জাহীদ রেজা নূর
এই দিন যৌথ বাহিনীর সাফল্য ছিল ঈর্ষণীয়। পশ্চাদপসরণের সময় পাকিস্তানি বাহিনী আশুগঞ্জের ব্রিজ ধ্বংস করে দিয়েছিল। এই কারণে ভোররাত থেকে ভৈরববাজারের তিন-চার মাইল দক্ষিণে ১৪টি হেলিকপ্টারে করে যৌথ বাহিনীর সেনাদের নামানো শুরু হয়। সারা দিন চলে মেঘনা নদী অতিক্রমের অভিযান। এ সময় আশপাশের গ্রাম থেকে হাজার হাজার মানুষ মেঘনা নদী পার করানোর জন্য যৌথ বাহিনীর সেনারা সাহায্যে এগিয়ে আসেন। শত শত নৌকায় যৌথ বাহিনীর মালপত্র নদী পার করে দেয়।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর যে উভচর ট্যাংক ছিল, সেগুলো নির্বিঘ্নে নদী পার হয়ে যায়। নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর আক্রমণে চট্টগ্রাম ও চালনায় পাকিস্তানি বাহিনীর অবস্থা তত দিনে নাজুক হয়ে পড়েছে। মিত্রবাহিনীর হামলায় এই দিন ঢাকা রেডিওর ট্রান্সমিশন ভবন বিধ্বস্ত হয়।
আত্মসমর্পণের কয়েক দিন আগে থেকেই রাও ফরমান আলী বুঝতে পারছিলেন পরাজয় অবশ্যম্ভাবী। তাই যুদ্ধের শেষ দিকে তিনি তাঁর ষড়যন্ত্রে সংহত হন। তিনি ঠান্ডা মাথায় ঠিক করেছিলেন, পরাজিত হলে শত্রুর সর্বোচ্চ ক্ষতি কী করে করা যায়। এই ষড়যন্ত্রের মূল শিকার ছিলেন দেশের বুদ্ধিজীবীরা। এই ষড়যন্ত্র সফল করার জন্য তিনি আলবদর বাহিনীর সহযোগিতা নেন। মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মুজাহিদ, আশরাফুজ্জামান, কামারুজ্জামান, চৌধুরী মঈনুদ্দীন তখন আলবদর বাহিনীর শীর্ষস্থানীয় নেতা। মূলত রাও ফরমান আলীর তালিকা অনুযায়ী (অন্যরাও তালিকা তৈরিতে অবদান রেখেছিল) বাংলাদেশের প্রখ্যাত বুদ্ধিজীবীদের অপহরণ ও হত্যা করতে শুরু করে পাকিস্তানি বাহিনী ও আলবদরের সদস্যরা।
এই দিন প্রখ্যাত সাংবাদিক সিরাজুদ্দীন হোসেনকে বাড়ি থেকে অপহরণ করার মাধ্যমে পাকিস্তানি বাহিনী তাদের অনুচর আলবদরদের সহযোগিতায় বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড শুরু করে।
এই দিন বিকেলে নিউইয়র্কে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী কিসিঞ্জার চীনের রাষ্ট্রদূত হুয়াংহুয়ার সঙ্গে বৈঠক করেন। তিনি ভারতের বিরুদ্ধে চীনকে সাময়িকভাবে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলেন। উপমহাদেশের পরিস্থিতির কারণে চীনের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হলে যুক্তরাষ্ট্র চীনের পাশে থাকবে বলে বলা হয়। যদিও সোভিয়েত আক্রমণের ভয়ে চীন ভারতে সামরিক হামলা থেকে বিরত থাকে।
এই দিন পেট্রলক্রাফট চিত্রাঙ্গদা মোংলায় অবস্থান নেয়। পানভেল, পদ্মা আর পলাশ আরও সামনে এগিয়ে যায়। এ সময় তিনটি জঙ্গি বিমান পদ্মা ও পলাশের ওপর গুলিবর্ষণ করতে থাকে। পলাশের কমান্ডার সবাইকে গানবোট ত্যাগ করার নির্দেশ দেন। কিন্তু রুহুল আমিন পলাশেই থেকে যান এবং গানবোটটি সচল রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করেন। একটি গোলা ইঞ্জিন রুমে আঘাত করলে তা ধ্বংস হয়ে যায়।
রুহুল আমিন নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়েন। আহত অবস্থায় তিনি পাড়ে উঠতে সক্ষম হন। কিন্তু পাকিস্তানি সেনা ও রাজাকারদের সামনে পড়লে তারা তাঁকে নির্মমভাবে হত্যা করে। রুহুল আমিন বীরশ্রেষ্ঠ হিসেবে সম্মান পান।
সূত্র: আমির হোসেন, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ; হাসান ফেরদৌস, মুক্তিযুদ্ধে সোভিয়েত বন্ধুরা; ১৯৭১ সালের ৮ ডিসেম্বরের ইত্তেফাক ও আনন্দবাজার পত্রিকা। মাহমুদুল হক, বাংলাদেশের অভ্যুদয় স্বায়ত্তশাসন থেকে স্বাধীনতা: পাকিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা।
এই দিন যৌথ বাহিনীর সাফল্য ছিল ঈর্ষণীয়। পশ্চাদপসরণের সময় পাকিস্তানি বাহিনী আশুগঞ্জের ব্রিজ ধ্বংস করে দিয়েছিল। এই কারণে ভোররাত থেকে ভৈরববাজারের তিন-চার মাইল দক্ষিণে ১৪টি হেলিকপ্টারে করে যৌথ বাহিনীর সেনাদের নামানো শুরু হয়। সারা দিন চলে মেঘনা নদী অতিক্রমের অভিযান। এ সময় আশপাশের গ্রাম থেকে হাজার হাজার মানুষ মেঘনা নদী পার করানোর জন্য যৌথ বাহিনীর সেনারা সাহায্যে এগিয়ে আসেন। শত শত নৌকায় যৌথ বাহিনীর মালপত্র নদী পার করে দেয়।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর যে উভচর ট্যাংক ছিল, সেগুলো নির্বিঘ্নে নদী পার হয়ে যায়। নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর আক্রমণে চট্টগ্রাম ও চালনায় পাকিস্তানি বাহিনীর অবস্থা তত দিনে নাজুক হয়ে পড়েছে। মিত্রবাহিনীর হামলায় এই দিন ঢাকা রেডিওর ট্রান্সমিশন ভবন বিধ্বস্ত হয়।
আত্মসমর্পণের কয়েক দিন আগে থেকেই রাও ফরমান আলী বুঝতে পারছিলেন পরাজয় অবশ্যম্ভাবী। তাই যুদ্ধের শেষ দিকে তিনি তাঁর ষড়যন্ত্রে সংহত হন। তিনি ঠান্ডা মাথায় ঠিক করেছিলেন, পরাজিত হলে শত্রুর সর্বোচ্চ ক্ষতি কী করে করা যায়। এই ষড়যন্ত্রের মূল শিকার ছিলেন দেশের বুদ্ধিজীবীরা। এই ষড়যন্ত্র সফল করার জন্য তিনি আলবদর বাহিনীর সহযোগিতা নেন। মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মুজাহিদ, আশরাফুজ্জামান, কামারুজ্জামান, চৌধুরী মঈনুদ্দীন তখন আলবদর বাহিনীর শীর্ষস্থানীয় নেতা। মূলত রাও ফরমান আলীর তালিকা অনুযায়ী (অন্যরাও তালিকা তৈরিতে অবদান রেখেছিল) বাংলাদেশের প্রখ্যাত বুদ্ধিজীবীদের অপহরণ ও হত্যা করতে শুরু করে পাকিস্তানি বাহিনী ও আলবদরের সদস্যরা।
এই দিন প্রখ্যাত সাংবাদিক সিরাজুদ্দীন হোসেনকে বাড়ি থেকে অপহরণ করার মাধ্যমে পাকিস্তানি বাহিনী তাদের অনুচর আলবদরদের সহযোগিতায় বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড শুরু করে।
এই দিন বিকেলে নিউইয়র্কে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী কিসিঞ্জার চীনের রাষ্ট্রদূত হুয়াংহুয়ার সঙ্গে বৈঠক করেন। তিনি ভারতের বিরুদ্ধে চীনকে সাময়িকভাবে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলেন। উপমহাদেশের পরিস্থিতির কারণে চীনের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হলে যুক্তরাষ্ট্র চীনের পাশে থাকবে বলে বলা হয়। যদিও সোভিয়েত আক্রমণের ভয়ে চীন ভারতে সামরিক হামলা থেকে বিরত থাকে।
এই দিন পেট্রলক্রাফট চিত্রাঙ্গদা মোংলায় অবস্থান নেয়। পানভেল, পদ্মা আর পলাশ আরও সামনে এগিয়ে যায়। এ সময় তিনটি জঙ্গি বিমান পদ্মা ও পলাশের ওপর গুলিবর্ষণ করতে থাকে। পলাশের কমান্ডার সবাইকে গানবোট ত্যাগ করার নির্দেশ দেন। কিন্তু রুহুল আমিন পলাশেই থেকে যান এবং গানবোটটি সচল রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করেন। একটি গোলা ইঞ্জিন রুমে আঘাত করলে তা ধ্বংস হয়ে যায়।
রুহুল আমিন নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়েন। আহত অবস্থায় তিনি পাড়ে উঠতে সক্ষম হন। কিন্তু পাকিস্তানি সেনা ও রাজাকারদের সামনে পড়লে তারা তাঁকে নির্মমভাবে হত্যা করে। রুহুল আমিন বীরশ্রেষ্ঠ হিসেবে সম্মান পান।
সূত্র: আমির হোসেন, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ; হাসান ফেরদৌস, মুক্তিযুদ্ধে সোভিয়েত বন্ধুরা; ১৯৭১ সালের ৮ ডিসেম্বরের ইত্তেফাক ও আনন্দবাজার পত্রিকা। মাহমুদুল হক, বাংলাদেশের অভ্যুদয় স্বায়ত্তশাসন থেকে স্বাধীনতা: পাকিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা।
বিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
১৬ দিন আগেগাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪দেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
২০ নভেম্বর ২০২৪