Ajker Patrika

বেহাল হাটে কমছে বেচাকেনা

নড়াইল প্রতিনিধি
আপডেট : ১৭ অক্টোবর ২০২১, ১২: ৫০
বেহাল হাটে কমছে বেচাকেনা

নড়াইল সদর উপজেলার অন্যতম পশুর হাট নাকশি মাদ্রাসা হাট। এটি আউড়িয়া ইউনিয়নের মাদ্রাসা বাজারে অবস্থিত।

এ হাট থেকে বছরে ৩৫ লাখ টাকার বেশি রাজস্ব আদায় হলেও নেই কোনো উন্নয়ন। বর্ষা এলেই হাঁটু সমান কাদা পানি মাড়িয়ে বেচাকেনা করতে হয়। পানি নিষ্কাশনে নেই নালা ব্যবস্থা।

চলতি অর্থবছরে পশু হাটটির ইজারা নিয়েছেন মো. হাদীউজ্জামান নামের এক ব্যবসায়ী। তিনি ৩৫ লাখ ১০ হাজার টাকায় ইজারা নিয়েছেন । ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, হাটে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা নেই। পানি পানের ব্যবস্থা নেই। হাটের ভেতরের রাস্তা কাঁচা। সামান্য বর্ষাতেই কাঁদা পানি জমে যায়। বর্তমানে হাটের পরিস্থিতি খুবই খারাপ। দিনে দিনে ক্রেতা-বিক্রেতার সংখ্যা কমে যাচ্ছে। হাটের উন্নয়নকাজে হাত দেওয়ার জন্য তিনি সদর উপজেলা প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান।

আউড়িয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়, এক একর জমির ওপর নাকশি মাদ্রাসা হাটের অবস্থান। এর মধ্যে ৬০ শতাংশ জমিতে পশু হাট এবং ৪০ শতাংশ জমিতে কাঁচাবাজার নিত্য প্রয়োজনীয় দোকানপাট। প্রতি মঙ্গলবারে এখানে পশু এবং নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের হাট বসে।

নাকশি গ্রামের ব্যবসায়ী রেজা মল্লিক বলেন, প্রায় ৭০ বছরের ঐতিহ্য বহন করছে এই হাটটি। নড়াইল-যশোর সড়কের কোল ঘেঁষে অবস্থিত হাটটির যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো থাকায় খুলনা বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা এখানে বেচাকেনা করতে আসেন। এ ছাড়া মাদারীপুর, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলা থেকেও ব্যবসায়ীরা এখানে আসেন।

মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার গরু ব্যবসায়ী এনায়েত ফকির বলেন, ‘আমি প্রায় ২৫ বছর ধরে ট্রাক নিয়ে এই হাটে গরু, ছাগল কিনতে আসি। বর্ষাকালে খুব একটা আসা হয় না। কারণ তখন এখানে আশ্রয় নেবার কোনো জায়গা থাকে না।’

ফরিদপুর জেলার ভাঙা উপজেলার কিসমত মোল্লা জানান, এখানে মিনি ট্রাক নিয়ে গরু-ছাগল কিনতে আসেন তিনি। যোগাযোগ ব্যবস্থাও বেশ ভালো। কিন্তু বর্ষা মৌসুমে এখানে আসা দুষ্কর হয়ে যায়। বৃষ্টি হলে দাঁড়াবার জায়গা থাকে না। তখন কাঁদা পানিতে একাকার হয়ে যায়। ঠিকমতো চলাফেরা করা যায় না।

এ বাজারের ব্যবসায়ী হাফিজ মল্লিক বলেন, পশু হাট না থাকলে নাকশি মাদ্রাসা হাটের কোনো গুরুত্বই থাকে না। কারণ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে এখানে পশু কিনতে ব্যবসায়ীরা আসেন। হাটে দিনে দিনে পশুর সংখ্যা কমে যাচ্ছে। ক্রেতা-বিক্রেতার সংখ্যাও কমে যাচ্ছে। একমাত্র প্রশাসনই হাটটিকে রক্ষা করতে পারে।

নড়াইলের জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘শুনেছি নাকশি মাদ্রাসার পশু হাটটি নড়াইলের ঐতিহ্যবাহী একটি হাট। বিভিন্ন জেলা থেকে ক্রেতা-বিক্রেতারা এখানে পশু বেচাকেনা করতে আসেন। কোরবানির ঈদে পশু হাটে ক্রেতা-বিক্রেতার সংখ্যা বেশি হয়। হাটের ঐতিহ্য ধরে রাখতে সমস্যা সমাধানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি নিজে হাটটি পরিদর্শন করব। আশা করছি কিছুদিনের মধ্যে হাটের এই অবস্থা দূর হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত