শাহরিয়ার হাসান, ঢাকা ও হিমেল চাকমা, রাঙামাটি

‘আমি স্বেচ্ছায় চলে এসেছি। ভুলটা আমারই ছিল। তোমরা কাউকে দোষ দিয়ো না। আমার আর বাড়িতে ফেরার কোনো সুযোগ নেই। ১০ মিনিট পর আমার বিমান ছেড়ে দেবে। মোবাইলেও পাওয়া যাবে না। আমার নামে বদনাম ছড়িয়ে দিয়ো না।’
২ এপ্রিল ছোট বোনের মোবাইল ফোনে এই বার্তা পাঠায় রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলার বুড়িঘাট ইউনিয়নের এক পাহাড়ি তরুণী। এর এক দিন আগে থেকে তাঁর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। বোনকে ওই বার্তা দিয়ে তিনি পাড়ি জমান চীনের পথে। চীনে নারীদের ব্যাপক চাহিদা আছে। এক সন্তান নীতির মারপ্যাঁচে পড়ে দেশটিতে এখন নারীর চেয়ে পুরুষের সংখ্যা অনেক বেশি। অনেক পুরুষ বিয়ের জন্য নারী পাচ্ছে না।
সেই সুযোগ কাজে লাগাতে মাঠে সক্রিয় পাচারকারী চক্র। বাংলাদেশের পাহাড়ি জাতিগোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে চীনাদের চেহারার মিল আছে। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে চক্রের সদস্যরা উন্নত জীবনযাপনের লোভ দেখিয়ে পাহাড়ি পরিবারগুলোকে রাজি করাচ্ছে। এরপর তরুণী-কিশোরীদের পাচার করা হচ্ছে চীনে। এ কাজে সুবিধার জন্য অনেক সময় এ দেশেই চীনাদের সঙ্গে বিয়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বা বিয়ের জাল কাগজ তৈরি করা হচ্ছে।
ওয়াকিবহাল সূত্র বলছে, এভাবে চক্রের সদস্যরা গত সাত বছরে ৮ হাজারের বেশি কিশোরী-তরুণীকে চীনে পাচার করেছে। তাদের কাউকে কাউকে যৌনপল্লিতে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। আবার অনেককে বাসায় আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতন করা হয়। জীবন বাঁচাতে কেউ কেউ পালিয়ে দেশে ফিরে এসেছেন দুঃসহ স্মৃতি নিয়ে।

এভাবে বিয়ের নামে পাহাড়ি নারীদের পাচারের বিষয়ে জানতে চেয়ে ঢাকায় চীনা দূতাবাসে ১৫ এপ্রিল আজকের পত্রিকার পক্ষ থেকে ই-মেইল করা হয়েছিল। এরপর এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও গতকাল সোমবার পর্যন্ত দূতাবাস কোনো জবাব দেয়নি।
পুলিশ সদর দপ্তর বলছে, চীনে নারী পাচারের বিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে তাদের কাছে কোনো তথ্য নেই।
রাঙামাটির পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে কখনো কোনো অভিযোগ আসে না। তবে বিষয়গুলো তাঁরা জানেন।
আর খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার মুক্তা ধর বলেন, ‘নারী পাচার নিয়ে এ পর্যন্ত খাগড়াছড়ি পুলিশের কাছে কেউ অভিযোগ দেয়নি।’ যদিও নানিয়ারচর উপজেলার ওই তরুণী দেশ ছাড়ার দুই দিন পরও থানায় নিখোঁজের ডায়েরি করে। ডায়েরিতে এ ঘটনার সঙ্গে দুজনের সম্পৃক্ততার অভিযোগও করা হয়।
যারা যেভাবে টার্গেট
নানিয়ারচরের ভুক্তভোগী পরিবারটির সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চীনে এ যাত্রায় ওই তরুণীর সঙ্গী হয়েছে একই এলাকার আরও ছয়জন। আর পাচারকারী চক্রে নাম এসেছে লিমা চাকমা নামের এক নারীর। তিনি চট্টগ্রামের ব্যারিস্টার কলেজ এলাকায় এক ফ্ল্যাটে থাকতেন। এক বছর আগে এক চীনা নাগরিককে বিয়ে করে তিনি চীনে চলে যান। লিমার ছোট ভাই লিমন চাকমা ও বোন শোভারানী চাকমাও চক্রের সদস্য।
অনুসন্ধানে জানা যায়, লিমা চাকমাদের মতো অন্তত আরও ২৫-৩০টি চক্র পাহাড়ে কাজ করছে। পাচারের পর উদ্ধার একাধিক নারী ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পাচারের শিকার হচ্ছেন অধিকাংশ নিম্নবিত্ত পরিবারের মেয়েই। পরিবারের অভাব, মা-বাবার অসচেতনতা, বিয়ের প্রলোভন, চাকরি ও চীনে নাগরিকত্বের লোভে পড়ে মেয়েরা চীনাদের পাতা ফাঁদে পা দিচ্ছে। নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক ভুক্তভোগী পরিবারের কেউ কেউ বলছেন, শিক্ষা-দীক্ষায় পিছে থাকায় মূল সমাজের সঙ্গে তাল মেলাতে না পেরেও অনেকে এ পথে পা বাড়াচ্ছে।
৮ থেকে ২০ লাখ টাকা লেনদেন
স্থানীয় ও ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, একজন নারীকে পাচারের জন্য সর্বনিম্ন ৮ লাখ টাকা লেনদেন করে চক্রটি। তবে এ টাকা কমবেশি হয় বয়স আর চেহারার ওপরে। কম বয়সী মেয়েদের জন্য ১৫-২০ লাখ টাকা পর্যন্তও লেনদেন হয়। এই টাকার অধিকাংশ চলে যায় চক্রের হাতে। কিছু টাকা ব্যয় হয় পাসপোর্ট, ভিসা ও ঢাকায় থাকায়-খাওয়ার জন্য। ভুক্তভোগী পরিবারও এখান থেকে এক-দেড় লাখ টাকা পায়।
আজকের পত্রিকার কাছে পাচার চক্রের সদস্যদের ফেসবুকে কথোপকথনের একটি স্ক্রিনশট এসেছে। তাতে দেখা যায়, জ্যাসি চাকমা নামের এক পাচারকারী এক নারীকে ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য ৪ লাখ টাকা দেওয়ার আশ্বাস দেন। তাঁর ৪ লাখের বাইরে চীনে যেতে ইচ্ছুক ওই নারীর পরিবারকেও টাকা দেওয়া হবে বলে জানান। তবে মেয়েটিকে ঢাকায় পৌঁছে দেওয়ার শর্ত দেওয়া হয়। জ্যাসি চাকমা যে চক্রে কাজ করেন, সেই চক্রের হোতা সজিব চাকমা।
ঢাকায় চলে সৌন্দর্যবর্ধন
সবকিছু গুছিয়ে পাচারের জন্য প্রথমে কাউকে পাহাড় থেকে এনে ঢাকায় তোলা হয়। রাজধানীতে মাসখানেক রেখে নারীদের সৌন্দর্য বৃদ্ধির কাজ করা হয়। একপর্যায়ে তাদের ছবি তুলে চীন ও তাইওয়ানে থাকা পাচার চক্রের সদস্যর কাছে পাঠানো হয়। কোনো মেয়েকে পছন্দ হলে চক্রের কোনো সদস্য চীনা নাগরিককে বর বানিয়ে বাংলাদেশে পাঠায়। ভিসা পাওয়ার সুবিধার্থে চীনা নাগরিকের সঙ্গে আদালতে বিয়ের ব্যবস্থা করা হয়। বিয়ে হলে কখনো দ্রুত, কখনো দুই-তিন মাস পর সেই নারীকে চীনে নেওয়া সম্ভব হয়।
চীনে গিয়ে নির্যাতনের শিকার হয়ে দেশে ফেরা এক নারীর সঙ্গে কথা হয়েছে আজকের পত্রিকার। তিনি জানান, চীনে নিয়ে তাঁদের একপ্রকার নিলামে ওঠানো হয়। তাঁদের মধ্যে থেকে কাউকে সত্যি বউ করে বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। আবার কাউকে বাসাবাড়ি বা যৌনপল্লিতে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়।
কী বলছে এলাকার মানুষ
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, পাহাড়ের প্রায় সব উপজেলা থেকেই পাচার হচ্ছে। তবে রাঙামাটি সদর, জুরাছড়ি, বরকল, লংগদু, কাউখালী এবং খাগড়াছড়ির দিঘিনালা থেকে সবচেয়ে বেশি নারী পাচার হয় বলে জানা গেছে।
খাগড়াছড়ি শহরের পানখাইয়াপাড়ার বাসিন্দা প্রকাশ চাকমা বলেন, পানখাইয়াপাড়ায় তাঁর কাপড়ের ব্যবসা ছিল। দিঘিনালা থেকে স্কুল ও কলেজপড়ুয়া এক ছাত্রী তাঁর শোরুমে বিক্রয়কর্মী হিসেবে কাজ করত। গত মার্চের প্রথম সপ্তাহে মেয়েটি হারিয়ে যায়। পরে জানতে পারেন মেয়েটি রাঙামাটি ছেড়ে ঢাকায় চলে গেছে। বিয়ে করে চীনে যাবে।
সম্প্রতি রাঙামাটির কাউখালী উপজেলার ঘাগড়া থেকে স্কুলপড়ুয়া চারজন মেয়েকে পাচার চক্রের হাত থেকে উদ্ধার করেছেন স্থানীয় লোকজন। ঘাগড়া উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চন্দ্রা দেওয়ান বলেন, কয়েক মাসের ব্যবধানে ঘাগড়া এলাকা থেকে তিন মেয়ে চীনে চলে গেছে।
চক্রের সঙ্গে কারা জড়িত
৭-৮ বছর আগে চীনে যখন নারী পাচার শুরু হয় তখন এর সঙ্গে জড়িত ছিলেন দু-একজন। কিন্তু এখন আর কোনো একক হোতা নেই। অনন্ত ২৫-৩০টি চক্র আলাদা আলাদাভাবে কাজ করে। যারা নিজেদের মতো চক্রের আন্তর্জাতিক সদস্য চীনা গ্রুপে সঙ্গে যোগাযোগ করে চীনে যেতে ইচ্ছুক কিশোরী ও তরুণীদের ছবি পাঠিয়ে দিচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পাচার চক্রের সক্রিয় এক আন্তর্জাতিক সদস্য সোনালী চাকমা নিকো। তিনি বাংলাদেশি নাগরিক হয়েও বিদেশে বসে নারী পাচার এই চক্রের নেতৃত্ব দেন। অনলাইনে পাওয়া তাঁর নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করে দেশে থাকা একাধিক গ্রুপ।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, নারী পাচারে সঙ্গে জড়িত এমন আরও কয়েকটি চক্রের মধ্যে খাগড়াছড়ির দিঘিনালার কলি চাকমা, রিকা চাকমা, ছোট কলি চাকমা, প্রিয়াংকা চাকমা, পিউমনি চাকমা, নিক্সন চাকমা, রিকন চাকমা, পানছড়ি উপজেলার রুবিতা চাকমা, রাঙামাটির পূজা চাকমা, হেয়ালি চাকমা, একই জেলার বরকল উপজেলার সুবলং ইউনিয়নের পপি চাকমা, বরুন চাকমা, আশা চাকমা, ভূষণছড়া ইউনিয়নের ঠেগামুখ এলাকার সজীব চাকমা, তাঁর ছোট বোন জ্যাসী চাকমা, লিসা চাকমা, নানিয়ারচর উপজেলার সুপম চাকমা, কাউখালী উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের মাহজনপাড়ার রিপন চাকমা, তাঁর স্ত্রী, একই এলাকার কোকো চাকমা ও তাঁর স্ত্রী, রাঙামাটি শহরের রাঙাপানী এলাকার শংখমালা চাকমা, টুক্কপুদি চাকমা, মিতা চাকমা, ভেদভেদীর উলুছড়া গ্রামের টুম্পা চাকমা শিউলী, মানিকছড়ির লিমন চাকমা, শোভা রানী চাকমা, জুরাছড়ি উপজেলার নতুনবাজার এলাকার অঞ্জলী চাকমা, লাকী চাকমা দুমদুম্যা ইউনিয়নের মন্দিরাছড়া গ্রামের বকুল বালা চাকমা, তাঁর মেয়ে যতিকা চাকমাসহ অনেকের নাম রয়েছে।
সচেতনসমাজ যা বলছে
পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক কমিটি সভাপতি গৌতম দেওয়ান বলেন, ‘হঠাৎ চীনে নারী যাওয়া বেড়ে গেছে। লোকমুখে এমনটাই শুনছি। কিন্তু এ পর্যন্ত আসলে কতজন নারী চীনে গেছে, সে তথ্য আমাদের কাছে নেই।’
জানতে চাইলে বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত আইজি নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা বলেন, ‘পাহাড়ি নারী পাচার প্রতিরোধে সরকারকে কাজ করতে হবে। যারা না বুঝে প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়ে চীনের পথে পা বাড়িয়েছে, তাদের ফেরাতে দূতাবাস ইন্টারপোলের সহযোগিতা চাইতে পারে।’
রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিসার্চ ইউনিট (রামরু) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. তাসনিম সিদ্দিকী বলেন, ‘ভারত ও পাকিস্তানে নারী পাচারকারীদের অনেকটা আটকানো গেছে অনেক কিছু করে। এখন চীনে পাচার শুরু হয়েছে। সরকারের উচিত বিদেশিদের বিয়ে করার বিষয়ে আইনে আরও কড়াকড়ি আরোপ করা। তাহলেই এ ধরনের পাচার বন্ধ হবে। পাশাপাশি পাহাড়িদের সচেতন করতে হবে। এই দায়িত্বটা সরকারকেই নিতে হবে।’

‘আমি স্বেচ্ছায় চলে এসেছি। ভুলটা আমারই ছিল। তোমরা কাউকে দোষ দিয়ো না। আমার আর বাড়িতে ফেরার কোনো সুযোগ নেই। ১০ মিনিট পর আমার বিমান ছেড়ে দেবে। মোবাইলেও পাওয়া যাবে না। আমার নামে বদনাম ছড়িয়ে দিয়ো না।’
২ এপ্রিল ছোট বোনের মোবাইল ফোনে এই বার্তা পাঠায় রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলার বুড়িঘাট ইউনিয়নের এক পাহাড়ি তরুণী। এর এক দিন আগে থেকে তাঁর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। বোনকে ওই বার্তা দিয়ে তিনি পাড়ি জমান চীনের পথে। চীনে নারীদের ব্যাপক চাহিদা আছে। এক সন্তান নীতির মারপ্যাঁচে পড়ে দেশটিতে এখন নারীর চেয়ে পুরুষের সংখ্যা অনেক বেশি। অনেক পুরুষ বিয়ের জন্য নারী পাচ্ছে না।
সেই সুযোগ কাজে লাগাতে মাঠে সক্রিয় পাচারকারী চক্র। বাংলাদেশের পাহাড়ি জাতিগোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে চীনাদের চেহারার মিল আছে। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে চক্রের সদস্যরা উন্নত জীবনযাপনের লোভ দেখিয়ে পাহাড়ি পরিবারগুলোকে রাজি করাচ্ছে। এরপর তরুণী-কিশোরীদের পাচার করা হচ্ছে চীনে। এ কাজে সুবিধার জন্য অনেক সময় এ দেশেই চীনাদের সঙ্গে বিয়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বা বিয়ের জাল কাগজ তৈরি করা হচ্ছে।
ওয়াকিবহাল সূত্র বলছে, এভাবে চক্রের সদস্যরা গত সাত বছরে ৮ হাজারের বেশি কিশোরী-তরুণীকে চীনে পাচার করেছে। তাদের কাউকে কাউকে যৌনপল্লিতে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। আবার অনেককে বাসায় আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতন করা হয়। জীবন বাঁচাতে কেউ কেউ পালিয়ে দেশে ফিরে এসেছেন দুঃসহ স্মৃতি নিয়ে।

এভাবে বিয়ের নামে পাহাড়ি নারীদের পাচারের বিষয়ে জানতে চেয়ে ঢাকায় চীনা দূতাবাসে ১৫ এপ্রিল আজকের পত্রিকার পক্ষ থেকে ই-মেইল করা হয়েছিল। এরপর এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও গতকাল সোমবার পর্যন্ত দূতাবাস কোনো জবাব দেয়নি।
পুলিশ সদর দপ্তর বলছে, চীনে নারী পাচারের বিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে তাদের কাছে কোনো তথ্য নেই।
রাঙামাটির পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে কখনো কোনো অভিযোগ আসে না। তবে বিষয়গুলো তাঁরা জানেন।
আর খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার মুক্তা ধর বলেন, ‘নারী পাচার নিয়ে এ পর্যন্ত খাগড়াছড়ি পুলিশের কাছে কেউ অভিযোগ দেয়নি।’ যদিও নানিয়ারচর উপজেলার ওই তরুণী দেশ ছাড়ার দুই দিন পরও থানায় নিখোঁজের ডায়েরি করে। ডায়েরিতে এ ঘটনার সঙ্গে দুজনের সম্পৃক্ততার অভিযোগও করা হয়।
যারা যেভাবে টার্গেট
নানিয়ারচরের ভুক্তভোগী পরিবারটির সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চীনে এ যাত্রায় ওই তরুণীর সঙ্গী হয়েছে একই এলাকার আরও ছয়জন। আর পাচারকারী চক্রে নাম এসেছে লিমা চাকমা নামের এক নারীর। তিনি চট্টগ্রামের ব্যারিস্টার কলেজ এলাকায় এক ফ্ল্যাটে থাকতেন। এক বছর আগে এক চীনা নাগরিককে বিয়ে করে তিনি চীনে চলে যান। লিমার ছোট ভাই লিমন চাকমা ও বোন শোভারানী চাকমাও চক্রের সদস্য।
অনুসন্ধানে জানা যায়, লিমা চাকমাদের মতো অন্তত আরও ২৫-৩০টি চক্র পাহাড়ে কাজ করছে। পাচারের পর উদ্ধার একাধিক নারী ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পাচারের শিকার হচ্ছেন অধিকাংশ নিম্নবিত্ত পরিবারের মেয়েই। পরিবারের অভাব, মা-বাবার অসচেতনতা, বিয়ের প্রলোভন, চাকরি ও চীনে নাগরিকত্বের লোভে পড়ে মেয়েরা চীনাদের পাতা ফাঁদে পা দিচ্ছে। নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক ভুক্তভোগী পরিবারের কেউ কেউ বলছেন, শিক্ষা-দীক্ষায় পিছে থাকায় মূল সমাজের সঙ্গে তাল মেলাতে না পেরেও অনেকে এ পথে পা বাড়াচ্ছে।
৮ থেকে ২০ লাখ টাকা লেনদেন
স্থানীয় ও ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, একজন নারীকে পাচারের জন্য সর্বনিম্ন ৮ লাখ টাকা লেনদেন করে চক্রটি। তবে এ টাকা কমবেশি হয় বয়স আর চেহারার ওপরে। কম বয়সী মেয়েদের জন্য ১৫-২০ লাখ টাকা পর্যন্তও লেনদেন হয়। এই টাকার অধিকাংশ চলে যায় চক্রের হাতে। কিছু টাকা ব্যয় হয় পাসপোর্ট, ভিসা ও ঢাকায় থাকায়-খাওয়ার জন্য। ভুক্তভোগী পরিবারও এখান থেকে এক-দেড় লাখ টাকা পায়।
আজকের পত্রিকার কাছে পাচার চক্রের সদস্যদের ফেসবুকে কথোপকথনের একটি স্ক্রিনশট এসেছে। তাতে দেখা যায়, জ্যাসি চাকমা নামের এক পাচারকারী এক নারীকে ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য ৪ লাখ টাকা দেওয়ার আশ্বাস দেন। তাঁর ৪ লাখের বাইরে চীনে যেতে ইচ্ছুক ওই নারীর পরিবারকেও টাকা দেওয়া হবে বলে জানান। তবে মেয়েটিকে ঢাকায় পৌঁছে দেওয়ার শর্ত দেওয়া হয়। জ্যাসি চাকমা যে চক্রে কাজ করেন, সেই চক্রের হোতা সজিব চাকমা।
ঢাকায় চলে সৌন্দর্যবর্ধন
সবকিছু গুছিয়ে পাচারের জন্য প্রথমে কাউকে পাহাড় থেকে এনে ঢাকায় তোলা হয়। রাজধানীতে মাসখানেক রেখে নারীদের সৌন্দর্য বৃদ্ধির কাজ করা হয়। একপর্যায়ে তাদের ছবি তুলে চীন ও তাইওয়ানে থাকা পাচার চক্রের সদস্যর কাছে পাঠানো হয়। কোনো মেয়েকে পছন্দ হলে চক্রের কোনো সদস্য চীনা নাগরিককে বর বানিয়ে বাংলাদেশে পাঠায়। ভিসা পাওয়ার সুবিধার্থে চীনা নাগরিকের সঙ্গে আদালতে বিয়ের ব্যবস্থা করা হয়। বিয়ে হলে কখনো দ্রুত, কখনো দুই-তিন মাস পর সেই নারীকে চীনে নেওয়া সম্ভব হয়।
চীনে গিয়ে নির্যাতনের শিকার হয়ে দেশে ফেরা এক নারীর সঙ্গে কথা হয়েছে আজকের পত্রিকার। তিনি জানান, চীনে নিয়ে তাঁদের একপ্রকার নিলামে ওঠানো হয়। তাঁদের মধ্যে থেকে কাউকে সত্যি বউ করে বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। আবার কাউকে বাসাবাড়ি বা যৌনপল্লিতে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়।
কী বলছে এলাকার মানুষ
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, পাহাড়ের প্রায় সব উপজেলা থেকেই পাচার হচ্ছে। তবে রাঙামাটি সদর, জুরাছড়ি, বরকল, লংগদু, কাউখালী এবং খাগড়াছড়ির দিঘিনালা থেকে সবচেয়ে বেশি নারী পাচার হয় বলে জানা গেছে।
খাগড়াছড়ি শহরের পানখাইয়াপাড়ার বাসিন্দা প্রকাশ চাকমা বলেন, পানখাইয়াপাড়ায় তাঁর কাপড়ের ব্যবসা ছিল। দিঘিনালা থেকে স্কুল ও কলেজপড়ুয়া এক ছাত্রী তাঁর শোরুমে বিক্রয়কর্মী হিসেবে কাজ করত। গত মার্চের প্রথম সপ্তাহে মেয়েটি হারিয়ে যায়। পরে জানতে পারেন মেয়েটি রাঙামাটি ছেড়ে ঢাকায় চলে গেছে। বিয়ে করে চীনে যাবে।
সম্প্রতি রাঙামাটির কাউখালী উপজেলার ঘাগড়া থেকে স্কুলপড়ুয়া চারজন মেয়েকে পাচার চক্রের হাত থেকে উদ্ধার করেছেন স্থানীয় লোকজন। ঘাগড়া উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চন্দ্রা দেওয়ান বলেন, কয়েক মাসের ব্যবধানে ঘাগড়া এলাকা থেকে তিন মেয়ে চীনে চলে গেছে।
চক্রের সঙ্গে কারা জড়িত
৭-৮ বছর আগে চীনে যখন নারী পাচার শুরু হয় তখন এর সঙ্গে জড়িত ছিলেন দু-একজন। কিন্তু এখন আর কোনো একক হোতা নেই। অনন্ত ২৫-৩০টি চক্র আলাদা আলাদাভাবে কাজ করে। যারা নিজেদের মতো চক্রের আন্তর্জাতিক সদস্য চীনা গ্রুপে সঙ্গে যোগাযোগ করে চীনে যেতে ইচ্ছুক কিশোরী ও তরুণীদের ছবি পাঠিয়ে দিচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পাচার চক্রের সক্রিয় এক আন্তর্জাতিক সদস্য সোনালী চাকমা নিকো। তিনি বাংলাদেশি নাগরিক হয়েও বিদেশে বসে নারী পাচার এই চক্রের নেতৃত্ব দেন। অনলাইনে পাওয়া তাঁর নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করে দেশে থাকা একাধিক গ্রুপ।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, নারী পাচারে সঙ্গে জড়িত এমন আরও কয়েকটি চক্রের মধ্যে খাগড়াছড়ির দিঘিনালার কলি চাকমা, রিকা চাকমা, ছোট কলি চাকমা, প্রিয়াংকা চাকমা, পিউমনি চাকমা, নিক্সন চাকমা, রিকন চাকমা, পানছড়ি উপজেলার রুবিতা চাকমা, রাঙামাটির পূজা চাকমা, হেয়ালি চাকমা, একই জেলার বরকল উপজেলার সুবলং ইউনিয়নের পপি চাকমা, বরুন চাকমা, আশা চাকমা, ভূষণছড়া ইউনিয়নের ঠেগামুখ এলাকার সজীব চাকমা, তাঁর ছোট বোন জ্যাসী চাকমা, লিসা চাকমা, নানিয়ারচর উপজেলার সুপম চাকমা, কাউখালী উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের মাহজনপাড়ার রিপন চাকমা, তাঁর স্ত্রী, একই এলাকার কোকো চাকমা ও তাঁর স্ত্রী, রাঙামাটি শহরের রাঙাপানী এলাকার শংখমালা চাকমা, টুক্কপুদি চাকমা, মিতা চাকমা, ভেদভেদীর উলুছড়া গ্রামের টুম্পা চাকমা শিউলী, মানিকছড়ির লিমন চাকমা, শোভা রানী চাকমা, জুরাছড়ি উপজেলার নতুনবাজার এলাকার অঞ্জলী চাকমা, লাকী চাকমা দুমদুম্যা ইউনিয়নের মন্দিরাছড়া গ্রামের বকুল বালা চাকমা, তাঁর মেয়ে যতিকা চাকমাসহ অনেকের নাম রয়েছে।
সচেতনসমাজ যা বলছে
পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক কমিটি সভাপতি গৌতম দেওয়ান বলেন, ‘হঠাৎ চীনে নারী যাওয়া বেড়ে গেছে। লোকমুখে এমনটাই শুনছি। কিন্তু এ পর্যন্ত আসলে কতজন নারী চীনে গেছে, সে তথ্য আমাদের কাছে নেই।’
জানতে চাইলে বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত আইজি নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা বলেন, ‘পাহাড়ি নারী পাচার প্রতিরোধে সরকারকে কাজ করতে হবে। যারা না বুঝে প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়ে চীনের পথে পা বাড়িয়েছে, তাদের ফেরাতে দূতাবাস ইন্টারপোলের সহযোগিতা চাইতে পারে।’
রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিসার্চ ইউনিট (রামরু) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. তাসনিম সিদ্দিকী বলেন, ‘ভারত ও পাকিস্তানে নারী পাচারকারীদের অনেকটা আটকানো গেছে অনেক কিছু করে। এখন চীনে পাচার শুরু হয়েছে। সরকারের উচিত বিদেশিদের বিয়ে করার বিষয়ে আইনে আরও কড়াকড়ি আরোপ করা। তাহলেই এ ধরনের পাচার বন্ধ হবে। পাশাপাশি পাহাড়িদের সচেতন করতে হবে। এই দায়িত্বটা সরকারকেই নিতে হবে।’

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৯ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

‘আমি স্বেচ্ছায় চলে এসেছি। ভুলটা আমারই ছিল। তোমরা কাউকে দোষ দিয়ো না। আমার আর বাড়িতে ফেরার কোনো সুযোগ নেই। ১০ মিনিট পর আমার বিমান ছেড়ে দেবে। মোবাইলেও পাওয়া যাবে না। আমার নামে বদনাম ছড়িয়ে দিয়ো না।’
২৩ এপ্রিল ২০২৪
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘আমি স্বেচ্ছায় চলে এসেছি। ভুলটা আমারই ছিল। তোমরা কাউকে দোষ দিয়ো না। আমার আর বাড়িতে ফেরার কোনো সুযোগ নেই। ১০ মিনিট পর আমার বিমান ছেড়ে দেবে। মোবাইলেও পাওয়া যাবে না। আমার নামে বদনাম ছড়িয়ে দিয়ো না।’
২৩ এপ্রিল ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৯ দিন আগে
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

‘আমি স্বেচ্ছায় চলে এসেছি। ভুলটা আমারই ছিল। তোমরা কাউকে দোষ দিয়ো না। আমার আর বাড়িতে ফেরার কোনো সুযোগ নেই। ১০ মিনিট পর আমার বিমান ছেড়ে দেবে। মোবাইলেও পাওয়া যাবে না। আমার নামে বদনাম ছড়িয়ে দিয়ো না।’
২৩ এপ্রিল ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৯ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

‘আমি স্বেচ্ছায় চলে এসেছি। ভুলটা আমারই ছিল। তোমরা কাউকে দোষ দিয়ো না। আমার আর বাড়িতে ফেরার কোনো সুযোগ নেই। ১০ মিনিট পর আমার বিমান ছেড়ে দেবে। মোবাইলেও পাওয়া যাবে না। আমার নামে বদনাম ছড়িয়ে দিয়ো না।’
২৩ এপ্রিল ২০২৪
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৯ দিন আগে
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫