Ajker Patrika

সাগরে মাছ না পেয়ে ডাকাতিতে তাঁরা!

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
সাগরে মাছ না পেয়ে ডাকাতিতে তাঁরা!

নৌকা নিয়ে সাগরে গেলেও তেমন মাছ মিলছিল না। বারবারই জেলেরা ফিরছিল অল্প মাছ নিয়ে। এ জন্য জেলেদের ওপর ক্ষুব্ধ হন নৌকার মালিক আনছার মেম্বার। তিনি জেলেদের টাকাপয়সা দেওয়া বন্ধ করে দেন। একপর্যায়ে নির্দেশ দেন মাছ ধরতে না পারলে ডাকাতি করে নিয়ে আসতে।

এভাবে গড়ে উঠে একটি জলদস্যু দল। আর সেই দলের নেতা বানান ছেলে আনোয়ারকে। সেই দলটিই সম্প্রতি বঙ্গোপসাগরে জেলেদের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তাঁরা একে একে ১৬টি নৌকায় ডাকাতি করে লুটপাট চালান।

গভীর সমুদ্র ও বাঁশখালীতে ৪৮ ঘণ্টার অভিযান চালিয়ে সেই দলের ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব–৭। এ সময় বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্রসহ দেশীয় অস্ত্র, তিন হাজার পিসের অধিক ডাকাতি করা ইলিশ মাছ, বিপুল পরিমাণ মাছ ধরার জাল ও ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত নৌকাও জব্দ করা হয়েছে। এই ডাকাতেরা বঙ্গোপসাগরে সম্প্রতি ১৬টি জেলে নৌকায় ডাকাতির ঘটনায় সরাসরি জড়িত বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

গতকাল শনিবার বিকেলে এক ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন র‍্যাব–৭ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এম এ ইউসুফ। বহদ্দারহাট এলাকায় অবস্থিত র‍্যাব–৭ মিডিয়া সেন্টারে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

র‍্যাব-৭ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এম এ ইউসুফ বলেন, গত ২৭ আগস্ট চট্টগ্রামের অন্তর্ভুক্ত সাগর এলাকায় ৯টি মাছ ধরার বোটে ডাকাতি সংঘটিত হলে আমরা বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণভাবে গ্রহণ করে তদন্ত শুরু করি। এরই অংশ হিসেবে বিশেষ সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারি যে, জলদস্যু বহনকারী একটি নৌকার মাধ্যমে সাগরে বিভিন্ন নৌকায় ডাকাতি করা হচ্ছে। এরপর দুটি আভিযানিক দল ও র‍্যাব ফোর্সেস সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখার একটি আভিযানিক দলের সমন্বয়ে গভীর সমুদ্রে গত বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার বেলা ২টা পর্যন্ত ৪৮ ঘণ্টা অভিযান পরিচালনা করে।

র‍্যাব-৭ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এম এ ইউসুফ জানান, অভিযানে একটি বোট, আনুমানিক তিন হাজার ইলিশ মাছ, মাছ ধরার বড় জাল, তিনটি ওয়ান শুটারগান, একটি চাইনিজ কুড়াল, ১৬টি দা ও ছুরি, একটি বাইনোকুলার, চারটি টর্চ লাইট, দুটি চার্জ লাইট, দুটি হ্যান্ড মাইক, ৭০ টি মোবাইল, নগদ পাাঁচ হাজার ৭০০ টাকা উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তার জলদস্যুরা হলেন আনোয়ার, লিয়াকত, মনির, আবুল খায়ের, নবীর হোসেন, নেজামউদ্দিন, হুমায়ুন, সাহেদ, সাদ্দাম, আতিক, এমরান, আমানউল্লাহ।

র‍্যাব–৭ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এম এ ইউসুফ বলেন, আনছার মেম্বার ও তাঁর দলের উদ্দেশ্য ছিল অল্প পরিশ্রমে অধিক মুনাফা লাভ করা। এ জন্যই নিজের সন্তানকে ডাকাত সর্দার বানিয়ে নৌকায় ডাকাতি করতে পাঠাতেও তিনি দ্বিধা করেননি তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত