মহিউদ্দিন খান মোহন

আজকের পত্রিকায় ১৭ অক্টোবর ‘ডিসিদের বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটে চায় সরকার’ শীর্ষ খবরটি সচেতন ব্যক্তিদের নজর যেমন কেড়েছে, তেমনি কিছু প্রশ্নও জন্ম দিয়েছে। খবরে বলা হয়েছে, সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পরিচালনা কমিটিতে জেলা প্রশাসকদের নিয়োগ দিতে চায় সরকার। আর এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে (ইউজিসি) চিঠি দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ। খবরে উল্লেখ করা হয়েছে, গত জানুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত জেলা প্রশাসকদের সম্মেলনে ডিসিদের বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের সদস্য করার দাবি উঠেছিল। সেই দাবি পূরণ করতেই সরকার এ অবিমৃশ্যকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে মনে করছেন বিজ্ঞজনেরা।
বিদ্যমান আইনে ডিসিদের বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটে সম্পৃক্ত করা সম্ভব নয় বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন ইউজিসি কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষাবিদেরা। এ ব্যাপারে ইউজিসির সাবেক চেয়ারম্যান এবং শিক্ষাবিদ অধ্যাপক আবদুল মান্নান আজকের পত্রিকাকে বলেছেন, এটা একেবারেই অনাকাঙ্ক্ষিত। শিক্ষাবিদ ও শিক্ষক ছাড়া কাউকে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটে যুক্ত করার উদ্যোগ ভালো ফল বয়ে আনবে না।
একই রকম অভিমত ব্যক্ত করেছেন সরকার-সমর্থক চিকিৎসক সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সভাপতি অধ্যাপক ইকবাল আর্সলান। তিনি বলেছেন, ‘সরকারের এমন সিদ্ধান্ত মেডিকেল কলেজগুলোর ধ্বংস ডেকে আনবে। চিকিৎসাব্যবস্থার জন্য এটি খুবই খারাপ পদক্ষেপ।’ দেশের বিশিষ্টজন, শিক্ষাবিদ এবং শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা যখন ডিসিদের বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটে অন্তর্ভুক্তির বিরোধিতা করছেন, তখন সরকার কেন এমন একটি পদক্ষেপ নিয়েছে, তা নিয়ে চলছে জল্পনা-কল্পনা।
এখানে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের বর্তমান গঠনপ্রণালির দিকে একটু দৃষ্টিপাত করতে পারি। বিদ্যমান বিশ্ববিদ্যালয় আইনে সিন্ডিকেট সদস্যসংখ্যা নির্দিষ্ট করা আছে ১৮ জন। তাঁদের মধ্যে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর, দুজন প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর, উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা একজন (যুগ্ম সচিব বা তদূর্ধ্ব, সরকার কর্তৃক মনোনীত), চ্যান্সেলর কর্তৃক মনোনীত তিনজন, সিনেট কর্তৃক মনোনীত একজন, একাডেমিক কাউন্সিল মনোনীত দুজন (কলেজ অধ্যক্ষ)। এ ছাড়া সিনেট কর্তৃক নির্বাচিত দুজন (একজন সিনেট সদস্য, একজন রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট) এবং শিক্ষক কর্তৃক নির্বাচিত ছয়জন। এই অর্গানোগ্রামের কোথাও কি ডিসিদের অন্তর্ভুক্তির সুযোগ আছে? ডিসিদের বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটে অন্তর্ভুক্ত করতে হলে বিশ্ববিদ্যালয় আইন পরিবর্তন করতে হবে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, কেন সেই আইনের অনাবশ্যক পরিবর্তন আনতে যাবে সরকার? বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটে ডিসিদের অন্তর্ভুক্ত করা হলে কী এমন ফায়দা হবে? কিংবা তাঁরা সিন্ডিকেটে না থাকায় কী এমন সর্বনাশ হয়ে যাচ্ছে, যা তাঁরা উদ্ধার করবেন?
আজকের পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, সম্মেলনে ডিসিরা যুক্তি দেখান, বিভিন্ন জেলার বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তা নিরসনে তাঁরা কোনো ভূমিকা পালন করতে পারেন না। তাই তাঁদের এ আবদার। মূল কারণটা এখানেই। জেলার সব কাজে সবখানে তাঁরা কর্তৃত্ব করেন। তাই বিশ্ববিদ্যালয় কেন বাকি থাকবে? কর্তৃত্ববাদিতা আমাদের সরকারি আমলাদের এমনভাবে আচ্ছন্ন করেছে যে তাঁরা সবখানে মাতব্বরি ফলানোর মওকা খোঁজার চেষ্টা করেন। তাঁর জেলায় বিশ্ববিদ্যালয়, অথচ তিনি সেই প্রতিষ্ঠানের কোনো কর্মকাণ্ডে শরিক হতে পারেন না, এটা বড়ই মর্মযাতনার বিষয়। অথচ আমাদের রাষ্ট্রব্যবস্থায় ডিসিরা প্রভূত ক্ষমতা ভোগ করে থাকেন। সরকারি-বেসরকারি প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে তাঁদের রয়েছে প্রভূত প্রভুত্ব। ১৭ অক্টোবর অপর একটি দৈনিকের ‘অগাধ ক্ষমতায় দাপট ডিসি-ইউএনওদের’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একজন ডিসি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি থেকে শুরু করে রাজস্ব, বিনোদন, উন্নয়ন, জেলখানা, নির্বাচনসহ ৬২টি ক্যাটাগরিতে তিন শতাধিক বিষয়ে ক্ষমতাপ্রাপ্ত। একইভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারাও প্রায় একই ধরনের কর্তৃত্বের অধিকারী। এ ছাড়া স্থানীয় বেসরকারি অনেক কলেজে ডিসি এবং স্কুলের ম্যানেজিং কমিটিতে ইউএনওরা সভাপতির পদ অলংকৃত করে থাকেন। তারপরও তাঁদের যেন তুষ্টি নেই। এখন ভাগ বসাতে উদ্যত হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সিন্ডিকেটে।
ডিসি-ইউএনওদের অতিমাত্রায় ক্ষমতালিপ্সা সচেতন ব্যক্তিদের ভাবিয়ে তুলেছে। এ কথা সর্বজনবিদিত যে ডিসি-ইউএনওরা কার্যত এখন দেশের দণ্ডমুণ্ডের কর্তা। তাঁরা এতটাই উদ্ধত যে মন্ত্রী-এমপিদেরও থোড়াই কেয়ার করেন। অতিসম্প্রতি নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে ডিসি-এসপিদের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ দেশবাসীকে বিস্মিত করেছে। পদমর্যাদায় অনেক ধাপ নিচের হওয়া সত্ত্বেও সেই বৈঠকে ডিসি-এসপিরা যে ঔদ্ধত্য প্রদর্শন করেছেন নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে, তাতে তাঁদের ড্যামকেয়ার ভাবই স্পষ্ট হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনাররা সাংবিধানিক পদে নিয়োজিত। আর ডিসি-এসপিরা মাঠপর্যায়ের পাবলিক সার্ভেন্ট। সুতরাং তাঁরা যখন ‘কুচ পরোয়া নেহি’ ভাব দেখিয়ে একজন নির্বাচন কমিশনারকে বক্তৃতা বন্ধ করে দিতে বাধ্য করেন, তখন বুঝতে কষ্ট হয় না, আমলাতন্ত্রের আগ্রাসন কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে। ডিসি-ইউএনওদের ভাবসাব এবং ক্ষমতার ব্যবহার-অপব্যবহার দেখলে মনে হয়, তাঁরা জেলা-উপজেলার জমিদার-তালুকদার। ডিসি জেলার জমিদারিপ্রাপ্ত, আর তাঁদের কাছ থেকে উপজেলার তালুক কিনেছেন ইউএনওরা। সংশ্লিষ্ট এলাকায় ‘তিনাদের’ কথার ওপরে কথা বলার অধিকার যেন কারও নেই। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় ডিসি-ইউএনওদের কীর্তি-কুকীর্তির যেসব নজির স্থাপিত হয়েছে, তা যে প্রজাতন্ত্রের জন্য শুভ লক্ষণ নয়, তা বলাই বাহুল্য।
কিন্তু প্রশ্ন হলো, কেন এমন হচ্ছে? এমনিতে আমরা হরহামেশা শুনতে পাই রাজনীতিকে, শাসনব্যবস্থাকে, প্রজাতন্ত্রকে আমলাতন্ত্রের কবল থেকে মুক্ত করা হবে। কিন্তু কার্যত তার কোনো নিশানা দেখা যায় না; বরং যতই দিন যাচ্ছে, আমলাতন্ত্র ততই চেপে বসছে জাতির ঘাড়ে। দেশে এখন রাজনৈতিক সরকার বিদ্যমান। সামরিক শাসকেরা আমলাদের ওপর নির্ভর করেন। কিন্তু একটি গণতান্ত্রিক সরকার কেন আমলাদের বাড়বাড়ন্তকে প্রশ্রয় দেবে? তাহলে কি সরকার পুরোপুরি আমলানির্ভর হয়ে পড়েছে? ছোট-বড় আমলারা যেসব দাবি তুলছেন, সরকার সেগুলো একরকম বিনা বাক্য ব্যয়েই মেনে নিচ্ছে। মাঠপর্যায়ে খবরদারি তো আছেই, তাঁরা এখন রাজনৈতিক ক্ষেত্রেই মাতব্বরি ফলাতে শুরু করেছেন। এ নিয়ে এ পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘটে যাওয়া অপ্রীতিকর ঘটনার কথা সবারই জানা। বরিশালের মেয়রের সঙ্গে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কিংবা ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে স্থানীয় সংসদ সদস্য নিক্সন চৌধুরীর লড়াইয়ের স্মৃতি এখনো তরতাজা।
সচেতন ব্যক্তিরা মনে করেন, রাষ্ট্রীয় বা সরকারি বিভিন্ন কাজে জনপ্রতিনিধিদের চেয়ে আমলাদের বেশি প্রাধান্য দেওয়ায় তাঁরা নিজেদের সর্বেসর্বা মনে করতে শুরু করেছেন। জেলা পরিষদ এবং উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানরা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হলেও ডিসি-ইউএনওরা তাঁদের কোনো পাত্তাই দিতে চান না। সবারই স্মরণ থাকার কথা, করোনাকালে দুর্যোগে ত্রাণ তৎপরতার দায়িত্ব মন্ত্রী, এমপি, জেলা পরিষদ কিংবা উপজেলা চেয়ারম্যানদের না দিয়ে সচিব, ডিসি ও ইউএনওদের দেওয়া হয়েছিল। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের প্রতি এই অবজ্ঞা আমলাদের জন্য একরকম আশকারা। রাজনৈতিক সরকার যখন রাজনীতিকদের চেয়ে আমলাদের বেশি তোয়াজ করবে, তখন আমলারা যে কাঁধে চড়ে বসতে চাইবেন, তাতে আর বিচিত্র কী!
আরেকটি বিষয় প্রাসঙ্গিকভাবে এসে যায়। প্রতিবছর ডিসি-এসপি সম্মেলন হয়। সেই সম্মেলনে তাঁরা সরকারের কাছে ‘চার্টার অব ডিমান্ড’-এর মতো দাবিনামা পেশ করে থাকেন। এটা কি সরকারি চাকরিবাকরির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ? ডিসি-এসপিরা তো কলকারখানার শ্রমিক-কর্মচারী নন। তাঁদের কোনো
ট্রেড ইউনিয়নও নেই। তাহলে কোন আইনে তাঁরা ওই সব দাবিনামা হাজির করে সরকারকে তা মেনে নেওয়ার জন্য দাবি জানান?
আজকের পত্রিকার খবরটি পাঠ করে একজন মন্তব্য করলেন, ডিসিরা আজ বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটে ঢুকতে চাইছেন। আর সরকারও তাতে প্রায় সম্মতি দিয়ে ফেলেছে। এভাবে যদি আমলাদের অযৌক্তিক আবদার সরকার মেনে নিতে থাকে, তাহলে হয়তো একদিন তাঁরা সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে থাকতে চাইবেন। এমনকি তাঁরা যদি জাতীয় সংসদে ‘সংরক্ষিত আমলা কোটা’ রাখার দাবি তোলেন, অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
মহিউদ্দিন খান মোহন, সাংবাদিক ও রাজনীতি বিশ্লেষক

আজকের পত্রিকায় ১৭ অক্টোবর ‘ডিসিদের বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটে চায় সরকার’ শীর্ষ খবরটি সচেতন ব্যক্তিদের নজর যেমন কেড়েছে, তেমনি কিছু প্রশ্নও জন্ম দিয়েছে। খবরে বলা হয়েছে, সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পরিচালনা কমিটিতে জেলা প্রশাসকদের নিয়োগ দিতে চায় সরকার। আর এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে (ইউজিসি) চিঠি দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ। খবরে উল্লেখ করা হয়েছে, গত জানুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত জেলা প্রশাসকদের সম্মেলনে ডিসিদের বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের সদস্য করার দাবি উঠেছিল। সেই দাবি পূরণ করতেই সরকার এ অবিমৃশ্যকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে মনে করছেন বিজ্ঞজনেরা।
বিদ্যমান আইনে ডিসিদের বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটে সম্পৃক্ত করা সম্ভব নয় বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন ইউজিসি কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষাবিদেরা। এ ব্যাপারে ইউজিসির সাবেক চেয়ারম্যান এবং শিক্ষাবিদ অধ্যাপক আবদুল মান্নান আজকের পত্রিকাকে বলেছেন, এটা একেবারেই অনাকাঙ্ক্ষিত। শিক্ষাবিদ ও শিক্ষক ছাড়া কাউকে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটে যুক্ত করার উদ্যোগ ভালো ফল বয়ে আনবে না।
একই রকম অভিমত ব্যক্ত করেছেন সরকার-সমর্থক চিকিৎসক সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সভাপতি অধ্যাপক ইকবাল আর্সলান। তিনি বলেছেন, ‘সরকারের এমন সিদ্ধান্ত মেডিকেল কলেজগুলোর ধ্বংস ডেকে আনবে। চিকিৎসাব্যবস্থার জন্য এটি খুবই খারাপ পদক্ষেপ।’ দেশের বিশিষ্টজন, শিক্ষাবিদ এবং শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা যখন ডিসিদের বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটে অন্তর্ভুক্তির বিরোধিতা করছেন, তখন সরকার কেন এমন একটি পদক্ষেপ নিয়েছে, তা নিয়ে চলছে জল্পনা-কল্পনা।
এখানে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের বর্তমান গঠনপ্রণালির দিকে একটু দৃষ্টিপাত করতে পারি। বিদ্যমান বিশ্ববিদ্যালয় আইনে সিন্ডিকেট সদস্যসংখ্যা নির্দিষ্ট করা আছে ১৮ জন। তাঁদের মধ্যে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর, দুজন প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর, উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা একজন (যুগ্ম সচিব বা তদূর্ধ্ব, সরকার কর্তৃক মনোনীত), চ্যান্সেলর কর্তৃক মনোনীত তিনজন, সিনেট কর্তৃক মনোনীত একজন, একাডেমিক কাউন্সিল মনোনীত দুজন (কলেজ অধ্যক্ষ)। এ ছাড়া সিনেট কর্তৃক নির্বাচিত দুজন (একজন সিনেট সদস্য, একজন রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট) এবং শিক্ষক কর্তৃক নির্বাচিত ছয়জন। এই অর্গানোগ্রামের কোথাও কি ডিসিদের অন্তর্ভুক্তির সুযোগ আছে? ডিসিদের বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটে অন্তর্ভুক্ত করতে হলে বিশ্ববিদ্যালয় আইন পরিবর্তন করতে হবে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, কেন সেই আইনের অনাবশ্যক পরিবর্তন আনতে যাবে সরকার? বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটে ডিসিদের অন্তর্ভুক্ত করা হলে কী এমন ফায়দা হবে? কিংবা তাঁরা সিন্ডিকেটে না থাকায় কী এমন সর্বনাশ হয়ে যাচ্ছে, যা তাঁরা উদ্ধার করবেন?
আজকের পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, সম্মেলনে ডিসিরা যুক্তি দেখান, বিভিন্ন জেলার বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তা নিরসনে তাঁরা কোনো ভূমিকা পালন করতে পারেন না। তাই তাঁদের এ আবদার। মূল কারণটা এখানেই। জেলার সব কাজে সবখানে তাঁরা কর্তৃত্ব করেন। তাই বিশ্ববিদ্যালয় কেন বাকি থাকবে? কর্তৃত্ববাদিতা আমাদের সরকারি আমলাদের এমনভাবে আচ্ছন্ন করেছে যে তাঁরা সবখানে মাতব্বরি ফলানোর মওকা খোঁজার চেষ্টা করেন। তাঁর জেলায় বিশ্ববিদ্যালয়, অথচ তিনি সেই প্রতিষ্ঠানের কোনো কর্মকাণ্ডে শরিক হতে পারেন না, এটা বড়ই মর্মযাতনার বিষয়। অথচ আমাদের রাষ্ট্রব্যবস্থায় ডিসিরা প্রভূত ক্ষমতা ভোগ করে থাকেন। সরকারি-বেসরকারি প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে তাঁদের রয়েছে প্রভূত প্রভুত্ব। ১৭ অক্টোবর অপর একটি দৈনিকের ‘অগাধ ক্ষমতায় দাপট ডিসি-ইউএনওদের’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একজন ডিসি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি থেকে শুরু করে রাজস্ব, বিনোদন, উন্নয়ন, জেলখানা, নির্বাচনসহ ৬২টি ক্যাটাগরিতে তিন শতাধিক বিষয়ে ক্ষমতাপ্রাপ্ত। একইভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারাও প্রায় একই ধরনের কর্তৃত্বের অধিকারী। এ ছাড়া স্থানীয় বেসরকারি অনেক কলেজে ডিসি এবং স্কুলের ম্যানেজিং কমিটিতে ইউএনওরা সভাপতির পদ অলংকৃত করে থাকেন। তারপরও তাঁদের যেন তুষ্টি নেই। এখন ভাগ বসাতে উদ্যত হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সিন্ডিকেটে।
ডিসি-ইউএনওদের অতিমাত্রায় ক্ষমতালিপ্সা সচেতন ব্যক্তিদের ভাবিয়ে তুলেছে। এ কথা সর্বজনবিদিত যে ডিসি-ইউএনওরা কার্যত এখন দেশের দণ্ডমুণ্ডের কর্তা। তাঁরা এতটাই উদ্ধত যে মন্ত্রী-এমপিদেরও থোড়াই কেয়ার করেন। অতিসম্প্রতি নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে ডিসি-এসপিদের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ দেশবাসীকে বিস্মিত করেছে। পদমর্যাদায় অনেক ধাপ নিচের হওয়া সত্ত্বেও সেই বৈঠকে ডিসি-এসপিরা যে ঔদ্ধত্য প্রদর্শন করেছেন নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে, তাতে তাঁদের ড্যামকেয়ার ভাবই স্পষ্ট হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনাররা সাংবিধানিক পদে নিয়োজিত। আর ডিসি-এসপিরা মাঠপর্যায়ের পাবলিক সার্ভেন্ট। সুতরাং তাঁরা যখন ‘কুচ পরোয়া নেহি’ ভাব দেখিয়ে একজন নির্বাচন কমিশনারকে বক্তৃতা বন্ধ করে দিতে বাধ্য করেন, তখন বুঝতে কষ্ট হয় না, আমলাতন্ত্রের আগ্রাসন কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে। ডিসি-ইউএনওদের ভাবসাব এবং ক্ষমতার ব্যবহার-অপব্যবহার দেখলে মনে হয়, তাঁরা জেলা-উপজেলার জমিদার-তালুকদার। ডিসি জেলার জমিদারিপ্রাপ্ত, আর তাঁদের কাছ থেকে উপজেলার তালুক কিনেছেন ইউএনওরা। সংশ্লিষ্ট এলাকায় ‘তিনাদের’ কথার ওপরে কথা বলার অধিকার যেন কারও নেই। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় ডিসি-ইউএনওদের কীর্তি-কুকীর্তির যেসব নজির স্থাপিত হয়েছে, তা যে প্রজাতন্ত্রের জন্য শুভ লক্ষণ নয়, তা বলাই বাহুল্য।
কিন্তু প্রশ্ন হলো, কেন এমন হচ্ছে? এমনিতে আমরা হরহামেশা শুনতে পাই রাজনীতিকে, শাসনব্যবস্থাকে, প্রজাতন্ত্রকে আমলাতন্ত্রের কবল থেকে মুক্ত করা হবে। কিন্তু কার্যত তার কোনো নিশানা দেখা যায় না; বরং যতই দিন যাচ্ছে, আমলাতন্ত্র ততই চেপে বসছে জাতির ঘাড়ে। দেশে এখন রাজনৈতিক সরকার বিদ্যমান। সামরিক শাসকেরা আমলাদের ওপর নির্ভর করেন। কিন্তু একটি গণতান্ত্রিক সরকার কেন আমলাদের বাড়বাড়ন্তকে প্রশ্রয় দেবে? তাহলে কি সরকার পুরোপুরি আমলানির্ভর হয়ে পড়েছে? ছোট-বড় আমলারা যেসব দাবি তুলছেন, সরকার সেগুলো একরকম বিনা বাক্য ব্যয়েই মেনে নিচ্ছে। মাঠপর্যায়ে খবরদারি তো আছেই, তাঁরা এখন রাজনৈতিক ক্ষেত্রেই মাতব্বরি ফলাতে শুরু করেছেন। এ নিয়ে এ পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘটে যাওয়া অপ্রীতিকর ঘটনার কথা সবারই জানা। বরিশালের মেয়রের সঙ্গে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কিংবা ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে স্থানীয় সংসদ সদস্য নিক্সন চৌধুরীর লড়াইয়ের স্মৃতি এখনো তরতাজা।
সচেতন ব্যক্তিরা মনে করেন, রাষ্ট্রীয় বা সরকারি বিভিন্ন কাজে জনপ্রতিনিধিদের চেয়ে আমলাদের বেশি প্রাধান্য দেওয়ায় তাঁরা নিজেদের সর্বেসর্বা মনে করতে শুরু করেছেন। জেলা পরিষদ এবং উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানরা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হলেও ডিসি-ইউএনওরা তাঁদের কোনো পাত্তাই দিতে চান না। সবারই স্মরণ থাকার কথা, করোনাকালে দুর্যোগে ত্রাণ তৎপরতার দায়িত্ব মন্ত্রী, এমপি, জেলা পরিষদ কিংবা উপজেলা চেয়ারম্যানদের না দিয়ে সচিব, ডিসি ও ইউএনওদের দেওয়া হয়েছিল। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের প্রতি এই অবজ্ঞা আমলাদের জন্য একরকম আশকারা। রাজনৈতিক সরকার যখন রাজনীতিকদের চেয়ে আমলাদের বেশি তোয়াজ করবে, তখন আমলারা যে কাঁধে চড়ে বসতে চাইবেন, তাতে আর বিচিত্র কী!
আরেকটি বিষয় প্রাসঙ্গিকভাবে এসে যায়। প্রতিবছর ডিসি-এসপি সম্মেলন হয়। সেই সম্মেলনে তাঁরা সরকারের কাছে ‘চার্টার অব ডিমান্ড’-এর মতো দাবিনামা পেশ করে থাকেন। এটা কি সরকারি চাকরিবাকরির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ? ডিসি-এসপিরা তো কলকারখানার শ্রমিক-কর্মচারী নন। তাঁদের কোনো
ট্রেড ইউনিয়নও নেই। তাহলে কোন আইনে তাঁরা ওই সব দাবিনামা হাজির করে সরকারকে তা মেনে নেওয়ার জন্য দাবি জানান?
আজকের পত্রিকার খবরটি পাঠ করে একজন মন্তব্য করলেন, ডিসিরা আজ বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটে ঢুকতে চাইছেন। আর সরকারও তাতে প্রায় সম্মতি দিয়ে ফেলেছে। এভাবে যদি আমলাদের অযৌক্তিক আবদার সরকার মেনে নিতে থাকে, তাহলে হয়তো একদিন তাঁরা সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে থাকতে চাইবেন। এমনকি তাঁরা যদি জাতীয় সংসদে ‘সংরক্ষিত আমলা কোটা’ রাখার দাবি তোলেন, অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
মহিউদ্দিন খান মোহন, সাংবাদিক ও রাজনীতি বিশ্লেষক
মহিউদ্দিন খান মোহন

আজকের পত্রিকায় ১৭ অক্টোবর ‘ডিসিদের বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটে চায় সরকার’ শীর্ষ খবরটি সচেতন ব্যক্তিদের নজর যেমন কেড়েছে, তেমনি কিছু প্রশ্নও জন্ম দিয়েছে। খবরে বলা হয়েছে, সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পরিচালনা কমিটিতে জেলা প্রশাসকদের নিয়োগ দিতে চায় সরকার। আর এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে (ইউজিসি) চিঠি দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ। খবরে উল্লেখ করা হয়েছে, গত জানুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত জেলা প্রশাসকদের সম্মেলনে ডিসিদের বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের সদস্য করার দাবি উঠেছিল। সেই দাবি পূরণ করতেই সরকার এ অবিমৃশ্যকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে মনে করছেন বিজ্ঞজনেরা।
বিদ্যমান আইনে ডিসিদের বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটে সম্পৃক্ত করা সম্ভব নয় বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন ইউজিসি কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষাবিদেরা। এ ব্যাপারে ইউজিসির সাবেক চেয়ারম্যান এবং শিক্ষাবিদ অধ্যাপক আবদুল মান্নান আজকের পত্রিকাকে বলেছেন, এটা একেবারেই অনাকাঙ্ক্ষিত। শিক্ষাবিদ ও শিক্ষক ছাড়া কাউকে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটে যুক্ত করার উদ্যোগ ভালো ফল বয়ে আনবে না।
একই রকম অভিমত ব্যক্ত করেছেন সরকার-সমর্থক চিকিৎসক সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সভাপতি অধ্যাপক ইকবাল আর্সলান। তিনি বলেছেন, ‘সরকারের এমন সিদ্ধান্ত মেডিকেল কলেজগুলোর ধ্বংস ডেকে আনবে। চিকিৎসাব্যবস্থার জন্য এটি খুবই খারাপ পদক্ষেপ।’ দেশের বিশিষ্টজন, শিক্ষাবিদ এবং শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা যখন ডিসিদের বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটে অন্তর্ভুক্তির বিরোধিতা করছেন, তখন সরকার কেন এমন একটি পদক্ষেপ নিয়েছে, তা নিয়ে চলছে জল্পনা-কল্পনা।
এখানে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের বর্তমান গঠনপ্রণালির দিকে একটু দৃষ্টিপাত করতে পারি। বিদ্যমান বিশ্ববিদ্যালয় আইনে সিন্ডিকেট সদস্যসংখ্যা নির্দিষ্ট করা আছে ১৮ জন। তাঁদের মধ্যে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর, দুজন প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর, উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা একজন (যুগ্ম সচিব বা তদূর্ধ্ব, সরকার কর্তৃক মনোনীত), চ্যান্সেলর কর্তৃক মনোনীত তিনজন, সিনেট কর্তৃক মনোনীত একজন, একাডেমিক কাউন্সিল মনোনীত দুজন (কলেজ অধ্যক্ষ)। এ ছাড়া সিনেট কর্তৃক নির্বাচিত দুজন (একজন সিনেট সদস্য, একজন রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট) এবং শিক্ষক কর্তৃক নির্বাচিত ছয়জন। এই অর্গানোগ্রামের কোথাও কি ডিসিদের অন্তর্ভুক্তির সুযোগ আছে? ডিসিদের বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটে অন্তর্ভুক্ত করতে হলে বিশ্ববিদ্যালয় আইন পরিবর্তন করতে হবে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, কেন সেই আইনের অনাবশ্যক পরিবর্তন আনতে যাবে সরকার? বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটে ডিসিদের অন্তর্ভুক্ত করা হলে কী এমন ফায়দা হবে? কিংবা তাঁরা সিন্ডিকেটে না থাকায় কী এমন সর্বনাশ হয়ে যাচ্ছে, যা তাঁরা উদ্ধার করবেন?
আজকের পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, সম্মেলনে ডিসিরা যুক্তি দেখান, বিভিন্ন জেলার বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তা নিরসনে তাঁরা কোনো ভূমিকা পালন করতে পারেন না। তাই তাঁদের এ আবদার। মূল কারণটা এখানেই। জেলার সব কাজে সবখানে তাঁরা কর্তৃত্ব করেন। তাই বিশ্ববিদ্যালয় কেন বাকি থাকবে? কর্তৃত্ববাদিতা আমাদের সরকারি আমলাদের এমনভাবে আচ্ছন্ন করেছে যে তাঁরা সবখানে মাতব্বরি ফলানোর মওকা খোঁজার চেষ্টা করেন। তাঁর জেলায় বিশ্ববিদ্যালয়, অথচ তিনি সেই প্রতিষ্ঠানের কোনো কর্মকাণ্ডে শরিক হতে পারেন না, এটা বড়ই মর্মযাতনার বিষয়। অথচ আমাদের রাষ্ট্রব্যবস্থায় ডিসিরা প্রভূত ক্ষমতা ভোগ করে থাকেন। সরকারি-বেসরকারি প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে তাঁদের রয়েছে প্রভূত প্রভুত্ব। ১৭ অক্টোবর অপর একটি দৈনিকের ‘অগাধ ক্ষমতায় দাপট ডিসি-ইউএনওদের’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একজন ডিসি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি থেকে শুরু করে রাজস্ব, বিনোদন, উন্নয়ন, জেলখানা, নির্বাচনসহ ৬২টি ক্যাটাগরিতে তিন শতাধিক বিষয়ে ক্ষমতাপ্রাপ্ত। একইভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারাও প্রায় একই ধরনের কর্তৃত্বের অধিকারী। এ ছাড়া স্থানীয় বেসরকারি অনেক কলেজে ডিসি এবং স্কুলের ম্যানেজিং কমিটিতে ইউএনওরা সভাপতির পদ অলংকৃত করে থাকেন। তারপরও তাঁদের যেন তুষ্টি নেই। এখন ভাগ বসাতে উদ্যত হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সিন্ডিকেটে।
ডিসি-ইউএনওদের অতিমাত্রায় ক্ষমতালিপ্সা সচেতন ব্যক্তিদের ভাবিয়ে তুলেছে। এ কথা সর্বজনবিদিত যে ডিসি-ইউএনওরা কার্যত এখন দেশের দণ্ডমুণ্ডের কর্তা। তাঁরা এতটাই উদ্ধত যে মন্ত্রী-এমপিদেরও থোড়াই কেয়ার করেন। অতিসম্প্রতি নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে ডিসি-এসপিদের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ দেশবাসীকে বিস্মিত করেছে। পদমর্যাদায় অনেক ধাপ নিচের হওয়া সত্ত্বেও সেই বৈঠকে ডিসি-এসপিরা যে ঔদ্ধত্য প্রদর্শন করেছেন নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে, তাতে তাঁদের ড্যামকেয়ার ভাবই স্পষ্ট হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনাররা সাংবিধানিক পদে নিয়োজিত। আর ডিসি-এসপিরা মাঠপর্যায়ের পাবলিক সার্ভেন্ট। সুতরাং তাঁরা যখন ‘কুচ পরোয়া নেহি’ ভাব দেখিয়ে একজন নির্বাচন কমিশনারকে বক্তৃতা বন্ধ করে দিতে বাধ্য করেন, তখন বুঝতে কষ্ট হয় না, আমলাতন্ত্রের আগ্রাসন কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে। ডিসি-ইউএনওদের ভাবসাব এবং ক্ষমতার ব্যবহার-অপব্যবহার দেখলে মনে হয়, তাঁরা জেলা-উপজেলার জমিদার-তালুকদার। ডিসি জেলার জমিদারিপ্রাপ্ত, আর তাঁদের কাছ থেকে উপজেলার তালুক কিনেছেন ইউএনওরা। সংশ্লিষ্ট এলাকায় ‘তিনাদের’ কথার ওপরে কথা বলার অধিকার যেন কারও নেই। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় ডিসি-ইউএনওদের কীর্তি-কুকীর্তির যেসব নজির স্থাপিত হয়েছে, তা যে প্রজাতন্ত্রের জন্য শুভ লক্ষণ নয়, তা বলাই বাহুল্য।
কিন্তু প্রশ্ন হলো, কেন এমন হচ্ছে? এমনিতে আমরা হরহামেশা শুনতে পাই রাজনীতিকে, শাসনব্যবস্থাকে, প্রজাতন্ত্রকে আমলাতন্ত্রের কবল থেকে মুক্ত করা হবে। কিন্তু কার্যত তার কোনো নিশানা দেখা যায় না; বরং যতই দিন যাচ্ছে, আমলাতন্ত্র ততই চেপে বসছে জাতির ঘাড়ে। দেশে এখন রাজনৈতিক সরকার বিদ্যমান। সামরিক শাসকেরা আমলাদের ওপর নির্ভর করেন। কিন্তু একটি গণতান্ত্রিক সরকার কেন আমলাদের বাড়বাড়ন্তকে প্রশ্রয় দেবে? তাহলে কি সরকার পুরোপুরি আমলানির্ভর হয়ে পড়েছে? ছোট-বড় আমলারা যেসব দাবি তুলছেন, সরকার সেগুলো একরকম বিনা বাক্য ব্যয়েই মেনে নিচ্ছে। মাঠপর্যায়ে খবরদারি তো আছেই, তাঁরা এখন রাজনৈতিক ক্ষেত্রেই মাতব্বরি ফলাতে শুরু করেছেন। এ নিয়ে এ পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘটে যাওয়া অপ্রীতিকর ঘটনার কথা সবারই জানা। বরিশালের মেয়রের সঙ্গে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কিংবা ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে স্থানীয় সংসদ সদস্য নিক্সন চৌধুরীর লড়াইয়ের স্মৃতি এখনো তরতাজা।
সচেতন ব্যক্তিরা মনে করেন, রাষ্ট্রীয় বা সরকারি বিভিন্ন কাজে জনপ্রতিনিধিদের চেয়ে আমলাদের বেশি প্রাধান্য দেওয়ায় তাঁরা নিজেদের সর্বেসর্বা মনে করতে শুরু করেছেন। জেলা পরিষদ এবং উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানরা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হলেও ডিসি-ইউএনওরা তাঁদের কোনো পাত্তাই দিতে চান না। সবারই স্মরণ থাকার কথা, করোনাকালে দুর্যোগে ত্রাণ তৎপরতার দায়িত্ব মন্ত্রী, এমপি, জেলা পরিষদ কিংবা উপজেলা চেয়ারম্যানদের না দিয়ে সচিব, ডিসি ও ইউএনওদের দেওয়া হয়েছিল। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের প্রতি এই অবজ্ঞা আমলাদের জন্য একরকম আশকারা। রাজনৈতিক সরকার যখন রাজনীতিকদের চেয়ে আমলাদের বেশি তোয়াজ করবে, তখন আমলারা যে কাঁধে চড়ে বসতে চাইবেন, তাতে আর বিচিত্র কী!
আরেকটি বিষয় প্রাসঙ্গিকভাবে এসে যায়। প্রতিবছর ডিসি-এসপি সম্মেলন হয়। সেই সম্মেলনে তাঁরা সরকারের কাছে ‘চার্টার অব ডিমান্ড’-এর মতো দাবিনামা পেশ করে থাকেন। এটা কি সরকারি চাকরিবাকরির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ? ডিসি-এসপিরা তো কলকারখানার শ্রমিক-কর্মচারী নন। তাঁদের কোনো
ট্রেড ইউনিয়নও নেই। তাহলে কোন আইনে তাঁরা ওই সব দাবিনামা হাজির করে সরকারকে তা মেনে নেওয়ার জন্য দাবি জানান?
আজকের পত্রিকার খবরটি পাঠ করে একজন মন্তব্য করলেন, ডিসিরা আজ বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটে ঢুকতে চাইছেন। আর সরকারও তাতে প্রায় সম্মতি দিয়ে ফেলেছে। এভাবে যদি আমলাদের অযৌক্তিক আবদার সরকার মেনে নিতে থাকে, তাহলে হয়তো একদিন তাঁরা সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে থাকতে চাইবেন। এমনকি তাঁরা যদি জাতীয় সংসদে ‘সংরক্ষিত আমলা কোটা’ রাখার দাবি তোলেন, অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
মহিউদ্দিন খান মোহন, সাংবাদিক ও রাজনীতি বিশ্লেষক

আজকের পত্রিকায় ১৭ অক্টোবর ‘ডিসিদের বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটে চায় সরকার’ শীর্ষ খবরটি সচেতন ব্যক্তিদের নজর যেমন কেড়েছে, তেমনি কিছু প্রশ্নও জন্ম দিয়েছে। খবরে বলা হয়েছে, সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পরিচালনা কমিটিতে জেলা প্রশাসকদের নিয়োগ দিতে চায় সরকার। আর এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে (ইউজিসি) চিঠি দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ। খবরে উল্লেখ করা হয়েছে, গত জানুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত জেলা প্রশাসকদের সম্মেলনে ডিসিদের বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের সদস্য করার দাবি উঠেছিল। সেই দাবি পূরণ করতেই সরকার এ অবিমৃশ্যকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে মনে করছেন বিজ্ঞজনেরা।
বিদ্যমান আইনে ডিসিদের বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটে সম্পৃক্ত করা সম্ভব নয় বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন ইউজিসি কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষাবিদেরা। এ ব্যাপারে ইউজিসির সাবেক চেয়ারম্যান এবং শিক্ষাবিদ অধ্যাপক আবদুল মান্নান আজকের পত্রিকাকে বলেছেন, এটা একেবারেই অনাকাঙ্ক্ষিত। শিক্ষাবিদ ও শিক্ষক ছাড়া কাউকে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটে যুক্ত করার উদ্যোগ ভালো ফল বয়ে আনবে না।
একই রকম অভিমত ব্যক্ত করেছেন সরকার-সমর্থক চিকিৎসক সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সভাপতি অধ্যাপক ইকবাল আর্সলান। তিনি বলেছেন, ‘সরকারের এমন সিদ্ধান্ত মেডিকেল কলেজগুলোর ধ্বংস ডেকে আনবে। চিকিৎসাব্যবস্থার জন্য এটি খুবই খারাপ পদক্ষেপ।’ দেশের বিশিষ্টজন, শিক্ষাবিদ এবং শিক্ষাব্যবস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা যখন ডিসিদের বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটে অন্তর্ভুক্তির বিরোধিতা করছেন, তখন সরকার কেন এমন একটি পদক্ষেপ নিয়েছে, তা নিয়ে চলছে জল্পনা-কল্পনা।
এখানে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের বর্তমান গঠনপ্রণালির দিকে একটু দৃষ্টিপাত করতে পারি। বিদ্যমান বিশ্ববিদ্যালয় আইনে সিন্ডিকেট সদস্যসংখ্যা নির্দিষ্ট করা আছে ১৮ জন। তাঁদের মধ্যে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর, দুজন প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর, উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা একজন (যুগ্ম সচিব বা তদূর্ধ্ব, সরকার কর্তৃক মনোনীত), চ্যান্সেলর কর্তৃক মনোনীত তিনজন, সিনেট কর্তৃক মনোনীত একজন, একাডেমিক কাউন্সিল মনোনীত দুজন (কলেজ অধ্যক্ষ)। এ ছাড়া সিনেট কর্তৃক নির্বাচিত দুজন (একজন সিনেট সদস্য, একজন রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট) এবং শিক্ষক কর্তৃক নির্বাচিত ছয়জন। এই অর্গানোগ্রামের কোথাও কি ডিসিদের অন্তর্ভুক্তির সুযোগ আছে? ডিসিদের বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটে অন্তর্ভুক্ত করতে হলে বিশ্ববিদ্যালয় আইন পরিবর্তন করতে হবে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, কেন সেই আইনের অনাবশ্যক পরিবর্তন আনতে যাবে সরকার? বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটে ডিসিদের অন্তর্ভুক্ত করা হলে কী এমন ফায়দা হবে? কিংবা তাঁরা সিন্ডিকেটে না থাকায় কী এমন সর্বনাশ হয়ে যাচ্ছে, যা তাঁরা উদ্ধার করবেন?
আজকের পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, সম্মেলনে ডিসিরা যুক্তি দেখান, বিভিন্ন জেলার বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তা নিরসনে তাঁরা কোনো ভূমিকা পালন করতে পারেন না। তাই তাঁদের এ আবদার। মূল কারণটা এখানেই। জেলার সব কাজে সবখানে তাঁরা কর্তৃত্ব করেন। তাই বিশ্ববিদ্যালয় কেন বাকি থাকবে? কর্তৃত্ববাদিতা আমাদের সরকারি আমলাদের এমনভাবে আচ্ছন্ন করেছে যে তাঁরা সবখানে মাতব্বরি ফলানোর মওকা খোঁজার চেষ্টা করেন। তাঁর জেলায় বিশ্ববিদ্যালয়, অথচ তিনি সেই প্রতিষ্ঠানের কোনো কর্মকাণ্ডে শরিক হতে পারেন না, এটা বড়ই মর্মযাতনার বিষয়। অথচ আমাদের রাষ্ট্রব্যবস্থায় ডিসিরা প্রভূত ক্ষমতা ভোগ করে থাকেন। সরকারি-বেসরকারি প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে তাঁদের রয়েছে প্রভূত প্রভুত্ব। ১৭ অক্টোবর অপর একটি দৈনিকের ‘অগাধ ক্ষমতায় দাপট ডিসি-ইউএনওদের’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একজন ডিসি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি থেকে শুরু করে রাজস্ব, বিনোদন, উন্নয়ন, জেলখানা, নির্বাচনসহ ৬২টি ক্যাটাগরিতে তিন শতাধিক বিষয়ে ক্ষমতাপ্রাপ্ত। একইভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারাও প্রায় একই ধরনের কর্তৃত্বের অধিকারী। এ ছাড়া স্থানীয় বেসরকারি অনেক কলেজে ডিসি এবং স্কুলের ম্যানেজিং কমিটিতে ইউএনওরা সভাপতির পদ অলংকৃত করে থাকেন। তারপরও তাঁদের যেন তুষ্টি নেই। এখন ভাগ বসাতে উদ্যত হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সিন্ডিকেটে।
ডিসি-ইউএনওদের অতিমাত্রায় ক্ষমতালিপ্সা সচেতন ব্যক্তিদের ভাবিয়ে তুলেছে। এ কথা সর্বজনবিদিত যে ডিসি-ইউএনওরা কার্যত এখন দেশের দণ্ডমুণ্ডের কর্তা। তাঁরা এতটাই উদ্ধত যে মন্ত্রী-এমপিদেরও থোড়াই কেয়ার করেন। অতিসম্প্রতি নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে ডিসি-এসপিদের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ দেশবাসীকে বিস্মিত করেছে। পদমর্যাদায় অনেক ধাপ নিচের হওয়া সত্ত্বেও সেই বৈঠকে ডিসি-এসপিরা যে ঔদ্ধত্য প্রদর্শন করেছেন নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে, তাতে তাঁদের ড্যামকেয়ার ভাবই স্পষ্ট হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনাররা সাংবিধানিক পদে নিয়োজিত। আর ডিসি-এসপিরা মাঠপর্যায়ের পাবলিক সার্ভেন্ট। সুতরাং তাঁরা যখন ‘কুচ পরোয়া নেহি’ ভাব দেখিয়ে একজন নির্বাচন কমিশনারকে বক্তৃতা বন্ধ করে দিতে বাধ্য করেন, তখন বুঝতে কষ্ট হয় না, আমলাতন্ত্রের আগ্রাসন কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে। ডিসি-ইউএনওদের ভাবসাব এবং ক্ষমতার ব্যবহার-অপব্যবহার দেখলে মনে হয়, তাঁরা জেলা-উপজেলার জমিদার-তালুকদার। ডিসি জেলার জমিদারিপ্রাপ্ত, আর তাঁদের কাছ থেকে উপজেলার তালুক কিনেছেন ইউএনওরা। সংশ্লিষ্ট এলাকায় ‘তিনাদের’ কথার ওপরে কথা বলার অধিকার যেন কারও নেই। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় ডিসি-ইউএনওদের কীর্তি-কুকীর্তির যেসব নজির স্থাপিত হয়েছে, তা যে প্রজাতন্ত্রের জন্য শুভ লক্ষণ নয়, তা বলাই বাহুল্য।
কিন্তু প্রশ্ন হলো, কেন এমন হচ্ছে? এমনিতে আমরা হরহামেশা শুনতে পাই রাজনীতিকে, শাসনব্যবস্থাকে, প্রজাতন্ত্রকে আমলাতন্ত্রের কবল থেকে মুক্ত করা হবে। কিন্তু কার্যত তার কোনো নিশানা দেখা যায় না; বরং যতই দিন যাচ্ছে, আমলাতন্ত্র ততই চেপে বসছে জাতির ঘাড়ে। দেশে এখন রাজনৈতিক সরকার বিদ্যমান। সামরিক শাসকেরা আমলাদের ওপর নির্ভর করেন। কিন্তু একটি গণতান্ত্রিক সরকার কেন আমলাদের বাড়বাড়ন্তকে প্রশ্রয় দেবে? তাহলে কি সরকার পুরোপুরি আমলানির্ভর হয়ে পড়েছে? ছোট-বড় আমলারা যেসব দাবি তুলছেন, সরকার সেগুলো একরকম বিনা বাক্য ব্যয়েই মেনে নিচ্ছে। মাঠপর্যায়ে খবরদারি তো আছেই, তাঁরা এখন রাজনৈতিক ক্ষেত্রেই মাতব্বরি ফলাতে শুরু করেছেন। এ নিয়ে এ পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘটে যাওয়া অপ্রীতিকর ঘটনার কথা সবারই জানা। বরিশালের মেয়রের সঙ্গে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কিংবা ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে স্থানীয় সংসদ সদস্য নিক্সন চৌধুরীর লড়াইয়ের স্মৃতি এখনো তরতাজা।
সচেতন ব্যক্তিরা মনে করেন, রাষ্ট্রীয় বা সরকারি বিভিন্ন কাজে জনপ্রতিনিধিদের চেয়ে আমলাদের বেশি প্রাধান্য দেওয়ায় তাঁরা নিজেদের সর্বেসর্বা মনে করতে শুরু করেছেন। জেলা পরিষদ এবং উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানরা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হলেও ডিসি-ইউএনওরা তাঁদের কোনো পাত্তাই দিতে চান না। সবারই স্মরণ থাকার কথা, করোনাকালে দুর্যোগে ত্রাণ তৎপরতার দায়িত্ব মন্ত্রী, এমপি, জেলা পরিষদ কিংবা উপজেলা চেয়ারম্যানদের না দিয়ে সচিব, ডিসি ও ইউএনওদের দেওয়া হয়েছিল। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের প্রতি এই অবজ্ঞা আমলাদের জন্য একরকম আশকারা। রাজনৈতিক সরকার যখন রাজনীতিকদের চেয়ে আমলাদের বেশি তোয়াজ করবে, তখন আমলারা যে কাঁধে চড়ে বসতে চাইবেন, তাতে আর বিচিত্র কী!
আরেকটি বিষয় প্রাসঙ্গিকভাবে এসে যায়। প্রতিবছর ডিসি-এসপি সম্মেলন হয়। সেই সম্মেলনে তাঁরা সরকারের কাছে ‘চার্টার অব ডিমান্ড’-এর মতো দাবিনামা পেশ করে থাকেন। এটা কি সরকারি চাকরিবাকরির সঙ্গে সংগতিপূর্ণ? ডিসি-এসপিরা তো কলকারখানার শ্রমিক-কর্মচারী নন। তাঁদের কোনো
ট্রেড ইউনিয়নও নেই। তাহলে কোন আইনে তাঁরা ওই সব দাবিনামা হাজির করে সরকারকে তা মেনে নেওয়ার জন্য দাবি জানান?
আজকের পত্রিকার খবরটি পাঠ করে একজন মন্তব্য করলেন, ডিসিরা আজ বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটে ঢুকতে চাইছেন। আর সরকারও তাতে প্রায় সম্মতি দিয়ে ফেলেছে। এভাবে যদি আমলাদের অযৌক্তিক আবদার সরকার মেনে নিতে থাকে, তাহলে হয়তো একদিন তাঁরা সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে থাকতে চাইবেন। এমনকি তাঁরা যদি জাতীয় সংসদে ‘সংরক্ষিত আমলা কোটা’ রাখার দাবি তোলেন, অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
মহিউদ্দিন খান মোহন, সাংবাদিক ও রাজনীতি বিশ্লেষক

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৪ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

আজকের পত্রিকায় ১৭ অক্টোবর ‘ডিসিদের বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটে চায় সরকার’ শীর্ষ খবরটি সচেতন ব্যক্তিদের নজর যেমন কেড়েছে, তেমনি কিছু প্রশ্নও জন্ম দিয়েছে। খবরে বলা হয়েছে, সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়
২৩ অক্টোবর ২০২২
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

আজকের পত্রিকায় ১৭ অক্টোবর ‘ডিসিদের বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটে চায় সরকার’ শীর্ষ খবরটি সচেতন ব্যক্তিদের নজর যেমন কেড়েছে, তেমনি কিছু প্রশ্নও জন্ম দিয়েছে। খবরে বলা হয়েছে, সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়
২৩ অক্টোবর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৪ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

আজকের পত্রিকায় ১৭ অক্টোবর ‘ডিসিদের বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটে চায় সরকার’ শীর্ষ খবরটি সচেতন ব্যক্তিদের নজর যেমন কেড়েছে, তেমনি কিছু প্রশ্নও জন্ম দিয়েছে। খবরে বলা হয়েছে, সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়
২৩ অক্টোবর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৪ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আজকের পত্রিকায় ১৭ অক্টোবর ‘ডিসিদের বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটে চায় সরকার’ শীর্ষ খবরটি সচেতন ব্যক্তিদের নজর যেমন কেড়েছে, তেমনি কিছু প্রশ্নও জন্ম দিয়েছে। খবরে বলা হয়েছে, সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়
২৩ অক্টোবর ২০২২
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
২৪ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫