স্টোকসকে ‘এক্স-ফ্যাক্টর’ মনে করেন বাভুমা

ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার একটা জায়গায় বেশ মিল। এবারের বিশ্বকাপে যে দুটি অঘটন—সেই দুটিই হয়েছে তাদের সঙ্গে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ইংলিশরা হারের এক দিন পর উড়তে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকাকে মাটিতে নামায় নেদারল্যান্ডস। সেই ক্ষত ভুলেই আজ মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়েতে স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে ইংল্যান্ড-দক্ষিণ আফ্রিকা।

এবারের বিশ্বকাপে এই মাঠে এটি প্রথম ম্যাচ। আহমেদাবাদে উদ্বোধনী ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের কাছে হারের পর বাংলাদেশের বিপক্ষে জয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর আভাস দিয়েছিল ইংলিশরা। তবে আফগান বীরত্বের সামনে বড় ধাক্কা খেয়ে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের শিরোপা ধরে রাখাই এখন চ্যালেঞ্জের মুখে। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে অবশ্য প্রস্তুত হয়েই মাঠে নামছেন জস বাটলাররা। পাচ্ছেন বেন স্টোকসকেও। ওয়ানডে থেকে অবসর ভেঙে ফিরলেও চোটের কারণে বিশ্বকাপের প্রথম তিন ম্যাচে দর্শক হয়ে থাকা ইংলিশ অলরাউন্ডারও গত পরশু জানিয়েছেন, ফিরতে প্রস্তুত তিনি।

স্টোকসের যে এখনই ফেরার সময়। ইংল্যান্ডের ২০১৯ বিশ্বকাপে জয়ের নায়কের ফেরার প্রসঙ্গে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে জস বাটলার বলেছেন, ‘গত (পরশু) রাতে বেন সত্যিই খুব ভালো অনুশীলন করেছে। তাকে ফিরতে দেখে ভালো লাগছে। নিঃসন্দেহে মাঠে তার উপস্থিতি ও নেতৃত্ব-দক্ষতা সব সময় ভালো কিছু এনে দেয়।’

স্টোকস ফিরলে একাদশে কে জায়গা হারাতে পারেন, সেটি অবশ্য ঊহ্যই রেখেছেন ইংলিশ অধিনায়ক। হতে পারে, বাদ পড়তে পারেন ক্রিস ওকস। ৩৪ বছর বয়সী বোলিং অলরাউন্ডারকে এখনো সেভাবে জ্বলে উঠতে দেখা যায়নি। ৬৭.৫ গড়ে রান দিয়ে তিন ম্যাচে নিয়েছেন মাত্র ২ উইকেট, দুটিই বাংলাদেশের বিপক্ষে। ব্যাটিংয়েও ছিলেন নিষ্প্রভ। ওকসকে বেঞ্চে রাখবেন কি না, সেটি না জানালেও তাঁর দীর্ঘ ক্যারিয়ারের প্রশংসা করেছেন বাটলার, ‘সে অসাধারণ পারফরমার। দীর্ঘদিন ধরে ইংল্যান্ডের হয়ে সব ফরম্যাটে খেলছে, বিশেষ করে ওয়ানডেতে। আমরা সব সময় আমাদের দলের খেলোয়াড়দের পাশে থাকি। আমরা তাদের দলে নিই; কারণ, তারা বিশ্বমানের খেলোয়াড়। ওকসও তাদের একজন।’

এবারের বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ ৪২৮ রানের স্কোরটি করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেও পেয়েছিল তিন শতাধিক সংগ্রহ। সেই দলই ডাচদের ২৪৬ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে পারেনি। ‘চোকার্স’ শব্দটির সঙ্গে প্রোটিয়াদের দীর্ঘদিনের সম্পর্কটা এবার দেখা গেল শুরুতেই। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ১৯৯২ বিশ্বকাপে এসেই সেমিতে খেলেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। সেই ম্যাচে ইংল্যান্ডের হাতে স্বপ্ন ভেঙেছিল তাদের।

স্বপ্নটা অবশ্য ভেঙেছিল ১২ মিনিটের বৃষ্টি। জয়ের জন্য যখন ১৩ বলে ২২ রানের প্রয়োজন, তখন নেমে আসে বৃষ্টি। কিন্তু বৃষ্টি আইনের অদ্ভুত মারপ্যাঁচে তাদের সামনে লক্ষ্যটা দাঁড়ায় ১ বলে ২২! সেই যে ৩১ বছর আগে গায়ে ‘চোকার্স’ তকমা লাগল, সেটি দুঃস্বপ্নের মতো বারবার তাড়া করেছে প্রোটিয়াদের।
তবে টেম্বা বাভুমা অন্য রকম স্বপ্ন দেখতেই পারেন। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচের আগে সংবাদ সম্মেলনে বেশ হাসিখুশিই দেখাল তাঁকে। এই মাঠে ক্যারিয়ারের সায়াহ্নে এসে বিশ্বকাপের স্বাদ পান শচীন টেন্ডুলকার।

ক্রিকেট ঈশ্বরের মাঠে নামার আগে শৈশবের আইডল থেকে শুভকামনা পাওয়ায় খুশি বাভুমা। বাটলারের মতো তিনিও মনে করেন, এই ম্যাচের ‘এক্স-ফ্যাক্টর’ হতে পারেন স্টোকস। বাভুমা বলেছেন, ‘পুরোপুরি ফিট বেন স্টোকসকে পাওয়ায় শক্তি বাড়াবে ইংল্যান্ড দলের। সে একজন এক্স-ফ্যাক্টর খেলোয়াড়। সে এমন একজন, যে ম্যাচ পাল্টে দিতে পারে।’