Ajker Patrika

বিজ্ঞানচর্চা ছড়িয়ে দিতে কাজ করছে বোসন

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
আপডেট : ২৪ নভেম্বর ২০২১, ১৮: ০৯
বিজ্ঞানচর্চা ছড়িয়ে দিতে কাজ করছে বোসন

বিজ্ঞানকে জানা ও বিজ্ঞানচর্চা ছড়িয়ে দিতে কাজ করছে টাঙ্গাইলের ‘বোসন বিজ্ঞান সংঘ’। প্রতিষ্ঠার সাত বছরে আয়োজন করেছে অসংখ্য বিজ্ঞানভিত্তিক প্রতিযোগিতা। একঝাঁক তরুণের নিরলস চেষ্টায় এ সংঘের পরিচিতি ও পদচারণ এখন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে। ২০২০ সালে বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটি এ সংঘকে দেশের সেরা গণিত ক্লাবের স্বীকৃতি দেয়।

বোসন বিজ্ঞান সংঘের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান পরামর্শক তাশদিদ শিহাব বলেন, ‘মাধ্যমিকে পড়ার সময় কয়েক সহপাঠী ও সমমনা বন্ধু মিলে ২০১৪ সালে বোসন বিজ্ঞান সংঘ প্রতিষ্ঠা করি। তখন থেকেই আমরা নিয়মিত স্থানীয়, আঞ্চলিক ও জাতীয়ভাবে বিজ্ঞানভিত্তিক নানা প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছি।’

বোসন বিজ্ঞান সংঘের আয়োজন: ২০১৪ সালে ৬০০ শিক্ষার্থীকে নিয়ে আয়োজন করা হয় বোসন গণিত অলিম্পিয়াড। ২০১৫ সালে জেলার সহস্রাধিক শিক্ষার্থীকে নিয়ে আয়োজন করা হয় সাধারণ জ্ঞান প্রতিযোগিতা। ২০২১ সালে সারা দেশ থেকে ২১টি আলাদা আলাদা প্রতিযোগিতায় প্রায় ২০ হাজার শিক্ষার্থী অংশ নেন। এ ছাড়া দেশের ২৮টি ক্লাবকে একাডেমিক সহায়তা দিয়ে থাকে এই সংঘ।

২০১৬ সালে ছয় মাসে ২৮টি গণিত কর্মশালার আয়োজন করা হয়। টাঙ্গাইলের ৮টি উপজেলায় আলাদাভাবে গণিত অলিম্পিয়াডের আয়োজনও উল্লেখযোগ্য। চলতি বছরে জেলার ৮টি বিদ্যালয়কে নিয়ে আয়োজন করা হয় ‘বিজ্ঞান বিতর্ক উৎসব।’ সব মিলিয়ে প্রায় ১০০ বিজ্ঞান ভিত্তিক প্রতিযোগীতার আয়োজন করা হয় বোসন থেকে।

বোসন বিজ্ঞান সংঘের অর্জন: ২০১৫ সালে আঞ্চলিকভাবে গণিত অলিম্পিয়াডে বিজয়ী ৩০ জনের ১৮ জনই ছিলেন এই সংঘের। জাতীয় পর্যায়ে বিজয়ী হন একজন। একই বছর ‘ভাষা প্রতিযোগে’ সারা দেশে প্রথম স্থান অধিকার করেন এই সংঘের সদস্য। ২০১৬ সালে গণিত অলিম্পিয়াডে টাঙ্গাইল আঞ্চলিক পর্বে ২৩ জন এবং জাতীয় পর্যায়ে ৫ জন বিজয়ী হন। ২০১৭ সালে বাংলাদেশ জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াডে ময়মনসিংহ আঞ্চলিক পর্বে ২৩ জন এবং জাতীয়ভাবে তিনজন বিজয়ী হন।

একই বছর গণিত অলিম্পিয়াডে আঞ্চলিক পর্বে ছয়জন ও জাতীয় পর্যায়ে একজন বিজয়ী হয়। ২০১৮ সালে একই প্রতিযোগীতায় আঞ্চলিক পর্বে আটজন বিজয়ী হয়। ২০১৯ সালে ১১ জন, ২০২০ সালে ১৩ জন ও ২০২১ সালে ৮ জন আঞ্চলিক পর্যায়ে বিজয়ী হয়। ২০২১ সালে আন্তর্জাতিক সম্মাননা হিসেবে ইরানিয়ান জিওমেট্রি অলিম্পিয়াডর ‘ব্রোঞ্জ’ পদক অর্জন করেন বোসন সদস্য ফাহিম মোহিতামিম। এ ছাড়া ২০১৭, ১৮, ১৯, ২০ ও ২০২১ সালে আরও কিছু প্রতিযোগীতায় বিজয়ী হওয়ার গৌরব অর্জন করে এ সংঘের সদস্যরা।

সংঘের সভাপতি মোহাম্মদ মাজেদুর রহমান বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য জ্ঞানের আলো গণিত ও বিজ্ঞানপ্রেমীদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া। আমরা সে লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছি। এই উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ম্যাগাজিনসহ নানা প্রকাশনার কাজ করছি। এ ছাড়া আমাদের নিয়মিত আয়োজন অলিম্পিয়াড, কর্মশালা, বিতর্কসহ অন্যান্য আয়োজন অব্যাহত থাকবে।’

সংঘের উপদেষ্টা ও মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিপিএস বিভাগের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আব্দুল কাদের মিয়া বলেন, এ ধরনের সংগঠন ও তাঁদের কার্যক্রম নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবি রাখে—যা শিশু, কিশোর, যুবকদের ভার্চুয়াল আসক্তি থেকে বিরত রেখে সৃজনশীল মনন বিকশিত করে। তাঁদের কার্যক্রম পৃষ্ঠপোষকতার মধ্য দিয়ে দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিতে হবে। তাহলে দেশ ও জাতি লাভবান হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত