয়ে নেওয়া গেলেও দেশের সামগ্রিক শিক্ষাব্যবস্থার করোনাজনিত ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা খুবই কঠিন হবে। তবে আমাদের সন্তানদের মানবসম্পদরূপে গড়ে তোলার জন্য শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো এবং মানের সমতা বিধান করা ছাড়া দ্বিতীয় কোনো পথ খোলা নেই।
মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী: অধ্যাপক, ইতিহাসবিদ ও কলামিস্ট

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন অবশেষে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। করোনার তৃতীয় বছরে এটি আমাদের জন্য তৃতীয় ঢেউ। প্রথম ঢেউ ২০২০ সালে যখন আঘাত হানে, তখনই
১৪ জানুয়ারি ২০২২
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন অবশেষে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। করোনার তৃতীয় বছরে এটি আমাদের জন্য তৃতীয় ঢেউ। প্রথম ঢেউ ২০২০ সালে যখন আঘাত হানে, তখনই
১৪ জানুয়ারি ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন অবশেষে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। করোনার তৃতীয় বছরে এটি আমাদের জন্য তৃতীয় ঢেউ। প্রথম ঢেউ ২০২০ সালে যখন আঘাত হানে, তখনই
১৪ জানুয়ারি ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন অবশেষে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। করোনার তৃতীয় বছরে এটি আমাদের জন্য তৃতীয় ঢেউ। প্রথম ঢেউ ২০২০ সালে যখন আঘাত হানে, তখনই
১৪ জানুয়ারি ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২১ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫