Ajker Patrika

১২ বছরেও জানা যায়নি গোডাউন মালিকের নাম

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ০৪ জুন ২০২২, ১৩: ১০
১২ বছরেও জানা যায়নি গোডাউন মালিকের নাম

একটি শাড়ির দোকানের কর্মচারী মো. রিপন। ২০১০ সালের ৩ জুন মধ্যরাতে পুরান ঢাকার নিমতলীতে কেমিক্যাল গোডাউন থেকে লাগা আগুনে পরিবারের ছয় সদস্যকে হারিয়েছেন তিনি। স্বজন হারানো রিপন আজও একটি প্রশ্নের উত্তর খোঁজেন। পাঁচতলা ভবনের নিচতলায় থাকা কেমিক্যাল গোডাউনের মালিক কে; আজও তাঁর কোনো বিচার করা হয়েছে কি না!

গতকাল শুক্রবার সকালে পুরান ঢাকার ৪৩ নবাব কাটরা ভবনটির সামনেই কথা হয় রিপনের সঙ্গে। পাঁচতলা সেই ভবন এখন ছয়তলা করা হয়েছে, ভবনটিতে বাস করছে মানুষ। ভয়াল আগুনে মারা যাওয়া ১২৪ জনের স্মরণে ভবনটির দক্ষিণ-পূর্ব কোণ ঘেঁষে নির্মাণ করা হয়েছে স্মৃতিস্তম্ভ। নিমতলী ট্র্যাজেডি দিবসে স্থানীয় বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনসহ রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে সেখানে। তবে স্বজনহারা বাসিন্দারা চান এই ঘটনায় জড়িত কেমিক্যাল গোডাউন মালিকের পরিচয় প্রকাশ এবং জড়িত ব্যক্তিদের বিচার বাস্তবায়ন।

প্রতিবছরের মতো এবারও রিপন এসেছিলেন হারানো স্বজনদের স্মরণ করতে। ভাগ্যজোরে বেঁচে যাওয়া রিপন আবেগতাড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার পরিবারের ছয়জন মারা যায় এই আগুনে। তখন আমি রমনা ভবনে চাকরি করি।

আজও অজানা গোডাউনের মালিকের পরিচয়। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে রিপন বলেন, ‘১২ বছর হয়ে গেল কেমিক্যাল গোডাউনের মালিক কে, তার নামটা পর্যন্ত জানতে পারলাম না। এত বড় বড় আসামি ধরে সরকার, এই আসামি কেন ধরা হয় নাই? এখনো আশপাশে কেমিক্যালের গোডাউন আছে। কিন্তু কেন এগুলো এখনো থাকে? এখনো এই এলাকায় প্লাস্টিক, পলিথিনের কারখানা আছে।’

নিমতলীতে একমাত্র ছেলে স্বাধীনকে হারিয়েছেন মো. মামুন। বেঁচে থাকলে এখন তাঁর বয়স হতো ১৯ বছর। নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে তৈরি স্তম্ভের সামনে দাঁড়িয়ে এমনটাই বলেন তিনি। মামুন আরও বলেন, ‘আমার ছেলে বেঁচে থাকলে প্রায় ২০ বছর বয়স হতো। খারাপ লাগে, এক যুগ চলে গেল কিন্তু আমরা বিচারটা এখনো পাইলাম না। ১২ বছরেও জানতে পারলাম না ওই কেমিক্যাল গোডাউনের মালিক কে ছিল? আমরা যদি জানতে পারতাম উনি বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াইছে, তাহলে মনে শান্তি পাইতাম।’

মামুন আরও বলেন, ‘সরকার চাইলে সব হয়। প্রধানমন্ত্রী চাইলে যেকোনো সময় বের করে ফেলতে পারেন, ওই কেমিক্যাল গোডাউনের মালিক কে ছিল। দেখেন এই বাড়ি আগে ছিল পাঁচতলা। এখন আবার নতুন করে একতলা বানিয়েছে। কিন্তু আমার ছেলে মরার বিচার পাইলাম না।’

স্থানী বাসিন্দা মো. আরমান বলেন, ‘নিমতলীর ঘটনায় আমাদের অনেক দাবি আছে। তার মধ্যে সবচেয়ে বড় দাবি হলো ১২ বছর হয়ে গেলেও আমরা জানতে পারলাম না—কেমিক্যাল গোডাউন কার, কোন প্রতিষ্ঠানের গোডাউন ছিল। তার বর্তমান অবস্থা কী। এই ঘটনায় তার শাস্তি হয়েছে কি না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত