Ajker Patrika

গ্যাসের সংকট, বাড়তি দাম

নুরুল আমীন রবীন, শরীয়তপুর
আপডেট : ০৬ মার্চ ২০২২, ১২: ৫৬
Thumbnail image

দাম বাড়ায় শরীয়তপুরে সিলিন্ডার গ্যাসের সংকট দেখা দিয়েছে। সংকটের অজুহাতে গ্রাহক পর্যায়ে সরকার-নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি নেওয়া হচ্ছে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা। গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধিতে গ্যাসনির্ভর ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাও পড়েছেন বিপাকে। ভোক্তা পর্যায়েও দেখা দিয়েছে চরম অসন্তোষ। তবে সিলিন্ডার গ্যাসের দাম নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত বাজার তদারকি করা হবে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।

জানা গেছে, সম্প্রতি সিলিন্ডার গ্যাসের দাম নির্ধারণ করে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন। নতুন মূল্য অনুযায়ী খুচরা বাজারে ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম বাড়ানো হয়েছে ১৫১ টাকা। সেই থেকে ১২ কেজির সিলিন্ডার বিক্রি হবে ১ হাজার ৩৯১ টাকা, যা আগে ছিল ১২৪০ টাকা। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে এই মূল্য কার্যকর করা হয়েছে। গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির ঘোষণার আগেই বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই শরীয়তপুরের খুচরা বাজারে আগের দামের চেয়ে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে সিলিন্ডার গ্যাস। এ ছাড়া ১৫ কেজি ওজনের গ্যাস সিলিন্ডার ১ হাজার ৭৫০ থেকে ১ হাজার ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক মাসের ব্যবধানে জ্বালানি গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধিতে চিন্তিত ভোক্তারা।

গত শুক্রবার সকাল থেকে জেলা শহরের গ্যাসের পাইকারি বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানেই গ্যাসের মজুত তুলনামূলক অনেক কম। খালি সিলিন্ডার ট্রাকে তুলছেন শ্রমিকেরা। এক সপ্তাহ আগের দেওয়া চাহিদা অনুযায়ী গ্যাস সরবরাহ করতে পারছে না উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। ফলে গ্যাসের মজুত অনেকাংশেই কমে গেছে। ডিপোতে দীর্ঘদিন অপেক্ষা করেও খালি ট্রাক নিয়ে ফিরতে হয়েছে বলে অভিযোগ অনেক পাইকারি ব্যবসায়ীর। ফলে আর্থিকভাবে বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।

জেলা শহরের রাজগঞ্জ ব্রিজ মোড়ের গ্যাসের পাইকারি সরবরাহকারী মেসার্স প্রভাত ট্রেডার্সের মালিক মো. ইদ্রিস আলী সরদার বলেন, ‘সরকার-নির্ধারিত মূল্যতালিকা অনুযায়ী গ্যাস বিক্রি করছি। তবে বাজারে গ্যাসের সরবরাহ কমে যাওয়ায় গ্যাসের সংকট সৃষ্টি হয়েছে। চাহিদাপত্র পাঠানোর পরও প্রয়োজন অনুযায়ী গ্যাসের সিলিন্ডার সরবরাহ করতে পারছে না সরবরাহকারীরা। ট্রাকে খালি সিলিন্ডার পাঠানো হচ্ছে। গ্যাস না পেয়ে তিন দিন অপেক্ষা করে খালি ট্রাক নিয়ে ফিরে আসতে হচ্ছে। ফলে আর্থিকভাবে মারাত্মক লোকসানে পড়তে হচ্ছে।’

হাসপাতাল মোড়ের খুচরা গ্যাস ব্যবসায়ী সালাম হাওলাদার বলেন, পাইকারদের থেকে ২০০-২৫০ টাকা অতিরিক্ত খরচে গ্যাস কিনতে হচ্ছে। ফলে আগের মূল্যের চেয়ে ২০০-২৫০ টাকা বেশিতে বিক্রি করতে হচ্ছে। যার প্রভার ভোক্তাদের ওপর গিয়ে পড়ছে।’

সদর রোডের চায়ের দোকানদার মোস্তফা বেপারী বলেন, ‘প্রতিটি সিলিন্ডার আগের চেয়ে ৩০০ টাকা বেশি দিয়ে কিনতে হচ্ছে। গরিব মানুষ চা বিক্রি করে সংসার চালাই। গ্যাসের দাম বাড়লেও চায়ের দাম তো বাড়ানো যাচ্ছে না। এভাবে দাম বাড়লে গরিব মানুষ বাঁচব কি করে? এখন তো দেখছি চায়ের দাম না বাড়ালে আমাদের সংসার চালানোই কষ্ট হয়ে যাবে।’

শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনদীপ ঘরাই আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সরকারি নির্দেশনার বাইরে পাইকারি বা খুচরা পর্যায়ে অতিরিক্ত দামে গ্যাস বিক্রি করার কোনো সুযোগ নেই। বেশি দামে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করলে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাজার নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে। বাজারের সব ব্যবসায়ীকে সরকার-নির্ধারিত মূল্যে গ্যাস বিক্রি করতে হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত