Ajker Patrika

হারিয়ে যায়নি বাঁশ পণ্য

ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
আপডেট : ০২ নভেম্বর ২০২১, ১৭: ৫৯
হারিয়ে যায়নি বাঁশ পণ্য

গ্রামগঞ্জ থেকে ঐতিহ্যবাহী বাঁশের তৈরি নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী এখনো হারিয়ে যায়নি। বাঁশের তৈরি বাহারি নকশা ও কারুকাজের শৌখিন ছাদ ও বেড়া এখনো মানুষের মন কাড়ে। বাঁশে এখনো জীবিকার প্রধান মাধ্যম হিসেবে আঁকড়ে রেখেছে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার গুটিকয়েক পরিবার।

বাঁশের তৈরি বিভিন্ন পণ্যের চাহিদা কমে যাওয়ায় এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত কারিগরেরা পেশা বদলাতে বাধ্য হচ্ছেন। আবার অনেকেই ধরে আছেন বাপ-দাদার এ পেশা। বাঁশের তৈরি এসব পণ্যের ভালো বিক্রি না থাকায় অভাবের তাড়নায় এই শিল্পের কারিগরদের অনেকেই বাপ-দাদার পেশা ছেড়ে অন্য পেশার দিকে ছুটছেন। অভাব অনটনের মাঝে উপজেলায় হাতেগোনা কয়েকটি পরিবার আজও এ পেশা আঁকড়ে রেখেছেন।

ফুলবাড়ীর মধ্য কাশিপুর, ধর্মপুর, শ্যামপুর এবং নেওয়াশী এলাকার ৭০ থেকে ৮০টি পরিবার এখনো এ পেশা আঁকড়ে আছেন। বাঁশের দাম বাড়ায় ধীরে ধীরে কমছে বাঁশ পণ্যের ব্যবহার। একটা সময়ে গ্রামে বাঁশের তৈরি বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী যেমন বাচ্চাদের দোলনা, পাখা, বাঁশি, ঝাড়ু, মাছ ধরার ফাঁদ, ঘরের ছাদ, বেড়া, গালি, কুলা, চালনি, ধারাসহ বিভিন্ন ধরনের আসবাবপত্র তৈরি হতো।

২০ থেকে ৩০ টাকার বাঁশ এখন ২০০ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। উপজেলার শ্যামপুর শিমুলতলার কারিগর মকবুল হোসেন, জামাল মিয়া ও নাসির উদ্দিন বলেন, এ অঞ্চলে আমরা হাতেগোনা কয়েকটি পরিবার আজও ঘরের ছাদ ও বেড়া নির্মাণে নিয়োজিত আছি। আমাদের বাপ দাদারা এ পেশার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। আমরা এর মায়া ত্যাগ করতে পারিনি।

উপজেলার কবির মামুদ গ্রামের তহিদুল হক জানান, একটি বাঁশ থেকে ১০ থেকে ১২টি ডালি হয়। সব খরচ বাদ দিয়ে প্রতিটি বাঁশ থেকে ১০ থেকে ২০ টাকা লাভ থাকে।

উপজেলার সোনাইকাজী গ্ৰামের মহিলা উদ্দিন ও সুধাংশু রায় জানান, তাঁরা এই শিল্প টিকিয়ে রাখতে অতিকষ্টে ধারদেনা করে এবং বিভিন্ন সমিতি থেকে বেশি সুদে ঋণ নিয়ে কোনো মতে টিকে আছেন। স্বল্প সুদে ঋণ পেলে স্বাবলম্বী হতে পারতেন। ফলে শিল্পকে টিকিয়ে রাখা সম্ভব হতো।

উপজেলার খড়িবাড়ি এলাকায় বাঁশ বেতের তৈরি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিপুণ হাতে তৈরি করেন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সম্প্রদায়ের নরেন বিশ্বাস, যোগেন, মাধবসহ ২০টি পরিবার। গৃহস্থালি কাজে ব্যবহৃত ডালা, চালনিসহ মাছ শিকারের বিভিন্ন সামগ্রী। এসব তাঁরা তৈরি করে পাইকারের কাছে বিক্রি করেন। বিনিময়ে সামান্য আয় পেয়ে তাঁরা খুশি হন।

উপজেলার দক্ষিণ শ্যামপুর গ্রামের জাহিদুল হক ও তাঁর স্ত্রী মিনু বেগম বলেন, বাপদাদার রেখে যাওয়া এ শিল্পের দুর্দিনেও তাঁরা হাতেগোনা কিছু পরিবার বাঁশ বেত শিল্পকে আঁকড়ে আছেন। অনেকে অন্য পেশায় গেলেও পূর্বপুরুষের এই পেশা কিছুতেই ছাড়তে পারেনি তাঁরা।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুমন দাস বলেন, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীসহ অন্যান্য সম্প্রদায়ের যারা এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত আছেন, তাঁদের স্বল্প সুদে ঋণসহ সব সুবিধা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ঘর আলো করেছে ৫ নবজাতক, চোখে অন্ধকার দেখছেন মুদিদোকানি সোহেল

বেতন–ভাতা বাড়িয়ে ১ ট্রিলিয়ন ডলার না করলে টেসলা ছাড়তে পারেন মাস্ক

আজকের রাশিফল: ভুল ব্যক্তিকে মেসেজ পাঠিয়ে বিপত্তি বাধাবেন না

ঘনীভূত হচ্ছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’, আঘাত হানবে সন্ধ্যার পর

বিএনপি নেতার ব্যানার টানানো নিয়ে গোলাগুলি, যুবদল কর্মী নিহত

এলাকার খবর
Loading...