Ajker Patrika

শাস্তি প্রত্যাহারের দাবি ছাত্রলীগের দুই পক্ষের

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ২৫ নভেম্বর ২০২১, ১১: ৪৯
শাস্তি প্রত্যাহারের দাবি ছাত্রলীগের দুই পক্ষের

কয়েক দফায় সংঘর্ষের ঘটনায় ‘দোষীদের’ শাস্তি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের বিবদমান দুই পক্ষ। ৩১ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কারের সিদ্ধান্তটি প্রত্যাখ্যান করে এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন উভয় পক্ষের নেতারা। এর মধ্যে এক পক্ষের নেতারা সংবাদ সম্মেলন করে অধ্যক্ষ সাহেনা আক্তার ও ইন্টার্ন হোস্টেলের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মিজানুর রহমানের পদত্যাগের দাবি করেছেন।

গতকাল বুধবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল অনুসারী ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা। এ সময় তাঁরা জামায়াত তোষণের অভিযোগ তুলে অধ্যক্ষ সাহেনা আক্তার ও ইন্টার্ন হোস্টেলের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মিজানুর রহমানের পদত্যাগ দাবি করেন।

এ সময় ছাত্রলীগ নেতা কেএম তানভীর অভিযোগ করেন, ছাত্রাবাসে সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন অধ্যক্ষ। কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের মেধাবী শিক্ষার্থী আকিবের ওপর হামলাকারীদের সিসিটিভি ক্যামেরায় চিহ্নিত করা গেলেও তিনি হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেননি।

অধ্যক্ষ সাহেনা আক্তার ক্যাম্পাসে জামায়াত-শিবিরের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে কাজ করছেন বলেও অভিযোগ করা হয় সংবাদ সম্মেলনে। সেই সঙ্গে হামলার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভায় নির্দোষ ছাত্রদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অভিযোগ তুলে হোস্টেলের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মিজানুর রহমানের পদত্যাগ দাবি করা হয়।

এদিকে নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও শিক্ষার্থী বহিষ্কারের ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়েছেন। গত মঙ্গলবার রাতে চমেক ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আল আমিন ইসলামের সই করা এক বিবৃতিতে তাঁরা এ প্রতিবাদ জানান। এ বিষয়ে গতকাল আল আমিন ইসলাম বলেন, ‘আমি ইন্টার্ন চিকিৎসক। আমাকেও অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলরের সভায় বহিষ্কার করেছে। এ ছাড়া রাজনীতিতে জড়িত নন প্রথম বর্ষের এমন অনেক শিক্ষার্থীদেরও বহিষ্কার করা হয়েছে। এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’

গত ২৯ অক্টোবর রাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের প্রধান ছাত্রাবাসে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। এ সময় তিন ছাত্র আহত হন। এর জেরে ৩০ অক্টোবর সকালে ক্যাম্পাসের সামনের রাস্তায় উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারীদের সমর্থক মাহাদি আকিবের ওপর হামলা হয়। মাথায় আঘাত পেয়ে মাহাদি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ২১ দিন চিকিৎসা নিয়ে গত বৃহস্পতিবার কুমিল্লার বাড়িতে ফেরেন। ওই ঘটনার পর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে কলেজ।

এর আগেও দুই পক্ষের মধ্যে কয়েক দফায় সংঘর্ষ হয়। এসব ঘটনায় গত মঙ্গলবার অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলর সভায় ৩১ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করা হয়েছে। এঁদের মধ্যে ২৩ জন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী, বাকি ৮ জন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী।

বহিষ্কার হওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন এইচ এম আসহাব উদ্দিন, অভিজিৎ দাশ, সাদ মোহাম্মদ গালিব, সাইফ উল্লাহ, সৌরভ ব্যাপারী, সাজেদুল ইসলাম হৃদয়, জাহেদুল ইসলাম জিসান, ইমতিয়াজ আলম, রিয়াজুল ইসলাম জয়, সাজু দাশ, রকিব উদ্দিন আহমেদ সিয়াম, জাকির হোসেন সায়েম, জুলকাফল মোহাম্মদ শোয়েব, মো. ইব্রাহিম খলিল, চয়ন দাশ অয়ন, ফারহান রহমান ফাহিম, মাহিন আহমেদ, শেখ ইমাম হাসান, সৌরভ দেবনাথ, মো. মইনুল হোসেন, মো. আরাফাত ইসলাম, মো. হাবিবুল্লাহ হাবিব, মো. আনিস, মো. এহসানুল কবির রুমন, মাহতাব উদ্দিন রাফি, মো. শামিম, মো. সাব্বির, মইন ভূঁইয়া, তৌফিকুল রহমান ইমন ও আল আমিন ইসলাম।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত